• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক্স
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

চন্দ্রলেখা অন্তর্ধান রহস্য – অভিরূপ সরকার

লাইব্রেরি » অভিরূপ সরকার » চন্দ্রলেখা অন্তর্ধান রহস্য – অভিরূপ সরকার
চন্দ্রলেখা অন্তর্ধান রহস্য অভিরূপ সরকার

চন্দ্রলেখা অন্তর্ধান রহস্য – অভিরূপ সরকার

দীপ প্রকাশন
রচনাকাল – নভেম্বর, ২০১৮—ডিসেম্বর, ২০১৯
প্রথম প্রকাশ : কলকাতা বইমেলা ২০২০
প্রচ্ছদ : সুমন
প্রকাশক : শংকর মণ্ডল

.

পরন্তপ ও অগ্নিরূপকে

.

কৃতজ্ঞতা স্বীকার

দীপ প্রকাশনের কর্ণধার শংকর মণ্ডলের আনুকূল্যে গোয়েন্দা উপন্যাস লেখাটা প্রায় অভ্যাসে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। গত বছরের বইমেলায় একই মলাটের মধ্যে আমার দুটো গোয়েন্দা উপন্যাস প্রকাশ করেছিলেন তিনি, এবছর আরও একটা প্রকাশ করলেন। তাঁকে আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই।

বর্তমান উপন্যাসটির একটি প্রাথমিক খসড়ার ওপর আলাদা আলাদা করে অনেকগুলি মূল্যবান মন্তব্য করেছেন পরন্তপ বসু এবং অগ্নিরূপ সরকার। তাঁদের উপদেশগুলো মেনে নিয়ে উপন্যাসটির বেশ খানিকটা রদবদল ঘটিয়েছি। এই বইটি তাঁদের দুজনকে উৎসর্গ করলাম।

আমার আগের দুটি গোয়েন্দা উপন্যাস পড়ে যাঁরা আমাকে উৎসাহ দিয়েছিলেন, তাঁদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। চারাগাছের মতো নবীন লেখনীও কিছুটা প্রশ্রয়ের অপেক্ষা রাখে।

অবশ্য সমস্ত উৎসাহ-উপদেশ-প্রশ্রয় সত্ত্বেও বর্তমান উপন্যাসে যে ত্রুটিগুলো রয়ে গেল, বলাই বাহুল্য, সেগুলো আমার নিজের সীমাবদ্ধতার কারণে।

অভিরূপ সরকার

.

ঝর্ণা দলুই-এর কথা

আমরা, ক্লাশ থ্রি আর ফোরের মেয়েরা, আজ নদীর ধারে বনভোজনে এসেছি। সব সুদ্ধু বাইশ জন মেয়ে। ক্লাশ থ্রির দশ জন, ক্লাশ ফোরের বারো জন। সঙ্গে চার জন দিদিমনি। বড়দিদি, ছোড়দিদি, সোনাদিদি আর মেমদিদি। আমাদের ইস্কুলের নাম বনবীথি। ইস্কুলটা যখন শুরু হয়েছিল তখন বড়দিদি আর ছোড়দিদি এই দুজন দিদিমনিই পড়াত। কেজি থেকে ক্লাশ টু, ওই পর্যন্তই পড়ানো হতো তখন। বড়দিদি আসত হাসনাবাদের ওদিক থেকে, ছোড়দিদি বসিরহাট থেকে। পরে ওপরের দিকে আরও দুটো ক্লাশ বাড়ল। দুজন নতুন দিদিমনিও এল। প্রথমে সোনাদিদি তারপর মেমদিদি। সোনাদিদির বাড়ি সোলাডাঙা। মেমদিদি স্কুলের পেছনেই থাকে। সোনাদিদির হাতের কাজ খুব সুন্দর। সেলাই-ফোঁড়াই, উলবোনা, আলপনা দেওয়া এসব সোনাদিদিই শেখায়। আর মেমদিদি শেখায় ইংরিজি আর অঙ্ক। সবাই বলে মেমদিদি জ্ঞানের পাহাড়। যে অঙ্কই দাও না কেন ঠিক করে দেবে। আর ওর মতো ইংরিজিও কেউ কোনও দিন বলতে পারবে না। তাছাড়া মেমদিদি দেখতে কী সুন্দর, ঠিক মেমদের মতো। মেমদিদির কাছে ইংরেজি শেখার জন্য এখন অনেক মেয়ে এখানে পড়তে আসে। তারা সকলেই খুব গরিব। গরিব না হলে এই ইস্কুলে কেউ ভর্তি হতে পারে না।

নদীর ধারে যেখানে ঘন হোগলার বন আছে তার গায়ে একটু একটু কাশ ফুল ফুটেছে। তার মানে পুজো আর দেরি নেই। হোগলা বনের পাশে মস্ত বালিয়াড়ি। অনেকটা জায়গা জুড়ে শুধু বালি আর মাটি আর ছোট ছোট ঘাস। এখানেই বনভোজন হবে। সত্যিকারের বনভোজন। জঙ্গল থেকে শুকনো কাঠকুটো নিয়ে আসবে সফিকুলকাকা আর গণেশ। ওরা দুজনেই বনবীথি-তে কাজ করে। সফিকুলকাকার অনেক বয়েস, কিন্তু গায়ে খুব জোর। রাত্তিরে ইস্কুল পাহারা দেয়। সফিকুলকাকা খুব গম্ভীর, একটুও হাসে না। গণেশ আমাদের মতোই ছোট। মেমদিদি বলে, কাজ না করে গণেশের ইস্কুলে যাওয়া উচিত। কিন্তু বনবীথিতে শুধু মেয়েরা পড়ে। সেখানে গণেশ কী করে পড়বে? আর ছেলেদের জন্য বনবীথির মতো কোনও ইস্কুল এদিকে নেই। তাই সন্ধেবেলা, মেয়েদের ইংরিজি ক্লাশের পরে, মেমদিদি গণেশকে আলাদা করে বাংলা আর অঙ্ক শেখায়। ইংরেজি পড়াতে এখনও শুরু করেনি।

সফিকুলকাকা আর গণেশ ছাড়াও রেনুমাসি আর কল্পনামাসি আমাদের সঙ্গে এসেছে। রেনুমাসি ইস্কুলে মিড ডে মিল রান্না করে, কল্পনামাসি জোগান দেয়। ওরাই বনভোজনের রান্না করবে। খিচুড়ি, বেগুনি, লাবড়া আর শেষ পাতে চাটনি। আমরা সবাই পেট ভরে খাব। ভীষণ মজা হচ্ছে। শুধু একজন আজ আমাদের সঙ্গে বনভোজনে আসেনি। সে গৌরদাদা। গত তিন দিন ধরে গৌরদাদার খুব জ্বর, ইস্কুলেই আসতে পারছে না, বনভোজনে আসবে কী করে? গৌরদাদা ভীষণ ভাল লোক। আমাদের খুব ভালবাসে। মাঝে মাঝে ইস্কুল শেষ হলে আমরা, ক্লাশ ফোরের কয়েকজন মেয়ে, গৌরদাদার সঙ্গে গৌরদাদার বাড়িতে যাই। ইস্কুলের পাশেই গৌরদাদার বাড়ি। বাড়িতে নিয়ে গিয়ে গৌরদাদা আমাদের মুড়ি-বাতাসা খাওয়ায়, ভূতের গল্প বলে। খাতায় ছবি এঁকে দেয়। গৌরদাদা খুব ভাল ছবি আঁকতে পারে। বনবীথির আপিসে কাজ করে গৌরদাদা।

ইছামতী নদী এখানে খুব চওড়া। ওপারের গাছপালাগুলো খুব ছোট দেখায়। ওপারে বাংলাদেশ, এপারে ভারত। শুনেছি নদীটা মাঝখান থেকে দুই দেশের মধ্যে ভাগ হয়ে গেছে। আমার বাবা নদীতে মাছ ধরে। নৌকো নিয়ে মাঝনদী অব্দি যায়, কিন্তু তার বেশি যায় না। এদিকের মাঝিদের ওদিকের জলে যাওয়া বারণ। আজকাল দাদাও বাবার সঙ্গে মাছ ধরতে যায়। হাসনাবাদে বেচু হালদারের মাছের আড়ত আছে। বাবা আর দাদা সেখানে মাছ বিক্রি করে। বেচু হালদার বাবাকে খুব সম্মান করে। বলে, এ তল্লাটে কিরণের মতো মাছ-ধরিয়ে আর নেই। দাদাও ভাল মাছ ধরে, তবে বাবার মতো হতে দেরি আছে। দাদা আমার থেকে আট বছরের বড়, আমি বারো, দাদা কুড়ি। পাঁচ বছর আগে আমার কাকা মাছ ধরতে গিয়ে ঝড়ে হারিয়ে গিয়েছিল। আর ফেরেনি। সবাই বলে, স্রোতের টানে কাকা সমুদ্রে চলে গিয়েছে। সমুদ্রে চলে গেলে আর কেউ ফিরতে পারে না। কাকিমা আর ওর ছেলে মন্টু আমাদের সঙ্গে থাকে। কাকিমা মন্টুকে নদীতে যেতে দেয় না। মন্টু বনবিহারীকাকার চায়ের দোকানে কাজ করে।

আমাদের গ্রামের নাম নিমফুল। সবাই বলে খুব সুন্দর নাম। গ্রামে ঢোকার মুখে অনেকগুলো নিমগাছ আছে। হয়ত সেই জন্য এইরকম নাম হয়েছে। গাছগুলো খুব পুরোনো। খুব ছায়া দেয়। আমাদের গ্রামের একদিকে সোলাডাঙা, অন্যদিকে বড়রাস্তা। গ্রাম আর সোলাডাঙার মাঝে আমাদের বনবীথি ইস্কুল। সোলাডাঙা পেরিয়ে আরও কিছুক্ষণ হাঁটলে ইছামতী, আর বালিয়াড়ি, আমরা আজ যেখানে বনভোজন করতে এসেছি। অন্যদিকে গ্রাম থেকে বেরিয়ে নিমগাছগুলো পেরুলেই বড়রাস্তা। সেই রাস্তা টাকি-হাসনাবাদের দিকে চলে গেছে। আমি হাসনাবাদ অব্দি গেছি। শুনেছি ওই রাস্তাটা ধরে আরও অনেক দূর গেলে কলকাতা পৌঁছে যাওয়া যায়। আমি কখনও কলকাতায় যাইনি। গৌরদাদা গেছে। বলেছে, সে এক আশ্চর্য শহর। পথে এত লোক চলে যে হাঁটতে গেলে গায়ে গায়ে লেগে যায়। গৌরদাদা বলে, রাস্তা কোথাও যায় না, যেখানে ছিল সেখানেই থাকে। তবে ওই টাকি-হাসনাবাদের রাস্তা ধরে যারা একবার কলকাতা চলে গেছে তারা আর আমাদের গ্রামে ফিরে আসবে না। গৌরদাদা মাঝেমাঝে কী যে বলে আমি মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝতে পারি না।

আমাদের গ্রামটা আমার খুব ভাল লাগে। বনবীথি ইস্কুলটাও। ইস্কুলে আমার অনেক বন্ধু আছে। টিপিনের সময় আমরা চোর-চোর খেলি, চু কিৎ কিৎ খেলি। বড়দিদি বলেছে কিছুদিন পরে ইস্কুলে একটা ভলিবল কেনা হবে, আমরা ভলিবল খেলব। ইস্কুলের সব ভাল শুধু একটা জিনিস বাদে। সেই জিনিসটার কথা আমি জানি, আমার বন্ধুরা জানে, এমনকি গৌরদাদাও জানে। কিন্তু দিদিমনিরা জিনিসটার কথা স্বীকার করতে চায় না। ব্যাপারটা খুলে বলি।

আসল কথাটা হল, আমাদের ইস্কুলে ভূত আছে। যখন ইস্কুলে ভর্তি হলাম তখন থেকেই এটা শুনে আসছি। যাদের বাড়ি ইস্কুলের কাছে তারা রাত্তিরে অনেক কিছু দেখেছে। অনেক রাত্তিরে ইস্কুলের ভেতরে কাদের যেন পায়ের শব্দ শোনা যায়। ইস্কুলের বারান্দায় তালগাছের মতো লম্বা আর মোষের মতো কালো কারা যেন হেঁটে বেড়ায়। আগে এসব কথা ততটা বিশ্বাস হতো না, কিন্তু ছন্দা বাগের ঘটনাটার পর থেকে সব কিছু ওলটপালট হয়ে গেছে। ছন্দা আমাদের ক্লাশেই পড়ে। ওর সঙ্গে আমার খুব একটা ভাব নেই, তাছাড়া বয়েসেও ও আমাদের থেকে খানিকটা বড়। ছন্দা খুব খারাপ মেয়ে। পড়াশোনা করে না, খারাপ খারাপ কথা বলে, মাঝে মাঝে ক্লাশে খুব নোংরা ছবি এনে দেখায়। ও নাকি লুকিয়ে লুকিয়ে সিগারেটও খায়। আমি নিজের চোখে দেখিনি, তবে আমার বন্ধুরা অনেকে দেখেছে। ছন্দার একটা দল আছে। তারা কেউই আমাদের ইস্কুলের নয়, তবে সবাই খুব খারাপ। সেই দলে কয়েক জন ছেলেও আছে। ছন্দা টিপিনের সময় ইস্কুল থেকে বেরিয়ে সেই দলের সঙ্গে নদীর ধারে বেড়াতে যায়। ওখানে ওরা বোধহয় সিগারেটও খায়।

আমাদের ইস্কুলটা খুব কড়া। টিপিনের সময় ইস্কুল থেকে বেরোনোর নিয়ম নেই। বেরিয়ে ধরা পড়লে কড়া শাস্তি। কিছুদিন আগে টিপিনের সময় বেরোতে গিয়ে ছন্দা ধরা পড়ে গেল। ব্যাপারটা সফিকুলকাকার প্রথম চোখে পড়ে— ছন্দা পেছনের পাঁচিল টপকে ইস্কুলের বাইরে যাবার চেষ্টা করছে। সফিকুলকাকা ছন্দাকে বড়দিদির কাছে ধরে নিয়ে যায়। আমাদের ইস্কুলের পেছন দিকে বাগানের মধ্যে একটা গুদোম ঘর আছে। সেখানে মিড ডে মিলের চাল ডাল মজুত রাখা হয়। ঘরটা খুব গরম, অনেক ওপরে একটাই জানলা। জানলা না বলে তাকে ঘুলঘুলি বলাটাই ঠিক। মেয়েরা কেউ খুব খারাপ কোনও কাজ করলে তাকে ওই ঘরে আটকে রাখা হয়। তারপর ইস্কুল ছুটির সময় তাকে আবার বাইরে বের করে আনা হয়। ছন্দার নামে অনেকদিন ধরেই অনেক নালিশ বড়দিদির কাছে জমা পড়ছিল। সাধারণত বড়দিদি কাউকে ওই ঘরে আটকে রাখতে বলে না। কিন্তু ছন্দার ব্যাপারে বিরক্ত হয়ে বড়দিদি সফিকুলকাকাকে বলল, ইস্কুল ছুটি হওয়া অব্দি ছন্দাকে ওই ঘরে আটকে রাখো।

অন্য কেউ হলে হয়ত কান্নাকাটি করে বড়দিদির কাছে ক্ষমা চাইত। আর বড়দিদিও তাকে মাফ করে দিত। কিন্তু ছন্দার একটা আশ্চর্য জেদ আছে, সে মুখ টিপে সব শাস্তি সহ্য করবে কিন্তু কিছুতেই মাথা নোয়াবে না। সফিকুলকাকার সঙ্গে সঙ্গে সে মাথা নিচু করে গুদোম ঘরে গিয়ে ঢুকল, সফিকুলকাকাও বাইরে থেকে ঘরের দরজা বন্ধ করে দিল। আমরা আর তার কোনও সাড়াশব্দ পাইনি।

সবই ঠিকমত চলত যদি ইস্কুল ছুটির পর সফিকুলকাকা গুদোম ঘরের দরজা খুলে ছন্দাকে বার করে আনত। কিন্তু সেদিনই বসিরহাট থেকে সফিকুলকাকার এক বন্ধু এসে হাজির। তার সঙ্গে কথা বলতে বলতে সফিকুলকাকা ভুলেই গেল যে ছন্দা ইস্কুলের পেছন দিকের বাগানে গুদোম ঘরে আটকে রয়েছে। আশ্চর্য ব্যাপার, বড়দিদিও সেদিন ছন্দার ব্যাপারটা একেবারে ভুলে গিয়ে ইস্কুল ছুটির পর বাড়ি চলে গিয়েছিল। আস্তে আস্তে আমরাও সকলে বাড়ি ফিরে গেলাম। সফিকুলকাকার ঘরটা ইস্কুলের মেন গেটের পাশে। সফিকুলকাকা সেখানে রাত্তিরে থাকে, ইস্কুল পাহারা দেয়। সন্ধেবেলা বন্ধু চলে যাবার পর সফিকুলকাকা রান্না চড়াল, খাওয়া দাওয়া সারল, তারপর রোজকার মতো লাঠি ঠকঠক করতে করতে সারা ইস্কুলটা এক পাক ঘুরে নিয়ে গেটের সামনে খাটিয়া পেতে শুয়ে পড়ল। সফিকুলকাকা যখন টহল দিচ্ছিল, তখন যদি ছন্দা ঘরের ভেতর থেকে চেঁচাত, তাহলে নিশ্চয় সফিকুলকাকার মনে পড়ে যেত ছন্দা ঘরের ভেতর আটকে রয়েছে। কিন্তু ছন্দার জেদ, সে কিছুতেই চেঁচাবে না। তাই সফিকুলকাকারও কিছু মনে পড়ল না। পরদিন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে ছন্দার কথাটা সফিকুলকাকার মনে পড়ল। তখন দরজা খুলে দ্যাখে ছন্দা মেঝের ওপর ঘুমিয়ে রয়েছে।

পরদিন ইস্কুলে খানিকটা হইচই হল। সকলেই সফিকুলকাকাকে দোষ দিচ্ছে। সে কী করে এইরকম দরকারি একটা ব্যাপার ভুলে যেতে পারল? কেউ কেউ বলল, বড়দিদিরও দোষ আছে। তবে বেশি দূর ব্যাপারটা গড়াল না। গড়াতে পারত যদি ছন্দার বাড়ির লোক এসে ইস্কুলে নালিশ করত। কিন্তু ছন্দার তো বাবা-মা কেউ নেই। এক দাদা-বৌদির সঙ্গে সে থাকে। দাদা পরের জমিতে কাজ করে, ভোরবেলা কাজে বেরিয়ে যায়। ছন্দার কোনও খবর তার দাদা রাখে না। আর ছন্দার ভাল-মন্দ নিয়ে বৌদিরও কোনও চিন্তা নেই। সংসারে অভাব-অনটন লেগেই আছে। তাই নিয়েই বৌদি জেরবার। কে আর ইস্কুলে এসে ছন্দার হয়ে নালিশ জানাবে? ব্যাপারটা তাই দুএকদিনের মধ্যেই ধামাচাপা পড়ে গেল।

আসল ব্যাপারটা জানা গেল কয়েক দিন পরে। ছন্দাই তার দুচারজন বন্ধুকে ব্যাপারটা বলল। তাদের থেকে আরও কয়েকজন ব্যাপারটা জানল, কিছুদিন পরে আরও কয়েকজন, আরও কয়েকজন। এমনি করে সারা ইস্কুলেই ব্যাপারটা জানাজানি হয়ে গেল।

সেই রাত্তিরে ছন্দার কিছুতেই ঘুম আসছিল না। অন্ধকার গুমোট ঘর, হাওয়া-বাতাস খেলে না। মাথার অনেক ওপরে ঘুলঘুলির মতো একটাই জানলা, তাই দিয়ে আর কতটুকু হাওয়া ঢুকবে? তার ওপর প্রচণ্ড খিদে পেয়েছে। সেই কোন সকালে দুগাল পান্তা খেয়ে বেরিয়েছিল, সেসব কখন হজম হয়ে গেছে। ঘরের মেঝেতে শুয়ে ছন্দা তাও চোখ বন্ধ করে ঘুমের চেষ্টা করছিল। ঘরের একদিকে চাল-ডালের বস্তা ডাঁই করে রাখা আছে। সেদিকে ইঁদুর-আরশোলাদের বাসা। ওব্যেস মতো তারা রোজ রাত্তিরে বেরিয়ে পড়ে। ছন্দার পায়ের ওপর দিয়ে দুএকটা চলে গেল। অন্য কোনও মেয়ে হলে চিৎকার করে উঠত, ছন্দা দাঁতে দাঁত চেপে সব সহ্য করল।

এইভাবে শুয়ে থাকতে থাকতে কখন যে একটু ঘুম এসে গিয়েছিল ছন্দা টের পায়নি, হঠাৎ একটা শব্দে তার ঘুম ভেঙে গেল। শব্দটা বাইরে থেকে আসছে। মাটির ওপরে খট খট শব্দ। নদীর দিক থেকে কারা যেন এগিয়ে আসছে। ঘুলঘুলিটা ছন্দার মাথার অনেক ওপরে, ঘরের মধ্যে পা উঁচু করে দাঁড়ালেও বাইরেটা দেখা যায় না। সে অতি কষ্টে ঘুলঘুলির ঠিক নিচে দুটো চালের বস্তা টেনে নিয়ে এল। বস্তাগুলো বেজায় ভারী। দুটো বস্তা টেনে আনতে গিয়ে ছন্দা রীতিমত হাঁপিয়ে গিয়েছিল। একটু জিরিয়ে নিয়ে সে বস্তা দুটোর ওপর উঠে দেখল, ঘুলঘুলি দিয়ে বাইরেটা বেশ দেখা যাচ্ছে।

আকাশে চাঁদ ছিল। সেই আলোয় ছন্দা যা দেখল তাতে তার শরীরের রক্ত হিম হয়ে গেল। তালগাছের মতো লম্বা কয়েকটা ছায়া ছায়া মূর্তি ইস্কুলের পাঁচিল পেরিয়ে ভেতরে ঢুকছে। তারা এতটাই লম্বা যে তাদের পাঁচিলটা টপকাতে হচ্ছে না। সাধারণ লোক যেমন পা তুলে চৌকাঠ ডিঙিয়ে যায়, এরা তেমনি অনায়াসে পা তুলে পাঁচিল ডিঙিয়ে ইস্কুলের ভেতরে ঢুকে পড়ল। তারপর, কী আশ্চর্য, পাতকুয়োর কাছে যে আমগাছটা আছে সেখানে এসে হঠাৎ যেন মূর্তিগুলো হাওয়ায় মিলিয়ে গেল। ছন্দা অনেক চেষ্টা করেও আর তাদের দেখতে পেল না।

ছন্দার ভীষণ ভয় করছিল। ভয়ে তার সারা শরীর কাঁপছিল। সে বস্তার ওপর থেকে নেমে জবুথবু হয়ে মেঝেতে বসে পড়ল। ঘুলঘুলি দিয়ে চাঁদের আলো ঘরের একদিকে এসে পড়েছে। যদি ঘুলঘুলি দিয়ে মূর্তিগুলো ঘরের ভেতরে ঢুকে আসে? ওরা সব পারে। তাহলে ছন্দা কী করবে? এই এতক্ষণে তার কান্না পেয়ে গেল। সে তার মায়ের মুখটা মনে করার চেষ্টা করল। বাবার মুখটাও। ওরাই তাকে বাঁচাতে পারবে। বাবা তার খুব ছোটবেলায় মারা গেছে, এক বছর হল মাও চলে গেছে। বাবার মুখটা ছন্দার কিছুতেই মনে পড়ল না। মার ছবিটা মনের মধ্যে একবার আসে আবার ভেঙে যায়, আবার আসে, আবার ভেঙে যায়। এইভাবে অনেকক্ষণ কেটে গেল। নদীর দিক থেকে ভোরের ঠাণ্ডা হাওয়া ঘুলঘুলি দিয়ে ঘরে ঢুকছে। ছন্দা আস্তে আস্তে ঘুমিয়ে পড়ল।

