নাটকের তৃতীয় চরিত্র

১০. নাটকের তৃতীয় চরিত্র

ঘুম ভেঙেছিল কর্নেলের ডাকে। তখন প্রায় দশটা বাজে। উনি অভ্যাসমতো প্রাতঃভ্রমণ থেকে ফিরেছিলেন। বাইরে রোদ্দুর ঝলমল করছে। তবে দুরে ইতস্তত ঘন কুয়াশা। বারান্দায় বসে ব্রেকফাস্ট খেতে খেতে বললেন, তরুণবাবু ওঁর ব্রাঞ্চ অফিসের জিপ নিয়ে কলকাতা রওনা হয়ে গেছেন।

বললাম, বিগ্রহ ওঁকে দিয়েছেন নাকি?

কেন দেব না? ওঁদেরই পূর্বপুরুষের ঐতিহাসিক বিগ্রহ।

আমার আর এখানে থাকতে একেবারে ইচ্ছে করছে না!

কর্নেল হাসলেন। পায়ের ব্যথা কমেছে?

নাহ।

তোমাকে নিয়ে গিয়ে দেখাতাম সন্ধ্যানীড়ের কোন ঘরে বন্দী ছিলে।

দেখতে চাইনে।

আমি দেখে এসেছি। দুটো দড়ি, একটা রুমাল এবং একটুকরো টেপ ওই ঘরে পড়ে ছিল। কুড়িয়ে এনেছি। স্যুভেনির ডার্লিং! যত্ন করে সাজিয়ে রেখো।

আপনি রাখবেন।

দুটো ছেঁড়া মুখোশ উঠোনের জঙ্গলে কুড়িয়ে পেয়েছি। ইঁদারায়—

আপনি তো আমার মুখে কিছু শোনেননি এখনও।

বুঝতে পেরেছি। শুনবখন। তো যা বলছিলাম। ইদারায় উঁকি মেরে দেখলাম পাথরে ভর্তি। কেমন একটা বিচ্ছিরি গন্ধ।

শ্যামসুন্দরের লাশ উঁদারার তলায় আছে। ওরা বলাবলি করছিল।

পুলিশকে জানিয়ে এসেছি। পুলিশ ইদারা থেকে শ্যামসুন্দরের কঙ্কাল উদ্ধার করতে ব্যস্ত। কর্নেল ডিমের পোচ চেটেপুটে খেয়ে ফের বললেন, তুমি যে ঘরে ছিলে, তার পাশের একটা ঘরের মেঝে খোঁড়া হয়েছে দেখলাম। এল প্যাটার্নের বাড়ি। সামনে দাঁড়িয়ে ডানদিক থেকে গুনলে ওটা ৮ নম্বর ঘর। আবার বাড়ির ভেতর উঠোনে দাঁড়িয়ে ডান দিক থেকে গুনলে যেটা ৮ নম্বর ঘর, সেটারও মেঝে খোঁড়া দেখতে পেলাম।

এক পলকের জন্য কথাটা মাথার ভেতর ঝিলিক দিয়েছিল। বললাম, ৮ নম্বর ঘর! মাই গুডনেস! কর্নেল, আপনি হরিবাবুকে বলেছিলেন না ৮ নম্বর ঘরের মেঝেয় বিগ্রহ পোঁতা আছে?

কর্নেল এবার আস্তে সুস্থে কফিতে চুমুক দিয়ে বললেন, । হরিচরণ গাঙ্গুলি। কাল তার এবং হারাধনের তোমাকে মড়ার মতো কাঁধে বইতে একটু কষ্ট হয়ে থাকবে। আহা বেচারারা খামোকা কষ্ট করল। বিগ্রহ যদি বা হাতাল, তা-ও নকল!

উত্তেজিত হয়ে উঠেছিলাম। কিন্তু হরিচরণকে তো অন্য কোন পার্টি শ্যামসুন্দরের কালো নোটবই ফেরত চেয়েছিল।

ওটা হরিচরণের চালাকি। আলিপুর কোর্টচত্বরে সেই ছেলেটি আমাকে বলেছে, হরিচরণই তাকে দিয়ে একটা মাত্র চিঠি লিখিয়েছিল। হরিচরণের মুখে শোনা মহীবাবু নামে কোন রিটায়ার্ড পুলিশ অফিসার এবং আউট্রাম ঘাটে সাদা পোশাকের পুলিশ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার ঘটনা স্রেফ গুল। মহীবাবু নামটাও তার বানানো। আসলে ২৫ অক্টোবর ঝড়বৃষ্টির সময় হারাধন এবং সে শ্যামসুন্দরকে ফঁদে ফেলে খুন করে তার পোশাক খুঁজে বিগ্রহের সূত্র পেতে চেয়েছিল। কালো নোটবইটা পেয়ে যায় শ্যামসুন্দরের পকেটে। সাংকেতিক ছকটা নিয়ে মাথা ঘামায়। তারপর আমার শরণাপন্ন হয়। বাকিটা কলকাতা ফিরে বুঝবে। তবে একটা গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হরিচরণের নাকে বাঁ পাশে বেঢপ গড়নের জডুল। সে যখন সন্ধ্যানীড়ের দোতলায় একটা ঘরে পাশ ফিরে চাঁদর মুড়ি দিয়ে এম. এল. মুখার্জি সেজে শুয়ে ছিল, তখন জডুলটা আমি দেখে ফেলেছিলাম। তাই কলকাতা ফিরে সে মরিয়া হয়ে জডুলটা অপারেশন করিয়েছিল।

কিন্তু বিদ্যুতের ছটায় উঠোনে আর একজনকে আমি দেখেছিলাম।

তাকে কলকাতা ফিরে আবার দেখাব। কফি শেষ করে কর্নেল চুরুট ধরালেন। বললেন, হরিচরণ এবং হারাধনের ফোটো পুলিশকে দিয়েছি। তার কোনওনা-কোনও সময় ধরা পড়বে। তরুণবাবুরও এখানে প্রভাব আছে। পলি শ্যামসুন্দরের কঙ্কাল পেলেই এবার অ্যাকশন নোবে। কারুর বিরুদ্ধে এতে অভিযোগ করতে গেলে কেউ যে সত্যিই খুন হয়েছে, তা দেখানো দরকা কাজেই অক্টোবরে যে অভিযোগ করতে আইনগত বাধা ছিল, এখন আর নেই।

একটু পরে বললাম, হরিচরণের ঘরে শ্যামসুন্দরের কালো নোটবই পাওয়ার রহস্য ফাস হল তা হলে। কিন্তু কর্নেল, হরিচরণ আপনার শরণাপন্ন হল কেন, সন্ধ্যানীড়ে আপনার পেটেন্ট সান্তা ক্লজ মার্কা চেহারা হারাধন এবং তার দেখা।

কর্নেল গম্ভীর মুখে বললেন, দুটো কারণে। একটা কারণের কথা আগেই বললাম। সাংকেতিক সূত্র কৌশলে জেনে নেওয়া। কিংবা ভেবেছিল, আমিই ওকে সেই সূত্রর সাহায্যে বিগ্রহ উদ্ধার করে দেব। তবে এটা গৌণ কারণ। মুখ্য। কারণ হল ওর জডুল। তার নাকের পাশে জডুল নেই, এটা দেখাতে গিয়েছিল। অতি বুদ্ধির গলায় দড়ি।

তার মানে, সে আপনার সবিশেষ পরিচয় ২৫ অক্টোবরের আগে থেকেই জানত?

নাহ। সে জনত না। পরে জেনেছিল। আমি শচীনবাবুর বাড়িতে প্রথম যাওয়ার পরই সে জানতে পারে আমি কে। তারপর ঠাণ্ডা মাথায় প্ল্যান করে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে গিয়েছিল। কিন্তু যেদিন আমি তাকে জডুলের কথা জিজ্ঞেস করলাম, সেদিনই সে গা ঢাকা দিল এবং বরমডিহিতে চলে এল। তাকে সন্ধ্যানীড়ের ৮ নম্বর ঘরের মেঝেয় বিগ্রহ পুঁতে রাখার মিথ্যা সূত্র দিয়েছিলাম। তাই গা ঢাকা দিয়ে সে বিগ্রহ উদ্ধারের ফিকির করেছিল। জয়ন্ত! রেলস্টেশনে তরুণবাবুকে এই হরিচরণ দেখা করেছিল। ক্লিয়ার?

ক্লিয়ার। তবে এখনও কিছু–

বাকিটা কলকাতায় ক্লিয়ার হবে।

.

আমরা সেদিনই দুপুরের বাসে আসানসোল এবং সেখান থেকে ট্রেনে কলকাতা ফিরেছিলাম। কর্নেল বলেছিলেন, সময়মতো আমাকে ডাক দেবেন। সেই ডাক পেলাম দুদিন পরে সকালবেলায়।

কর্নেলের অ্যাপার্টমেন্টে গিয়ে দেখি, তরুণ মুখার্জি বসে আছেন। বেশ হাসিখুশি মুখ।

কর্নেল বললেন, তরুণবাবুর বেনামী চিঠিতে কাজ হয়েছে, জয়ন্ত! শচীনবাবু আমাকে ডেকেছে। এখন আমার ভূমিকা মিলম্যানের। দেখা যাক। সাড়ে দশটায় অ্যাপয়েন্টমেন্ট। এখন দশটা বাজে। বেরুতে হবে।

তরুণবাবু বললেন, জয়ন্তবাবু! হরি এবং আমার অফিসের বজ্জাত বেয়ারা অবাধন বরমডিহি রেলস্টেশনেই ধরা পড়েছে।

বললাম, সুখবর! কিন্তু মিঃ মুখার্জি, একটা ব্যাপার বুঝতে পারছি না। হারাধন তো ২৫ অক্টোবর হিলটপ বাংলোয় আপনার কাছে ছিল। সে কী করে—

শুনুন। শ্যামসুন্দরকে গলাধাক্কা দিয়ে তাড়ানোর কিছুক্ষণ পর হারাধন বাংলো থেকে বেরিয়ে যায়। ফিরেছিল রাত নটা-সাড়ে নটা নাগাদ। ফিরে বলল, ঝড়বৃষ্টিতে বাজারে আটকে গিয়েছিল। যাই হোক, হারাধন আমাদের গৃহদেবতা চুরি হওয়ার কথা জানত। আমার অফিসের সবাই জানে সে কথা। কিন্তু হারাধন যে সাংঘাতিক লোক, কেমন করে জানব? হরির সঙ্গে সে, কিংবা হরি তার সঙ্গে যোগাযোগ করে দল বেঁধেছিল আর কী! পুলিশ জেরা করে কথা আদায় করবে। তবে আমার ধারণা, সে শ্যামসুন্দরের পিছু নিয়েছিল। তারপর শ্যামসুন্দরকে সে হরির কাছে নিয়ে যায়। নিশ্চয় একটা প্ল্যান ছিল। বলে ঘড়ি দেখে তিনি বললেন, চলুন। আপনাদের দাদার বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছে দেব।…

ভবানীপুরে আমাদের নামিয়ে দিয়ে তরুণবাবু চলে গেলেন। আমরা প্রাক্তন আইনজীবী শচীনবাবুর বাড়ির দিকে হাঁটতে থাকলাম।

শনিবাবু ব্যস্তভাবে অপেক্ষা করছিলেন। আমাদের অভ্যর্থনা করে বসতে বললেন তার মুখে উদ্বেগের ছাপ। পকেট থেকে একটা ভাঁজ করা কাগজ বের করে কর্নেলকে দিলেন। বললেন, আমার দৃঢ় ধারণা, এটা তরুণেরই একটা ফাঁদ।

কর্নেল চিঠিটা পড়ে গম্ভীর মুখে বললেন, কিন্তু আপনি বিপন্ন মিঃ মুখার্জি।

শচীনবাবু চমকে উঠে বললেন, বিপন্ন?

হ্যাঁ। শ্যামসুন্দরের লাশ আপনার সন্ধ্যানীড়ের ইদারার তলায় পুলিস আবিষ্কার করেছে। হরিবাবুকে অ্যারেস্ট করেছে। হরিবাবু কবুল করেছেন, খুনের রাত্রে আপনিও বরমডিহিতে ছিলেন। এমন কি সন্ধ্যানীড়েই লুকিয়ে ছিলেন।

শচীনবাবু ফোঁস করে শ্বাস ছেড়ে বললেন, ছিলাম। হরি বলেছিল, শ্যামা বিগ্রহ ফেরত দিতে চেয়েছে। তার বদলে ওকে দশহাজার টাকা দিতে হবে। বিকেলে পাঁচটা নাগাদ শ্যামা নাকি বিগ্রহ নিয়ে আসবে। শচীনবাবু বিকৃত মুখে ফের বললেন, কিন্তু হরি ব্যাটাচ্ছেলে তার এক স্যাঙাতকে নিয়ে যে শ্যামাকে খুন করে ফেলবে, তা কি আমি জানতাম? দোতলার একটা ঘরে অপেক্ষা করছি। ওরা শ্যামাকে পাশের ঘরে নিয়ে ঢুকেছে। তারপর হঠাৎ ঝড়বৃষ্টি এসে গেল। আমি তো চুপচাপ বসে ইষ্ট নাম জপ করছি। কতক্ষণ পরে ঝড় থামল, বৃষ্টি থামতে চায় না। হঠাৎ পাশের ঘরে ঝগড়া বেধে গেল। তারপর আর্তনাদ শুনতে পেলাম। আমি উঁকি মেরে টর্চ জ্বেলে দেখি, ওঃ! হরির স্যাঙাত শ্যামার বুকে বসে তার গলায়–ওঃ! কী সাংঘাতিক দৃশ্য! আমি ভয় পেয়ে দিশেহারা হয়ে নেমে গেলাম। উঠোনে ইদারার পাশে খিড়কির দরজা খুলে পালানোর চেষ্টা করছি। সেই সময় বাইরে হাঁকডাক। আপনারা এসে দরজায় ধাক দিচ্ছিলেন। যাই হোক, অনেক কষ্টে দরজার হুড়কো খুলে বেরুলাম। আমার এক ধনী মক্কেলের বাড়িতে উঠেছিলাম। তো অনেক রাত্রে হরি গিয়ে বলল বাধ্য হয়ে শ্যামাকে খুন করেছে। তার বডি এমন জায়গায় লুকিয়েছে, কেউ খুঁজে পাবে না। তারপর আপনাদের কথা বলল। আপনার চেহারার বর্ণনা দিয়ে বলল, এক দাড়িওয়ালা সায়েবের মতো চেহারার ভদ্রলোককে বোকা বানিয়েছে। সকালে আপনাকে আমার মক্কেলের বাড়ির দোতলা থেকে দেখলাম, বাইনোলাকে কী দেখছেন। মক্কেলের নাম অরিজিৎ সিংহ। তাকে জিজ্ঞেস করলাম, এই ভদ্রলোককে চেনে কি না। অর্থাৎ লোকাল লোক, না টুরিস্ট? অরিজিৎ বলল ওরে বাবা! উনি তো বিখ্যাত লোক। আপনার সবিশেষ পরিচয় পেলাম।

কর্নেল বললেন, অরিজিৎ সিংহ আমার পরিচিত। বারুইপুর এরিয়ার ওঁর নার্সারি আছে। একটা বিদেশি ক্যাকটাস সাপ্লাই করেছিলেন আমাকে। তবে। বরমডিহিতে ওঁর বাড়ি আছে জানতাম না।

শচীনবাবু রুমালে মুখ মুছে বললেন, অরিজিৎ আপনাকে দেখে বেরুতে যাচ্ছিল। ওকে বাধা দিলাম। সব ঘটনা খুলে বললাম। শুনে ও পরামর্শ দিল, আপনি আজই কলকাতা ফিরে যান। তো কলকাতা ফেরার কদিন পরে আপনি আমার কাছে এলেন।

হ্যাঁ। আমাকে দেখে আপনার অস্বস্তি আঁচ করেছিলাম। তবে আমার দেখার ইচ্ছে ছিল আপনার নাকের পাশে জডুল আছে কি না। দেখলাম, নেই। তখন বুঝলাম, একটা সাজানো নাটক দেখেছি।

ঠিক। হরির বড্ড প্যাঁচালো বুদ্ধি। আপনি ও বাড়িতে আসার পর আপনার পরিচয় দিয়ে ওকে সাবধান হতে বললাম।

কর্নেল হাসলেন। হরিচরণের বুদ্ধি প্যাঁচালো। তবে অতিবুদ্ধি এবং লোভ মানুষকে ঝামেলায় ফেলে। জডুল অপারেশন করে সে আমার কাছে একটা গল্প ফঁদতে গিয়েছিল। তার উদ্দেশ্য ছিল দুটো। মুখ্য উদ্দেশ্য, আমি তাকে চিনতে পেরেছি কি না জানা এবং গৌণ উদ্দেশ্য শ্যামসুন্দরের নোটবইয়ে লেখা একটা সাংকেতিক সূত্রের অর্থ বোঝ। তার নাকের পাশে ক্ষতচিহ্ন দেখেই আমার সন্দেহ হয়েছিল। তাই তার কেস আমি নিয়েছিলাম। কর্নেল চুরুট ধরালেন। তারপর ধোঁয়া ছেড়ে বললেন, যাই হোক, আশা করি বুঝতে পেরেছেন শ্যামসুন্দরের খুনের মামলায় আপনি জড়িয়ে পড়েছেন। হরির জবানবন্দীর সূত্রে পুলিশ যে কোনও সময় আপনার কাছে আসবে। তা আমি বলি কী, আপনি মামলা মিটিয়ে নিন।

মামলা তো তরুণ করেছে। প্রায় আর্তনাদ করলেন শচীনবাবু।

তাতে কী? আপনি তার মাকে আপনার বাবার বিবাহিত স্ত্রী বলে স্বীকার করে নিন। আমি আপনাদের দুই ভাইকে আমার অ্যাপার্টমেন্টে ডেকে মিটমাট করে দেব। তরুণবাবু রাজি। আর আপনাদের গৃহদেবতা আমিই উদ্ধার করেছি! তা-ও ফেরত পাবেন। এরপর আসছে পুলিশের ঝামেলা। আপনি পুলিশকে সব কথা খুলে বলবেন। আপনি আইনজীবী। আপনি রাজসাক্ষী হবেন। আমিও আপনাকে সমর্থন করে সাক্ষ্য দেব। পুলিশের কিন্তু এ মামলায় আমাকে খুব দরকার। আশা করি তা বুঝতে পারছেন। বিশেষ করে আমার হাতে ভাইটাল সাক্ষ্য প্রমাণ আছে।

কিছুক্ষণ চুপচাপ থাকার পর শচীনবাবু বললেন, আপনি যখন বলছেন, তখন তা-ই হবে। কিন্তু আমাদের গৃহদেবতা কী ভাবে আপনি উদ্ধার করলেন?

কর্নেল থামলেন। শ্যামসুন্দরের নোটবইয়ে লেখা শব্দছক থেকে। তবে আমার এই তরুণ সাংবাদিক বন্ধুই সূত্রটা ধরিয়ে দিয়েছিল। কর্নেল ঘটনাটা সবিস্তারে বর্ণনা করলেন। শোনার পর শচীনবাবু বললেন, গৃহদেবতা কার কাছে আছে?

আমার অ্যাপার্টমেন্টে আজ সন্ধ্যা ৬টায় আসুন। তরুণবাবু আসবেন। দুই ভাইয়ের সামনে গৃহদেবতা রাখব। হ্যাঁ–গৃহদেবতা আপনার এই বাড়ির মন্দিরেই ফিরে আসবেন। কারণ মন্দিরটা আপনার পূর্বপুরুষের তৈরি। বলে কর্নেল উঠে দাঁড়ালেন। চলি। নাহ। চা-ফা খাব না। আজ সন্ধ্যা ৬টায় আমার ঘরে বরং উৎকৃষ্ট কফি খাওয়াব আপনাকে।

রাস্তায় গিয়ে কর্নেল বললেন, চলো জয়ন্ত। আলিপুর কোর্ট চত্বর হয়ে যাই। ছেলেটি–তপন দাশ তার নাম, এই কেসে ভাইটাল সাক্ষী। তার সঙ্গে দেখা করে যাওয়া উচিত।…

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *