আবার আসিব ফিরে…
ট্রাম-লাইনের সর্পিনী-দল ক্যালব্যাল করে লাল-লাল ফুল ফোটা ভোরে উঠে ডুমুরের গাছে, অশথের ফণীমনসার ঝোপে শহরের অ্যাম্বুলেন্স গাড়ির ভিতরে ছেচল্লিশ হতে দুহাজার উনিশের রাত্রিময় পেঁচা-ইঁদুর-লাশকাটা-ঘরে মেয়েমানুষ-শিশু মাথার ভিতরের না-বোঝা বোধে সকালের ঘুমন্ত-রোদে, ক্যাম্পের হরিণী সব ঘরে ফেরা পাখি-নীড় চোখে বনলতায়-সুচরিতায়-সুরজনায় খুঁজে যায় বাংলার আর জীবনানন্দের কবি-মুখ। অনেক খোঁজাখুঁজির পর নিরালা-কবিকে এক কারাগারে শস্য-উৎপাদনরত চোত-বোশেখের চাষীর কিশোরী-কন্যার হাঁস-রূপে প্যাঁক-প্যাঁকে জলাঙ্গীর জলে আধভেজা স্বপনে খুঁজে পাওয়া যায়।
কল্লোলিনী তিলোত্তমা লণ্ডন-রূপী কলকাতায় তিনি প্রথমে তেমন উৎসাহ দেখান না। তারপর ঘুমের ভেতরে সুবিনয় মুস্তাফি-ভিখিরি-কুষ্ঠরোগী-বিড়াল ও মুম্বই-গামী সোমেন পালিতের দূরবস্থার কথা শুনে হাজার বছর পরে একবার ভিজিট করবেন জানান। লিবিয়া-ব্যাবিলনের এক ভাঙাচোরা হোটেলের লবিতে তাকে পেনসিল হাতে গাছতলায় বসে থাকতে দেখা গেছে বলে দাবি করেন সুরঞ্জনা। তিনি সেখানে হানিমুনে এক লোল-নিগ্রো যুবকের সাথে সোনালি-সূর্য-বন্দরে স্বর্গীয় পাখির ডিমের সন্ধানে যাচ্ছিলেন। কবির ফিয়ার লেন রাত্রির কথা হঠাৎ মনে পড়ায় ঐখানে যেওনাকো তুমি বলে বাধা দেন।
ঠিক পাশে বসে বোবা-কালা মিনসে বেহালা বাজাচ্ছিল একজন। এক ইহুদী রমণী ছিলেন জানালায় এক কাঠের ভাঙা বাড়িতে। আর ইঁদুরেরা নতুন ফসলের গন্ধে তখন সবে মেতে উঠেছিল। পাড়াগাঁর আইবুড়ো সব মেয়েদের তিনি ডেকে নাচ শুরু করেন হেমন্তের বিকেলে। নাচতে নাচতে একসময় যখন সকলের মুখ যায় রোদে পুড়ে, চাঁদ নেমে আসে, তিনি সকলকে ডেকে নিয়ে বলেন আমার সকল গান আজো তোমাদের লক্ষ্য করে। তোমরা তা জানো না কিছু… না জানিলে। বিম্বিসার অশোকের ধূসর জগৎ হতে আসেন বুদ্ধ। কনফুসিয়াস স্বেচ্ছায় যোগ দেন সে কারনিভ্যালে। নগ্ন-নির্জন হাত মেলে পারস্যের উপকূলে টায়ার-সিন্ধু-নদের তীরে এসে জোটেন নদের নিমাই আর মিশরের রানি বাঘছাল-পোশাকের ভারে মিন মিন করেন পাখিনীড় চোখ মেলে। সমুদ্রের গান ভেসে আসে। ভেসে আসে চোখের ঘুমের গান।
শিকারী একজন তাক করে উড়ন্ত বালি হাঁস, হরিণের মাংস। কবি-জীবন দোনালার শব্দ হবার আগে ঝরা-পালক দিয়ে পিরামিড আঁকেন শিকারির টেরিকাটা মাথায়। গুলির শব্দে উড়ে যায় পাখি, পালিয়ে যায় হরিণ। হাজার বছরের টাইম-স্পেসে কিলবিল করে শুধু সাতটি তারা আর অদ্ভুত এক আঁধার। আধার কার্ড গলায় ঝোলানো মহীনের ঘোড়াগুলি কলকাতার রেসকোর্সে বিজেপির গেরুয়া গরুদের সাথে ঘাস খাচ্ছে জেনে কলকাতায় একবার আসবেন মনস্থির করেন জীবনানন্দ। প্রথমে ধানসিঁড়ি নদীপাড়ে বেতফল-ম্লান-চোখ মেলে রূপসার ঘোলা জল দিয়ে ধুয়ে নেবেন হাত। তারপর সেই হাতে ধরবেন কলকাতার স্টীমার। জীবন-বিমার প্রয়োজন নেই কোনো সপাটে জানিয়ে দেন। কলকাতার গাঁড় মারেন টোট্যাল নিজস্ব-ভঙ্গিমায়, কবিতায়…।
জেলখানার অন্ধকার চুপে বিপ্লবীর প্যাঁচা-চোখে প্রগাঢ় পিতামহ ছবি হয়ে আসে
নিঝুম শহরের রাত্রি বলে যায় জানালার পাশ হতে উৎসবের শেষে
এ পৃথিবী-বাংলা আজো, জানি মমতা তোমার বয়সিনী এক প্রৌঢ়া
তরল-লোভী মাছি উড়ে বসে সকালের রোদে, মারা যায় শস্য-ক্ষেতে
কেবলি পতনের শব্দে নন্দীগ্রাম ভাঙে – অচল ইশারায়
অদ্ভূত অলংকারে সীমাহীন লোভে রশিদা-সাদা-নীলে ওড়ে মাছি
মৃতদেহ নগরীর পথে প্রান্তরে ছড়ানো
ধান কাটা হয়ে গেলে পড়ে থাকে সোঁদাঘাস-ফুল
যূথচারিনী কিছু নারী, ভোগ্যপণ্যের আজন্মলালায়িত উৎসবে
শপিং-এর সন্ধ্যায় নক্ষত্র-জোনাকির ভেজা আলোয়
ঘর খোঁজে, মৃত্তিকার থাম উঠে যায় আকাশের অনাবিল পথে
বিস্তৃত বাংলার চোত-বোশেখের রাতে
কুকুরের উৎসাহে ফেনিয়ে ওঠে শহরের মদ-মাংস উৎসব
গলিত শবদেহে লেগে থাকে কচি ঘাস, ফুল-পাতা-কুঁড়ি
শীতার্ত শুকরের প্রসব-চিৎকারে, ইশারায় নড়ে প্যারাফিন বাতি
মোম গলে পড়ে প্রাচীন পিরামিডের ঘ্রাণে, ইশারায়
উড়ন্ত মশা মশারির নিবিড় আমেজে, বেঁচে নিতে চায়
এইডস-রোগী অজানা ভয়ে হেঁটে যায় নগরীর রাতে
রূপবতী শহরের নগ্ন ক্লেদ, দগ্ধ-যৌবন জীবিকার আশায়
বন্দর হতে বন্দরে ভেসে চলে সন্তপ্ত সংহারী নাবিক
ক্যাম্বেল, কালীঘাট-আলিমুদ্দিন পাথুরেঘাটা-ভাঙড়ের
বস্তির ঘরে ঘুঘুর অবিরল ডাকে যূথচারী সাপ-পেঁচা-ইঁদূরের-গন্ধে
ফিরতে চায় না মন-হৃদয় এ পাবক-সময়
মিশরের নিনেভের লাদেনের আফগানিস্থানের পর্বত-প্রাণে
ঈশ্বরের মৃত অস্থির সন্ধান করে বাদুড়েরা, গভীর বিষাদে
জাহাজের ক্লান্ত-পাটাতনে ঘুমায় নগ্ন-নাবিক শ্রান্ত জ্যোৎস্নায় মৃতসুখে
অবিকল বিদ্ধস্ত-নগরীর হস্তমৈথুনে থকথকে লালা-বীর্য ঘ্রাণে
ভরে যায় যৌনবিশ্বাসী বাতাস আলো-আঁাধারে, টের পাই
ক্ষুধার্ত-চোখের কোটর থেকে বেরিয়ে আসে স্থির-চক্ষু পেঁচা
মাঠের ইঁদূরেরা ফসল জমিয়ে রাখে শহরের আনাচে-কানাচে
বাংলার মুখ পুড়ে যায় সকালের নিস্তেজ রোদের সোনালি-তৃষ্ণায়
মৃত পথিকের রক্তাক্ত-লাশে উড়ে বসে রঙিন-মাছি
ফের উড়ে যায় সোনালি ভোরে, নতুন মৃত-নাগরিকের খোঁজে
শব-সন্ধানী সরল-দ্বেষ সৃষ্টির মনে জাগায় বিরূপতা জীবনের
এইসব রাজ্য-বিনাশে হে কৃষক, তুমিও ফসলের ঘ্রাণে এসেছিলে
গভীর মাটি-পৃথিবীর টানে, উৎসবের রাতে শত-শত মৃতমুখের প্রাণ
খুঁজে যাই হাইড্র্যান্ট-বীর্য বয়ে যায় শহর-যোনিস্রোতে
উৎসবে মাতে মাছি, উড়ে এসে ফের বসে কবরের মাটির ঘ্রাণে
ব্যস্ত-শহরের পথে চলে যায় মৃতবাহী শকট উল্লাসে
সহ বছর খেলে যায় নক্ষত্রের আলোয়, মাঝরাতে….।।
কলকাতায় আসবার দিন-ক্ষণ জানা যায় না কবির। অ্যাসিডিশ ও প্রেসিডেন্সি-যাদবপুর তাকে অনেক চেষ্টা করেন যোগাযোগের। অনেক চেষ্টার পরে সকলে প্রায় হালছাড়া দশায় পৌঁছলে তাঁর টুইট দেখা যায়। বাংলার মুর্খতা আমি দেখিয়াছি, পৃথিবীর পণ্ডিতেরে খুঁজিতে যাই নাকো তাই আর। ধূর্ত-সময়ের শিয়ালেরা শুকরের সাথে সঙ্গম করে শীতের সকালে রোদ পড়ে গেছে আজ বিকেলের পড়ে থাকা মাঠে। দুহাজার আঠারো-উনিশ-বিশ সাল বলে মনে হয়। তবুও কি দুহাজার বিশ সাল? নাকি বাল…? এই বাল নিয়ে অনেকে বিতর্ক শুরু করেন টিভি রিয়্যালিয়ি-শো তে। বিশ্বভারতী ও রবীন্দ্রভারতী সপক্ষে ও বিপক্ষে চাপান-উতোরে পরস্পরের গাঁড় মারামারি করতে থাকে। একদল বলেন ইহা টাইপো উনি বাল বলতেই পারেন না। বাংলা বলতে চেয়েছিলেন। এর পরে ঠিক একান্ন দিন পরে আবার টুইট আসে। বাংলার বাল আমি দেখিয়াছি…তাই…
সকলে স্তব্ধ হয়ে যায়। গজেন গড়ের মাঠে সোঁদা খড় দিয়ে বাংলার বাল আমি দেখিয়াছি লিখে বাহাত্তর ঘন্টা বাল-ছেঁড়ো কবিতা উৎসব আয়োজন করে। খেঁদির গুণ্ডারা তাকে গড়ের মাঠেই পঁতে ফেলবে বলে হুমকি দ্যায়। ডিজোরিও প্রকাশ্যে গজেনকে সাপোর্ট করেন। অ্যাসিডিশ… গজেন তুমি কোথা হতি আসিলে… বলে ফেসবুক পোস্ট দেন। প্রচণ্ড উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। সকলে সমস্বরে বলে প্রচণ্ড টেনশন হচ্ছে, বাংলার বাল ও ভবিষ্যৎ আজ আক্রান্ত। বাহাত্তর ঘন্টা না গেলে কিছু বলা যাচ্ছে না বাঁড়া…..। খেঁদি হাসপাতালগুলিকে গুণ্ডা দিয়ে গুলি করে মারবার হুমকি দেন। অ্যাপেলো কে অরেঞ্জো নাম দিয়ে দেবেন বলে বিধানসভায় শাসান। চেঁচিয়ে ও কেঁদে ভাসান। বাংলা-বি পক্ষ গজেনকে দুই বাংলা থেকে পূর্ণ বাল-ছেঁড়া সমর্থন জানায় ও বিপ্লব শানায়। গজেন আপন নজেন নিয়ে নাড়ানাড়ি ও হস্তমৈথুনে প্রচণ্ড আনমনে রাস্তা ও গৃহকোণে ব্যস্ত থাকে স্বাভাবিক ভাবে….। তার ইনবক্সে এক সকালে নতুন মেসেজ ঢোকে…নি-বির মেইল…
বাল, আবার আসিব ফিরে
শালা, আবার আসিব ফিরে গাঁজা ফুঁকিবার তরে এই বাংলায়…
পাইপ জয়েন্ট নয় হয়তো বা বাল-বিড়ি লয়ে বাল-হাতে –
সারাদিন কেটে যাবে ধানসিঁড়ি নদীপাড়ে এক হাতে খিঁচে।
সীমান্ত-রেখার বেড়া বীর্য-পাতে যাবে বাঁড়া ভেসে –
হয়তো বন্দুক হাতে দেখিবে সৈনিক এক পাগলাচোদা
নামিয়াছে বুলেটের গাঁড় মারি পদ্মার পোঁদমারা জলে।
হয়তো দেখিবে চেয়ে, ভাড়াটে পুলিশ কোনো জঙ্গলের ঝোপে –
উলঙ্গ দাঁড়ায়ে আছে বাল-নাগরিক কোনো ধোঁয়া-ওড়া সুখে।
রাঙা-পথ রক্ত-ভেজা বিপ্লবের পথে ভাসিতেছে রাজনীতি
মানবের মুক্তির ক্যালানে যুক্তির বাঁধভাঙা খেঁচা-চোদা পথে…
আবার আসিব আমি বাংলার সোঁদা-গাঁজা ভাঙ ভালোবেসে।
হয়তো দেখিবে চেয়ে গাঁজা-পাতা উড়িতেছে পতাকার বেশে –
হয়তো দেখিবে কোন চোদানো-মন্ত্রী নাই আর দেশে –
দেখিবে হারামি সব হারিয়াছে হৃদয়ের ভালোবাসা ভোটে…
বানচোদ সংসদের পোঁদমারি বিপ্লবী কাক-বক-চিল করিয়াছে ঢিলে
আমারেই পাবে তুমি, শালা, সেই মড়াখেকো শকুনের ভিড়ে…