নারী তুমি ধন্যা–
আছে ঘর, আছে ঘরকন্না।
তারি মধ্যে রেখেছ একটুখানি ফাঁক।
সেথা হতে পশে কানে বাহিরের দুর্বলের ডাক।
নিয়ে এসো শুশ্রূষার ডালি,
স্নেহ দাও ঢালি।
যে জীবলক্ষ্মীর মনে পালনের শক্তি বহমান,
নারী তুমি নিত্য শোন তাহারি আহ্বান।
সৃষ্টিবিধাতার
নিয়েছ কর্মের ভার,
তুমি নারী
তাঁহারি আপন সহকারী।
উন্মুক্ত করিতে থাকো আরোগ্যের পথ,
নবীন করিতে থাকো জীর্ণ যে-জগৎ,
শ্রীহারা যে তার ‘পরে তোমার ধৈর্যের সীমা নাই,
আপন অসাধ্য দিয়ে দয়া তব টানিছে তারাই।
বুদ্ধিভ্রষ্ট অসহিষ্ঞু অপমান করে বারে বারে,
চক্ষু মুছে ক্ষমা কর তারে।
অকৃতজ্ঞতার দ্বারে আঘাত সহিছ দিনরাতি,
লও শির পাতি।
যে অভাগ্য নাহি লাগে কাজে,
প্রাণলক্ষ্মী ফেলে যারে আবর্জনা-মাঝে,
তুমি তারে আনিছ কুড়ায়ে,
তার লাঞ্ছনার তাপ স্নিগ্ধ হস্তে দিতেছ জুড়ায়ে।
দেবতারে যে পূজা দেবার
দুর্ভাগারে কর দান সেই মূল্য তোমার সেবার।
বিশ্বের পালনী শক্তি নিজ বীর্যে বহ চুপে চুপে
মাধুরীর রূপে।
ভ্রষ্ট যেই, ভগ্ন যেই, বিরূপ বিকৃত,
তারি লাগি সুন্দরের হাতের অমৃত।
উদয়ন, ১৩ জানুয়ারি, ১৯৪১ – সকাল