সেরা আশ্চর্য! সেরা ফ্যানট্যাসটিক (প্রথম পর্ব) – সম্পাদনা : অদ্রীশ বর্ধন
ফ্যানট্যাস্টিক ও কল্পবিশ্ব পাবলিকেশনস যৌথ প্রয়াস
প্রথম ফ্যানট্যাস্টিক প্রকাশ – জানুয়ারি, ১৯৯৪
প্রথম যৌথ প্রকাশ – জানুয়ারি, ২০১৯
প্রচ্ছদ – ধুনজী রানা ও দেবজ্যোতি ভট্টাচার্য্য
অলংকরণ – ধুনজী রানা
বর্ণবিন্যাস – সুদীপ দেব
উৎসর্গ
কল্পবিজ্ঞানপ্রেমী সমস্ত পাঠকের উদ্দেশে
.
সম্পাদকের কথা
বিশ্বের প্রথম সায়ান্স-ফিকশন সিনে ক্লাব এই কলকাতায় সত্যজিৎ রায়ের সভাপতিত্বে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মূলে ছিল ভারতের প্রথম সায়ান্স-ফিকশন মাসিক পত্রিকা ‘আশ্চর্য!’ যার প্রথম প্রকাশ ১৯৬৩ সালে। ১৯৭৫-এ বেরয় ‘ফ্যানট্যাসটিক’। প্রথম পত্রিকার একাধিক নামাংকন করেছিলেন বিমল দাস। দ্বিতীয় পত্রিকার নামাংকন করেন সত্যজিৎ রায়। বিমল দাসও মেতে উঠেছিলেন নামাংকনের খেলায়। পত্রিকার চরিত্র প্রকাশ পেয়েছিল প্রতিটি নামাংকনে।
এই চরিত্র যে শুধু কল্পবিজ্ঞানেই সীমিত থাকবে না, ফ্যানট্যাসি এবং ভূতের গল্পও পত্রিকায় ছাপা হবে এবং সিনে ক্লাবে দেখানো হবে—তা জানিয়েছিলেন প্রধান পৃষ্ঠপোষক সত্যজিৎ রায় এবং প্রধান উপদেষ্টা প্রেমেন্দ্র মিত্র। ক্লাবের জেনারেল মিটিংয়েও তাঁদের এই নির্দেশ শোনা গেছিল।
এই দুই পত্রিকা থেকেই ৩০ বছরের গল্প উপন্যাস বাছতে গিয়ে তাই তাঁদের নির্দেশের কথা মনে রাখতে হয়েছে। ৩০ বছরে সমাদৃত হয়েছে এই সম্পাদকীয় সিদ্ধান্ত—আশা করা যায় এই সঙ্কলনেও তা হবে।
অদ্রীশ বর্ধন
বইমেলা
২৬ জানুয়ারি, ১৯৯৪
.
প্রকাশকের কথা
আসুন টাইম মেশিনে চড়ে বসা যাক।
গত শতকের ছয়ের দশকে বাংলা কল্পবিজ্ঞান চর্চা এক ‘আশ্চর্য!’ মাত্রা পায় তরুণ অদ্রীশের হাত ধরে। এমনকী, সায়েন্স ফিকশনের বঙ্গীয়করণ ঘটিয়ে তাকে কল্পবিজ্ঞান করে তোলাটাও তাঁরই মস্তিষ্কপ্রসূত। ভারতবর্ষের প্রথম কল্পবিজ্ঞানের পত্রিকা ‘আশ্চর্য!’ কয়েক বছরের আয়ুষ্কালে এক গভীর ছাপ রেখে গিয়েছে। পৃথিবীর প্রথম সাই ফাই সিনে ক্লাবটিও গড়ে ওঠাটাও এই সময়ে। সত্যজিৎ-প্রেমেন্দ্রর মতো খ্যাতিমান লেখকদের পাশাপাশি তরুণ লেখকদের সঙ্গে করে নিয়ে পত্রিকাটি চালিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন অদ্রীশ। কাজটা ছিল অত্যন্ত কঠিন। কিন্তু অদ্রীশ চ্যালেঞ্জটা নিয়েছিলেন। অথচ আচমকাই এক অনভিপ্রেত বিচ্ছেদ তাঁর জীবনটাই বদলে দিল। মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত অদ্রীশ বন্ধ করে দিলেন পত্রিকা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আবারও তিনি ফিরে এসেছিলেন তাঁর স্বপ্নের কাছে। বছর কয়েক পরে চালু হল ‘ফ্যানট্যাসটিক’। পত্রিকা ও প্রকাশন একই নামে।
কাট টু ২০১৮। বাংলার প্রথম কল্পবিজ্ঞান-ফ্যান্টাসি বিষয়ক ওয়েব ম্যাগাজিন ‘কল্পবিশ্ব’ শুরু থেকেই পাঠকপ্রিয় হয়ে ওঠার পরে এই বছরই শুরু করল প্রকাশনাও। নতুন লেখা প্রকাশের পাশাপাশি পুরনো বইয়ের পুনর্মুদ্রণের ব্যাপারেও শুরু হয়েছিল চিন্তাভাবনা। আর সেই ইচ্ছেরই প্রথম প্রয়াস এই বই। ‘সেরা আশ্চর্য! সেরা ফ্যানট্যাসটিক’ কেবল ওই দু’টি পত্রিকার সেরা রচনার সংকলন মাত্র নয়। তা বাংলা কল্পবিজ্ঞানের স্বর্ণযুগের শ্রেষ্ঠত্বের এক আঁজলা উজ্জ্বল নমুনা। তবে প্রকাশের সময়ে বইয়ের আকার ও পাঠকের ক্রয়ক্ষমতার কথা মাথায় রেখে দু’খণ্ডে প্রকাশ করার কথা ভাবা হল।
জুলে ভার্নকে নিয়ে লেখা সদ্যপ্রয়াত সাহিত্যিক নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর কবিতা, দু’টি দুর্দান্ত উপন্যাস, অসামান্য সব ছোটগল্প এবং অবশ্যই সত্যজিৎ রায়ের প্রবন্ধ ‘এস্ এফ’—এই দিয়েই সাজানো হল প্রথম খণ্ডটি। লেখক তালিকায় সত্যজিৎ রায়, প্রেমেন্দ্র মিত্র, নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়, লীলা মজুমদার, ক্ষিতীন্দ্রনারায়ণ ভট্টাচার্য, তারাপদ রায়, অদ্রীশ বর্ধন, অনীশ দেবের মতো নাম। এমন বই হাতে নিলেই যে কোনও পাঠকের মন ভালো হয়ে যাওয়ার কথা।
বইটি পুনঃপ্রকাশ করার অনুমতি দিয়েছেন অদ্রীশ বর্ধন ও তাঁর পুত্র অম্বর বর্ধন। তাঁদের কাছে আমাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।
এক হারানো সময়ের উজ্জ্বল জলছাপ এই বইয়ের পাতায় পাতায়। যাঁরা সেদিনের তরুণ, তাঁরা নতুন করে রোমাঞ্চিত হবেন। পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরাও মুগ্ধ হবে বাংলা কল্পবিজ্ঞানের অন্যতম সেরা এই রচনাগুলি পাঠ করে, এ ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত।
Leave a Reply