স্ত্রীলোক লইয়া আমার জীবনে কোনওরূপ সমস্যা ছিল না। তাই স্ত্রী চরিত্র কতদূর রহস্যময় তাহা লইয়া ভাবিবারও অবকাশ হয় নাই। অল্প বয়সে সুনয়নীর সহিত বিবাহ হইয়া গেল। সুনয়নী যথেষ্ট সুন্দরী। দাম্পত্যজীবনে আমাদের দ্বন্দ্ব ছিল না। স্ত্রীলোক লইয়া কাজেই আমার আর শিরঃপীড়ার কারণ নাই।
কিন্তু স্ত্রীলোকেরা আমাকে সুখে থাকিতে দিবে কেন?
সেই কিশোরীর কাঠচাপা গাছ হইতে পতিত হওয়া এবং আমার সহিত কিছু অদ্ভুত বাক্যবিনিময় ঘটিবার পর একদিন লক্ষ করিলাম, সুনয়নী যেন গম্ভীর। কথা কহিতেছে না, চোখে চোখ রাখিতেছে, দেখা হইলেই মুখ ফিরাইয়া লইতেছে। রাত্রে শয্যায় সে অন্য দিকে পাশ ফিরিয়া ঘুমের ভান করিয়া নিশ্চুপ জাগিয়া থাকিতেছে, তাহাও টের পাইতাম। তবে অভিমান ভাঙাইবার অভ্যাস বিশেষ নাই বলিয়া আমি ঘটনাটিকে উপেক্ষা করিতে লাগিলাম।
কিন্তু নিশ্চেষ্ট থাকিব এমন উপায় কী?
একদিন ঘোর রাত্রে অনুভব করিনাম, সুনয়নী কাঁদতেছে। গুমরানো কান্না। খুব গভীর বেদনা হইতে উঠিয়া আসিতেছে। কান্না আমি সহিতে পারি না।
উঠিয়া তাহার গায়ে হাত রাখিয়ে বলিলাম, কী হয়েছে সুনু?
সে জবাব দিল না।
আরও কয়েকবার প্রশ্ন করিলাম। জোর করিয়া তাহার মুখ আমার দিকে ফিরাইবার চেষ্টা করিলাম। তেমন জোর করি নাই নিশ্চয়ই। সে মুখ ফিরাইল না।
আমি হাল ছাড়িয়া উঠিয়া পড়িলাম। পাশে শুইয়া কেহ কাঁদলে ঘুম হওয়া সম্ভব নহে! সেজবাতিটির পলিতা বাড়াইয়া একখানি কাব্যগ্রন্থ খুলিয়া বসিলাম।
অল্প পরেই সুনয়নী উঠিল। এলোচুল খোঁপা করিল। চোখ মুছিল। তারপর বলিল, তোমার সঙ্গে আমার কথা আছে।
বিরক্ত হইয়া বলিলাম, কথা আছে তো বললেই পারতে। কেঁদেকেটে ওরকম হয়রান হচ্ছ কেন?
সুনয়নী বলিল, কাঁদি কি আর সাধে?
কান্না আমি সইতে পারি না তুমি তো জানো!
কেঁদে উপায় কী বলো! মেয়েদের সবচেয়ে যেটা জোরের জায়গা সেখানেই যদি কেউ হাত দেয় তা হলে কী করব?
আমি না বুঝিয়া হাঁ করিয়া চাহিয়া থাকিয়া বলিলাম, ও আবার কী কথা? কী হয়েছে বলে তো!
সুনয়নী তাহার বালিশের তলা হইতে একখানি ভঁজ করা কাগজ বাহির করিয়া আমার হাতে দিয়া কহিল, পরশুদিন তোমার টেবিলের ওপর পেয়েছি। পড়ো।
খুলিয়া দেখিলাম গোটা-গোটা সুহাদ অক্ষরে লেখা, ও ডাইনি, ওকে যদি কখনও আর আদর করো তা হলে আমি মরব।
সম্বোধন নাই, ইতি নাই। শুধু এই কয়েকটি কথা। কে লিখিয়াছে সে সম্পর্কে আমার মনে সন্দেহ নাই। বুকটা একটু দুরুদুরু করিয়া উঠিল। সুনয়নীর চোখে চোখ রাখিতে পারিলাম না। বড় গ্লানি বোধ করিতেছিলাম। এ সেই উন্মাদিনী কিশোরীর কাজ।
কিন্তু সুনয়নীকে কথাটা বলা যায় না। কাজেই আমাকে মিথ্যাচার করিতে হইল। বলিলাম, এটা কে লিখেছে?
কী করে বলব?
এটার অর্থই বা কী?
অর্থ তো পরিষ্কার। আমি ডাইনি আর তুমি দেবদূত।
আমি মাথা নাড়িয়া কহিলাম, এ চিঠি যে আমাদের উদ্দেশেই লেখা এমন কোনও কথা নেই।
তা হলে তোমার টেবিলে রেখে গেল কেন?
সেইটেই বুঝতে পারছি না। কিন্তু এটা নিয়ে এত উত্তেজিত হওয়ারও কিছু নেই।
নেই? বেশ কথা তো! যে খুশি যা খুশি লিখে রেখে যাবে আর আমি সহ্য করব?
তা হলে কী করবে?
সেটা তুমি বলে দাও। চিঠিটা কে রেখে গেছে সেটা খুঁজে বের করতে হবে।
আমার বুক কাঁপিয়া উঠিল। খোঁজ খবর করিতে গেলে অবোধ ও অবুঝ কিশোরীটি ধরা পড়িয়া যাইবে যে! তাহাকে রক্ষা করিবার একটা ব্যাকুল আগ্রহ বোধ করিতে লাগিলাম।
মাথা নাড়িয়া কহিলাম, সুনু, এরকম চিঠি আমাকে কেউ লিখতে পারে বলে আমার মনে হয় না। কোথাও একটা গোলমাল হয়েছে। মনে হয় কেউ ভুল করে রেখে গেছে বা বাচ্চারা কেউ কুড়িয়ে এনে রেখেছে। এটা নিয়ে শোরগোল না করাই ভাল।
সুনয়নী একটু সরল প্রকৃতির ছিল। সম্ভবত একটু ভালমানুষ গোছের। সে আমার স্ত্রী হইলেও তাহাকে খুব গভীরভাবে মনোযোগ দিয়া কখনও লক্ষ করি নাই। বিবাহবাসরে প্রথম তাহার মুখখানা দেখিয়া মনে হইয়াছিল, বাঃ, বেশ তো! ব্যস, আমার রূপমুগ্ধতার ওইখানেই শেষ। এই নিস্পৃহতা আমাকে কেউ চেষ্টা করিয়া অর্জন করিতে হয় নাই। আমার স্বভাবে ইহা ছিলই। তাই সুনয়নীর সহিত শারীরিকভাবে এতদিন ঘনিষ্ঠ বসবাসের পরও সে কখনওই আমার হৃদয় জুড়িয়া বসে নাই। বোধহয় ইহা একপ্রকার ভালই।
সুনয়নী আরও কিছুক্ষণ অশ্রুবিসর্জন করিল। অজানা পত্ৰলেখিকার উদ্দেশে কিছু গালি ও অভিশাপ বর্ষণ করিল। তারপর চিঠিটি কুটিকুটি করিয়া ছিড়িয়া ফেলিল। তারপব আমার দিকে হাত বাড়াইয়া বলিল, এসো, আমাকে অনেক আদর করো।
সেই কামনার আহ্বানে সাড়া দিলাম বটে, কিন্তু মনটা কেমন আড় হইয়া রহিল। শরীরের মিলনে মন নাচিয়া উঠিল না। এক অজানা স্পন্দনে আজ আমার হৃৎপিণ্ড আন্দোলিত হইতেছে। কিছু ভয়, কিছু চোরা আনন্দ, কিছু শিহরন আমি টের পাইতেছিলাম, যাহা দৈনন্দিন নহে, স্বাভাবিক নহে।
পরদিন সেই কিশোরীকে খুঁজিয়া বাহির করিলাম। কথাটা যত সহজে বলা গেল, কাজটা তত সহজ হয় নাই। কিশোরীটি সর্বদাই আমাদের বাড়ির সর্বত্র ঘুরিয়া বেড়ায়। পরনে আধময়লা শাড়ি, নগ্ন পদ, চুল ঝুটি করিয়া বাঁধা। তাহাকে খুঁজিতে হয় না। কিছুক্ষণ পরপরই তাহাকে দেখা যায়। আমি তাহাকে এইভাবে সকলের সামনে কিছু প্রশ্ন করিতে সাহস পাইলাম না। লোকের সন্দেহ হইতে পারে। তাই আমি তক্কেতকে রহিলাম। বার-বাড়ি হইতে খেলা সারিয়া দ্বিপ্রহরের দিকে সে নদীর ঘাটে চলিল। আমি আড়াল হইতে চোখ রাখিতেছিলাম।
নদীর ধারে সারা বছরই উলটানো নৌকা কিছু পড়িয়া থাকে। মেরামতির জন্য। অনেকগুলি আবার ঠেকনো সহযোগে ঈষৎ উঁচুতে তোলা। এগুলির অভ্যন্তর ছায়াময় এবং গৃহসদৃশ। বালক-বালিকারা এইসব নৌকার নীচে দিব্য খেলার সংসার পাতিয়া বসে।
আমার সেই কিশোরীটি এইরূপ একটি নৌকার ছায়ায় বসিয়া উদাস দৃষ্টিতে ব্রহ্মপুত্রের ঢেউ দেখিতেছিল। সেইখানে, সেই নির্জনতাতেও তাহার মুখোমুখি হইতে কেমন যেন সাহস হইতেছিল
না। মনে হইতেছিল, কী এক অসামাজিক কাণ্ড করিতে চলিয়াছি।
যাহা হউক অবশেষে সাহস সংগ্রহ করিলাম এবং সেই নৌকার কাছে গিয়া সবেগে গলা খাঁকারি দিলাম।
কিশোরীটি অপাঙ্গে একবার আমাকে চাহিয়া দেখিল। কিন্তু যেরূপ অপ্রত্যাশিত ছিল সেরূপ কিছুই ঘটিল না। শশব্যস্তে উঠিয়া বসিবে, সলজ্জ অবনত দৃষ্টিতে জড়োসড়ো হইবে, সেরূপ কিছুই না।
বলিল, তুমি কি আমাকে বকবে?
এমনভাবে বলিল যেন বকাঝকা সে বড় গ্রাহ্য করে না। বকিলে বকিতে পারো, তোমারই শ্রম।
আমি বলিলাম, চিঠিটা কি তুমি লিখেছিলে?
আমি ছাড়া আর কে?
কেন লিখলে?
আমার ইচ্ছে।
ইচ্ছে মানুষের নানারকম হয়, তা বলে কি ইচ্ছেমতো চলা উচিত?
তুমি আমার বাবাকে কী বলেছ?
কী বলেছি?
তুমি বাবাকে জিজ্ঞেস করেনি আমি পাগল কি না?
করেছি।
তুমি কি আমাকে পাগল ভাবো?
ঠিক তা নয়। তবে তোমার কিছু আচরণ স্বাভাবিক নয়।
বেশ তো, আমি না হয় পাগল। পাগলেরা অনেক কিছু করে, কী করবে?
কিছু করব বলিনি তো।
করো না! আমিও যা খুশি করব।
আমার ওপর তোমার এত রাগ কেন?
তুমি ওর সঙ্গে থাকো কেন?
ও মানে কে? সুনয়নী?
হ্যাঁ।
ও যে আমার বিবাহিতা স্ত্রী।
কিশোরী এবার ডগডগে চোখ দুইটি সম্পূর্ণ মেলিয়া আমার চোখে স্থাপন করিল, সেই দৃষ্টি এতই তীব্র যে সহিতে পারিতেছিলাম না। এক তীব্র জ্বালা ও উত্তাপ যেন আমাকে স্পর্শ করিতেছিল।
কিশোরী হঠাৎ চক্ষু নত করিয়া কহিল, তুমি কি আমাকে মরতে বলো?
ও কী কথা! মরতে বলব কেন?
আমি মরতে পারি। তাতে যদি তোমাদের শান্তি হয়।
ওকথা বলবেও না, ভাববেও না।
তা হলে কী করব?
দয়া করে শোওয়ার ঘরে উঁকি দিয়ো না, আর চিঠিও লিখো না।
কেন? আমার যে ইচ্ছে করে।
বললাম যে সবসময় ইচ্ছেমতো চলতে নেই। ধরা পড়ে যাবে।
ধরা পড়লে পড়ব।
না। ধরা পড়লে তোমার নিন্দে হবে।
হোক না নিন্দে। তোমাকে জড়িয়েই তো হবে।
সেটা কি ভাল হবে?
হবে। তোমার সঙ্গে জড়িয়ে আমার নিন্দে হলে আমি খুশি হই।
আমি স্তম্ভিত হইয়া গেলাম। এই পাগলিনীকে কে কীই বা বুঝাইতে পারিবে? রাগ করিয়া লাভ নাই। এই উন্মাদিনী যে-কোনও পরিণতির জন্যই প্রস্তুত। ইহার ভয় বলিয়া কিছু নাই। লজ্জা নাই। ঘৃণা নাই। মেয়েদের বয়ঃসন্ধির প্রেম কি এরকমই ভয়ানক?
অগত্যা অন্য পন্থা ধরিতে হইল।
কহিলাম, আমাকে কি তুমি ভালবাসো?
কী আশ্চর্য! এত কথায় ইহাকে বাগে আনিতে পারি নাই। কিন্তু ভালবাসা কথাটি উচ্চারণ করা মাত্র যেন জেঁকের মুখে লবণ পড়িল। আচমকা তাহার শ্যামলা রঙে রক্তোচ্ছাস দেখা দিল। চক্ষু নত।
সে জবাব দিল না। কিন্তু একটু পরেই দেখিলাম, সে হাতের পিঠ দিয়া চোখ মুছিতেছে।
কাঁদছ কেন? —আমি সস্নেহে প্রশ্ন করিলাম।
তুমি যাও।
কেন বলো তো!
আমি আর চিঠি দেব না। উঁকিও মারব না।
ঠিক তো!
ঠিক।
মরার কথাও ভাববে না তো!
মরব। আজই মরব।
আমি আত্মসংবরণ করিতে পারিলাম না। হাত বাড়াইয়া তাহার একটি হাত সবলে চাপিয়া ধরিয়া কহিলাম, বেয়াদবি করবে তো এক্ষুনি নিয়ে গিয়ে তালাবন্ধ করে রাখব।
সে হাত ছাড়াইয়া লইল। তারপর বলিল, এখানে কেন এসেছ?
তোমাকে শাসন করতে।
সবাই দেখছে।
এখানে কে দেখবে?
বাড়ির ছাদ থেকে দেখা যায়। নদীর ঘাট থেকেও। তুমি যাও।
আমি বলিলাম, তোমাকে নিয়েই যাব। চলো।
আমি যাব না।
আমি কোমল কণ্ঠে কহিলাম, লক্ষ্মী সোনা, এরকম করে না। চলো। আমাকে কষ্ট দিয়ে তোমার কী লাভ?
তোমার আবার কষ্ট কীসের? সুন্দর বউ পেয়েছ।
বউ সুন্দর হলে বুঝি আর কারও কোনও কষ্ট থাকে না?
তাই তো।
কিন্তু আমি কষ্ট পাচ্ছি।–বলিয়া হাসিলাম। বলিলাম, তোমার জন্য।
পাগলিনী বলিল, তুমি ওকে বিয়ে করলে কেন?
আমি হাসিব না কাঁদিব ভাবিয়া না পাইয়া কহিলাম, আমি যখন সুনয়নীকে বিয়ে করি তখন তুমি তত এইটুকু খুকি।
এইবার সে হাসিল। হঠাৎ বলিল, নইলে কি আমাকে করতে?
আমি আমূল লজ্জা পাইয়া বলিলাম, ওসব কথা থাক।
থাকবে কেন? কান ভরে শুনে নিই। আমি তো আজ মরবই। বলো।
আমি বিব্রত ও হতচকিত হইয়া কহিলাম, বোধহয় তোমাকেই করতাম। এখন চলো।
আমার যা শুনবার শোনা হয়ে গেছে। এখন তুমি যাও। আমি জলে ঝাঁপ দেব।
সর্বনাশ!
যারা সাঁতার জানে তারা মরে না। আমি স্নান করব।
তটস্থ হইয়া কহিলাম, অন্য কোনও মতলব নেই তো!
না। তুমি যাও।
চলিয়া আসিলাম। মনটা বড় ভারাক্রান্ত। জীবনে নতুন একটি অপ্রত্যাশিত দিক হইতে যেন একটি আলোর রেখা আসিয়া পড়িয়াছে। কিন্তু সেই আলো আমাকে উজ্জ্বল করে নাই। বিষয় করিয়াছে।
এই কিশোরী কন্যাটির ভবিষ্যৎ কী? আমিই বা কী করিব?
সেইদিন রাত্রে সুনয়নী বলিল, চিঠিটা নিয়ে আমি খোঁজখবর করেছি।
বুক কাপিয়া উঠিল। বলিলাম, ও, তা কী জানলে?
ঝি-চাকররা কেউ কিছু বলতে পারছে না। তবে—
তবে আবার কী?
থাক গে। তোমার শুনে কাজ নেই।
বলিয়া সুনয়নী হঠাৎ আমাকে জড়াইয়া ধরিয়া হি হি কবিয়া হাসিতে লাগিল।
কী হল?
তোমার দিকেও তা হলে মেয়েরা নজর দেয়?
আমি বলিলাম, না না।
শোনো, আমি বরং খুশিই হয়েছি।
তার মানে?
অনেক ভেবেচিন্তে দেখলাম, তুমি তো একদম সাধু মানুষ। ন্যালাখ্যাপা গোছের। মেয়েরা তোমাকে বরং এড়িয়েই চলে। একটা মেয়ে যে নজর দিয়েছে তাতেই বোঝা যায় তার চোখ আছে।
এই কথায় খুশি হওয়া উচিত, না রাগ করা উচিত, তাহা বুঝিতে পারিলাম না। চুপ করিয়া রহিলাম।
সুনয়নী বলিল, রাগ করলে?
না তো!
চিঠিটা পেয়ে তুমি একটু খুশিই হয়েছ, না?
না। চিঠিটা আমাকে লেখা কি না তাই তো জানি না।
তোমাকেই গো, আর সাধু সেজো না।
সন্দেহ আছে।
আমাকে কেন ডাইনি বলল বলো তো।
বলুক না, কথায় তো ট্যাকস নেই।
আমি কিন্তু খুব ভেবেছি।
কী ভাবলে?
আমাকে ডাইনি কেন বলল? হিংসে থেকে।
দূর! ওসব ভেবো না।
আমার খুব ইচ্ছে করে মেয়েটার সঙ্গে আলাপ করি।
আবার ভাবছ?
খুব ভাবছি। ঠিক ওকে খুঁজে বের করব দেখো।
কী দরকার?
বললাম যে, তোমাকে সে ভালবাসুক তাতে ক্ষতি তো নেই। কিন্তু আমি ওর কী ক্ষতি করেছি?
আমি হাই তুলিলাম।
ওকে পেলে খুব সাজাব। কনের মতো। নিজেও সাজব। তারপর আয়নায় পাশাপাশি দাঁড়িয়ে দেখব কে বেশি সুন্দর। যদি আমি হারি—
আঃ সুনয়নী!
সুনয়নী আজ বড় প্রগম্ভ। আকুলভাবে আমাকে আলিঙ্গন করিয়া কহিল, আমার সঙ্গে ও পারবে না।
কে পারবে না?
ও। রূপের পাল্লায় হেরে যাবে। দেখো।
কী যে হল তোমার!
আজ আমাকে একটু আদর করো। আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে।