1 of 2

আমার কলকাতার বাড়ি

আমার কলকাতার বাড়ি

বাড়িটা তুই, আছিস কেমন?
তোর বুঝি খুব একলা লাগে?
আমারও তো, আমারও খুব।
রাত্তিরে কি ভয় করে না?
জানলাগুলো হঠাৎ করে
ধরাস করে খুলে গেলে?
কেউ এসেকি দরজা নাড়ে?
ধুলোয় ধুসর ঘরবারান্দায় কে
উ ঢোকে কি, ভয় জাগে যে?
চোর ডাকাতের বাড় বেড়েছে!
নাকি হাওয়াই ঢোকে, ঝড়ো হাওয়া!
হাওয়াই বা কোথায় এখন,
সম্ভবত আমিই ঢুকি,
মনে মনে আমিই বোধহয়।
হেঁটে বেড়াই ঘরগুলোতে,
অন্ধকারে চিনতে পারিস!
পায়ের আওয়াজ বুঝিস কিছু?

বাড়িটা তুই, লেখার ঘরটা দেখে রাখিস,
সবকিছুই তো ওই ঘরে রে,
জীবনটাই লেখার জীবন,
ন-আলমারি বইপত্তর,
লেখাপড়ার দুনিয়াটা,
ওসব ছেড়ে ভালো থাকি!
মনে মনে আমিই বোধহয়
অশরীরি ঘুরি ফিরি
ফেলে আসা ঘরদুয়ারে
চোখের জল ফেলে আসি!
বারান্দার গাছগুলোতে
জল যে দেবে, কেউ তো নেই!
চোখের জলে বাঁচবে না গাছ?
চোখে আমার এক নদী জল,
এক সমুদ্র চাস যদি বল, পাঠিয়ে দেব,
বাড়িটা তুই, বেঁচে থাকিস।

তোকে ছাড়া নির্বাসনে
এক মুহূর্ত মন বসে না,
বেড়ালটাও বাড়ি নেই,
খাঁ খাঁ করছে বাড়ির ভেতর,
ধুলোয় তুই ডুবে আছিস,
আঁচল দিয়ে মুছে দেব,
চোখের জলে ধুয়ে দেব,
অপেক্ষা কর, বাড়িটা তুই।
তুই কি আর শুধুই বাড়ি।
তুই তো আমার হারানো দেশ।
তুই তো আমার মাতৃভাষা।
তুই কি আর শুধুই বাড়ি!
এক যুগেরও বেশি সময়
বুকের ভেতর তোকে লালন
করেছি তুই জানিস তো সব।

দীর্ঘকালের স্বপ্ন তুই,
স্বপ্ন বলেই তোকে ডাকি,

বাড়িটা তুই, বেঁচে থাকিস,
আমায় একটু বাঁচিয়ে রাখিস।

২২.০২.০৮

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *