• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক্স
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

লুটপাট – আবূ সাইফুল্লাহ

লাইব্রেরি » লুটপাট – আবূ সাইফুল্লাহ

সূচিপত্র

  1. গুম স্বামী
  2. ভোট
  3. বিপ্লব বনাম প্রতিবিপ্লব
  4. স্লোগান বনাম বাস্তব
  5. স্বাধীনতার মুক্তি
  6. তোমার মাঝে সত্য নাই
  7. আইনের ফাঁকফোকর
  8. রাজনীতির মারপ্যাঁচ
  9. শিরোনাম
  10. আইনের জবানবন্দি 
  11. রাজদন্ড মওকুফ 
  12. চিন্তা বন্দী
  13. একটা কবিতা লিখব বলে 
  14. চোরা খান সাহেব জিন্দাবাদ
  15. স্বৈরাচারের গুণ
  16. সশস্ত্র সৈনিক
  17. বিদেশী শত্রু
  18. গর্ভবাস সমাপ্তি
  19. বাড়ন্তবেলা
  20. পারিবারিক শিক্ষা
  21. প্রাথমিক শিক্ষা
  22. মাধ্যমিক শিক্ষা
  23. উচ্চতর শিক্ষা
  24. ব্যক্তৃতার পুজি : সামাজিক সমস্যা
  25. স্বৈরাচারের আতুর ঘর
  26. রাজনৈতিক দল ও স্বৈরাচার
  27. ভোট ও স্বৈরাচার
  28. মসনদে স্বৈরাচার 
  29. ষোলো আনা স্বৈরাচার
  30. ক্ষমতানিবাসের পতন
  31. ক্ষমতা পরবর্তী স্বৈরাচার 
  32. সমাপ্তি দুনিয়াবাস
  33. একটি কবিতা লেখা হলো না

লুটপাট – আবূ সাইফুল্লাহ

উৎসর্গ

যারা ভালো কাজ করে তাদের সফলতা ও যারা খারাপ কাজ করে তাদের সংশোধন কামনায়। আল্লাহ ভরসা। 

লেখক

 কৃতজ্ঞতা স্বীকার-

১. মুনির আহমাদ, লেখক ও প্রকাশক, উচ্ছাস প্রকাশনী।
২. অন্তরা বিশ্বাস
৩. শাইখ সাইফুল্লাহ
৪. মনির হিন্দুস্তানী 
৫. আমার বাবা মা ও পরিবার পরিজন।

 .

অবতরণিকা

 সমাজে বিদ্যমান অত্যাচার, জুলুম, অসাম্য, বৈষম্য, নিপীড়ন, সন্ত্রাস, অরাজকতা, অবৈধ উপার্জন, দুর্নীতি, সামাজিক অপরাধকে কাব্যের মাধ্যমে প্রতিবাদ করার জন্য এ কাব্যগ্রন্থ।

.

কবি পরিচিতি 

মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর থানার গণসিংজুরী গ্রামে ১৯৯০ এর দশকে জন্মগ্রহণ করেন। লেখকের বাড়ি থেকে একটু দূরে কালিগঙ্গা নদী। নদীমাতৃক গ্রামীণ পরিবেশে তার বেড়ে উঠা। একটি সরকারী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এস.সি ইন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি সম্পন্ন করার পর বর্তমানে একটি রপ্তানিমুখী কোম্পানীতে কর্মরত আছেন। 

. 

গুম স্বামী

মানুষটা কোথায় আছে? জানা নেই কারো,
জীবিত ছিল, এখন কেমন? বলা ছাড়ো!
মায়ের চোখে ঘুম নেই, বাবা কোথায়?
সন্তান বলে, আব্বু যেথায়, যাব সেথায়,
বৌ বলে, স্বামী তাহলে কোথায়?
 
    কেউ বলে সাদা পোশাকধারী ধরেছে,
    অন্ধকার রাতে হয়তো মেরেছে।
    কেউ বলে, থানায় আটক আছে,
    কেউ বলে, নারী নিয়ে পালিয়েছে।
 
থানা বলে, আটক নেই জেলখানায়,
বিগত সপ্তাহে লাশ আসেনি এই থানায়।
জেলা হাসপাতালের মর্গে লাশ আছে একটা,
মিললেও মিলতে পারে মানুষটা।
 
    বয়স মিলে না, চেহাড়া মিলে না,
    পোশাক মিলে না, হাতের ছাপ মিলে না,
    হয়তো কোনটা মিলে কোনটা মিলে না
    লাশটাও বুঝি এবার পাওয়া যাবে না।
 
তাড়াহুড়ো করবেন না, পুলিশ সুপার বলে
জানাবো, শেষ খবর পেলে।
রাগ করে বের হয়নি, হারিয়ে যাবে,
আশেপাশে বন নেই বাঘে ধরে খাবে।
 
    নারী নিয়ে পালিয়ে গেলে বুঝতাম,
    হরতাল মিছিলের আগে বের হলে মানতাম।
    রাজনীতি তো করে না মানুষটা,
    কারে দেয় নির্বাচনের ভোটটা?
 
হয়তো একটু একটু রাজনীতি করে,
ভোট যারা দেয় সবাই রাজনীতির ভিতরে।
যে দলকে দিবেন ভোটের সিল,
সে দলের সমর্থকের সাথে আপনার মিল।
 
    মাসখানেক হলো কই গেলো লোকটা
    মরে গেলেও তো থাকবে চিহ্নটা।
    বেওয়ারিশ লাশ দাফন করে যারা,
    আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম তারা।
 
কোন বাহিনীকে দোষ দিচ্ছি না,
মানুষটার কোনো খবর পাচ্ছি না।
কেউ কিছু জানে না, এটা কেমন কথা,
পুরাতন ফুটেজে দেখা যাচ্ছে ঐতো লোকটা!
 
    ছয় মাস খোঁজাখুঁজি এখানে সেখানে,
    খোঁজ নেই দফতর বা অন্য কোন খানে।
    নাই তার, কোনো খবর নাই,
    জমানো টাকা শেষ, কি খাই?
 
খরচের খাতা বাড়ছে দেদার
আয়ের খাতা শূন্যের পর শূন্য এবার,
জেলা স্কুল থেকে শিশুকে ছাড়ানো হলো
ছোট স্কুলে ভর্তি করা হলো।
 
    গয়না বিক্রি শেষ হল এবার,
    হাওলাত দেয় না কেহ আর।
    স্বামী বৈধব্য জীবন নিয়ে ছুটে চলা
    এভাবেই কি চলবে আমার পথ চলা?
 
ডিপিএস ভাঙতে হবে, সবই মিছে
কিস্তি কয়েকটা দেয়ার বাকি আছে।
আপনার স্বামী মৃত হলে সনদ দেন,
আপনার স্বামীর টাকা বুঝে নেন।
 
    সাহেব, আমার স্বামী নিখোঁজ
    বছরখানেক নেই তার কোন খোঁজ।
    মৃত্যু সনদ ছাড়া টাকা দেয়া যাবে না,
    ওয়ারিশ সনদ ছাড়া কিছু বিক্রি হবে না।
 
তাহলে কি রাস্তায় থাকব? জজ সাহেব!
আপাতত অপেক্ষা করেন, সব বাহিনী খুঁজুক,
দোয়া করেন, মানুষটা ফিরে আসুক!
 
    তোর স্বামী মরে গেছে, আরেকটা বিয়া কর,
    তোর স্বামী হারায়ে গেছে, আরেকটা স্বামী ধর।
    বয়শ তো ত্রিশও হয়নি, রূপ আছে,
    হয়তো দু একটা বাচ্চাও থাকে পিছে।
 
এমন করিয়া যাবে না কালো দিন,
সময় থাকতে হিসাব কর রাতদিন।
নিজের কথা বাদ দিলাম পুরোপুরি, 
সন্তানের জন্য একটু ছুটাছুটি করি।
    প্রতিদিন সূর্য উঠে, অস্ত যায়,
    প্রতিক্ষার দিন শেষ না পায়।
    দিন যায় রাত যায়, স্বামী আসে না,
    বাচ্চারা তার বাবার কথা ভূলে না।
 
আব্বু আসবে কবে? বল, মা?
আমি তোর আব্বু, আমি তোর মা,
শাশুড়ী কহে আসবে ছেলে ফিরে,
হয়তো কোন একদিন মানুষের ভিড়ে।
 
    শাশুরি মারা গেছে দু বছর হলো,
    ছেলের এসএসসির রেজাল্ট বেড়োলো।
    স্বামীর শোক এখনো মনে আছে, 
    চোখের পানি কিছুটা শুকিয়ে গেছে।
 
পুরাতন অ্যালবামের স্বামীর ছবি,
মাঝে মাঝে দেখা হয়, দেখি।
মাঝে মাঝে মন চাইলে কাঁদি,
চলবে এভাবে সামনের দিন অনাদি।
 
    আশা ছেড়ে দিয়েছি, হলো অনেকদিন,
    স্বামী ফিরবেনা আর কোনো দিন!

ভোট

নির্বাচনের তফসীল ঘোষণা হলে আসে
মনোনয়ন জমা দিয়ে ভোটের জন্য বসে,
যে রাস্তায় পড়েনি পথিকের পা দুখানি
বিনা স্বার্থে আসা হয়েছে, কি করে মানি?
 
    কাঁদাময় রাস্তা, ভাঙা ব্রিজ, বাঁশের সাঁকো
    নৌকা থেকে নেমে আরো পথ পায়ে হাঁকো,
    সাইকেলও চলে না মেঠো, ভাঙা পথের ঘাসে
    সেখানে জন নেতা আসে প্রভাতে, বসে পাশে।
 
        বালুর চড়, বিশাল মাঠের মধ্যে একটা বাড়ি
        বাদ যায় না একটি মনুষ্য পথ পাড়ি,
        রাস্তায় থাকা ভোটারও সম্মান পায় আজ
        এলাকার ভোটার না হলে পাবে হয়তো লাজ।
 
ভোটার আম পারার জন্য গাছের মগডালে
সমর্থক দাড়ায়ে আছে, কথা বলবে বলে,
মাঝির দাড় টানা অর্ধেক হয়েছে সম্পাদন
এর মধ্যে চলে আসে ভোটের কথোপকথন।
 
    ভিক্ষুক, মেথর, কুলি, ধনীর নাই ব্যবধান
    সংবিধানে সবার ভোটের মান যে সমান,
    সন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজ, পতিতা, চোর, বাটপার
    ভোট প্রদানের অধিকার আছে সবার।
 
        প্রার্থী ভোট চায় ভালো মন্দ সবার কাছে
        জামিন লাগবে নির্বাচন শেষে, চোর বলে পিছে
        চতুর প্রার্থী সবাইকে দেয় সুন্দর সুন্দর কথা
        আসলে মুখে ফুলের মধু, ভেতরে শঠতা যথা।
 
রাস্তা নাই এলাকায়, বিজয়ী হলে রাস্তা হবে
স্কুলের ভাঙা বেড়া সোজা হয়ে দাড়াবে,
বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা সব নাকি দিবে?
জনগণের অধিকার জনগণ ফিরে পাবে।
 
    সব চাঁদাবাজরা চলে যাবে জেলখানায়
    চোরেরা কাজ করে খাবে, যে কাজ মানায়,
    সংস্কার করে গড়া হবে এই সমাজ, সভ্যতা
    পাপীরা আর করতে পারবে না অসভ্যতা।
 
        সচেতন নাগরিক কহে পঞ্চাশ বছর চলে
        রাস্তা ঠিক হবে, সবাই ভোটের আগে বলে,
        ভোট শেষে ভোট পাখির গজায় ডানা
        কোথায় চলে যায়? দূর সে অজানা!
 
অনেক প্রার্থী সবাই ভালো ভালো কথা কয়
কাকে ভোট দেই? না জানি, কি হয়?
ভোটের আরো কাছে সাতদিন, সময় আছে
প্রার্থীরা সুন্দর করে ঘুরে পিছে পিছে।
 
 
    প্রার্থীর নির্বাচনে খরচ লাখ বা কোটি টাকা 
    আয় আছে অনেক, দুহাতে উড়ায় টাকা
    কাওকে দেয় টাকা, কাওকে দেয় কথা
    সব পূরণ হবে, দরকার শুধু ভোটে জেতা।
 
        গরীব ভোট বিক্রি করে পাপীর কাছে
        পাপীর পাপ বহনের জন্য সে প্রস্তুত আছে
        সব প্রার্থী পাপী হলে দিবো কারে ভোট?
        প্রয়োজনে না ভোট, নহে পাপীর সাথে জোট।
 
জনগণের ভোট জনগণ দিবে
জনগণ সরকার পরিবর্তন করবে,
টাকায় ভোট কেনা যায়, চাল ডাল দিয়ে যায়
ভোটের দিন গাড়ি ভাড়া দিয়ে নিয়ে যায়।
 
    প্রয়োজনে হুমকি ধমকি, ভোট দিয়ে যান
    আসেন ভাই আসেন, ভোট দিয়ে যান,
    একটা ভোট এক খিলি পান
    ভোট শেষে এক কাপ দুধ চা খান।
 
        বিজয়ী প্রার্থী পেল রাজ সিংহাসন
        মেনে চলবে সংবিধান, সুন্দর হবে প্রশাসন,
        চোর, ডাকাত, দস্যু সব রয়ে গেলো দেশে
        কত দল চলে যায়, নতুনরা ক্ষমতায় আসে।
 
 
মাদক ব্যবসায়ী, নদীখোর, অত্যাচারী
সবাই পায় যেন নতুন নতুন জমিদারী,
দেশের দুর্নীতি দূর হলো না কোনো দিন
পাঁচ বছর পর পর আসে ভোটের দিন।

বিপ্লব বনাম প্রতিবিপ্লব

শুধু শান্তিপূর্ণ বিপ্লব কোথায় পাই?
রক্তহীন বিপ্লব বলতে কিছু নাই।
রক্ত ঝরে কম বা বেশী, ঘাতের জবাব প্রতিঘাত,
অত্যাচার, নির্যাতনের জবাব প্রতিবাদ।
 
শুধু দাম বৃদ্ধি বিপ্লবের পুঁজি নয়,
ট্রাফিক জাম বিপ্লবের মতো নয়।
বিপ্লবের পুঁজি হল দুর্নীতি, দুর্নীতি,
অত্যাচার, নির্যাতন আর পুঁজিপতি।
 
বুর্জোয়া শাসন বছরের পর বছর,
জনগণের হালচালের নাই কোন খবর।
 
বিপ্লবের ছায়াসঙ্গী হচ্ছে প্রতিবিপ্লবের সহমত,
বিপ্লবের সাথে থাকে প্রতিবিপ্লবের আলামত।
দেশের বিপ্লব নিয়ে দেশে বিদেশে আলোচনা,
কেউ করে প্রচারণা, কেউ সমালোচনা।
 
নানা ছক, নানা কৌশল, নানা চক্রান্ত আছে,
কেউ বলে সত্য, কেউ বলে মিছে।
সরকারের ভেতরে থেকেও কেউ স্বপ্ন দেখে,
আরেক মহল প্রতিবিপ্লবের রং মাখে।
 
বিপ্লবের পরিকল্পনা সফল বা ব্যর্থ হবে,
পরাজিতরা বসে নেই, কেন বসে রবে?
সবাই বিজয়ের হাসি হাসতে চায়,
যার গদি ছুটে যাবে, সে ভয় পায়।
 
যোগাযোগ মাধ্যমে টানটান উত্তেজনা,
কি খেলা শুরু হয়, দূর অজানা?
কখব শুরু হবে বিপ্লবের পাল্টা খেলা,
টকশো, টিভিতে বিতর্ক খোলামেলা।
 
প্রতিবিপ্লব সময়ের ব্যাপার, যেন হাতের মোয়া,
মূলহোতাদের যায় না ধরাছোয়া।
 
         আইন বনাম দমনপীড়ন, 
         শাসন বনাম অপশাসন,
         অন্যায় বনাম প্রতিবাদ,
         ইনসাফ বনাম দুর্নীতিবাদ,
         বিপ্লবের উনুনে আগুন জ্বালায়,
         জনরোষ বাড়ায়, শিখা বাড়ায়।
 
         বিপ্লবী বনাম শাসনবাদী,
         বিপ্লবী বনাম প্রতিবিপ্লবী,
         মজলুম বনাম অত্যাচারী
         ইনসাফ বনাম পাপাচারী,
         নীতি বনাম নীতি নাই,
         বিপ্লব খেলার শেষ নাই।
 
এক যুগ বা আরেক যুগে,
বর্তমান, পরে বা শত বছর আগে।
অনিবার্য সংঘাতের কোন শেষ নাই,
বিপ্লবী চেতনার মৃত্যু নাই।
 
 
কে জিতবে? কে হারবে? জানা নাই,
ক্ষমতার চেয়ার কোথাও ফাঁকা নাই।
কে কোন পক্ষে ভালোভাবে জানা নাই?
বুঝার সাধ্য কারো আছে, কারো নাই।
 
এতটুকু বুঝি যারা চিরসত্যের পক্ষে,
সৃষ্টিকর্তা যেন থাকে তাদের পক্ষে।
 
         মিথ্যার জয়কে বলবো দখলদারী,
         মিথ্যার জয়কে বলবো অত্যাচারী।
         সত্যের জয় বিজয়,
         সত্যের পরাজয়ও বিজয়
         সত্যের উপর থাকাই প্রকৃত বিজয়।

স্লোগান বনাম বাস্তব

স্লোগানে    দেশের জন্য সব করতে পারি,
                দেশের জন্য জীবন বাজি ধরতে পারি।
বাস্তবে      আমেরিকার ভিসার জন্য দৌড়াদৌড়ি,
                নানা দেশের ভিসায় পকেট ভারী।
 
স্লোগানে    দেশের জন্য রাজনীতি করি,
                মানুষের অধিকারের জন্য কাঁদি, মরি।
বাস্তবে      নির্বাচনে জয়ের পর দুর্নীতি করি,
                টাকার প্রশ্নে করি নীতি চুরি ।
 
স্লোগানে    আমি দেশের জন্যে লড়ি,
                আমি যেন এই দেশেতে মরি।            
বাস্তবে      থাকার জন্য বিদেশে বাড়ি বানাই,
                সন্তানদের দূর বিদেশে পাঠাই।
 
স্লোগানে    আমার দলে কোন দুর্নীতিবাজ নাই,
                আমার দলে কোন সন্ত্রাসী, চোর নাই।
বাস্তবে      পাতি নেতাদের নামে মামলা আছে,
                বড় নেতার পুরাতন মামলার নথি আছে।
 
স্লোগানে    আমার দলে চাঁদাবাজ নাই, একদম নাই,
                আমার দলে সিন্ডিকেটকারী নাই।
বাস্তবে      দল ক্ষমতায়, মোড়ে মোড়ে চাঁদাবাজী,
                ভাগ ভাটোয়ারা নিয়ে ফাটে বাঁজী।
 
স্লোগানে    দেশে আছে আইনের শাসন,
                আইন সবার জন্য সমান, নাই অপশাসন।
বাস্তবে      বিরোধী দল খায় মামলার ঢলা,
                গরিবের ক্ষয় হয় জুতার তলা।
 
স্লোগানে     দেশের মানুষ শান্তিতে আছে,
                 দেশের মানুষ সুখে আছে।
বাস্তবে       না খেয়ে থাকার নাম সুখ, 
                 কেঁদে ভাসে অনাহারীর বুক।
 
স্লোগানে    দেশের দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক আছে,
                মানুষের জীবনমান ঠিক আছে।
বাস্তবে      দিনে দিনে বাড়িতেছে পণ্যের দাম,
                খাব কি? নাই দেশে কাজ কাম।
 
স্লোগানে    দেশের মানুষের নিরাপত্তা আছে,
                চোরেরা সব নাকি পালিয়েছে?
বাস্তবে      প্রতিদিন খুন, ছিনতাই হয়,
                একদিকে পাহাড়া, অন্যদিকে অপকর্ম হয়।
 
স্লোগানে    বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ছে দিন দিন
                উন্নয়ন গতি পাচ্ছে প্রতিদিন। 
বাস্তবে      বিদেশীরা সুদ নিবে, মুনাফা নিবে,
                দেশ তা কোথা থেকে দিবে?
 
স্লোগানে    দেশে অর্থের কোন সংকট নাই,
                রিজার্ভের কোন সংকট নাই।
বাস্তবে      সারা দেশ ঋণে ডুবে যাচ্ছে
                দেদারসে টাকা পাচার হচ্ছে। 
 
স্লোগানে    কোনো দিন মানুষের টাকা মারিনি,
                পরের এক টাকাও খাইনি।
বাস্তবে      ব্যাংকের ঋণ নিয়ে দেইনি,
                ওটা জনগণের টাকা ভাবিনি।
 
স্লোগানে    দেশের স্বাস্থ্য খাত অনেক উন্নত,
                ঠিক ইউরোপ, আমেরিকার মতো।
বাস্তবে      জ্বর, কাঁশি, পাজরের বাম পাশে ব্যথা,
                চেক আপ হয় ইউরোপ আমেরিকা।
 
স্লোগানে    আমি স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি,
                আমার দেশের প্রতি অনেক ভক্তি।
বাস্তবে      স্বাধীনতার নামে ফায়দা হাসিল করি,
                দেশবিরোধী চুক্তি ঠিক করি।
 
স্লোগানে    আমার এলাকায় মাদক ব্যবসা নাই,
                সমবায় এলাকা, সন্ত্রাসী নাই।
বাস্তবে      মাদক মামলার আসামী শত শত,
                সমবায়ের নামে দখল জমি কত।
 
স্লোগানে    দেশে দুর্নীতি শূন্যের কোঠায়,
                মানবতার আছে অনেক সায়।
বাস্তবে      দুর্নীতি দেখলে ইনসাফ পালায়,
                পশুত্ব মানবতাকে জাদুঘরে পাঠায়।
 
স্লোগানে    সময়ের অপচয় করিও না,
                কাজ ফেলে রাখিও না।
বাস্তবে      মাত্র বাইশ জন মাঠে খেলে,
                কোটি মানুষ দেখে, হাতের কাজ ফেলে।
 
স্লোগানে    আমি পরের টাকা খাই না,
                পরের সম্পদ চোখ মেলে দেখিনা।
বাস্তবে      শ্বশুর গরীব, যৌতুক না পেয়ে বিয়ে করি না,
                শ্বশুর ধনী, অটো যৌতুক পাব, তাই চাই না।
 
স্লোগানে    নিজের পায়ে দাড়ানোর জন্য পড়ি,
                পঁচিশ বছর পর পড়া শেষ করি।
বাস্তবে      আমার স্বভাব খারাপ তাই অভাব যায় না,
                বৌয়ের বেতন ছাড়া বাসা ভাড়া হয় না।
 
স্লোগানে    আমার নেতার উত্তম চরিত্র, 
                গোলাপ ফুলের মত প্রবিত্র।
বাস্তবে      রাতে বিয়ার খায়, নেশা করে,
                মাঝে মাঝে রাতে মাতলামি করে।
 
স্লোগানে    নেতার জন্য দিব দেহের রক্ত,
                আমরা নেতার খাস ভক্ত।
বাস্তবে      হে আল্লাহ! আমি কাল মিছিলে যাব,
                দয়া কর, ভালোভাবে ফিরে আসব।
 
স্লোগানে    আমার মতো ভালো! কয়জন আছে,
                যাচাই করে দেখ, সত্য নাকি মিছে।
বাস্তবে      আমি বেষ্যার দুই পায়ে পরেছি কতবার,
                হিসাব নেই তার, অসংখ্য বার।
 
স্লোগানে    আমি সব সময় অর্গানিক খাবার খাই,
                 ভালো খাবার যেখানে পাই, যাই।
বাস্তবে      তোমার মনের খাবার কি ভালো?
                বেষ্যার মধ্যখানে কেন আগুন জ্বালো?

স্বাধীনতার মুক্তি

বুলেট, বোমা, মেশিনগান, ট্যাংক, যুদ্ধাস্ত্র
এসব কেন নিয়ে এসেছো?
কেন ভয় দেখাচ্ছো?
আমরা বিদেশী শত্রু নই,
আমরা বহিরাগত নই,
আমরা অপরাধী নই।
 
         অস্ত্র নিয়ে সীমান্তে যাও
         ডাকাতের ডেরায় যাও,
         সন্ত্রাসীর আস্তানায় যাও।
         পাপীদের উৎখাত করো,
         দেশকে মুক্ত করো।
 
দুর্নীতিবাজদের আঘাত করো,
টেন্ডারবাজদের মারো।
ঘুষখোরদের আজ ধরো,
স্বাধীনতাকে মুক্ত করো।
 
         লুন্ঠিত মানবতাকে ফিরিয়ে আনো,
         পাপীদের কান ধরে টানো।
         বেহায়াপনাকে বিদায় দাও,
         স্বাধীনতাকে মুক্তি দাও।

তোমার মাঝে সত্য নাই

তোমার ক্ষমতা আছে, গুলি করতে পার,
তোমার ক্ষমতা আছে, মেরে ফেলতে পার।
তোমার অঙ্গুলি হেলানোতে মানুষ বসে,
অনেকে কান ধরে থাকে বসে।
 
তোমার হুকুমে অনেকে দাড়িয়ে থাকে,
বাসার সামনে সারারাত জেগে থাকে।
তুমি অনেকের কান্নার কারণ,
তুমি অবলীর বিধবা হওয়ার কারণ।
 
ছেলে হারা মায়ের প্রতিক্ষা বাড়িয়েছ,
বাবার জন্য শিশুর কান্না বাড়িয়েছ।
সবাই বলে, তোমার অনেক টাকাশ
আমি দেখি সব জনগণের টাকা।
 
তুমি পাপী, তুমি অত্যাচারী,
তুমি তাপী, তুমি পাপাচারী।
তুমি অনেক দুর্বল, অনেক বেশী দুর্বল,
শারীরিক কসরত শেখার পরও তুমি দুর্বল।
 
ডাক্তার, কবিরাজ, ভাল খাবার,
তুমি খাও প্রতিদিন ভাল খাবার,
তোমার এ দুর্বলতা কাটবে না কোনদিন,
শক্তি খুঁজে পাবে না কোনদিন।
কারণ সত্যের মৃত্যু নাই, 
তোমার মাঝে সত্য নাই।

আইনের ফাঁকফোকর

নীল আকাশের যত তারা,
আইনের তত ধারা, উপধারা।
এক ধারায় মামলা, আরেক ধারায় জামিন,
আরেক ধারার স্বাক্ষী অর্বাচীন।
 
স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য, আসামীর জবানবন্দি, 
পুলিশি তদন্তের ফন্দি, বাদীর জবানবন্দি, 
সব মিলিয়ে আসামী জামিনের ফন্দি।
 
         আইনজীবি, মোক্তার, পেশকার,
         বারবার জজ বদলীর কারবার।
         উপরের সুপারিশ হর হামেশা,
         ন্যায়বিচারের নেই যে আশা।
 
         আসামীর সময় প্রার্থনা বারবার,
         হঠাৎ ছুটি তদন্ত কর্মকর্তার।
         স্বাক্ষী প্রাণ ভয়ে আসে না,
         স্বাক্ষী আসলে স্বাক্ষ্য নেয় না।
 
স্বাক্ষী নিজের খরচে আসবে না,
টাকা ছাড়া উকিল কথা বলবে না।
শুনানির দিন উকিল অসুস্থ,
আসামী জামিনের জন্য ব্যাতিব্যাস্ত।
 
শুধু সময়ক্ষেপণ আর সময়ক্ষেপণ, 
জামিন সহজ মামলা হলে পুরাতন।
বাদী ঘুরিতে ঘুরিতে হতাশ রিদয়,
মামলার রায় না দেখে মরণ হয়।
 
         হক্কিঝক্কি শেষে রায় আসলো,
         সুপ্রিম কোর্টে আপিল হলো।
         আবার গুণো শুনানির দিনক্ষণ, 
         অপেক্ষা, ন্যায় বিচারের ক্ষণ।
 
         রায় শুনে বাদী কাঁদতে পারে,
         রায় শুনে আসামী হাসতে পারে।
         ফাঁসি হলেও আসামীর নেই ভয়,
         রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করবে নিশ্চয়।

রাজনীতির মারপ্যাঁচ

ক্ষমতার পালাবদল হয়,
আজ বিরোধী দল যারা রয়।
কাল তারা ক্ষমতায়,
পরশু আরেক দলকে বলি আয়।
 
মিছিল, সভা, সেমিনারে যায়,
খরচ হয়, খরচ তুলতে হয়।
ক্ষমতা দেখাতে হয়, টাকা মারতে হয়,
কমিশন খেতে হয়, আরো কত কিছু হয়।
 
    ছাত্র নেতা ত্রিশ বছর চেটে খায়,
    তারপর বড় নেতা হয়।
    শুধু কি কাটাবে জনসেবায়,
    পকেট পুড়ে খায়, ভরে খায়।
 
    খাইতে খাইতে দিন যায়,
    ভূমি খায়, বালু খায়।
    সেতু খায়,
    খায় আর অর্থ জমায়।
 
অর্থ ভাতের মত নয়,
নষ্ট হয় না, থেকে যায়।
হারাম বুঝে তাও খায়,
খাওনের সব দায়, শেষ হয় ক্ষমতায়।
জাতি খাওয়ার শেষ দেখতে চায়
জাতির অপেক্ষা, আয় মরণ আয়।

শিরোনাম

            প্রথম পাতার শিরোনাম
অপ্রয়োজনীয় বিষয়, আকাম কুকাম।
অবশেষে পঞ্চম স্বামীর দেখা পেল মনি,
এ নিয়ে দুবার ভূল করল টুশা মনি।
ঘুমানোর কারণে শুটিংয়ে দেরী হল দেবীর,
নস্টা নারীর চরিত্র পছন্দ নয় দেববানীর।
 
ননার সাথে তিনদিন কথা বললনা বনীর,
বিবাহ বিচ্ছেদের গুঞ্জন সত্যি হল টনীর।
আরো পাঁচটা বাচ্চা চান দুররানী,
বিবাহ ছাড়া সন্তান চান কুমারিনী।
 
আটান্নোতেও বিবাহ করল না খান,
সরোগেসিতে বাবা হলো পিলু হান।
বিয়ের আগে একসাথে থাকতো চোপড়া, 
পেটে সন্তান নিয়ে বিয়ের পিড়িতে আম্বারা।
 
