ওরে তোদের ত্বর সহে না আর?
এখনো শীত হয় নি অবসান।
পথের ধারে আভাস পেয়ে কার
সবাই মিলে গেয়ে উঠিস গান?
ওরে পাগল চাঁপা, ওরে উন্মত্ত বকুল,
কার তরে সব ছুটে এলি কৌতুকে আকুল।
মরণপথে তোরা প্রথম দল,
ভাবলি নে তো সময় অসময়।
শাখায় শাখায় তোদের কোলাহল
গন্ধে রঙে ছড়ায় বনময়।
সবার আগে উচ্চে হেসে ঠেলাঠেলি করে
উঠলি ফুটে, রাশি রাশি পড়লি ঝরে ঝরে।
বসন্ত সে আসবে যে ফাল্গুনে
দখিন হাওয়ার জোয়ার-জলে ভাসি
তাহার লাগি রইলি নে দিন গুণে
আগে-ভাগেই বাজিয়ে দিলি বাঁশি।
রাত না হতে পথের শেষে পৌঁছবি কোন্ মতে।
যা ছিল তোর কেঁদে হেসে ছড়িয়ে দিলি পথে!
ওরে খ্যাপা, ওরে হিসাব-ভোলা,
দূর হতে তার পায়ের শব্দে মেতে
সেই অতিথির ঢাকতে পথের ধুলা
তোরা আপন মরণ দিলি পেতে।
না দেখে না শুনেই তোদের পড়ল বাঁধন খসে,
চোখের দেখার অপেক্ষাতে রইলি নে আর বসে।
কলিকাতা, ৮ মাঘ, ১৩২১