হে পাঠক, অবলোকন করুন…!

হে পাঠক, অবলোকন করুন…!

কালীঘাটের টালির বাড়ির দরজায় গড় মান্দারণের কেল্লার ডিজাইনের ফ্রেমে নবকুমার, ভবানন্দ, কৃষ্ণকান্ত, প্রতাপ, শৈবালিনী, বিমলা, কপালকুণ্ডলা, কাপালিক সকলে জড়ো হয়ে পুনঃপুনঃ দ্বার খোলো খোলো দ্বার, যবনের হো হো ধনি ও করাঘাতের পরে বিড়েমাথায় জেলখানার হাফপেন্টু পরে বেরিয়ে আসেন বাঁকা-চাঁদ কোন এক নিশিরাতে।

অনতিদূরে গলিমধ্যে তরুছায়াতলে নিবিষ্ট মননে সাক্ষীরূপে উর্ধপাতিত-দেশপ্রেমী-যুবক-নেত্রে অপলক দণ্ডায়মান রহে বিখ্যাত হ্যাণ্ডল-বালক গজেন্দ্র।

সকল বঙ্কিম সৃষ্ট শিশু-যুবক-যুবতী সমস্বরে বলিতে থাকে বিড়েমাথা-স্যর এই সারমেয় কিয়ৎকাল যাবৎ আমাদের নিদ্রাহরণ করত গাঁড়-ডাণ্ডা করিতেছে। আমাদিগের মধ্য হতে আত্মবিশ্বাস লুপ্তপ্রায়। এ শহরমধ্যে এমত কিম্ভূচারণ আমরা পিতা-জনমে কদাচ অবলোকন করি নাই। এ যুবকের যথেচ্ছ যত্র-তত্র-হস্তমৈথুনে নগর প্লাবিত। ম্যাডিউ-কবির দাক্ষিণ্যে এমতাবতস্থার সৃষ্টি। হে বিধাতা আপনি সচক্ষে প্রত্যক্ষ করুন। সর্বদা সে অঙ্গপ্রান্ত আনমনে দৃঢ় মুষ্ঠিবদ্ধ করতঃ পুনঃ পুনঃ আন্দোলনে বিচিমালা-দোদুল্য-দমকে অকূস্থলে বৃক্ষরাজিমাঝে-গগনতলে-উপনগরীর রাজপথে শায়িত-উপবেশিত-দণ্ডায়মান বাম-ডান-বিমূর্ত-রূপে হস্তমৈথুন-হেতু বিভীষিকাময়-দৃশ্যাবতরণে গভীরমগ্ন ও সদা-নিমজ্জিতপ্রায়। হায়, এ যুবক লইয়া আমরা সমাজদ্রষ্টা সংসারমধ্যে অবস্থানকারী সুখস্বপনবপনেব্যস্ত গাণ্ডু-বানচোদসকল কি করিব? কি করিয়া দেশমাতৃকার চরণতলে এ বোকাচোদানাগরিকের আহুতি সম্ভব বিনাশ সম্ভব সততসঞ্চরণশীল-আকূতিআকুল মনোমধ্যে কিরূপে ধারণ করি সংযমবিহারী সম্যকরূপী সংযম দর্শন? আপনি এ গর্হিত-গগনবিদারী অসংস্কৃত জনুন্মোচিত জঘন্য যৌনাচারপ্রবৃত্তির নিবারণযাপনে কি কিঞ্চিতাধিক প্রগাঢ়মনস্ক গাঢ়গাঁড়ডাণ্ডাময় শাস্তিদণ্ডবিধানপ্রয়োগে নগরশান্তিকার্যের প্রয়োগাবতরণের পথ-উন্মোচন করিতে পারেননা প্রভু?

বিড়েমাথা প্রায়রক্তিম মদাসক্ত মদির-বাঁকা ক্ষমতা-খচিত জোচ্চোর-প্রায় চক্ষে সকলের পানে দৃষ্টি হানলেন। মৌনচিত্তে মুখরপদাপসরণে গৃহমধ্যে ধীর-তীব্র শব-পোড়া মরাদাহ গতিতে অপসৃয় হলেন। কিয়ৎকালপরে সকলের সম্মুখে উপস্থিত হয়ে সেই কালীঘাট টালিবাড়ির অন্দর মহল হতে স্বহস্তে হিড়হিড়প্রায় ভঙ্গিতে টানিয়া আনিলেন এক নীল-সাদা ছিন্ন-দীর্ণ ঝোঝুল্য-ঝোলা। সকলে বুঝিল ঝোলামধ্যে কিছু অর্থ সোনাদানা অলঙ্কারাদি রহিয়াছে। ভবানন্দ সাষ্টাঙ্গে সৃষ্টিকর্তাকে প্রণাম জানালেন। হে পিতা আজো এও অকালসময়ে আপনি এই পরিমাণ অর্থবান ও সম্পদবান প্রতাপশালী। আপনি এই ক্ষুদ্র অধমের প্রচণ্ড পিরিত-পীড়িত-প্রাবল্যময় প্রণাম জানিবেন। রথ দর্শন ও কদলি বিক্রয়-শিক্ষা আপনার সমীপে-সন্নিকটে-সমভিব্যাহারে না উপনীত হইলে কেহ মাতৃজঠর-নির্গত হইয়া ভূমণ্ডলে জানিত হইত না কর্তা। জমিদারকূলজাত প্রজাপালক ধনবান-ধনবুদ্ধিখচিত মস্তকময় ঈশ্বর আপনি, বলিল রুক্মিনীকুমার।

কাপালিক মন্ত্রবলে সকল অর্থ হস্তগত করিবার হেতু বদ্ধপরিকর হইল। বিড়েমাথা প্রমাদ গণিয়া গম্ভীর গমকে বলিলেন, ভবানী! কোথায় গিয়াছ খানকিপুত্র? পশ্চাতে ভবানী আসিয়া দাঁড়াইল। হস্তে বোধকরি একটি স্বয়ংচালিত-আগ্নেয়াস্ত্র কাহারো দৃষ্টিগোচর হইল। বিড়েমাথা বলিতে লাগিলেন… অর্থ সকল অনর্থের মূল। এ অর্থ ও গোপনাঙ্গময়শুভ্রকৃষ্ণ রোম লইয়া কি করিব? হঠাৎ এক অর্ধনগ্ন-উন্মাদিনীপ্রায় অতীব-যৌবনবতী পুরুষনয়নলোভী পাপাচারী অথবা দেবভোগ্যা নারী অন্তঃপুর হতে সবেগে ছুটিয়া আসিলেন সেই শুভ্রনীলাভ ছিন্নবস্তাপানে প্রচণ্ডধাবিত বেগে। সুউচ্চক্রন্দনে তুমুল-চিৎকারে বিড়েমাথার বাহুপার্শ্ব সংলগ্ন হইয়া বলিলেন ঐ অর্থ আমার আপন অর্থ। আমি ইহা আমৃত্য ভোগ করিব। আমার বলাৎকারী সকল পুরুষের মধ্যে এ অর্থ আমি মৃত্যুপূর্বে স্বহস্তে বিতরণ করিব। বিড়েমাথা বিড় বিড় করিয়া কহিলেন, ম্যা-মাটি-মনুষ্য। ভবানন্দ অস্ফূটে কহিলেন যাহা দেশ তাহাই তবে মা? তাহাই তবে খেঁদি? তাহাই তবে অসদুপায়ে অধিকৃত ধনরাশি? ইহাকেই কি স্ক্যামধনরাশি গণচোদনকৃত অর্থসম্পদ বলিব? তাঁহার সৃষ্ট অপরাপর সকল চরিত্র এক লহমায় কিয়ৎ ঘাবড়িত-আবেগতাড়িত ভয়প্রাপ্ত হইয়া অন্ধকারমধ্যে পলায়নপর হইলেন। গজেন্দ্র মুষ্ঠিবদ্ধ হস্তে আপন অঙ্গ একান্ন বার ঝাঁকাইয়া নিল সেই কালীঘাট-টালিবাড়ি অন্ধকারগলিময় যৌনাচারের পাপাচারের প্রতিবাদে। হে পাঠক! অবলোকন করুন, গজেন্দ্র কি করিল। সে কি বীর্যপাত করিল, সে কি চোদাইল? সে কি ফেনাইল? হে পাঠক বলিয়া বিড়েমাথা ভবানী পাঠকের পানে ক্ষুদ্র-চোদনা-চোখে তীব্র-বিষাদে তাকাইলেন…

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *