পটমঞ্জরী – অভীক সরকার
প্রথম প্রকাশ নভেম্বর ২০২২
প্রচ্ছদ ও অলংকরণ – সুব্রত মাজি
.
‘বঙ্গ আমার জননী আমার
ধাত্রী আমার আমার দেশ’
.
ভূমিকা
লেখকের কৈফিয়তের প্রাথমিক শর্ত হচ্ছে সত্যকথন। আমি আদ্যন্ত অলস মানুষ, মহান কাজকর্মের নাম শুনলেই আমার গায়ে কম্প দিয়ে জ্বর আসে। তাই বলে রাখি যে এটি বস্তুতপক্ষে একটি ফরমায়েশি উপন্যাস।
বক্তব্যটা খুলে বলা দরকার।
সালটা ছিল ২০১৮, মাস এপ্রিল৷ বাংলা নববর্ষ সমাগত। কলেজ স্কোয়্যারে তখন সেই উপলক্ষ্যে একটি বইমেলা চলছে। এক শনিবারের বিকেলে মেলায় ঢুঁ মারলাম। শ্রীত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় তখন পত্র ভারতীর স্টলের বাইরে বসে কারও সঙ্গে আলোচনায় ব্যস্ত ছিলেন৷ আমি হঠাৎ দেখি ত্রিদিববাবুও আমার দিকে তাকিয়ে! চোখাচোখি হতেই জিগ্যেস করলেন, তুমিই অভীক সরকার? ঘাড় নাড়তেই বসিয়ে দিব্যি আলাপ করলেন৷ বললেন একদিন অফিসে আসতে।
পরের সপ্তাহেই পত্র ভারতীর অফিসে গেলাম। ত্রিদিববাবু তো ছিলেনই, আলাপ হল আরেক লিভিং লিজেন্ড-এর সঙ্গে, অনীশ দেব।
সেইদিনই ত্রিদিববাবু আমাকে বলেন পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের নিজস্ব ম্যাগাজিন ‘বইমেলা’র জন্য একটি উপন্যাস লিখে দিতে, যেটি আসন্ন, অর্থাৎ ২০১৯-এর বইমেলায় প্রকাশিত হবে।
সেই রাতে বাড়ি ফিরে ‘পটমঞ্জরী’ লেখায় হাত দিই।
বাংলার গৌরবময় ইতিহাস নিয়ে লেখার সুপ্ত ইচ্ছে মনের মধ্যে ছিলই৷ ঠিক করলাম গোপালদেবের রাজ্যাভিষেক নিয়েই একটি উপন্যাস লিখব।
গোপাল কীভাবে রাজা হন তার বহুতর বিবরণ আছে। ধর্মপালের তাম্রলিপি ‘‘খলিমপুর তাম্রশাসন আমাদের জানাইতেছে মাৎস্যন্যায় দূর করিবার অভিপ্রায়ে, প্রকৃতিপুঞ্জ যাঁহাকে রাজলক্ষ্মীর করগ্রহণ করাইয়াছিল, পূর্ণিমা রজনীর জ্যোৎস্নারাশির অতিমাত্র ধবলতাই যাঁহার স্থায়ী যশোরাশির অনুকরণ করিতে পারিত, নরকুল-চূড়ামণি গোপাল নামক সেই প্রসিদ্ধ বপ্যট হইতে জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন’’ (রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুবাদ)। এই খলিমপুর তাম্রলিপি থেকেই আমরা গোপালদেবের পিতা বপ্যট এবং পিতামহ ‘সর্ববিদ্যাবদাত’ দয়িতবিষ্ণুর নাম জানতে পারি।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, জনসাধারণ ঠিক কীভাবে বাংলার রাজত্বভার গোপালদেবের হাতে তুলে দিলেন?
এই প্রসঙ্গে লামা তারানাথের লেখা বহুল প্রচলিত কাহিনিটি অনেকেই জানেন। তিনি লিখছেন, যে সেই সময়ে বহু বছর ‘ভঙ্গাল’ দেশে কোনও রাজা ছিলেন না। জননায়করা মিলিত হয়ে রাজ্যের সুশাসনের জন্য একজন রাজা নির্বাচিত করলেন। কিন্তু পূর্বতন রাজার কোনও মহিষী নাগীর রূপ ধরে সেই রাজাকে হত্যা করলেন। এই ঘটনা চলতেই থাকল। ইতিমধ্যে পুণ্ড্রবর্ধনের কাছাকাছি কোথাও জনৈকা ক্ষত্রিয়া রমণীর গর্ভে বৃক্ষদেবতার ঔরসে এক বীরপুরুষের জন্ম হয়েছিল। তিনি তাঁর আরাধ্যা দেবী চুন্দার উপাসনা করে একটি কাষ্ঠনির্মিত গদা আশীর্বাদ হিসেবে পান। তারপর দেবীর আদেশে তিনি ভঙ্গালদেশে আসেন এবং বহুতর ঘটনার পর সেই দৈবী গদার আঘাতে রাক্ষসীরূপিণী নাগীকে হত্যা করেন। তখন তাঁকেই গোপাল নাম দিয়ে দেশের স্থায়ী রাজা হিসেবে নির্বাচিত করা হল।
ব্যক্তিগতভাবে বৌদ্ধধর্মের ইতিহাস নিয়ে চর্চা করছি বেশ কয়েকবছর। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন যে হর্ষবর্ধনোত্তরকালে ভারতে বৌদ্ধধর্মের গৌরব-রবি অস্তমিত হয় এবং বৌদ্ধধর্ম কেবলমাত্র ভারতের পূর্বদিকে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। তখন বৌদ্ধধর্মের অবক্ষয়ের কালও বটে। বৌদ্ধধর্মের মধ্যে প্রবেশ করছে বিভিন্ন লৌকিক আচার এবং দেবদেবীরা।
আমরা জানি যে সভ্যতার ইতিহাসে ধর্মের গতি বারবার রাজনীতির প্রকৃতি নির্ধারণ করেছে এবং তার উল্টোটাও ঘটেছে বারংবার। বাংলার ইতিহাস তাই বৌদ্ধধর্মের ইতিহাস বাদ দিয়ে হয় না। বাংলার ভাগ্যনিয়ন্তা হিসেবে তাঁদের ধর্মনায়কদের ভূমিকা রাজপুরুষদের থেকে কিছুমাত্র কম নয়।
হয়তো বা এই সূত্র ধরেই বাংলার ইতিহাসের ওই ক্রান্তিকালে অভূতপূর্ব গণজাগরণ হয়েছিল, যার নেতৃত্বে ছিলেন বিভিন্ন শৈব এবং সহজিয়া বৌদ্ধ সাধকবর্গ এবং কয়েকজন স্বপ্নদ্রষ্টা বিদ্রোহী নায়ক। সেই ভাবনার সূত্র ধরে এলেন বপ্যট এবং মহাযোগী মৎস্যেন্দ্রনাথ। গোপালদেবের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়ালেন বজ্রযান বৌদ্ধধর্মের এক অলোকসামান্য মহাপুরুষ—পদ্মসম্ভব। এলেন শান্তরক্ষিত, মন্দর্ভা, ললিতাদিত্য মুক্তাপীড়ের পৌত্র জয়াপীড়, দেদ্দদেবী, শবরবজ্র।
আর এলেন প্রকাশচন্দ্র। তাঁর সমস্ত তামসিক, বিধ্বংসী প্রতিভা নিয়ে। এলেন বাংলার রানি, লামা তারানাথের সেই রাক্ষসীরূপী নাগিনী।
স্পষ্ট করে বলে দেওয়া ভালো যে ইতিহাসাশ্রয়ী হলেও এটি আদতে একটি উপন্যাস। পাঠকদের প্রতি সনির্বন্ধ অনুরোধ, একে ইতিহাসের বই হিসেবে না পড়ে উপন্যাস হিসেবেই পড়বেন।
সম্পূর্ণ উপন্যাসটি তিনটি পর্বে বিন্যস্ত। প্রথম বা আদিপর্ব প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৯ সালের বইমেলায়, পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের পত্রিকায়। বাকি দুটি পর্ব (মধ্যপর্ব এবং অন্ত্যপর্ব) লিখতে প্রায় তিন বছর লেগে গেল। এই যাত্রাপথে অনেক গুণীজনের কাছ থেকে বিভিন্ন সাহায্য পেয়ে ঋদ্ধ হয়েছি। তাঁদের কাছে আমি ঋণী। দুইজনের কথা বলতেই হবে। বইটির প্রাথমিক সম্পাদনা করেন অগ্রজ সাহিত্যিক শ্রীরাজা ভট্টাচার্য মহাশয়। অন্তিম সম্পাদনা এবং মার্জনা করেন শ্রীত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায় স্বয়ং। এঁদের কাছে আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।
পরিশেষে কৃতজ্ঞতা জানাই আমার স্ত্রী সঙ্ঘমিত্রা এবং কন্যা আরাত্রিকাকে, এই দীর্ঘ সময়ে আমার সাংসারিক কর্তব্যের ত্রুটিবিচ্যুতি সহ্য করার জন্য। প্রণাম জানাই আমার বাবা এবং মা’কে, যাঁদের আশীর্বাদ ছাড়া আমার কোনও উদ্যোগই সুসম্পন্ন হয় না।
সবশেষে প্রণাম জানাই পাঠকদের। অলমিতি।
অভীক সরকার
দুর্গাষষ্ঠী। ১৬ই আশ্বিন। ১৪২৯ বঙ্গাব্দ।
দমদম।
.
যুদ্ধ শুরুর আগে
সন্ধ্যা নেমে আসছে দ্রুত৷ আকাশের পশ্চিমদিক রক্তাভ। দেব দিবাকর অস্তাচলগামী। নীড় প্রত্যাশী পাখিদের কলকাকলিতে চারিদিক মুখরিত।
কলস্বিনী মেঘান্দ বয়ে চলেছে পূর্বসমুদ্রের দিকে। এই শীর্ণা, ক্ষীণা মেঘান্দকে দেখে কে বলবে, প্রবল বর্ষায় কী ভয়ঙ্কর রূপই না ধারণ করে এই নদী। স্রোতে, গর্জনে, উথাল পাথাল ঢেউতে তার সে কী মহানাগিনী রূপ।
বাতাসে হিমের পরশ। হেমন্তের রিক্ততা প্রকৃতির সর্বাঙ্গে৷ যতদূর চোখ যায় শুধু শূন্যতা। নদীর তীরে স্থির হয়ে বসেছিলেন এক পুরুষ। বসেছিলেন বজ্রাসনে। সুঠাম এবং ঋজু দেহ। কুঞ্চিত কেশদাম চূড়া করে মাথার ওপরে বাঁধা। চোখদুটি তীব্র এবং অন্তর্ভেদী। আপাতত সেই চোখের দৃষ্টি নিবদ্ধ মেঘান্দ’র স্রোতের দিকে।
একটু পিছনে শ্মশানভূমি। তার একপাশে দুটি অস্থায়ী কুটির। গৃহত্যাগী সন্ন্যাসী বা ছন্নছাড়াদের সাময়িক আবাস।
একটি কুটিরের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন আরেক বিশালদেহী পুরুষ। ইনি একজন অরণ্যচারী শবর। কটিদেশ পশুচর্মাবৃত, পিঠে শবরধনু ও তূণ।
নদীতীরে বজ্রাসনে বসে থাকা পুরুষটির প্রতি ইতস্ততভাবে প্রশ্ন ভাসিয়ে দিলেন শবর, ‘আচার্য, আর কতদিন অপেক্ষা করতে হবে এখানে?’
আচার্য গম্ভীরস্বরে উত্তর দিলেন, ‘জানি না মিত্র। তবে আদিনাথ স্বপ্নাদেশ দিয়েছেন যে আজই আমি সন্ধান পাব সেই অব্যর্থ অস্ত্রের।’
দীর্ঘশ্বাস ফেললেন শবর পুরুষ। কজঙ্গলের অরণ্য ছেড়ে এই অস্থায়ী কুটিরে থাকতে তাঁর ভালো লাগছে না। কিন্তু আচার্য’র অনুরোধ বা আদেশ উপেক্ষা করার সাহস তাঁর নেই।
কথাটা ভেবেই লজ্জা পেলেন তিনি। এই মহাযোগীকে কি শুধু ভয় করেন তিনি? তা তো নয়। ভালোও তো বাসেন।
নিখাদ, নিষ্পাপ ভালোবাসা। তাই তো এঁর এক ডাকে এখানে এসেছেন। কুটির বেঁধে আছেন।
মাসখানেক পূর্বে মহাযোগী অবস্থান করছিলেন তাঁর কাছে। আসন্ন মহাবিপ্লবের কিছু পরিকল্পনার জন্য। সেখানেই আদিনাথের স্বপ্নাদেশ পান। একমাস পর পূর্ণিমার দিনে সন্ধ্যা আর রাত্রির স্পর্শমুহূর্তে মেঘান্দ’র জলে ভেসে আসবে বঙ্গদেশের সৌভাগ্যচিহ্ন। আসন্ন মহাবিদ্রোহের সময়ে সেই সৌভাগ্যচিহ্ন যেন তাঁদের সঙ্গে থাকে, আদিনাথের কঠোর নির্দেশ।
সন্ধ্যা শেষ হয় হয়। এমন সময় আচার্যের চোখে পড়ল কী যেন একটা ভেসে আসছে মেঘান্দের বুকে। মুহূর্তের মধ্যে জলে ঝাঁপ দিলেন মহাযোগী মৎস্যেন্দ্রনাথ।
.
ক্রুদ্ধচোখে নগ্ন দেহটির দিকে তাকিয়েছিলেন মৎস্যেন্দ্রনাথ আর শবর পুরুষ। দেহটি এক নারীর। কতই বা বয়েস হবে এর? পঞ্চদশী? ষোড়শী? দেহটির সর্বাঙ্গে হিংস্র দংশন। বোঝা যায় একাধিক পাশবিক ধর্ষণের শিকার হয়েছে এই কন্যা। হিংস্র নেকড়ের দল যেভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে ত্রস্তা হরিণীর ওপর, সেভাবেই একে ভোগ করেছে কতিপয় নরাধম।
‘এ কার কাজ হতে পারে আচার্য?’
শক্তমুখে উত্তর দিলেন মৎস্যেন্দ্রনাথ, ‘হরিকেলের শাসনভার এখন হরিদত্ত নামক এক কামুক রাক্ষসের হাতে। এই কাজ তার বা তার অনুগত নপুংসক রাক্ষসবাহিনী ছাড়া আর কারও হতে পারে না।’
নির্বিচার গণধর্ষণের পর নিঃসাড় দেহটি মৃতভ্রমে কাঠের পাটাতনে বেঁধে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেটিই চোখে পড়েছিল মৎস্যেন্দ্রনাথের। দেহটি তুলে আনার পর বোঝা যায় যে এখনও প্রাণ রয়ে গেছে কন্যাটির দেহে।
‘আচার্য, কে হতে পারে এই কন্যা?’
‘জানি না মিত্র, তবে অনুমান করতে পারি। ধর্ষকরা যেভাবে দেহটি ভাসিয়ে দিয়েছে, তাতে বোঝা যায় যে তারা চেয়েছিল দেহটির যেন সন্ধান না পাওয়া যায়। নইলে দেহটি তারা হরিকেলেই কোথাও ডুবিয়ে দিতে পারত, বা পুড়িয়ে দিতে পারত, অথবা মাটিতে পুঁতে দিতে পারত। তা যখন করেনি তার মানে কৃতকর্মের কোনও প্রমাণ রাখতে চায়নি দুষ্কৃতীর দল। অর্থাৎ তাদের মনে ভয় ছিল। এই কন্যা কোনও সাধারণ কন্যা নয় মিত্র। কোনও প্রভাবশালী রাজপুরুষের পরিবারের কেউ হবে।’ এই বলে উঠে দাঁড়ালেন মৎস্যেন্দ্রনাথ, ‘হরিদত্ত’র মহামাত্য হচ্ছেন জয়নাথ। বিচক্ষণ, ক্ষমতাধর এবং প্রতিভাবান পুরুষ। তাঁর একটি প্রাণপ্রিয় ভাগিনেয়ী ছিল। শুনেছিলাম তার বিবাহ সামনেই। আমি জানি না এই হতভাগিনী সে কী না। তবে আদিনাথ একেই নির্দিষ্ট করেছেন বাংলার ভাগ্যলক্ষ্মী বলে। এই ধর্ষিতা হতভাগিনী হয়ে উঠুক আমাদের সর্বোত্তম অস্ত্র। একে আপনার হাতে সমর্পণ করলাম মিত্র শবরবজ্র। বাংলার ভাগ্যলক্ষ্মীকে আসন্ন মহাবিদ্রোহের পূর্বে রণলক্ষ্মী করে তুলুন। এই আমার অনুরোধ।’
দুজনে দাঁড়িয়ে ছিলেন কুটিরের সামনে। শবরবজ্র হুঙ্কার দিয়ে উঠলেন, ‘কালী, কালী রে।’
অন্য কুটির থেকে ধীর পায়ে বেরিয়ে এলেন এক রমণী।
প্রথম যেদিন এই রমণীকে দেখেন, অভিভূত হয়েছিলেন মৎস্যেন্দ্রনাথ। এই নারী অরণ্যসম্ভূতা, সিদ্ধাচার্য শবরবজ্রের পালিতা কন্যা। একই অঙ্গে এমন ভয়ঙ্করী অথচ মোহময়ী রূপ দেখেননি তিনি। এমন ঘনকৃষ্ণ বর্ণ সচরাচর দেখা যায় না। তার মেঘের মতো উন্মুক্ত কেশরাশি নেমে এসেছে কটিদেশ অবধি। সুডৌল স্তনদুখানি উন্মুক্ত। চোখ দুখানি স্থির এবং রক্তাভ। কটিদেশে বিভিন্ন প্রাণীর অস্থি দিয়ে তৈরি একটি বিচিত্র মেখলা।
এই নারীকে ভয় করেন মৎস্যেন্দ্রনাথ। শুধু ভয় নয়, অনেকটা সম্ভ্রম আর শ্রদ্ধাও মিশে থাকে তার মধ্যে। এত ক্ষিপ্র, এত তীব্র, এত রণোন্মত্তা নারী দেখেননি মৎস্যেন্দ্রনাথ।
শুধু তাই নয়, সমগ্র অরণ্য শাসন করে এই নারী। কজঙ্গলের প্রতিটি প্রাণী এর অনুগত। এটা স্বচক্ষে না দেখলে বিশ্বাস করতেন না মৎস্যেন্দ্রনাথ।
আর শ্মশান! শ্মশানের প্রতি কেন যে এত অদ্ভুত মোহ আছে এই নারীর, জানেন না মৎস্যেন্দ্রনাথ।
নারীটি এসে দাঁড়াল। তারপর তার চোখ পড়ল শায়িতা মৃতবৎ কন্যাটির ওপর।
এর পর যা ঘটল, তার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না মৎস্যেন্দ্রনাথ। মনে হল অকস্মাৎ যেন শত কৃষ্ণগহ্বরের আলো বিস্ফারিত হল নারীটির শরীর জুড়ে। মুহূর্তের মধ্যে অব্যক্ত ক্রোধে দ্বিগুণ ফুলে উঠল তার শরীর। চোখদুটি রক্তাক্ত হয়ে উঠল! উন্মুক্ত কেশদাম উড়তে লাগল ভয়াল অশনির মতো।
চক্ষু তুলে পালক পিতার দিকে ক্ষণেক তাকাল সেই নারী। পিতাপুত্রীর মধ্যে চোখে চোখে কী কথা হয়ে গেল বুঝতে পারলেন না মৎস্যেন্দ্রনাথ। শুধু দেখলেন ধর্ষিতা কন্যাটির অচৈতন্য দেহখানি পরম মমতায় দু’হাতে তুলে নিজের কুটিরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ভয়ঙ্কর সেই নারী।
আমি এই “পটমঞ্জরী” বইটি পড়তে চাই। অনুগ্রহ করে এটার এক্সেস কীভাবে পেতে পারি, তা জানলে উপকৃত হবো।
I want to get access to patmanjari
কিছু বই লগইন করে পড়তে হবে।
কিভাবে।log in করবো? মানে পদ্ধতি টা কি ? Already to gmail diye log in করেই পড়ি?paid non paid এর ব্যাপার?
Patamanjari boita kivave porbo?
কিভাবে।log in করবো? মানে পদ্ধতি টা কি ? Already to gmail diye log in করেই পড়ি?paid non paid এর ব্যাপার?