চারদিন গোসল করেনি মিস্টার পশু,
দশ কেজি ওজন বাড়ালো হিশু।
ননীর সৌন্দর্যের গোপন রহস্য ফাস হলো,
স্লিম ফিগারের গোপন রহস্য জানা গেলো।
 
মদের মামলায় খালাস পেল ছোট ভাই,
পতিতাবৃত্তিতে ধরা খেলো রুবাই।
তিন মাস ধরে আলাদা রুবনা দম্পতি,
যেভাবে বুটার প্রেমে পড়ল রতি।
 
নগ্ন ভিডিও ফাঁস, মডেলের নাম টিয়া,
টিয়ার নতুন বর হলো লম্পটিয়া।
 
 
              শেষের পাতার শিরোনাম
          প্রয়োজনীয় বিষয়, কাজ কাম।
          দ্রব্যমূল্যে নাভিশ্বাস সারা জাতি, 
          গঞ্জে বন্ধ হয় নাই চাঁদাবাজি।
 
          শতবর্ষী সেতু দাড়িয়ে আছে,
          উন্নয়নের সেতু তিন মাসে দেবে গেছে।
          বন্ধ হয়ে গেল নাটোরের চিনিকল,
          পাটের অভাবে এবার বন্ধ হল পাটকল।
 
          সর্বোচ্চ দুর্নীতিতে বিমান বাংলাদেশ,
          রেলের দুর্নীতির নাই কোন শেষ।
          ভিডিও থাকার পরও খুনি অধরা,
          প্রভাবশালীর ভয়ে মানুষ গ্রাম ছাড়া।
 
          ধর্ষিতা খুনের স্বাক্ষী পাওয়া যায়নি,
          ত্রিশ বছরে মামলার রায় হয়নি।
          ব্যাংক ফাঁকা করেছে পিকো হালদার,
          হুন্ডির মূল হোতা মিস্টার জোমাদ্দার।

আইনের জবানবন্দি 

ভারতবর্ষের মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে,
ভারতবর্ষের মানুষকে শাসন করতে হবে,
ভারতবর্ষের মানুষকে বিভক্ত করতে হবে,
ভারতবর্ষের বিদ্রোহীদের জ্যান্ত মারতে হবে।
 
উপায় উদঘাটন হলো, আইন রচনা করো,
ব্রিটেন থেকে আইন আমদানী করো।
পচা আইন জোরপূর্বক চাপিয়ে দাও,
আইনের নামে রক্ত ঝড়ানোর মজা নাও।
 
খোদ ব্রিটেনে নাই লিখিত আইন,
তারা লিখলো আইন, আমাদের জন্য মাইন।
আইনের নামে দমন পীড়ন, 
আইনের নামে চলবে প্রহসন।
 
আইন মেনে ভারতবর্ষ শাসন করো, 
আইন মেনে শাসন দীর্ঘস্থায়ী করো।
 
ব্রিটিশরা তাদের অপকর্মের বৈধতার জন্য,
কিছু আইন করে আমাদের জন্য।
ব্রিটিশ আইন ভারতবাসী মেনে নেয় নি,
কোনো কালে ভালোভাবে মেনে নেয় নি
 
আমদানীকৃত পচা আইন সাতচল্লিশের পরে,
দুধের সড় হয়ে যায় ঘরে ঘরে।

রাজদন্ড মওকুফ 

প্রকাশ্যে খুন, জনতা ধরেছে
আসামী হাজতে, কোর্টে চালান হয়েছে।
পুলিশি তদন্তে এক বছর
স্বাক্ষী কোর্টে আনতে দুই বছর।
 
জেরা, জবানবন্দি, শুনানির বাঁশি
বছর পাঁচেক পর, রায় হল ফাঁসি। 
 
         আপিল উচ্চ আদালতে
         তিন বছর পর শুনানি হবে,
         শুনানি শেষে,
         ফাঁসির রায় আসে।
 
         আবার লিভ টু আপিল
         খারিজ আপিল টাপিল
         এবার সাজা হবে
         বাদী খুশি অবশেষে। 
 
দিন যায় রাত রায় 
ফাঁসি না হয়,
ধার্য হল দিনক্ষণ 
রায় কার্যকরে লাগে কতক্ষণ।
ফাঁসি 
ফাঁসি..
 
 
 
         মহামান্য রাষ্ট্রপতি
         আমি খুন করি নি,
         বিশ বছর আগের প্রশাসন
         ভূয়া টাকার স্বাক্ষী, ছিল না সুশাসন, 
         আজ আমার হবে কেন ফাঁসি? 
         আমি এক ভুক্তভোগী 
         ইতি,
         হতভাগা আসামী।
         উপরের সুপারিশ, রাষ্ট্রপতি,
         রাষ্ট্রপতি ন্যায়ের মানদণ্ড 
         মার্জনা হল রাজদন্ড। 

চিন্তা বন্দী

খাঁচায় বন্দী পাখি দেখে কান্না করো,
কারাগারে বন্দী মানুষ দেখে উল্লাস করো।
হিমালয়ের পাহাড় ধসের কস্ট শেয়ার করো,
শিশু গুলিতে মারা গেলে ভ্রুক্ষেপ না করো।
 
অন্যায় দেখলে ফায়দা হাসিল করো আরো,
হরতাল ডেকে মানুষের কস্ট উসুল করো।
অ্যাকুরিয়ামে খাবারের জন্য তাগিদ দাও,
অনাহারীর জন্য তুমি বারবার পিছপা হও।
 
তিন বেলা মুখে ন্যায়ের কথা ঠিকই কও,
গুমের শিকার মানুষের কস্টে বিচলিত নও।
অবিচার, দুর্নীতি সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে, 
মোটা তালা আটা তোমার স্কন্ধে।
 
মর্গ ভারি হয় মানুষের লাশের গন্ধে,
তুমি ছুটো তখন কুসুম কলির সুগন্ধে।
কা কা শুনে বল, কাকের খাবার দরকার,
মানুষ হাত পাতলে নাই কোনো দরবার।
 
একটা কুকুর বিড়ালের দাম লাখ টাকা হয়,
টাকার অভাবে মানুষ বিনা চিকিৎসায় মারা যায়।
মানুষের কস্টে, জালিমের জুলুমে, তুমি নির্বিকার,
মুখে বল অন্যায়ের প্রতিবাদ করা দরকার।
 
শিশুদের অধিকারের পক্ষে মিছিল করো,
পেটের ভ্রুণ-শিশু হত্যার ব্যবস্থা করো।
পেটের জ্যান্ত ভ্রুণ হত্যা, মানুষ হত্যা,
ডাক্তার নার্স মিলে করে গণ ভ্রুণ-হত্যা।
 
এক মুখে বল পতিতার জন্য পুনর্বাসন ,
আরেক মুখে পতিতার লাইসেন্স চাও নবায়ন।
মুখে মুখে বানাও প্রেমের সংবিধান 
বাচ্চা হলে নেই সন্তান স্বীকৃতির বিধান।
 
বলো, সুখী দাম্পত্য জীবন দরকার,
পরকীয়া দেয় শুক্রাণু মিশ্রণের অধিকার।
একদিকে দেশীয় সংস্কৃতি জিন্দাবাদ,
অন্যদিকে হিন্দি সিনেমার পদাঘাত।
 
দেশী পণ্যের পক্ষে মিছিল, বুলি উড়াউড়ি,
বিদেশী পণ্যে ভরে তোমার বাড়ি।
খাবার পানি দূষিত হলে কথা বলবা,
নিজের অন্তর দূষিত হলে এড়িয়ে চলবা।
 
বৈষম্য দেখলে অর্থনৈতিক শোষণ মানি না,
দিন শেষে সুদ ছাড়া কিছু বুঝি না।
দখল হয়ে গেল দেশের সব নদ নদী,
মানুষের জমি দখল হলে কুলুপ আঁটি।
 
দলের লোক থাপ্পড় খেলে প্রতিবাদ হয়,
সাধারণ লোক মরে গেলে চুপচাপ রয়।
ছেলে হারা মায়ের কান্না, সন্তানের আর্তনাদ,
স্বামীর আশায় বসে থাকা নারীর প্রতিবাদ।
অবিচার তোমাকে জাগায় না,
রাজনৈতিক ফায়দা না পেলে তাকাও না।

একটা কবিতা লিখব বলে 

সকাল উঠে সূর্যের দিকে তাকালাম,
রক্তিম সূর্যের সাদা হওয়া দেখলাম।
শিশিরের সাথে সূর্যকে মিলাতে চাইলাম,
লেখার জন্য কি যেন ভাবলাম?
আরেকটু চললাম হেলে দুলে,
একটি কবিতা লিখব বলে।
 
      দুপুরের উত্তাপে ঘর্মাক্ত শরীরে,
      শরীরের সাথে অশরীরী মিলিয়ে।
      লু হাওয়া বইছে, উপরের তাপ,
      মিটারে মাপা হল দেহের অনুতাপ।
      অনুতাপ শেষ করতে হলে,
      একটি কবিতা লিখব বলে।
 
পড়ন্ত রবির আবেশে
অবসান্ত হলাম অবশেষে।
একটু হাঁটাহাঁটির জন্য বের হলে,
বিকাল শেষ হল মানুষের কোলাহলে।
দেখা স্বাক্ষাত, সালাম কুশলে,
একটি কবিতা লিখব বলে।
 
      প্রদীপের নিচে অন্ধকার,
      এটা আলোর ছায়া নাকি ছায়া আলোর!
      এটা বস্তুর বাঁধ হতে পারে,
      পূর্ণিমার আলো কিছুটা আটকে দিতে পারে।
      যাই হোক কবির জীবন টলমলে,
      একটা কবিতা লিখব বলে।
 
ভালবাসার কথা বললাম,
দু এক লাইন লেখলাম।
ভালবেসে আত্মহত্যার কথা শুনে থামলাম,
জাতিকে বাঁচাতে হবে ভাবলাম।
কি আর করি ছলেবলে?
একটা কবিতা লিখব বলে।
 
      দুলিতেছে দড়িতে দোলনা,
      দূরে রেখে সব খেলনা।
      কত আনন্দ, নাই দুখ, ক্লেশ,
      সোনামনি ভালো আছে বেশ।
      সোনামনিদের ছোটন বলে,
      একটা কবিতা লিখব বলে।
 
