অন্ধের হাতি দেখা
রাজবাড়ির পিলখানায় (হাতিশালা, আরবি ফিল > ফারসি পিল) হাতি বাঁধা আছে। কয়েকজন অন্ধ হাতির আকার-আকৃতি বোঝার চেষ্টা করছে। কেউ হাতির পা নেড়েচেড়ে বললো, হাতি স্তম্ভ বা পিলারের মতো। কেউ হাতির কান নেড়ে বললো, হাতি কুলার মতো। কেউ হাতির লেজ স্পর্শ করে অনুভব করলো, হাতি গরুর লেজের মতো। কেউ শুঁড় নেড়ে জানালো যে, হাতি হচ্ছে বিশাল মোটা অজগর সাপের মতো। এভাবে অন্ধরা হাতির বিভিন্ন অঙ্গ স্পর্শ করে বিভিন্ন রকম বর্ণনা দিচ্ছে হাতির আকার সম্পর্কে আসলে হাতির পুরো বর্ণনা তাদের কারো কাছেই স্পষ্ট নয়।
গৌতমমুনির ন্যায়শাস্ত্র বা যুক্তিবিদ্যা (তর্কশাস্ত্র) অনুযায়ী পূর্বোক্ত যুক্তিগুলো অন্ধহস্তি-ন্যায় বা অন্ধের হস্তিদর্শন যুক্তির অন্তর্ভুক্ত।
কোনো বিষয় সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা না নিয়ে শুধু অংশবিশেষ পর্যালোচনা করে সম্পূর্ণ বিষয়ে মতামত ব্যক্ত করাকে অন্ধের হাতি দেখার সাথে তুলনা করা হয়। আমাদের দেশে অনেক তথাকথিত জ্ঞানী মানুষের মধ্যেও আলোচ্য অন্ধের মতো প্রবণতা লক্ষ করা যায়। কোনো বিষয়ের সামান্য অংশ দর্শন করে বা পুস্তক পাঠের মাধ্যমে অল্প কিছু জ্ঞান লাভ করে কিংবা গোটা কাহিনীর অংশমাত্র শুনেই যারা বিজ্ঞের মতো অভিমত ব্যক্ত করেন তাদের কাজ অন্ধের হাতি দেখার সাথে তুলনীয় এবং প্রবাদটি সেখানে প্রযোজ্য।