পোয়া বারো
পোয়া বারো অর্থ অতিরিক্ত সৌভাগ্য। পোয়া বারো কথাটি কোথা থেকে এসেছে সে বিষয়ে আমাদের ধারণা পরিষ্কার হওয়া দরকার।
আজকাল পাশা খেলার প্রচলন তেমন নেই বললেই চলে। তবে গত শতাব্দীর ষাটের দশকেও আমরা এ খেলা দেখেছি। পাশা খেলার অন্য নাম অক্ষক্রীড়া, দ্যূতক্রীড়া, পাষ্টি, পাশক ইত্যাদি। এ খেলায় তিনটি ঘুটি থাকে। প্রত্যেক ঘুটিতে ১ থেকে ৬ পর্যন্ত ফোটা থাকে। লুডুর ঘুটিতে ছক্কা (৬) থেকে পোয়া (১) পর্যন্ত ছয়টি চিহ্ন থাকে। তবে পাশার লম্বা ঘুটিতে থাকে ১, ২, ৫ ও ৬ সংখ্যা।
লুডুতে একটি ঘুটি চালতে হলেও পাশা খেলায় একত্রে তিনটি ঘুটি তালুতে নিয়ে চালতে হয় মাটিতে। এই চালকে বলে দান। লুডুতেও চালকে দান বলা হয়। ঘুটিকে ছকও বলা হয়ে থাকে। প্রাচীনকালে কখনো চারটি ঘুটি, আবার কখনো পাঁচটি ঘুটি ব্যবহৃত হতো পাশা খেলায়। এটি ছিল জুয়া খেলার নামান্তর। বৈদিক পাশায় থাকতো চারটি ঘুটি-কৃত্য (সত্য) = ৪, ত্রেতা = ৩, দ্বাপর = ২ ও কলি = ১।
এ যুগে পাশার তিনটি ঘুটি বা ছক তালুতে নিয়ে মাটিতে ফেলার পর তিনটি ঘুটিতে যথাক্রমে ৬, ২ ও ১ অর্থাৎ মোট ৯ হলে খেলা শুরু করা হয়। আবার দুটি ঘুটিতে ৬ এবং একটি ঘুটিতে পোয়া বা ১ যদি পড়ে তবে সে দান বা চাল খুব দামি হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি জয়সূচক চাল। এজন্য একটির পোয়া বা এক এবং অপর দুটির ছয় এবং ছয় মিলে বারোকে বলা হয় পোয়া বারো। অতিশয় ভাগ্যবান খেলোয়াড় এই ভালো দান পায় ভাগ্যগুণে। এ কারণে পোয়া বারো প্রবাদের সৃষ্টি যার অর্থ অতিশয় ভাগ্য।