মা বলে বাউন্ডেলে,
বৌঝি কহে এলোমেলে।
এমনি করে কি দিন যাবে?
জীবন শেষ হয়ে যাবে।
ধর্মে সিদ্ধ, নিষিদ্ধে জীবন চলে,
একটি কবিতা লিখব বলে।

চোরা খান সাহেব জিন্দাবাদ

এলাকার লোকজন বলে, অবলা মইতা চোরা,
পাঁচ‘শ টাকা চুরি করতে গিয়ে ধরা।
মারধর, পুলিশ, থানায় দু’দিন থাকলো,
অসির দয়া হলো, মামলা ছাড়া বাড়িতে আসলো। 
 
বিকালে হাটার সময় নারীর গলায় হার দেখলো,
রাতে সিঁধ কাটল, ধরা, থানা, শেষে জেল হলো।
জেলখানায় দুই মাস, ডাকাতের সাথে বসবাস
ডাকাত দিল মইতারে বড় আয়ের আভাস।
 
শপথ নিল চোরা, আর পরবো না ধরা,
বীরের মত কাজ করব, বীরের মত মরা।
ডাকাত ব্যবসা দিনে ঘুমানো, রাতে টাকা আসে,
ফুর্তি, আনন্দ আছে, টাকা থাকলে সুনাম আসে।
 
ডাকাতিতে দেদার আয়, দেদার খরচ আছে,
এলাকায় নতুন মসজিদের কাজ ধরেছে।
মইতা লাখ টাকা দিয়ে হলো দানবীর মতি খান,
সমস্যার সমাধান চান, খান বাড়ি যান।
 
হঠাত আসিল পরোয়ানা, ডাকাতির সামিয়ানা,
ধরা পড়ল সব কুকীর্তি,  টাল বাহানা।
কোর্ট, উকিল, মোক্তার সবই কেনা হলো,
মতি খান অবশেষে খালাস পেলো।
 
জনগণের কল্যাণে, খান আসল রাজনীতিতে,
নতুন ব্যবসা, খান হাউজিং সদর জেলাতে।
লাখ টাকার জমি বন্ধক, কোটি টাকা লোন,
কোটি টাকার জমি বন্ধক, হাজার কোটি লোন।
দারুন ব্যবসা দরুন প্রতারণা, টাকার নাই হিসেব,
খান সাহেব, কোটিপতি খান সাহেব।
 
এন্টারপ্রাইজ মতি খান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, 
কোটি টাকা বিনা পুঁজিতে কামান।
আইন মেনে টেন্ডারে কেনা, টেন্ডার বেঁচা,
দাম বেশী হলে তোর কি শালা? আগাছা।
 
সি.এ. আছে, অডিট আছে, অফিসারের সাইন আছে,
আইন মেনে টেন্ডার হবে, উপরের সায় আছে।
মিথ্যা হলফনামা, আবার হলো মামলা, 
মিছিল সমাবেশ, পোস্টারিং হলো সারা জেলা।
 
খান সাহেবের মুক্তি চাই, মামলার অবসান চাই,
উপরের সুপারিশ ভাই, খালাশ ছাড়া উপায় নাই। 
এল রায় ঘোষণার দিন, জেলগেটে হাজির নেতাকর্মী 
বীরোচিত সংবর্ধনা, হাজির ব্যান্ড পার্টি।
দে ফুলের মালা, দূর হল আজ অপবাদ
                        খান সাহেব জিন্দাবাদ।

স্বৈরাচারের গুণ

বৈষম্য, জুলুম, শোষন আর ফ্যাসিচার,
দানব, হায়েনা, রংবাজ আর অবিচার।
 
খারাপ, অপযশ, বদনাম আর বদাচার,
দুশ্চরিত্র, অশালীন, কুচিন্তা আর কদাচার।
 
অসৎ, অন্যায়, অভদ্র আর অনাচার,
মিথ্যুক, মুখ অভিনয়, মিথক্রিয়া আর মিথ্যাচার।
 
মর্মর, মূর্খ, কারসাজি আর নির্বিকার
অভদ্র, অমানিশা, অরাজকতা আর অহংকার।
 
স্বার্থপর, লোভি, কর্কশ আর কর্ঠকার
অকৃতজ্ঞ, অমানুষ, অথর্ব আর অর্থাচার
সব দোষ মিলিয়ে আষ্টে পিষ্টে স্বৈরাচার।

সশস্ত্র সৈনিক

দেশের আট দশটা মানুষের মতো তুমি মানুষ,
দেশের আট দশটা কর্মচারীর মতো তুমি কর্মচারী,
মূল্য সংযোজন কর তোমার রেশন,
করের টাকা তোমার খাকি ভূষণ,
প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে হাত পেতে নাও প্রেষন।
 
তোমার চাকুরীর খরচ জনগণ দেয়,
তোমার গড়ার দায়িত্ব জনগণ নেয়।
তোমার বেতন-ভাতা জনগণ দেয়,
তোমার চিকিৎসার দায়িত্ব জনগণ নেয়।
 
বুলেট, বুলেটের স্পিন্টার, বন্দুকের ঝাঝা শব্দ,
সাধারণ মানুষকে করবে কেন স্তব্ধ?
ভিতর- বাহিরে তুমি মানুষ,
খাকি পোশাক ছাড়া তুমি সাধারণ মানুষ।
 
বেয়নেট, ট্যাংকের গোলা, তোপ কামান পলমল,
ট্যাংকের সুবিশাল গোলার নল।
আকাশবীণায় ভাসা জঙ্গি বিমান,
ইথারে ইথারে শব্দ ধীমান।
 
পুলিশ, র‍্যাব, বিডিআর, নৌসেনা, বায়ুসেনা,
সেনাবাহিনী বা যে নামেই থাকুক সশস্ত্র সেনা।
তুমি দেশের সৈনিক, 
মিথ্যার সামনে তুমি নির্ভিক।
 
চোর, ডাকাত, অপরাধী, বেষ্যার দালাল,
চোরাকারবারি, দুর্নীতিবাজ বেসামাল।
অপরাধী তোমাকে দেখলে দাড়ায়, দৌড়ে পালায়,
দু একটা ধরা পরে, কোর্ট তাদের জামিন দেয়।
 
জামিনপ্রাপ্ত আসামী তোমাকে গোণে না,
তোমাকে মানে না।
তোমার দৌড় কোর্ট পর্যন্ত, 
আসামীর দৌড় বিচারকের আসন পর্যন্ত,
আসামী জামিন পায় হায় হসন্ত।
 
খেটে খাওয়া ইনসান, সত্য রুজির গতর,
কোন দিন খায়নি একটি দানা হারামের।
মিম্বরে সত্য প্রকাশ করা ইনসান,
তোমাকে দেখলে কেন হয় হয়রান?
 
মিথ্যার সৈনিক নও, সত্যের সৈনিক হও,
তুমি স্বেচ্ছাচারী সরকারের সৈনিক নও।
তুমি স্বৈরাচারী সরকারের সৈনিক নও,
তুমি পাপাচারী সরকারের সৈনিক নও।
 
শান্তি রক্ষার নামে নিরপরাধকে গুলি,
শান্তি রক্ষার নামে প্রতিবাদীকে গুলি।
সংবিধান রক্ষার নামে পাপীকে প্রোটেকশন,
সংবিধান রক্ষার নামে দুর্নীতিকে প্রোটেকশন।
তোমার কাজ নয়, 
তোমার কাজ হওয়ার কথা নয়।
 
মিথ্যা যদি জোগায় অন্নবস্ত্র, ধিক তোমার চাকুরী,
ধিক! মিথ্যার ফকিরি।
ধিক! তোমার পদলেহন,
ধিক! তোমার অবগুণ্ঠন।
 
নির্দোষকে গুলি করা পেশা হলে তুমি মাতাল,
তুমি শাসকের কোদাল।
নির্দোষকে বন্দী করা পেশা হলে তুমি মীর জাফর,
তুমি শাসকের পা চাটা কুকুর।
 
যদি সৈনিক হও, সত্য-সৈনিক হও
যদি পুরুষ হও, সত্য-পুরুষ হও।
সত্যের সৈনিক হতে না পারলে হাতিয়ার ফেলে দাও,
আত্মসমর্পণ কর সত্যের কাছে।

বিদেশী শত্রু

পালানোর শব্দ নারীদের
চিৎকার বাচ্চাদের
বাতাসে শো শো রঞ্জন,
শত্রুরা এগিয়ে আসছে
জুতার বুটের আওয়াজ আসছে
চারিদিকে যুদ্ধের গর্জন।

         রাত্রি নিশিতে চারিদিক স্তব্ধ 
         শত্রুর পায়ের শব্দ
         হুশিয়ার সৈনিক নির্ভীক,
         অস্ত্রের ঝনঝনানি শোনা যাচ্ছে
         অস্ত্র লোড হচ্ছে
         জাগো বাহিনী পতাধিক।

বাহিনী প্রায় প্রস্তুত 
কমান্ডের জন্য স্তুত
চারিদিকে হইহই রইরই,
বারুদের গন্ধ ছড়াচ্ছে
কামিনীরা আজ ফুটেছে
চল শত্রুর মুখোমুখি হই।
         ট্রিগার চাপার বাকী
         সত্যের অস্ত্র চাপি
         শত্রুরা পলায়ন-পায়ী,
         আনন্দ কই রাখি
         ঝড়াবে না আঁখি
         আমরা আজ বিজয়ী।

গর্ভবাস সমাপ্তি

দেশের আট দশটা মানুষের মতো
                           সাধারণ তোমার জন্ম,
জন্মের সময় উপুড় হয়ে ছিলে;
                           রক্ত ভেজা মানব প্রজন্ম।
 
কান্না জুড়ে বলেছিলে, 
                           আজ আমি এসেছি ভবে,
মরণ পর্যন্ত আমি থাকবো
                            হিসাব শেষে হবে।
 
এক টুকরো ন্যাকড়ায় জড়ায়ে  
                          রক্ত মুছে ছিলো,
ব্লেড দিয়ে নাড়ি কাটার পর
                          জন্মানো শেষ হলো।
 
তোমার জন্মানো শেষ নয়
                           জন্ম নেয় আরো শিশু,
তোমার জন্ম মানব জীবনে
                           মনে রেখো, তুমি নও পশু।
 
 
 
 
 
নামকরণ ও আকীকা
 
ছেলে বা মেয়ের জন্ম দেখে 
                         খুশী পরিবার পরিজন,
নাম রাখা হবে কি?
                          আত্বীয় স্বজন হয়রান।
 
খোকা খুকির যে নামই হোক; 
                          খুশি সব ইনসান,
কেউ বলে, বড় হবে? 
                          কেউ বলে, ওটা হবে নাতজান।
 
অসাধারণ সন্তান জন্মের সময়  
                        সাধারন শিশু থাকে,
আকিকা হয়েছে সাত দিনে
                           শরীয়াহ মানার বাঁকে।
 
বাপের সামর্থ না থাকলে  
                         হয় নাই আকীকা,
যাই হোক, সবাই চায়  
                         তুমি হও উজ্জ্বল সৌভাগা।
 
তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে  
                        সবাই সফলতার দুআ করে,
সেই দুআয় জীবন
                        ভালোভাবে চলতে পারে।

বাড়ন্তবেলা

মায়ের দুধে উত্তপ্ত শরীর, শুরু হলো বড় হওয়া,
সন্তানের গায়ে লাগে নাতিশীতোষ্ণ হাওয়া।
শুধু খাও; শীত, গরম তুমি কিছু বুঝোনা,
যার তার গায়ে হিসু করো, বড় ছোট মানোনা।
 
ক্ষুধা লাগলে কাঁদো, খাওয়া শেষে হাসো, খেলো,
পানি বিয়োগে ভাসাও; ওয়াউ, ওয়াউ বলো।
মায়ের দুধে চলে ছয় মাস, পেট তারপর ভরেনা,
গো-দুধ, গুড়ো দুধ খাওয়ানো হয়েছে ভেবোনা।
 
তোমার বাপ প্রয়োজন পূরণ করে,
তুমি ইয়াতিম হলে চাচা প্রয়োজন পূরণ করে।
তুমি চাচাহীন হলে মামা প্রয়োজন পূরণ করে,
তুমি মামাহীন হলে মুরব্বি প্রয়োজন পূরণ করে।
পৃথিবীর যেই প্রয়োজন পূরণ করুক না কেনো?
সে একজন মানুষ; মানুষকে ভূলো না হেনো!

পারিবারিক শিক্ষা

তোমাকে শিক্ষা দেয়  
                       মানুষ, বৃক্ষ, পশু-পাখি,
জাগতিক শিক্ষার শেষ নাই
                        জ্ঞান যতই মাথায় মাখি।
 
মা শিখায় ঐ যে তোর বাপ
                        ঐ যে তোর দাদা,
উনি হলেন চাচা, মামা, নানা,
                        আর উনি পরদাদা।
 
ঐ দেখা যায় চাদ তারা!
                       ঐ দেখা যায় সূর্য!
সারা দুনিয়া দেখতে লাগে
                        কত সুন্দর, অপূর্ব!
 
ঐটা হলো গরুর শিং
                         হাতি, গাধা, কুনো ব্যাঙ
ঐটা হলো হাতি 
                     জিরাফের  লম্বা লম্বা ঠ্যাং।
 
খারাপ জনে মিশবে না,
                           বাঁসি ভাত খাবেনা,
গুরুজনকে সালাম দিতে 
                          কখনো তুমি ভূলবেনা।
 
বিপদ পড়লে তুমি 
                        আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইবে,
সবাই মরে যাবে
                   আল্লাহকে সদা ডাকবে।

প্রাথমিক শিক্ষা

মক্তবে শিখায় সারাজীবন
                          যেন ইসলাম মেনে চলি,
দিনের বেলা পাঁচ ওয়াক্ত 
                          নামাজ পড়ে চলি।
 
স্কুলে শিখায় সকালে উঠিয়া
                          আমি মনে মনে বলি।
সারা দিন আমি যেন 
                          ভালো হয়ে চলি।
প্রথমে শেখায় আদব কায়দা, 
                           তারপর শিক্ষা শুরু।
বাংলা, ইংরেজি, আরবি বর্ণ
                           শেখায় শিক্ষা গুরু।
স্কুল অনেকের জোটেনা
                          তাদের শিক্ষক আপনজন,
যাই হোক সবাই ভালো করতে 
                          বলে তোমার মন।
একের সাথে পাঁচ যোগ দিলে 
                                     কয় টাকা হয়?
দশ থেকে পাঁচ বাদ দিলে 
                                   কয় টাকা রয়?
এক অক্কে এক, দুই দুগুণে চার 
                             তিন দুকুনে ছয়,
তিন তিরিক্ষে নয়, 
                নাই সত্যের কোনো ক্ষয়।

মাধ্যমিক শিক্ষা

জাগতিক শিক্ষা শেষ হয় না কোনোদিন,
যতই দুনিয়াতে করো তা তা ধীন।
একেক সমাজে একেক রকম শিক্ষা,
একেকে দেশে একেক রকম দীক্ষা।
 
মায়ের ভাষা বাংলা শিখো,
ধর্মের ভাষা আরবী শিখো, 
সারা দুনিয়া ঘোড়ার জন্য ইংরেজি ভাষা শিখো।
হিসাব ছাড়া চলে না দিন; গণিত শিখো,
ধর্মশিক্ষা সারা জীবন লাগে, ঈমান শিখো।
 
লাগবে উচ্চতর সমাজ; সমাজ শিক্ষা লাগে,
পরীক্ষা, নিরীক্ষা, পর্যবেক্ষণ; বিজ্ঞান শিক্ষা আগে।
লাগবে উচ্চতর জ্ঞান, উচ্চতর গণিত লাগে
জীবের জন্য জীববিজ্ঞান, পদার্থ বিদ্যা আগে।
 
আরো শিখো রসায়ন, কম্পিউটারে দীক্ষিত হবে
জ্ঞান দিয়ে ভরবে জীবন, ভালোবাসা মনে রবে।

উচ্চতর শিক্ষা

মানুষের চিকিৎসা করতে মেডিকেলে পড়তে হবে,
ঘর বাড়ি বানাতে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে হবে।
অধিকারের পক্ষে লড়তে উকালতি পড়তে হবে
রোগীর সেবা করতে নার্সিং পড়তে হবে।
 
   বড় অফিসার হতে লং কোর্স করতে হয়,
   বড় চাকুরী পেতে বিসিএস দিতে হয়।
   গবেষণা করতে পিএইচডি করতে হয়,
   কৃষকের সম্মানে কৃষিবিদ হতে হয়।
 
উচ্চতর শিক্ষার নাই কোনো শেষ,
সবার সংসার চলে; সবাই খায়, চলে বেশ।

ব্যক্তৃতার পুজি : সামাজিক সমস্যা

জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত নানা সমস্যা আছে,
সমস্যার যেখানে সমাধানও থাকে পিছে।
নিয়ম মেনে যখন সমস্যার সমাধান না হয়,
ফ্যাসিবাদের পত্তন হয়, স্বৈরাচার জয় জয়।
 
স্কুলে পড়ে ছাত্ররা, গরিব ছাত্রই বেশী
হেড মাস্টার মশাই ফিস ধরে রাশি রাশি।
থানায় অভিযোগ দেয়া হলো, সমাধান হলো না,
শিক্ষা অফিসার কিছু কভূ জানে না।
 
ছাত্ররা অবৈধ টাকা দিয়ে পিছনে দিবে গালি,
এখান থেকে জন্ম নেবে ভবিষ্যতের ফালি।
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিকে সিট পায়, করে ফেল
ভালো ছাত্র হলেও নাই তোমার কোনো বেল।
অধিকাংশ চাকুরি হয় মামা; খালুর সুপারিশে,
কিংবা চাকুরি আসে শ্বশুরবাড়ির যৌতুক বেশে।
 
ভোট দেয় জনগণ, ভাতের অধিকার কই,
সারাদিন খাটে কামলা, না খেয়ে রই।
অসুস্থ রোগী হাসপাতালে কত শুয়ে আছে,
সরকারী টাকা গচ্ছা, ডাক্তার ঘুমিয়ে আছে।
 
পরীক্ষায় পাস করে তবে ঘুষ নাই পকেটে,
কত বছর চলে গেলো, চাকরি না জোটে।
নিজের বাপের জমি দখল করেছে চাচা,
কত বিচার সালিশ হলো, জমি পেলো না বাছা।
 
ফুটপাতের ব্যবসা, শ্রমিক, বড় শো রুম,
সবখানে অবৈধ আয়ের সুর অনেক গরম।
এমন কোন জায়গা নাই যেখানে পাপ নাই
যত বড় দায়িত্বশীল, তত বড় চোর ভাই।

স্বৈরাচারের আতুর ঘর

শিক্ষকের ধার্য করা অবৈধ ফিস মানি না,
চোরা শিক্ষককে আর দেখতে চাই না।
মাঠ হইছে গরম, স্কুলে হইছে শোরগোল,
উপরের হস্তক্ষেপে কেটে গেলো গোল।
 
মেধার ভিত্তিতে আবাসিকে সিট চাই,
আবাসিকের অবৈধ সিট বন্টন মানি না ভাই।
প্রশাসনের টনক নড়িলো, অসাম্য দূর হলো
ছাত্রনেতা সুযোগ বুঝে পাল তুলিলো।
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন টেন্ডারে হয়,
টেন্ডারে অনেক ফাঁকিবাজি রয়।
ছাত্রনেতা সুযোগ বুঝে টেন্ডার হাতে নিলো
টাকার খনি হাতে পেলো।
 
সামনে মাসে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হবে,
মিছিলে টাকা ছিটিয়ে ছাত্র আনতে হবে,
টেন্ডারের আয়ের কিছু হবে খরচ,
বেশী টাকা আয় হলে নাই কোনো গরজ।
 
মাদক ব্যবসা যদি ক্যাম্পাসে চালানো যায়,
রাতারাতি কোটিপতি বনে চলে যায়।
মক্তবের হালাল হারামের শিক্ষা,
সবই যেন ভূলে গেছে, নাই কোন দিক্ষা।
 
মারামারি করা লাগে, হানাহানি করতে হয়,
অবৈধ পথে শক্তি হয় একটু ক্ষয়।
টাকা হলে জামিন দেয়, কষ্ট হয় না,
টাকার জীবন চলিছে, পিছু হটে না।

রাজনৈতিক দল ও স্বৈরাচার

আমি এক রাজনৈতিক দলের প্রধান, 
আগামীতে হতে চাই রাষ্ট্র প্রধান।
 
শ্রমিকরা মিছিলে আসবে না, কাজ আছে,
ব্যবসায়ী মিছিলে আসবে না, দোকান আছে।
কুলি মিছিলে আসবে না, পেট আছে,
চাকুরীজীবি মিছিলে আসবে না, অফিস আছে।
 
 
ছাত্রদের ডাকো, ওরা শুক্রবার ফ্রি থাকে
ঘুমায় আর বসে বসে কি যেন ভাবে?
ওরা মিছিলে আসবে, বলো কি কি লাগবে?
দেশ তো তোমাদেরই থাকবে।
 
ছাত্ররা এমপি মনোনয়ন চায়; দেয়া হলো,
ছাত্ররা টেন্ডার পেতে চায়, দিবো; ওয়াদা হলো।
টোকাইদের ডাকো! ওদের কাজ নাই,
মিছিল শেষে মাসোয়ারা পাবে, ভয় ভাই।
 
বিপরীতে ভালো প্রার্থী আছে, তাতে কি?
দুর্নাম রটায়ে দিবো, করেছে দুর্নীতি।
মিথ্যা বলা হারাম কাজ বলে ভালোমন,
লাগবে শাসন, জয় করবো জনগণের মন।
 
এই সমাজে ন্যায়বিচার নাই, পাবে,
এই সমাজে খাবার নাই, খাবে।
এই সমাজে ইনসাফ নাই, পাবে,
এই সমাজে নিরাপত্তা নাই, দিবে।
 
স্যার, প্রচারে কাজ নাহি হচ্ছে,
মানুষ বিপরীত দলের দিকে ছুটছে।
ওদের মিছিলে আঘাত করো
ওদের ভেঙে দাও, গুড়া করো।
 
ওরা শক্তিশালী, ওদের সাথে পারবো না,
আর ওরা আমাদের ছাড়বে না।
তাহলে নিজের দলের লোকের লাশ ফেলো,
সংবাদ ছড়িয়ে দাও, ওরা আমাদের মারলো।
 
মরা লাশ নিয়ে মিছিল করো,
মানুষের সমর্থন আদায় করো।
 
বাচ্চারা এতিম হবে, কাঁদবে 
আপনাকে অভিশাপ দিবে,
ওদের দায়িত্ব কে নেবে?
আমার ক্ষমতা লাগবেই লাগবে,
নির্বাচনে জেতা লাগবে।
 
সহকারী বলে, মানুষ মারা হারাম,
আমি করতে পারবো না খারাপ কাম।
দরজা খোলা চলে যাও,
চারিদিকে দুর্নাম রটায়ে দাও।
আমার সহকারীকে কিনে নিয়ে গেছে,
চলে গেছে অপোজিট প্রার্থীর কাছে।

ভোট ও স্বৈরাচার

আর কয়দিন পরে ভোটের দিন,
মনে হচ্ছে আসবে না বিজয়ের দিন।
নির্বাচন কমিশনকে প্রস্তাব দাও,
হাজার কোটি টাকা ঘুষ খাওয়াও।
 
কমিশনার ভালো মানুষ, ঘুষ খায় না,
আমি নির্বাচনে যাবো না।
নির্বাচন কমিশন বিপরীত দলের লোক,
সেদিন গিলেছে অপজিশনের টাকার ঢোক।
 
নির্বাচনে হারলে আমরা বলবো,
ভোটে কার্চুপির অভিযোগ তুলবো।
দেশ বিদেশে প্রচার করে দিয়েছে,
ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে।
 
নির্বাচনে জিতলে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে,
তারা হেরে শত্রুতার আশ্রয় নিয়েছে।
শত্রুদের সাথে হাত মিলিয়েছে
জনগণ তাদের শত্রুতা বুঝে গিয়েছে।
 
এত মিথ্যা কিভাবে বলো? বলে ভালোমন,
আজ থেকে তুই আমার দুশমন।

মসনদে স্বৈরাচার 

শপথ করিতেছি, সংবিধান মানিয়া চলিবো,
আমি দেশের স্বার্থ রক্ষা করিয়া চলিবো।
 
ছাত্রনেতারা টেন্ডার নিয়েছে; খারাপ কাজ করেছে,
করতে দাও, ওদের জন্যই তো ক্ষমতা এসেছে।
টোকাইরা মামলা প্রত্যাহার চাইতে এসেছে,
করে দাও; ওরাই তো মিছিল করেছে।
 
ব্যবসায়ীরা সুদ মওকুফ চাইতে এসেছে,
ওদেরটা করো, যারা সাহায্য করেছে।
টাকা নাই, ব্যাংক ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে,
আরো ঋণ নাও, বৈদেশিক ঋণে দেশ জড়াচ্ছে।
 
রাষ্ট্রের ঋণ; শেষ হবে না কোনো দিন,
যারা ঋণ নেয়, তারা পরিশোধ করে না ঋণ।
দুর্নীতিতে ভরে দেশ, হয়ে যাচ্ছে সব শেষ,
রটায়ে দাও, বিরোধী দল করছে সাবাড় দেশ।
 
দলের নেতার ফাঁসির রায় হয়েছে হত্যা মামলায়,
হত্যাকারী ক্যান্সারে আক্রান্ত, কখন মরে যায়?
ভূয়া খবর রটায়ে দাও, সব জায়গায়,
সুপারিশ করো, রাষ্ট্রপতি যেন মাফ করে দেয়।
 
রাত্রিতে স্বৈরাচার স্বপ্ন দেখে, বেঘোর ভাবে,
ঈমান বাঁচাতে হবে, হালাল হারাম মানতে হবে।
অবৈধ উপার্জন করা যাবে না,
সবাই খালি হাতে যাবে, কবরে কিছু নেবেনা।

ষোলো আনা স্বৈরাচার

আর চার বছর পর নির্বাচন, 
দেশের মানুষের মন জয় করা প্রয়োজন।
নির্বাচন না দিলে হয় না সহকারী,
জনগণ তা মানবে না, বলবে স্বৈরাচারী। 
 
         খেলাফততন্ত্র, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, 
         দেশকে ঘোষণা করি রাজতন্ত্র।
         ভোটের ঝামেলার কি দরকার? সহকারী!
         ভোট ছাড়া আপনি ক্ষমতা পেতেন না! সরি।
 
সহকারী মন মতো না হলে কাজ হয় না,
কাল থেকে নতুন সহকারী নিয়োগ দাও, মনা।
নতুন সহকারী হিসাব করে বলবে
পাতানো নির্বাচনের খেলা চলবে।
 
আর্মি বলতে পারে, নির্বাচন মানি না, 
আর্মিতে ভাইপোকে বসাও, চিন্তা করো না।
সংবাদপত্র ছাপতে পারে ভূয়া! নির্বাচন, 
সম্পাদককে পাঠাও বিদেশে নির্বাসন।
 
অনেক সম্পাদক কাকে রাখি? কাকে তাড়াই?
একটা পত্রিকা বন্ধ করে সবাইকে দেখাই।
দেশের মানুষ বিক্ষোভ করতে পারে পথে,
মিছিলের লোক রেডি থাকবে রাজপথে।
 
পুলিশ, আমলারা কথা যদি না শুনে,
তারাই প্রমোশন পাবে যারা কথা মানে।
বিরোধী দল মিছিল করতে পারে,
ওদের রাখবে জেলখানায় ভরে।
 
হুজুররা তো হক কথা বলে মিম্বরে,
গোয়েন্দা লাগায়ে দাও, মিনারে মিনারে।
বেদআতী, ভন্ড পীরকে কিছু বলবা না,
ওরা আমার বিপক্ষে নয়, এ কথা ভূলবা না।
 
বিরোধী দলকে প্রচারণা চালাতে দিবো না,
আমাকে ছাড়া কাউকে ভোট দিতে পারবে না।
বিরোধী দলের মনোনয়ন বাতিল করো
স্বতন্ত্র প্রার্থী আছে, ওদেরকে শায়েস্তা করো।
 
 
পাবলিক তো ভোট আপনাকে দিবে না,
ভোট তো গোপনে হয়, পাহাড়া দেয়া যাবে না।
ভোট তাহাজ্জুতের সময়ে হবে,
দিনের বেলা পাবলিক ভোট দিতে আসবে।
 
ভোটারদের তারায়ে দিবে, জালভোট দিবে,
যাই হোক আমার ক্ষমতা লাগবে।
ভোটাররা ভোট আপনাকে দেয়নি, কি করবো?
ফলাফল বদলে দাও; আর কি বলবো?
 
পত্রিকার প্রথম পাতায় জাল ভোটের ছবি আঁকা,
পত্রিকার প্রেসে আগুন লাগাও, হিসাব পাকা।
বিরোধীরা হরতাল ডেকেছে বিকেল বেলা,
ওদের দেখাও ক্ষমতা আর লাঠির খেলা।
 
কতিপয় লোক জাল ভোটের ভিডিও করেছে,
ওদেরকে ধরো, বিরোধী দল ষড়যন্ত্র করেছে।
বিরোধী দল ঢাকা দখল করতে চায়,
গুম করো, ওরা গণতন্ত্রের ধ্বংস চায়।
 
বিরোধী নেতাদের ধরো, হত্যা করো, গুম করো,
সব আমি দেখবো! পরওয়ানা করিনা কারো।
 
         আজ থানা হত্যার মামলা নিবে না, 
         হত্যার মামলা হলে তদন্ত হবে না,
         হত্যার তদন্ত হলে রিপোর্ট জমা হবে না,
         রিপোর্ট জমা হলে মামলার রায় হবে না,
         মামলার রায় হলে ফাঁসির রায় হবে না,
         ফাঁসির রায় হলে ফাঁসি কার্যকর হবে না,
         রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করবে, চিন্তা করো না।
 
গোয়েন্দা রিপোর্ট প্রতিদিন পৌঁছে,
মানুষ আপনাকে হত্যার নির্দেশদাতা বলছে।
স্বামীহারা নারী সংবাদ সম্মেলন করছে,
মানুষ আপনাকে হত্যাকারী বলছে।
 
মানুষ না খেয়ে মারা যাচ্ছে,
মানুষ বিচারের আশায় ঘুরছে।
কোন নিরাপত্তা নেই দেশে,
চোর বাটপাররা ঘুরছে সাধুর বেশে।
অদক্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তা বদলাও,
তোমরা যেন শান্তির বাণী শুনতে পাও।
এখন মানুষ কম মারা যায়,
এখন মানুষ কষ্ট কম পায়।
 
রাস্তাঘাট, সেতু, উঁচু ভবন
দেশে হচ্ছে নতুন নতুন উন্নয়ন।
মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছি,
ঘরে ঘরে খাবার পৌছে দিয়েছি।
 
মিডিয়া আনো, মিডিয়া তৈরী করো,
ঘরে ঘরে সরকারের খবর প্রচার করো।
সব বর্তমান সরকারের অবদান,
মানুষ ভূলবেনা সরকারের দান।

ক্ষমতানিবাসের পতন

সুবিধাবাদীরা দলে আসে, সুবিধা নেয়,
অনেক বেশী সুবিধা নেয় ও দেয়।
কালো টাকা, মদের ব্যবসা, কালোবাজারি, 
হারাম ব্যবসা, প্রতারণা আর ছলচাতুরী। 
 
দলে অনেক উপদল তৈরী হয়,
গ্রপের সাথে গ্রুপের ক্রোন্দল হয়।
টেন্ডার নিয়ে লাগে মারামারি,
হারাম টাকা নিয়ে লাগে কাড়াকাড়ি।
 
নিজেরা মারামারি করলে শক্তি কমে যায়,
বিরোধী পক্ষ সুবিধা নিতে চায়।
পদবঞ্চিত নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে,
দল বিপদে পড়লে পিছনে সড়ে।
 
জনতা একত্রিত হয়ে মানববন্ধন করে,
মিছিল করে, অবরোধ করে।
শাসক কহে আন্দোলন, উল্লম্ফন কত দেখেছি,
পাগলা কুকুরের মত শায়েস্তা করেছি।
 
আন্দোলন ব্যর্থ হয়, পরাজিত হয়,
আন্দোলনের চেতনা জনমনে রয়।
হঠাত কোথা থেকে হাজির বিপ্লবী পঙ্গপাল?
দলের লোক, রক্ষীরা আজ বেসামাল।
 
সুবিধাবাদীরা পালিয়ে যায়; লুকায় গর্তে,
শাসকের হুকুম দমন করো আজকের মধ্যে।
কোথায় যেন হারিয়ে গেলো সব বিপ্লবী?
খোঁজো, ধরো, বন্ধ করো তাদের গতি।
 
পরদিন আবার হাজির; বিশাল মিছিল,
সাধারণ মানুষেরা আজ  হয়েছে শামিল।
গুলি করো, আন্দোলন দমন করো,
বোমা ফেলে সব বেটাকে আজ মারো।
 
অনেকে মারা যায়, অনেকে পালিয়ে যায়,
রক্তের ঘ্রানে মিছিলে আবার এসে দাড়ায়।
বুলেট, বোমা সব শেষ হয়ে যাবে, 
বিপ্লবীরা তবুও রয়ে যাবে।
 
পরিস্থিতি বেসামাল; যাবে না সামলানো,
নিয়ন্ত্রণের বাহিরে সব; পদত্যাগ-পত্র আনো।
        আল্লাহর মহিমা! ক্ষমতা বদলের খেলা,
        আজ বিপ্লবীরা সফল হলো শেষবেলা।

ক্ষমতা পরবর্তী স্বৈরাচার 

স্বৈরাচার তার কর্মকাণ্ডের পক্ষে যুক্তি দেয়,
দেদারসে মিথ্যাচার করে অবলীলায়।
 
স্বৈরাচার আবার ক্ষমতায় বসতে চায়,
সন্তানদের ক্ষমতায় বসাতে চায়।
আত্বীয়দের ক্ষমতায় বসাতে চায়,
যাই হোক, ক্ষমতার কাছাকাছি থাকতে চায়।
 
কল্পনায় ক্ষমতায় থাকে মজে,
পালালে দেশে আসার সুযোগ খোঁজে।
রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরী করে,
ক্ষমতায় আসার পরিবেশ তৈরী করে।
 
জেলে থাকলে রাজনৈতিক আপোষ করে,
জামিন নেয়ার চেষ্টা করে।

সমাপ্তি দুনিয়াবাস

অসুস্থতায় সবাই ভোগে, বার্ধক্য সবার শেষে,
মরণ যখন তখন আসতে পারে হেসে।
সাধারণত স্বৈরাচার প্রকাশ্যে ভূল স্বীকার করেনা,
জনগণের কাছে ক্ষমা চায় না।
 
হঠাত আজরাইল আসিয়া জান কবজ করে,
রুহ নিয়ে চলিয়া যায় উপরে।
 
                  মৃতদেহ থাকে মর্ত্যে পড়ে,
                  মানুষ লাশের গোসল শেষ করে।
                  আত্বীয়-স্বজনরা কান্না করে,
                  সুবিধাবাদীদের অশ্রু বেশী ঝড়ে।
 
                 সমর্থকরা জ্বালাময়ী ব্যক্তব্য দেয়,
                 জাতিকে অন্ধকারের কালি দেয়।
                 তাড়াতাড়ি আসেন ভাই,
                 লাশ মাটির উপরে রাখার সুযোগ নাই।
 
মহল্লার ইমাম আসে
জানাজার নামাজ শেষে,
লাশ দাফন হয় অবশেষে। 

একটি কবিতা লেখা হলো না

গভীর রাতে ঘুম ভেঙে গেলে,
উঠি, একটি কবিতা লিখব বলে।
ঘরণী জড়িয়ে ধরে শুয়েছিল,
মন কবিতা লিখতে চেয়েছিল।
কবিতা লিখলে শুনতে হতো, কাছে এসো না!
তুমি কবিতাকে বেশি ভালোবাসো, তাই না?
আমাকে বেশী ভালবাসো না!
একটি কবিতা লেখা হলো না।
 
সকালে উঠে দেখলাম, আকাশে কুয়াশা
একটু পর রোদ, কাঠ ফাটা রোদ আসা,
মন উদাস হলো, লেখা আসে না
গরমে রিক্ত হস্তে কলম ধরা হলো না।
দুপুর গড়িয়ে বিকাল হলো
রোদের তেজ অনেক কমলো,
রিমঝিম বৃষ্টিতে ডুবন্ত সূর্যের রক্তিম আভা দেখা হলো না
একটি কবিতা লেখা হলো না।
 
হসপিটালে গিয়ে দেখলাম, অসুস্থ রোগী শত শত
অনাদরে, বিনা চিকিৎসায় আশাহত,
নানা টেস্ট, হাজার টাকা ফি’র বেড়াজালে,
রোগী ফিরছে পঙ্গু পা নিয়ে, রিক্ত অনলে।
কি হয়েছে? শুনা হলো না,
টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছে না।
পকেটে কিছু নেই, সাহায্য করা হলো না
একটি কবিতা লেখা হলো না।
 
আসার সময় হঠাত বৃষ্টিতে আটকে পরলাম,
দশ টাকার ভাড়া পঞ্চাশ টাকা চাইলে, হাঁকালাম।
জমির নাম জারি, দাগ নাম্বার, পর্চায়
হাজার টাকা ঘুষ চায়, বিনা দ্বিধায়।
চাঁদাবাজ, জালেম, খুনি জামিন পায়,
নির্দোষ লোক জিন্দানখানায়।
গরীব হলে প্রতিবাদ, ধনী হলে প্রতিবাদ নয়,
সব কাজেই হচ্ছে নয় ছয়।
কিছুই মুখ ফুটে বলতে পারলাম না
বৈষম্যের মন সত্বার ক্ষমা হলো না
একটি কবিতা লেখা হলো না।
 
দরপত্রে নয় ছয়, শুধু লোকসান হয়
উন্নয়ন সেতু একা একা দেবে যায়।
ড্রাইভারের সনদ নাই, গাড়ির ক্ষয় নাই,
নিরাপদ সড়ক চাই, হবে না ভাই।
ভাবার সময় নাই, কি হওয়ার? কি হয়?
বলি না মুখে, নাই আমার লেখার সময়।
অন্যায় দেখলে লেখার খাতা খুলি না,
একটা কবিতা লেখা হলো না।
 
মিছিলে একটা বড় ছেলে হারিয়ে গেছে
হয়তো মরেছে, গুলি লেগেছে।
আর আসেনি, থানা পুলিশ কত কিছু হলো 
মার কোল খালি ছিল, খালি রইলো।
মধ্য রাতে, দরজায় কেউ কড়া নাড়ে,
এই খোকা বুঝি এলোরে।
পথ পানে চেয়ে আছে মা, অশ্রু কান্নার
কান্না শেষ হবে না, নয় শেস হবার।
এই অশ্রুর ভাষা খুঁজে পেলাম না,
একটা কবিতা লেখা হলো না। 
 
ধর্ষিতার কান্নার দাম, বিচার আচার,
হলো না, হচ্ছে বিচারের নামে অত্যাচার।
বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে,
জুতা ক্ষয় হয়ে গেল, মামলার হাজিরা দিতে দিতে।
তবুও খুনের মামলার রায় হলো না,
একটা কবিতা লেখা হলো না। 
 
কবিতা লিখব রাত্রিবেলা, কলম ধরলাম,
আকাশ ভরা তারা দেখে নিলাম।
পূর্ণিমার চাঁদ দেখেও ভাষা এলো না,
কবিতার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।
কোন ভাষায় লিখব কবিতা,
বাংলা, উর্দু, হিন্দি কিবা আরবি ভঙ্গিতা।
কোন ছন্দে কবিতা লিখব,
ছড়া, মিল অমিল, নাকি গদ্য কবিতা নিয়ে খেলব।
আমি সিদ্ধান্ত নিতে পারলাম না,
একটা কবিতা লেখা হলো না।

বইয়ের ধরন: কাব্যগ্রন্থ / কবিতা

সে রাতে পূর্ণিমা ছিল – শহীদুল জহির

সমাপ্তি – প্রফুল্ল রায়

শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ লীলাপ্রসঙ্গ – ২য় খণ্ড – স্বামী সারদানন্দ

ক্ষণিকা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

বিবিধ রচনা

হেলথ

Download PDF


My Account

Facebook

top↑

Login
Accessing this book requires a login. Please enter your credentials below!

Continue with Google
Lost Your Password?
egb-logo
Register
Don't have an account? Register one!
Register an Account

Continue with Google

Registration confirmation will be emailed to you.