মনোকণিকা
ও. কে.
একটি বিপ্লবী তার সোনা—রুপো ভালোবেসেছিল ;
একটি বণিক আত্মহত্যা করেছিল পরবর্তী জীবনের লোভে ;
একটি প্রেমিক তার মহিলাকে ভালোবেসেছিল
তবুও মহিলা প্রীত হয়েছিল দশজন মূর্খের বিক্ষোভে।
বুকের উপরে হাত রেখে দিয়ে তারা
নিজেদের কাজ করে গিয়েছিল সব।
অবশেষে তারা আজ মাটির ভিতরে
অপরের নিয়মে নীরব।
মাটির আহ্নিক গতি সে নিয়ম নয় ;
সূর্য তার স্বাভাবিক চোখে
সে নিয়ম নয়—কেউ নিয়মের ব্যতিক্রম নয় ;
সব দিক ও. কে.।
সাবলীল
আকাশে সূর্যের আলো থাকুক না—তবু—
দণ্ডাজ্ঞার ছায়া আছে চিরদিন মাথার উপরে।
আমরা দণ্ডিত হয়ে জীবনের শোভা দেখে যাই।
মহাপুরুষের উক্তি চারিদিকে কোলাহল করে।
মাঝে—মাঝে পুরুষার্থ উত্তেজিত হলে—
(এ রকম উত্তেজিত হয় 😉
উপস্থাপয়িতার মতন
আমাদের চায়ের সময়,
এসে পড়ে আমাদের স্থির হতে বলে।
সকলেই স্নিগ্ধ হয়ে আত্মকর্মক্ষম ;
এক পৃথিবীর দ্বেষ হিংসা কেটে ফেলে
চেয়ে দেখে স্তূপাকারে কেটেছে রেশম।
এক পৃথিবীর মতো বর্ণময় রেশমের স্তূপ কেটে ফেলে
পুনরায় চেয়ে দেখে এসে গেছে অপরাহ্নকাল :
প্রতিটি রেশম থেকে সীতা তার অগ্নিপরীক্ষায়—
অথবা খ্রিস্টের রক্ত করবীফুলের মতো লাল।
মানুষ সর্বদা যদি
মানুষ সর্বদা যদি নরকের পথ বেছে নিত—
(স্বর্গে পৌঁছুবার লোভ সিদ্ধার্থও গিয়েছিল ভুলে,)
অথবা বিষম মদ স্বতই গেলাসে ঢেলে নিত,
পরচুলা এঁটে নিত স্বাভাবিক চুলে,
সর্বদা এ সব কাজ করে যেত যদি
যেমন সে প্রায়শই করে,
পরচুলা তবে কার সন্দেহের বস্তু হত, আহা,
অথবা মুখোশ খুলে খুশি হত, কে নিজের মুখের রগড়ে।
চার্বাক প্রভৃতি—
‘কেউ দূরে নেপথ্যের থেকে, মনে হয়,
মানুষের বৈশিষ্ট্যের উত্থান—পতন
একটি পাখির জন্ম—কীচকের জন্মমৃত্যু সব
বিচারসাপেক্ষভাবে নিয়ন্ত্রণ করে।’
‘তবু এই অনুভূতি আমাদের মর্তজীবনের
কিংবা মরণের কোনো মূলসূত্র নয়।
তবুও শৃঙ্খলা ভালোবাসি বলে হেঁয়ালি ঘনালে
মৃত্তিকার অন্ধ সত্যে অবিশ্বাস হয়।’
বলে গেল বায়ুলোকে নাগার্জুন, কৌটিল্য, কপিল,
চার্বাক প্রভৃতি নিরীশ্বর ;
অথবা তা এডিথ, মলিনা নাম্নী অগণন নার্সের ভাষা—
অবিরাম যুদ্ধ আর বাণিজ্যের বায়ুর ভিতর।
সমুদ্রতীরে
পৃথিবীতে তামাশার সুর ক্রমে পরিচ্ছন্ন হয়ে
জন্ম নেবে একদিন। আমোদ গভীর হলে সব
বিভিন্ন মানুষ মিলে—মিশে গিয়ে যে—কোনো আকাশে
মনে হবে পরস্পরের প্রিয়প্রতিষ্ঠ মানব।
এই সব বোধ হয় আজ এই ভোরের আলোর পথে এসে
জুহুর সমুদ্রপারে, অগণন ঘোড়া ও ঘেসেড়াদের ভিড়ে।
এদের স্বজন, বোন, বাপ—মা ও ভাই, ট্যাক, ধর্ম মরেছে ;
তবুও উচ্চস্বরে হেসে ওঠে অফুরন্ত রৌদ্রের তিমিরে।
নিরুক্ত। আশ্বিন ১৩৫০