শ্রাবণরাত

শ্রাবণের গভীর অন্ধকার রাতে
ধীরে ধীরে ঘুম ভেঙে যায়
কোথায় দূরে বঙ্গোপসাগরের শব্দ শুনে?

বর্ষণ অনেকক্ষণ হয় থেমে গেছে,
যত দূর চোখ যায় কালো আকাশ
মাটির শেষ তরঙ্গকে কোলে করে চুপ করে রয়েছে যেন;
নিস্তব্ধ হয়ে দূর উপসাগরের ধ্বনি শুনছে।

মনে হয়
কারা যেন বড় বড় কপাট খুলছে,
বন্ধ করে ফেলেছে আবার;
কোন্ দূর—নীরব—আকাশরেখার সীমানায়।

বালিশে মাথা রেখে যারা ঘুমিয়ে আছে
তারা ঘুমিয়ে থাকে;
কাল ভোরে জাগবার জন্য।
যে সব ধূসর হাসি, গল্প, প্রেম, মুখরেখা
পৃথিবীর পাথরে কঙ্কালে অন্ধকারে মিশেছিল
ধীরে ধীরে জেগে ওঠে তারা;
পৃথিবীর অবিচলিত পঞ্জর থেকে খসিয়ে আমাকে খুঁজে বার করে।
সমস্ত বঙ্গোপসাগরের উচ্ছাস থেকে যায় যেন;
মাইলের পর মাইল মৃত্তিকা নীরব হয়ে থাকে।

কে যেন বলে:
আমি যদি সেই সব কপাট স্পর্শ করতে পারতাম
তা হলে এইরকম গভীর নিস্তব্ধ রাতে স্পর্শ করতাম গিয়ে।—
আমার কাঁধের উপর ঝাপসা হাত রেখে ধীরে ধীরে আমাকে জাগিয়ে দিয়ে।

চোখ তুলে আমি
দুই স্তর অন্ধকারের ভিতর ধূসর মেঘের মতো প্রবেশ করলাম;
সেই মুখের ভিতর প্রবেশ করলাম।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *