দৈন্য
নিরালোক, স্তব্ধশোক, আয়ত নয়ানে
চেও না, চেও না মুখপানে,
দ্বিধাকম্প্র স্বরে
বোলো না, বোলো না মোরে
এ-সর্বনাশের দায় কেবলই তোমার;
বারংবার
কল্পিত কলুষ-নত শিরে
এনো না, এনো না ডেকে বিধির ধর্মিষ্ঠ অশনিরে;
ভেবো না, ভেবো না
মোর অন্ধ দুরাশারে সংহারিল তোমার বঞ্চনা;
জানায়ো না অনুতাপ আর অকারণে।।
আমি তো করিনি কভু মনে,
কখনও করিনি মনে প্রভুত্বের উন্মাত্র প্রমাদে,
রাগরিক্ত চিত্তপটে তব
অক্ষয় রেখায় আমি দীপ্র হয়ে রব;
মিলনের তন্ময় প্রসাদে
ভুলি নাই দুর্নিবার বিকারের কথা;
মানিনি ভঙ্গুর ভবে নিতান্ত সুলভ অমরতা।।
আমার অক্ষম বুদ্ধি দিবস-রজনী
শুনেছে অন্তরপথে বিপ্লবের নিত্য পদধ্বনি;
জানে আপনার দৈন্য। তাই ডোবে নির্বাক ধিক্কারে
বিপ্রলব্ধ হৃদয়ের দাম্ভিক বিলাপ;
তাই মোর উদ্বাস্তু সন্তাপ
পায় না প্রতিষ্ঠা আজ আত্মম্ভরি অসূয়ার দ্বারে;
তাই মোর প্রাণ
স্মৃতিশূন্য অন্ধকারে খুঁজে মরে নিশ্চিহ্ন নির্বাণ॥
১০ মার্চ ১৯৩১