দ্বিতীয় খন্ড
উত্তরপর্ব
2 of 3

সাধু বণিক কারাগার মুক্তি

।। সাধুবণিজঃ কারাগারানমুক্তিঃ বর্ণন।।

তাপত্রয়হরং বিষ্ণোশ্চরিতং তস্য তে শিবম্। শৃন্বন্তি সুধিয়ো নিত্যং তে বসন্তি হরেঃ পদম্।।১।। প্রতিকূলে হরৌ তস্মিন্যাস্যন্তি নিরয়ানবহূন্। তৎপ্ৰিয়া কমলা দেবী চত্বারস্তস্য চাত্মজাঃ।।২।। ধর্মো যজ্ঞো নৃপশ্চৌরঃ সর্বে লক্ষ্মীপ্রিয়ং করা। বিপ্রেভ্যশ্চাতিথিভ্যশ্চ যদ্দানং ধর্ম উচ্যতে।।৩।। মাতৃভ্যো দেবতাভ্যশ্চ স্বধা স্বাহেতি বৈ মখঃ ধর্মস্যৈব মখস্যৈব রক্ষকো নৃপতিঃ স্মৃতঃ।।৪ । দ্বয়োহন্তা হি চৌরঃ সতে সর্বে ধর্মকিংকরাঃ। যত্র সত্যং ততো ধর্মস্তত্র লক্ষ্মীঃ স্থিরা ভবেৎ।।৫।। সত্যহীনস্য তৎসাধোধনং মত্ত দগৃহে স্থিতম্। হৃতবানবনীপালঃ চৌরৈভার্যাতিদুঃ খিতা।।৬।। বাসোলংকরণাদীনি বিক্রীয় বুভুজে কিল। নাস্তি তৎপচ্যতে কিঞ্চিত্তদা কযমগাহত।।৭।। অথৈকস্মিন্দিতে কন্যা ভোজনাচ্ছাদনং বিনা গতা বিপ্ৰগৃহেহপশ্যৎ সত্যনারায়ণার্চনম্।।৮।। প্রার্থয়ন্তং জগন্নাথং দৃষ্ট্বা সা প্রাথয়দ্বহিম্। সত্যনারায়ণ হরে পিতা ভর্তা চ মে গৃহম্।।৯।। আগচ্ছৎ বর্চয়িষ্যামি ভবন্তমিতি সাৰ্চয়ে। তথাস্তু ব্রাহ্মনৈরূক্তা ততঃ সা ত্বাশ্রমং যযৌ।।১০।।

।। সাধু-বণিক কারাগারমুক্তি বর্ণন।।

এই অধ্যায়ে সাধু বণিক কারাগারমুক্তি বৃত্তান্ত বর্ণিত হয়েছে।

সূতজী বললেন–ত্রিতাপ হরণকারী পরম মঙ্গলময় বিষ্ণু চরিত্র শ্বরণ করলে তার পদে স্থান পাওয়া যায়। তিনি প্রতিকূল হলে প্রাণী নরকে স্থান পায়। তাঁর প্রিয়া দেবী কমলার চারপুত্র ধর্ম, যজ্ঞ, নৃপ ও চৌর। তারা সকলে লক্ষ্মীদেবীর প্রিয়। বিপ্র ও অতিথিগণের জন্য দান ধর্ম, মাতা ও দেবগণের জন্য স্বাহা ও স্বধা কর্মযজ্ঞ। ধর্মের রক্ষক নৃপ ও ধর্ম ও যজ্ঞহরণকারী চৌর। সত্য যেখানে ধর্ম সেখানে থাকে এবং তথা লক্ষ্মীদেবী বিরাজ করেন।।১-৫।।

সত্যহীন সাধুর ধন ও গৃহস্থিত ধম রাজা হরণ করেন। তাঁর স্ত্রী অত্যন্ত দুঃখে নিজ অলংকার বিক্রয় করে উদর পূর্ত্তি করতে লাগলেন। একবার তার কন্যা ভোজনাচ্ছাদন বিনা কোনো এক বিপ্রের গৃহে উপস্থিত হল। সেখানে তিনি সত্যনারায়ণ দেবের পূজা দেখেছিলেন। সে জগন্নাথের প্রার্থনা শ্রবণ করে শ্রীহরি সত্যনারায়ণের কাছে প্রার্থনা করে যে– আমার পিতা ও পতি গৃহে ফিরে এলে তোমার অর্চনা করব। তখন সেই বিপ্র বললেন, তাই হবে। একথা বলে তিনি নিজ আশ্রমে চলে গেলেন।।৬-১০।।

মাত্রা নির্ভস্তিসেয়ন্তং কালং কুত্র স্থিতা শুভে। বৃত্তান্তং কথয়ামাস সত্যনারায়ণার্চনে।।১১।। কলৌ প্রত্যক্ষ ফলদঃ স্বর্দা ক্রিয়তে নরৈঃ। কর্তুমিচ্ছামহং মাতরনুজ্ঞাতুং ত্বমহসি।।১২।। দেশমায়াতু জনকঃ স্বামী চ মম কামনা রাত্রৌ নিশ্চিত্য মনসা প্রভাতে সাকলাবতী।।১৩।। শীলা পালস্য গুপ্তস্য গেহে প্রাপ্তাধনার্থিনী। বন্ধো কিঞ্চিদ্ধনং দেহি যেন সত্যাৰ্চনং ভবেৎ।।১৪।। ইতি শ্রুত্বা শীলপালাঃ পঞ্চনিষ্কং ধনং দদৌ। ত্বৎপিতুশ্চ ঋণং শেযং ময়ীত্যেব কলাবতি।।১৫।। ইত্যক্ত্বা সোহনৃণো ভূত্বা গয়াশ্রাদ্ধায় সংযযৌ। সুতাপি তেন দ্রব্যেন কৃতং সত্যাৰ্চনং শুভম্।।১৬।। লীলাবতী সহ তয়া ভক্ত্যাকাযীপ্রপূজনম্। পূজনেন বিশেষেণ তুষ্টো নারায়ণোহভরৎ।। ১৭।। নর্মদাতীরনগরে নৃপঃ সুম্বাপ মন্দিরে। রাত্রি শেষে সুপর্যংকে নিদ্রাং কুর্বতি রাজনি। উবাচ বিপ্ররূপেন বান্ধয়ষ্ণুলক্ষণয়া গিরা।। ১৮।। উত্তিষ্ঠোত্তিষ্ঠ রাজেন্দ্রতৌ সাধু পরিমোচয়। অপরাধং বিনা বন্ধৌ নৌ চেচ্ছং ন ভবেতব।।১৯।। ইত্যেবং ভূপতিশ্চৈব বিপ্ররূপেন বোধিতঃ। তদা হ্যান্তদর্ধে বিষ্ণুবিনিদ্রৌ নৃপতিস্তদা।।২০।। বিস্মিতঃ সহসোতাম্ দধ্যো ব্ৰহ্ম সনাতনম্। সভায়াং মন্ত্রিনে রাজা স্বপ্রহেতুং ন্যবেদয়ৎ।।২১।। মহামন্ত্রী চ ভূপালং প্রাহ সত্যেন ভো দ্বিজ। ময়াপি দর্শিতং স্বপ্নং বৃদ্ধবিপ্রেণ বোধিতম অতস্তৌ হি সমানীয় সংপৃচ্ছবিবিধৰূপ।।২২।। আনীয় সাধুং প্রপচ্ছ সত্যমালংব্য ভূপতিঃ। কুত্ৰত্যৌ বাংকুলং কিং বা বসতিঃ কস্যবাপুরে।।২৩।। রম্যে রত্নপুরে বাসৌ বণিগজতৌ জনিমম। বানিজ্যাথং মহরাজ বানিজ্যং জীবিকাবতৌ।।২৪।। মনিমুতপদি বিকেতুং ক্রেতুং বা তব পত্তনে। প্রাপ্তৌ দুতৈশ্চ বদ্ধাবাং ত্বৎসমীপ মুগাপতৌ।।২৫।। প্রতিকূলে বিধো কো বা দশং নাপ্নোতি বৈপুমান্। বিনাপরাধং রাজেন্দ্র মনিচৌরানবাদয়ন্।।২৬।। আবাং চৌবৌ রাজেন্দ্র তত্ত্বতত্ত্বা বিচারয়। শ্রুত্বা তন্নিশ্চয়ং জ্ঞাত্বা তয়োবন্ধনকারণম্।।২৭।। ছেদয়িত্বা দৃঢ়ং পাশং লোমশাতিমকারয়ৎ। কারয়িত্বা পরিস্কারং ভোজয়মাসতৌ নৃপঃ।।২৮।। নগরে পূজয়মাস বস্ত্রাভূষণবাহনৈঃ। অব্রবীক পূজিতঃ সাধুভূপতিঃ বিনয়ান্বিতঃ।।২৯।। কারাগারে বহুবিধ প্রাপ্তং দুঃখমতঃ পরম্ আজ্ঞাপয় মহারাজ দেশং গন্তুং কৃপানিধে।।৩০।। শ্রুত্বা সাধুবচো রাজ্ঞা প্রাহকোশধিকারিণম্। মুদ্রাভিস্তরনীঃ সদ্যঃ পূরয়াশু মদাজ্ঞয়া।।৩১।। জামাত্রা সহিতঃ সাধুগীতবাদিত্ৰমংগলৈঃ। স্বদেশং তলিতোহদ্যাপি ন চক্রে হরিসেবনম্।।৩২।। সত্যনারায়ণো দেবঃ প্রত্যক্ষ ফলদঃ কলৌ। স এব তাপসো ভূত্বা চক্রে সাধু বিড়ম্বনম্।।৩৩।। ধর্মঃ কিং নৌ যু তে সাধো মামনাদৃত্য যাসিভোঃ। প্রত্যুত্ত্বরমদাৎ সাধুঃ ক্ষিপ নৌকাশ্চ সত্বরম।।৩৪।। ভোঃ স্বামিন মে ধনং নাস্তি লতাপ্তাদি পূরিতম্। নৌভিগচ্ছামি স্বস্থানং বিরোধৈ নাত্র কিং ফলম্।।৩৫। ইত্যুক্তস্তাপসঃ প্রাহ তথাস্তৃিতি বচঃ ক্ষণাৎ। ধনমন্তদধে সাধোলতাপত্রাবশোষিতম্।।৩৬।। ধনং নৌকাসু নাস্তীতি সাদুশ্চিন্তাতুরোহ ভবৎ। কিমিদং কস্য বা হেতোর্ধনং কুত্র গতং মম।।৩৭।। বজ্ৰপাতাহত ইব ভূশং দুঃখিত মানসঃ। ক্ব যাস্যামি ক্ব তিষ্ঠামি কিং করোমি ধনং কুতঃ।।৩৮।। ইতি মূৰ্চ্ছাগতঃ সাধুবিললাপ পুনঃ পুনঃ। জামাত্রা বোধিতঃ পশ্চত্তাপসং তং জগমা হ।।৩৯।। গলে বসন মাদায় প্রণনাম স তাপসম্। কো ভবানিতি প্রপচ্ছ দেবো গন্ধর্ব ঈশ্বরঃ।।৪০।। দেবদেবোহথ বা কোহপি ন জানে তব বিক্রমম্। আজ্ঞাপয় মহাভাগ তদ্বিড়ম্বন কারণম্।।৪১।। আত্মা চৈবাত্মনঃ শত্ৰুস্তথাত্র চ প্রিয়োহ প্রিয়ঃ। ত্যজ মৌঢ়য়মতিং সাধোপ্রবাদং মা বৃথা কৃথাঃ।।৪২।। ইতি বিজ্ঞাপিতঃ সাধুন্ বুবোধ মহাধনঃ। পুনঃ স তাপস প্রাহ কৃপয়া পূর্বকৰ্মনঃ।।৪৩।। চন্দ্রচূড়ো মবানচ সত্যনারায়ণং নৃপঃ। অনপত্যেন সুচিরং পুত্রকন্যার্থিনা ত্বয়া।।৪৪।। প্রার্থিতংন স্মৃতং হ্যেব ইদানীং তপ্যসে বৃথা। সত্যনারায়ণো দেবো বিশ্বব্যাপী ফলপ্রদঃ।।৪৫।। তমনাদৃত্য দুর্বুদ্ধে কৃতঃ সম্যগ ভবেত্তব। পুরা লব্ধবরং স্বত্বা সস্থার জগদীশ্বরম্।।৪৬।। সত্যনারায়ণং দেবং তাপসং তং দদর্শহ। প্রণম্য ভূবি কায়েন পরিক্রম্য পুনঃ পুনঃ। তুষ্টাব তাপসং তত্র সাধুগদ গদ যাগিরা।।৪৭।।

কন্যা গৃহে ফিরে এলে তার মা বললেন–এত সময় কার্যত তুমি কোথায় ছিলে? সে তখন সত্যনারায়ণ ব্রতের কথা মাতাকে বলেন। দেব সত্যনারায়ণ কলিযুগে প্রত্যক্ষ ফল প্রদানকারী। তুমি আমাকে পূজা করার আজ্ঞা দাও। পিতা ও পতি দেশে ফিরে আসুক এই আমার কামনা। এই ইচ্ছাতে সে প্রাতঃকালে শীলপাল গুপ্তের ঘরে পূজার জন্য ধন আনতে গেল। সেই শীলপাল কলাবতীর পিতার নিকট ঋণ হিসাবে নেওয়া ধন শোধ করে দিয়ে ঋণযুক্ত হল ও শ্রাদ্ধ করতে গেল। কলাবতী সেই ধন দেব সত্যনারায়ণ পূজায় ব্যয় করলেন। বিশেষ ভক্তিপূর্বক পূজা করলে শ্রীহরি তুষ্ট হন। এদিকে নর্মদা তীরের মন্দিরে শায়িত রাজাকে সত্যনারায়ণ শেষ রাত্রে স্বপ্নে বলেন–হে রাজেন্দ্র এঠ, জাগো আর দুই সাধুকে কারাগারমুক্ত কর। তারা বিনা অপরাধে শাস্তি ভোগ করছে। এতে তোমার ভালো হবে। এই বলে ভগবান্ অন্তর্হিত হলে রাজা বিনিদ্র রজনীযাপন করেন। তারপর সনাতন ব্রহ্মের ধ্যান করেন। প্রাতে রাজসভায় মন্ত্রীগণের সাথে পরামর্শ করে দুইজন সাধুকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেন। তাদের নিবাসস্থান কুল ইত্যাদি জিজ্ঞাসা করে তিনি জানলেন যে তারা বাণিজ্যের জন্য সেখানে এসেছে। তারা প্রকৃতপক্ষে চোর নয়। তা শ্রবণ করে রাজা তাদের মুক্ত করে ভোজন করলেন। তারপর তাদের বস্ত্র, ভূষণ, বাহনাদি দিয়ে বিদায় জানালেন। তারপর সাধু জামাতার সঙ্গে নিজদেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা করলেন। কিন্তু তখনও তিনি হরিসেবন করলেন না। সত্যদেব তাপসের ছদ্মবেশে সাধুকে জিজ্ঞাসা করলেন–তোমার নৌকাতে কি আছে? সাধু উত্তরে বললেন — তাতে লতাপত্রাদিতে পূর্ণ আছে। আমরা নৌকা করে নিজ দেশে যাচ্ছি। এইরূপ বচন শুনে তিনি বললেন–তাই হোক। এরফলে সাধুর সমস্ত ধনসম্পদ লতাপাতাতে পরিপূর্ণ হল। সাধু তা দেখে চিন্তাতুর হরেন। বজ্রপাতের আঘাতের ন্যায় আহত হয়ে মূর্ছিত হলেন ও বারংবার বিলাপ করতে লাগলেন। তখন জামাতা পুনরায় সেই তাপসের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন–আপনি কে? আমি আপনার বিক্রন জানিনা। হে মহাভাগ–আপনি বলুন কিরূপে এই রকম হল। তাপস বললেন আত্মাই আত্মার শত্রু। সাধু নির্বোধ। একথা বলে তিনি মূঢ়তা ত্যাগের পরামর্শ দেন ও সাধুর পূর্বে সত্যনারায়ণ পূজা করার প্রতিজ্ঞার কথা মনে করিয়ে দেন। তারপর বলেন সত্যদেব সর্বব্যাপী, তাঁর অনাদর করলে কিভাগে কল্যাণ হবে। সেই তাপসকে সত্যদেব রূপ দেখে সাধু বণিক গদ গদ বাণীতে সন্তুষ্ট করেন।।১১-৪৭।।

সত্যরূপং সত্যসন্ধং সত্যনারায়ণং হরিম্। যৎ সত্যত্বেন জগতস্তং সত্যং ত্বাং নমাম্যহম্।।৪৮।। ত্বনমায়ামোহিতাত্মানো ন পশ্যন্ত্যাত্মনঃ শুভম্। দুঃকাম্ভোধো সদা মগ্না দুঃখে চ সুখ মানিনঃ।।৪৯।। দোহং ধনগর্বেণ মদান্ধীকৃতলোচনঃ। মা জানে স্বাত্মানঃ ক্ষেমং কথং পশ্যামী মূঢ়ধী।।৫০।। ক্ষমস্ব মম দৌরাত্ম্যং তপো ধান্মে হরে নমঃ। আজ্ঞাপয়াত্মদাস্যং মে যেন তে চরণো স্থরে।।৫১।। ইতি স্তত্বা লক্ষমুদ্রাং স্থাপিতাঃ স্বপ্নরোধসি। গত্বাবাসং পূজয়িষ্যে সত্যনারায়ণং প্রভুম্।।৫২।। তুষ্টো নারায়ণঃ প্রাহ বাঞ্ছা পূর্ণা ভবেত্তু তে। পুত্রপৌত্র সমাযুক্তো ভুক্ত্বা ভোগাস্ত্বনুত্তমান্। অন্তে সান্নিধ্যমাসাদ্য মোদসে ত্বং ময়া সহ।।৫৩।। ইত্যক্ত্বান্তদর্থে বিষ্ণু সাধুশ্চ স্বাশ্রয়ং যযৌ। সপ্তাহেন গৃহং প্রাপ্তঃ সত্যদেবেন রক্ষিতঃ।।৫৪।। আগত্য নগরাভ্যাশে প্রাহিণোদদ্রুতমাশ্রমম্। গৃহমাগত্য দূতোপি প্রাহ লীলাবতীং প্রতি।।৫৫।। জামাত্রা সহিতঃ সাধু কৃত কৃত্য সমাগতঃ। সত্যনারায়ণাচার্য়াং স্থিতা সাধ্বী সকন্যকা।।৫৬।। পূজাভারং সুতায়ৈ সা দত্ত্বা নৌকান্তিকং যযৌ। সখীগনেঃ পরিবৃতা কৃতকৌতুকমংগলা।।৫৭।। কলাবতী ত্ববজ্ঞায় প্রসাদং সত্বরা যযৌ। পাতুং পতিমুখাম্ভোজং চকোরীব দিনাত্যয়ে।।৫৮।। অবজ্ঞানাৎ প্রসাদস্য নৌকাশংখ পতেরথ। নিমগ্না জলমধ্যে তু জামাত্রা সহ তৎক্ষণাৎ।।৫৯।। মগ্নং জামাতরং পশ্যন্বিললাপ স মূৰ্চ্ছিতঃ। লীলাবতী তু তদৃষ্ট্বা মুৰ্চ্ছিতা বিললাপহ।।৬০।। ততঃ কথাবতী দৃষ্ট্বা পপাত ভূবি মূৰ্চ্ছিতা রম্ভেব বাতবিহতা কান্ত কান্তেতিবাদিনী।।৬১।। হা নাথ প্রিয় ধর্মন করুণা করকৌশল। ত্বয়া বিরহিতা পত্যা নিরাশা বিধিনা কৃতা। পত্যুরদ্ধং গতং কস্মাদৰ্দ্ধাংগং জীবনং কথম্।।৬২।। কলাবতী চারুকশাসু কৌশলা প্রবালরক্তাং থ্রিতলাতি কোমলা।। সরোজনেত্রাম্বুকণান্বিমুঞ্চতী মুক্তাবলীভি স্তনকুভূমলাঞ্চিতা।।৬৩।।

সাধু বণিক বলেন সত্য প্রতিজ্ঞ সত্যনারায়ণ আপনাকে প্ৰথম, মায়া মোহিত হয় ফল। আপনাকে না দেখে দুঃখ সাগরে নিমজ্জিত হয়। আমি ধনগর্বে গর্বিত হয়েছিলাম আমাকে ক্ষমা করুন। এইভাবে স্তুতি করে তিনি একলক্ষ স্বর্ণমুদ্রা দিয়ে গৃহে ফিরে সত্যনারায়ণ পূজা করার কথা বলেন। তখন সত্যনারায়ণ সন্তুষ্ট হয়ে দেহান্তে পরমপদ প্রাপ্তির কথা বলেন। একথা বলে তিনি অন্তর্হিত হন। সত্যদেব দ্বারা সুরক্ষিত হয়ে সেই সাধু সপ্তাহ মধ্যে নিজগৃহে ফিরে আসেন। গৃহে গিয়ে কলাবতীকে দূত বলেন সাধু তার জামাতার সাথে ফিরে গেল। সেই সময় সাধু ভার্যা ও বণিতা পূজা করছিলেন। সাধু ভার্যা কন্যাকে পূজার ভার দিয়ে নৌকার কাছে চলে গেলেন। কলাবতী সমীগণের সাথে কৌতুক করতে গিয়ে সত্যনারায়ণের ইচ্ছাতে সে নৌকার কাছে চলে যায়। তা দেখে কলাবতী বিলাপ করতে করতে মূর্ছিত হয়ে যায়।।৪৮-৬২।।

হা সত্যনারায়ণ সত্যসিন্ধো
মগ্নং হি মামুদ্ধর তদ্বিয়োগে।।
শ্রুত্বাতশদ্ব ভগবানুবাচ
বচস্তদাকাশসমুদ্ভবং চ।।৬৪।। সাধো কলাবতী ক্ষিপ্ৰং মৎপ্রসাদং হি ভোজয়েৎ। তৎপশ্চাদিহ সংপ্রাপ্য পতিং প্রাপস্যতিমা শুচঃ।।৬৫। ইত্যাকাশে বচঃ শ্রুত্বা বিস্থিতা তচ্চকার সা। নারায়ণস্য কৃপয়া পতিং প্রাপ্তা কলাবতী।।৬৬।। তত্রৈব সাধুঃ সাহ্লাদো ভক্ত্যা পরময়া মুতঃ। পূজনং লক্ষমুদ্রাভি সত্যদেবস্য চাকরোৎ।।৬৭।। তেন ব্রত প্রভাবেন পুত্র পৌত্র সমন্বিতঃ। ভুক্ত্বা ভোগানমুদ্রা যুক্তো মৃতঃ স্কার্পুরং যযৌ।।৬৮।। ইতিহাসমিমং ভক্ত্যা শৃণুয়াদ্যো হি মানবঃ। সোহপি বিষ্ণুপ্রিয়তরঃ কামসিদ্ধিমবাপুয়াৎ।।৬৯।। ইতি তে কথিতং বিপ্ৰ ব্ৰতাণামুতমং ব্রতম্। কলিকালে পরাং পুণ্যং ব্রাহ্মণস্যং মুখোদভবম্।।৭০।।

সূতজী বললেন–তারা কলাকুশল, প্রবালরূপ রক্তচরণ সত্যনারায়ণকে রোরুদ্যমানা কলাবতী বললেন–এই পতি বিয়োগ থেকে আমকে উদ্ধার কর। তখন আকাশবাণী তাকে বলল–কলাবতীকে আমার প্রসাদ খাওয়াও। তারপর সে পতিকে প্রাপ্ত করবে। তা শুনে বিস্মিত হয়ে তারা প্রসাদ গ্রহণ করল। কলাবতী নিজ পতিকে ফিরে পেয়ে অত্যন্ত আনন্দিত হল। সাধু তারপর অত্যন্ত ভক্তি সহকারে একলক্ষ স্বর্ণমুদ্রা দিয়ে সত্যনারায়ণ পূজা করল। সেই ব্রতের প্রভাবে তিনি পুত্র পৌত্রাদিসহ সাংসারিক সুখ প্রাপ্ত হনে। এই পাবন ইতিহাস যে ব্যক্তি ভক্তিভাবে শ্রবণ করে সে দেব বিষ্ণুর প্রিয় হয়। সমস্ত সিদ্ধি ও কামনা প্রাপ্ত হয়। এই ব্রত আমি অত্যন্ত যত্নের সাথে বললাম। তা কলিকালে ব্রাহ্মণ মুখে শ্রবণ করলে পরম পুণ্য হয়।।৬৩-৭০।।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *