1 of 3

চিত্রগুপ্তের খাতা

চিত্রগুপ্তের খাতা

যমরাজের কেরানি বা হিসাবরক্ষক হলেন চিত্রগুপ্ত। সকল জীবের পাপ, পুণ্য, আয়ু ইত্যাদির হিসেব পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে সংরক্ষণ করেন তিনি অবিরাম। তার হিসেবে কোনোরূপ ভুল হয় না।

ব্রহ্মার অঙ্গ বা কায়া থেকে চিত্রগুপ্তের জন্ম। ব্রহ্মা যখন জগৎ সৃষ্টি করে ধ্যানমগ্ন ছিলেন, সে সময় তার অঙ্গ হতে নানা বর্ণে চিত্রিত এক পুরুষ দোয়াত-কলমসহ উদ্ভূত হন। ব্রহ্মার আদেশে তিনি চণ্ডীর তপস্যা করে পরোপকারী, স্বাধীন ও চিরজীবী হবার বর লাভ করেন। ব্রহ্মার নির্দেশে চিত্রগুপ্তকে মানুষের পাপপুণ্য হিসেব করার জন্য যমালয়ে চাকরি করতে পাঠানো হয়।

ব্রহ্মার কায়া থেকে উৎপন্ন বলে চিত্রগুপ্ত হলেন কায়স্থ। পাপপুণ্যের চিত্রবিচিত্র হিসেব গুপ্ত বা গোপন রাখেন বলে তার নাম হয় চিত্রগুপ্ত। ইরাবতী ও দক্ষিণা নামে দুটি ব্রাহ্মণকন্যার সাথে তার বিয়ে হয়। এদের গর্ভে অম্বষ্ঠ, মাথুর, গৌড়, সেনক, শ্রীবাস্তব্য ইত্যাদি নয়টি পুত্রের জন্ম হয়।

মানুষের কপালে ভবিষ্যৎ শুভাশুভ ফল লেখেন চিত্রগুপ্ত। কার্তিক মাসের শুক্লা দ্বিতীয়া তিথিতে চিত্রগুপ্তের পূজা হয়। যমরাজ চিত্রগুপ্তকে পাপীদের যন্ত্রণা দেবার জন্য নিযুক্ত করেন। সযত্নে গুপ্তভাবে রক্ষিত খাতায় করণিক চিত্রগুপ্ত মানুষের পাপপুণ্য, আয়ু ইত্যাদির হিসেব লেখেন আর যমরাজের কাছে নিয়মিত রিপোর্ট প্রদান করেন। তার নির্ভুল হিসেবে নড়চড় হয় না বলে কোনো কাজ করার আগে মানুষ পাপপুণ্যের হিসেব করে। কারণ সবার ভাবনায় থাকে চিত্রগুপ্তের খাতা। তাতে ভুল হয় না।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *