প্যারিস-আমেরিকা
প্যারিসে গজেনের নজেন-ট্রিক মিডিয়ায় প্রবল কভারেজ পায়। সকল গে-লেসবিয়ান আপন মনে খেঁচা ছেঁড়া আর্টকে লাইভ আর্ট বানিয়ে প্রাক্টিস করতে থাকে। গজেনের সাথে আমেরিকান লাইভ আর্টিস্ট ডগলাসের পরিচয় করিয়ে দেয় বিয়াত্রেচ। ডগলাস নিউ ইয়র্কের ট্রাফল স্কোয়ারে প্লাক এণ্ড সেলফ-ফাক শো য়ের আয়োজনে গজেনকে নিয়ে হুজ্জুতির তাল করে। তিরিশ হাজার কলা সাজিয়ে এক বিকট ভাস্কর্য গড়ে তোলে ডগলাস-গজেন জুটি।
সাক ইয়োর ওন ডিক… নামে গজেনের খেঁচাছেঁড়া শিল্পের লাইভ আর্ট শুরু হয় বিকেল সাড়ে চারটে বেজে চল্লিশ সেকেণ্ডে ট্রাফল স্কোয়ারের মোড়ে। ডগলাস আগের দিন সারা রাত ধরে কলা সাজিয়েছেন। মাঝখানে গজেন উপুড়-শুয়ে কালো রঙ সারা গায়ে মেখে। জ্যান্ত কিনা বোঝা যাচ্ছে না। সিএনএন, বিবিসি ও লোক্যাল মিডিয়া কভার করছে। গজেন ছেঁড়া-শিল্প শুরু করতে গিয়ে টের পায় তার হাত পা প্রবল অবশ। মাথা ভোঁ ভোঁ করছে। লাল-প্যাকেটের কথা মনে পড়ে গজেনের। ভীড়ের মাঝে কোনো চেনা মুখ দেখতে পায় না গজেন। ডগলাস কোথায়? কোথায় গন্ধক? কোথায় নিবু? কোথায় ম্যাডিউ? কোথায় রবীন কোথায় শ্যামা-মেয়ে? কোথায় কোপাই? কোথায়……? বাংলার বালেরা সক্কলে…? ওঠার চেষ্টা করে আবার নেতিয়ে পড়ে গজেন।
প্রেসিডেন্সির ল্যাবে অ্যাসিড মেরে ভার্চুয়্যাল মিডিয়ামে চোখ রেখেছেন অ্যাসিডিশ ইন্টারন্যাল নেটোয়ার্কে…। বর্ণেশ্বর-সুবার্স্ট-নোরেন সকলে লাল-প্যাকেট মোক্সা-মারিজুয়ানা গেট ওয়ে প্রোটোকলে কানেক্ট করেছেন। আছেন নিবু-ম্যাডিউ-অঁরিয়েত। কালীর মন্দিরে সমাধিস্থ গদা। পুজোয় বসেছেন রশিদা। গিরিশ আকন্ঠ পান করে ধ্যানস্থ। ট্রাফেল স্কোয়ারের দৃশ্য রিলে করে যাচ্ছেন অ্যাসিডিশ। ডিফারড লাইভে একটু পরের টাইমে দেখছেন অ্যাসিডিশের ফাস্ট লেভের চেলারা নিজের ঘরে বসে। স্ট্যাচু অব লিবার্টির হাতের মশালে হঠাৎ আগুন জ্বলে উঠলো….। ট্রাফেল স্কোয়ারের মাটি কাঁপছে রিখটারে। নাসার স্যাটেলাইট লিঙ্ক ফ্র্যাকশানাল সেকেণ্ডে ফেল করে গেল পর পর দুবার। ওয়ার্লড ব্যাঙ্কের ডেটা লস হলো বলে মনে হলো অ্যাসিডিশের। পরের লেয়ারে ঢুকে গেলেন তিনি।
গজেনের মনে হলো তার ওঠার শক্তি নেই। প্রবল ঘুম-সমাধি তাকে টানছে মাটির ভেতরের কোনো এক মহাকাশে। ট্রেন লাইনের ধারের অ্যারিবিনের সাদা দাড়ি দেখতে পেলো গজেন। শ্যামা-রবীনের কোপাই-খোয়াই পথে ছাতিম গাছতলায় সিক্ত-যূথীর মালা গাঁথছেন নিবু…। দূরে কোথায় দূরে দূরে বলাকার মতো মন হংস-বিষাদে উড়ে যাচ্ছে। হঠাৎ অনেক ভারী জুতোর শব্দ। আজাদ হিন্দ বাহিনীর পতাকা। কদম কদম বাড়ায়ে যা….এলগিন রোডের বৃদ্ধ মৃদু হাসলেন। আকালীর পায়ের সামনে গজেন। পেছনে গদা-ঠাকুরের হালকা কিক-শট। হে গজেন ভুলিও না….গেরুয়া পাগড়ি মাথায় নোরেন হাতে মোক্সা মারিজয়ানার প্যাকেট। ইউ ক্যান মেক ইট গজেন…..নিবুর গলা…নিবু কাঁদছেন….গজেন…..কমো সাভা….বিয়াত্রেচের হাস্কি ভয়েস…..ঐক্য-বাক্য-মানিক্য….বর্ণেশ্বরচন্দ্র…..ধারাপাতের প্রচ্ছদ দেখতে পেল গজেন…। দুশো ক্যামেরার লেন্সের সামনে ট্রাফেল স্কোয়ারে পড়ে আছে গজেন…. আবার দুলে উঠলো বিকেলের নিউ ইয়র্ক সিটি। জন এফ কেনেডি এয়ারপোর্টের গ্রাউণ্ড গাইড লিঙ্ক-গাইডিং মিস করলেন একবার।
দুশো বারো-টা ফ্লাইটের ড্যাশবোর্ড নো-সিগন্যাল… ন্যানো সেকেণ্ডের জন্য। অ্যাসিডিশ ল্যাবে চোখ বোজা অবস্থায়….। গজেন ভাইব্রেট করছে ট্রাফল স্কোয়ারে। ডগলাস হঠাৎ খুব চেস্ট-পেইন ফিল করলেন। গজেনের কাছে আসতে পারলেন না ডগলাস। গজেনের ভাইব্রেশন ক্যামেরা জম করে রেকর্ড করার চেষ্টা করলেন সি-এন-এনের মারী….। সময়ের হিসেবে তিরিশ মিনিট চলে গেলো। সকলে স্থির। লাইভ আর্ট চলছে…..গজেন অনেকবার ওঠার চেষ্টা করে যাচ্ছে….একবার তার মনে হলো বিস্ফোরণের শব্দ হলো কোথাও। মহাকাশে হাজার আলোকবর্ষ দূরে অন্য মহাবিশ্বে প্রবল মহাজাগতিক খেঁচা-ছেঁড়ায় উড়ছে গজেনের বাল। তার বীর্যরসে ভেসে যাচ্ছে অগণিত গ্যালাক্সি…। তরল গলিত উল্কা নিক্ষিপ্ত হচ্ছে তার অঙ্গ-প্রান্ত থেকে….। নতুন ডাইমেনশন তৈরি করছে গজেনের নজেন ট্রিক। মহাবিশ্বে মহাকাশে মহাকাল মাঝে গাইতে গাইতে ছুটে আসছেন রবীন। অবিকল কোপাইয়ের পাড়….সেই ছাতিম-তলা। পাশে নাচছে শ্যামা-মেয়ে ব্ল্যাক হোলে মিশে যাচ্ছে শ্যামা…..। ঘুরন্ত স্পাইরালে অ্যারিবিন দেখা দিয়ে হারিয়ে গেলেন….সাদা দাড়ি আলখাল্লা……মোক্সা মারিজয়ানা মাল্টিভার্স……হোলোগ্রাফিক ইউনিভার্সের নক্ষত্রগুলোর গায়ে লেখা। এক বিশাল হাঁস….অক্টোপাস ভেসে বেড়াচ্ছে মহাশূন্যে….। গদা-ঠাকুর সমাধিতে… হাসছেন কেন…? গজেন আমার পাগলা গজেন বলে চোখ মেলে আবার সমাধিতে চলে গেলেন গদা-ঠাকুর…. রশিদা মাথায় হাত রাখলেন। এক-বাটি পায়েস দিয়ে গেলেন…। হে গজেন…ওঠো জাগো….আবার বললেন নোরেন…..। আচার্য অ্যাসিডিশ প্রেসিডেন্সির ল্যাবে…..দেখতে পাচ্ছে গজেন…। গজেন তুমি কোথা হইতে আসিতেছ? শুনতে পেলো গজেন…..মহাদেবের জটা হইতে…কে পাশ থেকে বললেন… বর্ণেশ্বরচন্দ্র? না…..এলগিন রোডের বৃদ্ধ…? বুঝতে পারছে না গজেন…..
গজেন তুমি কোথায় যাইতেছ……?
গজেন তুমি কি বাল ছিঁড়িতেছ….?
গজেন তুমি কি বাংলার বাল দেখিয়াছ….?
গজেন তুমি কি পৃথিবীর বাল ছিঁড়িতেছ….?
গজেন ওনলি ইউ ক্যান মেইক ইট…….!
গো-জেন ওয়ে সাল্লে……
গজেন আমার গজেন…….
গজেন আররে বাঁড়া কি ছিঁড়িস শালা!
তুমি পারবে গজেন……..
গো-জেন…..কমো সাভা…….
গজেন ইউ আর সো কিউট…..
গজেন গেট আপ নাউ……..
গজেন ইউ আর আ রেনেসাঁ ম্যান!
গজেন…..গজেন্দ্র…….ওষুধ খেয়েছো? ইউ হ্যাড ইয়োর মেডিসিন…?… গজেন…?
গজেন্দ্র আবার ওষুধ খেতে ভুলে গেছে। সে কি সত্যি পাগল? ছাতা-মাথা ছাতিম-বকুল জুড়ে আবার কুল-হট স্বপনমদির নেশায় উন্মত্ততা জেগে ওঠে। ওঠাপড়া করে তার গোপনাঙ্গ। হস্ত নিশপিশ করে। অমলের পিসে পাশের বাড়ি থেকে উঁকি মারেন তার আঁখির পানে মনে হয়। পানু সাইটের ডাকসাইটে পিঁপড়েরা সূদূরের পিয়াসী হয়ে সারিবেঁধে চলতে থাকে রৌদ্রমাখানো অলসবেলায়। মাখানো ও ছড়ানোর ছলচ্ছল ঝর্ণাতলার নির্জনে কে একাকী বসে থাকে গজেন্দ্রর তরে সক্কল নিয়ে অন্য কারো সব্বোনাশের আশায়। তবু মনে রাখে গজেন্দ্র যে দিন ভেসে গেছে বারে বারে চোখের ও নদীর জলে তার ছায়া দেখে যায়। ছাতিমতলে গ্রামছাড়া রাঙামাটি বীরভূমের পথে পথভোলা এক পথিক হেঁটে যায় গজেন্দ্রর সুখস্বপনে। ধড়াম ভেঙে যায় দুয়ার মাঝরাতে…