পঞ্চতন্ত্র – বিষ্ণু শর্মা
বিষ্ণু শর্মার পঞ্চতন্ত্র—উপদেশমূলক গল্প— অনুবাদ : দুলাল ভৌমিক
প্রকাশকাল—প্রকাশ : একুশে বইমেলা-২০১০
প্রকাশক—শ. ম. গোলাম মাহবুব
সাহিত্য বিলাস
৩৮/৪, বাংলাবাজার
ঢাকা—১১০০
প্রচ্ছদ—সমর মজুমদার
.
উৎসর্গ
পঞ্চতন্ত্রের সেইসব পাঠকদের উদ্দেশে—
যাঁদের উৎসাহ আমাকে
এ-কাজে প্রণোদিত করেছে
.
ভূমিকা
পঞ্চতন্ত্র সংস্কৃত ভাষায় রচিত শ্রেষ্ঠ গল্পগ্রন্থ। রচয়িতা বিষ্ণুশর্মা। খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতক কিংবা কিছু পরবর্তীকালে রচিত বলে অনুমিত। এর অনুকরণে পরবর্তীকালে আরও কয়েকটি বিখ্যাত গল্পগ্রন্থ রচিত হয়, যেমন—কথাসরিৎসাগর, হিতোপদেশ, দ্বাত্রিংশৎপুত্তলিকা, বেতালপঞ্চবিংশতি, বৃহৎকথা, দশকুমারচরিত ইত্যাদি।
গল্প বলতেই আমরা সাধারণত বুঝে থাকি এ যেন ছেলে-ভোলানো কোন কল্প-কাহিনী, কিংবা বড়দের অবসর বিনোদনের মাধ্যমমাত্র। কিন্তু গল্পের মাধ্যমেও যে সমকালীন সমাজ, মানব-প্রকৃতি, রাজনীতি, অর্থনীতি, নৈতিকতা ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞানলাভ করা যায়―পঞ্চতন্ত্র পাঠে তার প্রমাণ মেলে। পঞ্চতন্ত্র রচনার যে পটভূমি গ্রন্থের প্রথমে তুলে ধরা হয়েছে, তাতে এর বিষয়বস্তু বা উদ্দেশ্য প্রতিফলিত হয়েছে:
দাক্ষিণাত্যে মহিলারোপ্য নামে একটি নগর ছিল। রাজার নাম অমরশক্তি। তাঁর তিন পুত্র—বসুশক্তি, উগ্রশক্তি ও অনেকশক্তি। তিনজনই মূর্খ। পড়াশোনায় অমনোযোগী। রাজা চিন্তিত। ভবিষ্যতের কথা ভেবে। এমন মূর্খ ছেলে দিয়ে কি হবে? এর চেয়ে যে নিঃসন্তান থাকাও ভাল; কিংবা গর্ভেনষ্ট, মৃতপুত্র অথবা হয়ে-মরাও ঢের ভালো। কারণ এতে দুঃখ একবার। কিন্তু মূর্খপুত্র দুঃখ দেয় বারবার, আমরণ। তাই তিনি মন্ত্রীদের ডেকে বললেন, ‘এদের সর্বশাস্ত্রে শিক্ষিত করে তুলতে হবে।’ কিন্তু সর্বশাস্ত্রে ব্যুৎপন্ন হওয়া দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। রাজার হাতে এত সময় নেই। তাই মন্ত্রী সুমতি বললেন: রাজ্যে বিষ্ণুশর্মা নামে একজন পণ্ডিত আছেন, যিনি সর্বশাস্ত্রে নিষ্ণাত। একমাত্র তাঁর পক্ষেই সম্ভব অল্পদিনে রাজপুত্রদের সর্ববিষয়ে শিক্ষিত করে তোলা।
রাজাদেশে বিষ্ণুশর্মাকে আনা হলো। রাজা তাঁর অভিপ্রায় জানালেন। বিনিময়ে প্রচুর দানের কথাও বললেন। উত্তরে বিষ্ণুশর্মা জানালেন: তিনি বিদ্যা বিক্রয় করেন না; কর্তব্যজ্ঞানেই তিনি রাজপুত্রদের সর্বশাস্ত্রে, বিশেষত রাজনীতিতে অসাধারণ পণ্ডিত করে দেবেন তাও মাত্র ছয় মাসে। রাজা আশ্বস্ত হলেন। খুশিমনে পুত্রদের তুলে দিলেন বিষ্ণুশর্মার হাতে। বিষ্ণুশর্মা সর্বশাস্ত্রের সার নিয়ে সংক্ষেপে যে গ্রন্থ রচনা করলেন—রাজপুত্রদের শেখানোর জন্য—তারই নাম পঞ্চতন্ত্র। গল্পের মাধ্যমে সহজ—সরল ভাষায় রাজনীতি, অর্থনীতি, মনস্তত্ত্ব, ন্যায়, অন্যায়, মানুষের আচার-ব্যবহার ইত্যাদি বিষয় তিনি তুলে ধরেন এ গ্রন্থে।
গ্রন্থটি পাঁচটি তন্ত্র (বা বড়গল্প)-এ বিভক্ত বলে এর নাম হয়েছে পঞ্চতন্ত্র। তন্ত্র পাঁচটির নাম: মিত্রভেদ (বন্ধু-বিচ্ছেদ), মিত্রলাভ (বন্ধুলাভ), কাকোলূকীয় (চিরশত্রুতা), লব্ধপ্রণাশ (পেয়ে হারানো) ও অপরীক্ষিতকারক (না ভেবে কাজ করা)। প্রতিটি তন্ত্রে আছে একাধিক ছোট গল্প। মিত্রভেদে ২৩টি, মিত্রলাভে ৬টি, কাকোলূকীয়ে ১৪টি, লব্ধপ্রণাশে ১৭টি এবং অপরীক্ষিতকারকে ১৪টি। সর্বমোট ৭৪টি গল্প।
মিত্রভেদের মূল গল্পটি শেয়াল (দমনক), ষাঁড় (সঞ্জীবক) ও সিংহ (পিঙ্গলক)-কে নিয়ে। শেয়ালটি প্রথমে ষাঁড় এবং সিংহের মধ্যে বন্ধুত্ব ঘটায়। পরে ষড়যন্ত্র করে তাদের বন্ধুত্ব নষ্ট করে এবং সিংহকে দিয়ে ষাঁড়টিকে হত্যা করিয়ে তার মাংস খায়।
মিত্রলাভের মূল গল্প কল্পিত হয়েছে কবুতর (চিত্রগ্রীব), কাক (লঘুপতনক), ইঁদুর (হিরণ্যক), কচ্ছপ (মন্থরক) ও হরিণ (চিত্রাঙ্গ)-কে নিয়ে। কবুতরের বুদ্ধি (ব্যাধের জালসমেত উড়ে যাওয়া) দেখে কাক তার বন্ধু হয়। একে একে অন্যদের সঙ্গেও তাদের ভাব হয়। একদিন হরিণ ব্যাধের জালে আটকা পড়লে ইঁদুর জাল কেটে তাকে বাঁচায়। আবার কচ্ছপ ঐ ব্যাধের জালে আবদ্ধ হলে কাকের বুদ্ধিতে ছাড়া পায়। এভাবে তাদের বন্ধুত্ব দৃঢ় হয়।
কাকোলূকীয়ের মূল গল্প পেঁচা (অরিমর্দন) ও কাক (মেঘবর্ণ)-কে নিয়ে কল্পিত। পেঁচা রাতে আক্রমণ করে কাকদের মেরে ফেলত। একদিন একটি কাক স্বজাতির সঙ্গে কপট ঝগড়া করে পেঁচার বন্ধু সেজে তাদের দুর্গে যায় এবং কৌশলে তাদের পুড়িয়ে মারে। এ থেকে কাক ও পেঁচার চিরশত্রুতা।
লব্ধপ্রণাশের মূল গল্প একটি কুমির ও একটি বানরকে নিয়ে কল্পিত হয়েছে। নদীর ধারে ছিল এক বিরাট জামগাছ। তাতে বাস করত এক বানর। তার সঙ্গে কুমিরের ভীষণ ভাব হয়। বানর মিষ্টি জাম পেড়ে দেয়, কুমির খায়। কুমির তার বউয়ের জন্যও নিয়ে যায়। কুমিরনী একদিন আবদার করে, সে বানরের কলজে খাবে, কারণ মিষ্টি জাম খেয়ে-খেয়ে নিশ্চয়ই ওর কলজেটা মিষ্টি হয়ে গেছে। বউয়ের আবদার! উপেক্ষা করবে কি করে? তাই কুমির একদিন মিথ্যা বলে বন্ধুকে বাড়ি নিয়ে যায়। পথে মনের কথা বলে ফেললে বুদ্ধির জোরে বানর রক্ষা পায়। সেদিন থেকে কুমির তার বন্ধু বানরকে হারায়।
অপরীক্ষিতকারকের মূল গল্প সাজানো হয়েছে মণিভদ্র নামে এক ব্যবসায়ী ও এক নরসুন্দরকে নিয়ে। মণিভদ্রের পূর্বপুরুষরা ছিল ধনী। তারা অনেক ধন রেখে গিয়েছিল। সেই ধন একদিন মণিভদ্রকে স্বপ্নে বলে: পরের দিন সে ব্রাহ্মণ সেজে তার বাড়িতে আসবে। মণিভদ্র যদি তার মাথায় আঘাত করে তাহলে সে অক্ষয় সোনা হয়ে চিরকাল তার বাড়িতে থাকবে। পরের দিন তা-ই ঘটল। নরসুন্দর এই দৃশ্য দেখল। পরের দিন ধনের আশায় সে একজন ব্রাহ্মণকে বাড়িতে ডেকে এনে মাথায় দণ্ডাঘাত করলে ব্রাহ্মণ মারা যায় এবং রাজার বিচারে তার প্রাণদণ্ড হয়।
এই যে পাঁচটি মূল গল্প এদের পরিস্ফুট করার জন্য অন্য ছোট গল্পগুলি রচিত হয়েছে। প্রতিটি গল্পই অত্যন্ত রসাত্মক এবং উপদেশাত্মক। প্রতিটি গল্পের শেষে একটি করে উপদেশবাক্য আছে, যা মানুষের জীবনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এই ছোট গল্পগুলির মধ্য দিয়ে কখনও রাজনীতি, কখনও অর্থনীতি, কখনও যুদ্ধনীতি, কখনও সমাজনীতি, এমনকি মানুষের ব্যক্তিগত সুখ-দুঃখ, কামনা-বাসনা, হাসি-কান্না, মনের গোপন ভাব পর্যন্ত ব্যক্ত হয়েছে।
পঞ্চতন্ত্রের প্রতিটি বড় গল্পকে বিকশিত করার জন্য যে ছোট গল্পগুলি রচনা করা হয়েছে, সেগুলির একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য পারস্পরিক অবিচ্ছিন্নতা। প্রতিটি ছোটগল্পই বক্তব্যের দিক থেকে পরস্পর ভিন্ন। কিন্তু প্রথম গল্পটি যে কথা দিয়ে শেষ হয়েছে, তা দিয়েই শুরু হয়েছে পরবর্তী গল্প। এতে পাঠকের মনে সৃষ্টি হয় এক অদম্য কৌতূহল যার ফলে প্রথম গল্প পড়ে পাঠক বাধ্য হয় পরের গল্প পড়তে। এভাবে অত্যন্ত সুকৌশলে পাঠক-হৃদয়কে টেনে নিয়ে যাওয়া হয় বল্লামুখ হরিণের মতো শেষ গল্পের দিকে; শেষাবধি না যাওয়া পর্যন্ত তার সে কৌতূহল মেটে না।
বিষ্ণুশর্মা গল্পের চরিত্র হিসেবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পশু-পাখি ব্যবহার করেছেন কখনো বা মানুষকেও। পশু-পাখিরা মানুষের মতোই কথা বলছে—জ্ঞানের কথা বলছে, শাস্ত্রের কথা বলছে, মানুষকে উপদেশ দিচ্ছে, আবার মানুষকে বোকা বানিয়ে নিজের উদ্দেশ্য হাসিলও করছে।
চরিত্রের নামকরণে বিষ্ণুশর্মার অসাধারণ দক্ষতা প্রকাশ পেয়েছে। তিনি কখনও কোন পশুর গোটা জাতিকেই একটি চরিত্র হিসেবে ব্যবহার করেছেন, তাদের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী, যেমন—ক্রথনক বা উট। উট স্বভাবত শান্ত-শিষ্ট বলে গল্পের এমন একটি চরিত্রে গোটা উট জাতিকেই ব্যবহার করেছেন। আবার কখনও গোটা জাতির পরিবর্তে একক কোন ব্যক্তি-পশুকে নির্দিষ্ট নামে ব্যবহার করেছেন, যেমন—দমনক একটি শেয়াল, কিংবা চিত্রাঙ্গ—একটি হরিণ। কোনো জাতির বৈশিষ্ট্য-ভিত্তিক নাম দিয়েও কোনো প্রাণীকে চরিত্র হিসেবে ব্যবহার করেছেন, যেমন—মন্থরক—একটি কচ্ছপের নাম, কারণ কচ্ছপের গতি স্বভাবতই মন্থর—অন্য প্রাণীর তুলনায়।
পঞ্চতন্ত্রের ঢঙে পশু-পাখি নিয়ে গল্প বলার নিদর্শন ভারতবর্ষের বাইরে গ্রিক লেখক ঈশপের গল্পেও দেখা যায়। তাঁর আবির্ভাব কাল খ্রিস্টপূর্ব ৬২০-৫৬০ অব্দ। আর বিষ্ণুশর্মা ছিলেন খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতক কিংবা তার কিছু পরবর্তীকালের। অথচ কোনো কোনো গল্প উভয়ের ক্ষেত্রে প্রায় একই রকম। এই সাদৃশ্যের কারণ সঠিকভাবে নির্ণয় করা দুরূহ।
বিষ্ণুশর্মা গল্পের চরিত্র হিসেবে পশু-পাখি ব্যবহার করলেও তার প্রতীকে মূলত তুলে ধরেছেন মানব প্রকৃতিকে। মানুষের চিন্তা-ভাবনা, সুপ্রবৃত্তি-কুপ্রবৃত্তি, মূর্খতা-বিচক্ষণতা ইত্যাদি বিষয় চমৎকারভাবে উপস্থাপিত হয়েছে একেকটি গল্পে। যেমন—‘সিংহ-খরগোশ’ গল্পে ক্ষুদ্র প্রাণী খরগোশ বুদ্ধিবলে হত্যা করে সিংহকে—কুয়োয় ফেলে। গায়ের জোরের চেয়ে যে বুদ্ধির জোর বেশি—এ গল্পের মাধ্যমে সেকথাই তুলে ধরা হয়েছে। আবার জনৈক ব্রাহ্মণ শিশুপুত্রের দেখা-শোনা করার জন্য একটি বেজিকে রেখে রাজবাড়ি গিয়েছিলেন পুজো করতে। ফিরে এসে বাইরের দরজায় বেজিটিকে দেখেন হাত-পা-মুখে রক্তমাখা। ব্রাহ্মণ ভাবেন, এ নিশ্চয়ই তার ছেলেকে খেয়ে ফেলেছে। তাই বিচার-বিবেচনা না করেই লাঠির আঘাতে তিনি বেজিটিকে মেরে ফেলেন। কিন্তু ঘরে গিয়ে দেখেন তাঁর শিশুপুত্র নির্বিঘ্নে ঘুমুচ্ছে, আর পাশে পড়ে রয়েছে একটি গোখরো সাপ, ছিন্ন-ভিন্ন অবস্থায়; অর্থাৎ বেজিটি সাপটিকে মেরে মালিকের পুত্রকে রক্ষা করেছে। ব্রাহ্মণ তখন নিজের ভুল বুঝতে পারেন। গল্পটির নাম ‘ব্রাহ্মণ-নকুল-সৰ্প-কথা’। এ গল্পে হঠকারিতার ফল কি ভয়ানক হতে পারে, তা চমৎকারভাবে প্রকাশিত হয়েছে। এভাবে প্রতিটি গল্পের মাধ্যমে বিষ্ণুশর্মা মানব মনস্তত্ত্বকে তুলে ধরেছেন।
গ্রন্থ-রচনার পটভূমিতে যদিও বলা হয়েছে যে, অপ্রাপ্তবয়স্ক রাজপুত্রদের উপযোগী করে পঞ্চতন্ত্র গ্রন্থখানি রচিত হয়েছে, কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, এ গ্রন্থের পাঠক হতে পারেন সকল বয়সের মানুষই। এতে ছোটদের যেমন শিক্ষণীয় বিষয় আছে, তেমনি আছে বড়দেরও। বিশেষকরে রাজনীতি, সমাজনীতি, অর্থনীতি, স্বার্থপরতা, পরার্থপরতা সব বিষয়েরই উপদেশ আছে। এর অধিকাংশ গল্পই বক্তব্যের দিক থেকে কালোত্তীর্ণ সাহিত্যের মর্যাদা পেয়েছে। যুগে-যুগে কালে-কালে এ গ্রন্থ সকল বয়সের মানুষের সাকাঙ্ক্ষ দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তাই দেশি-বিদেশী মিলিয়ে পঞ্চাশোর্ধ্ব ভাষায় এর অনুবাদ হয়েছে। ভারতবর্ষের আধুনিক সকল ভাষায়, প্রাচীন পাণ্ডুবি, সিরীয়, মিশরীয়, আরবি, গ্রিক, ইতালিয়, জার্মানি, ল্যাটিন, পাভ, ফরাসি, ইংরেজি, স্পেনীয়, হিব্রু প্রভৃতি ভাষায় পঞ্চতন্ত্র অনূদিত হয়েছে। জার্মান অনুবাদক Wolff বলেছেন: প্রভাবের ব্যাপকতায় বাইবেলের পরেই পঞ্চতন্ত্রের স্থান।
বিষ্ণুশর্মার জনপ্রিয় এই গল্পগ্রন্থ সাধারণ পাঠকের নিকট পৌঁছে দেয়ার মানসে পুনর্লিখনের ইচ্ছা জাগে। পুনর্লিখন এই জন্য যে, মূল পঞ্চতন্ত্র যেভাবে রচিত, বর্তমান পাঠকের নিকট সেভাবে ভালো নাও লাগতে পারে। কারণ এতে অতিকথন, পুনঃকথন ইত্যাদি দোষ রয়েছে। কিছু ভালগারিটিও রয়েছে। বয়স্কদের ক্ষেত্রে তা চললেও অপ্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়। অথচ আমি চেয়েছি গ্রন্থটি ছোট-বড় সকলের কাছেই সমাদর লাভ করুক। তা করতে গিয়ে মূলের অনেক কথা বাদ দিতে হয়েছে। এর ফলে আমার উদ্দেশ্য সফল হয়েছে। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক থেকে শুরু করে কচি-কাচারা পর্যন্ত এর পাঠক ছিল। আমাকে তাঁরা বলেছেন। কচিদের কথা ভেবে ভাষাও যথাসাধ্য সহজ করা হয়েছে। ২০০৭-এর ফেব্রুয়ারি থেকে ২০০৯-এর জানুয়ারি পর্যন্ত ভারত বিচিত্রা-য় এটি ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে। এদেশের পাঠকদের কাছে বিষ্ণুশর্মার পঞ্চতন্ত্র পৌঁছে দেয়ার এই সুমহান দায়িত্ব পালন করার জন্য পত্রিকার সম্পাদক শ্রী নান্টু রায় এবং ঢাকাস্থ ভারতীয় দূতাবাসকে অজস্র ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। সাহিত্য বিলাস একে গ্রন্থাকারে প্রকাশের উদ্যোগ গ্রহণ করায় কর্ণধার গোলাম মাহবুবকেও জানাই আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।
দুলাল ভৌমিক
৮০/এফ শহিদ গিয়াসউদ্দিন আহমদ আ/এ
নীলক্ষেত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
১৮.৫.০৯
এক নি:শ্বাসে পড়েছি এ বই এর সারবস্তু মূল বইটি আমি পেতে চাই বটে।