ছন্দার গল্পটা সারা ইস্কুলে ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে মেয়েদের মধ্যে ইস্কুলে আসার ব্যাপারে একটা ভয় ছড়িয়ে পড়ল। ছোট ক্লাশের কিছু মেয়ে ভয়ে ইস্কুলে আসা বন্ধ করে দিল। বড় ক্লাশের মেয়েদেরও কারও কারও বাড়ি থেকে ইস্কুলে মেয়ে পাঠানোর ব্যাপারে আপত্তি দেখা দিল। এইসব দিকের মানুষ ভূত-প্রেত-অপদেবতাকে খুব ভয় পায়। তাই ছন্দার গল্পটা ছড়িয়ে যেতে খুব বেশি সময় লাগল না। ব্যাপারটা আস্তে আস্তে দিদিমনিদেরও কানে উঠল।

এই সময় একদিন বড়দিদি ছন্দাকে ডেকে বলল, ফের যদি সে ইস্কুলের নামে এইসব আজগুবি গল্প ছড়ায় তাহলে তাকে ইস্কুল থেকে বার করে দেওয়া হবে। পরের দিন ইস্কুল বসার আগে প্রার্থনার সময় বড়দিদি ছন্দাকে সঙ্গে নিয়ে ইস্কুলের উঠোনে পৌঁছল। উঁচু গলায় ছন্দাকে বলল, তুমি সবাইকে জানিয়ে দাও যে তোমার নামে যে গল্পটা চারদিকে ছড়িয়েছে সেটা একেবারে মিথ্যে। পুরোটাই তোমার মনগড়া। ছন্দা চুপ করে রইল। দিদিমনিরা সকলে মিলে অনেকক্ষণ ধরে ছন্দাকে দিয়ে বলানোর চেষ্টা করল যে সে ইস্কুলের নামে একটা মিথ্যে গুজব রটিয়েছে। আসলে সে ভূত-টুত কিছুই দেখেনি। ছন্দার মুখ দিয়ে একটা কথাও বলানো গেল না। পরের দিন প্রার্থনার আগে বড়দিদি সব ছাত্রীদের জানাল, ছন্দাকে ইস্কুল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আর যদি কেউ ছন্দার মতো ইস্কুলের নামে গুজব ছড়ায়, তাহলে তাকেও তাড়িয়ে দেওয়া হবে।

ছন্দা আমার বন্ধু ছিল না। কিন্তু তাকে ইস্কুল থেকে তাড়িয়ে দেওয়াতে আমার খুব খারাপ লেগেছিল। ছন্দা এখন আর কোনও ইস্কুলে যায় না। বাড়িতে থেকে বাড়ির কাজ করে। আশ্চর্য ব্যাপার হল, ছন্দা ইস্কুল ছেড়ে চলে যাবার পর আস্তে আস্তে তার ভূত দেখার গল্পটাও সকলে ভুলে গেল। ইস্কুল আবার স্বাভাবিকভাবে চলতে লাগল। সকলের মতো আমিও বিশ্বাস করতে শুরু করলাম, দিদিমনিদের ওপর শোধ নেবার জন্য ছন্দা মিথ্যে গল্প রটিয়েছিল। তারপর সেই দ্বিতীয় ঘটনাটা ঘটল।

একদিন সকালে আমরা ইস্কুলে এসে শুনলাম, যে রাস্তাটা ইস্কুলের পেছন দিক দিয়ে এঁকেবেঁকে নদী অব্দি চলে গেছে তার ওপরে একটা পুরোনো অশথগাছের নিচে, একটা লাশ পাওয়া গেছে। পুরুষ মানুষের লাশ, ঘাড় ভাঙা, চোখদুটো নাকি ঠিকরে বেরিয়ে এসেছে। লোকটা বোধহয় মরার আগে খুব ভয় পেয়েছিল। লোকটাকে কেউ চিনতে পারল না, হয়ত এদিককার কেউ নয়। পুলিশ এসে লাশ নিয়ে চলে গেছে।

সেদিন সারাদিন ধরে ইস্কুলে আর কোনও কথা নেই। শুধু সেই মরা লোকটার কথা। কেউ কেউ বলল, পুলিশ বলেছে, আজকাল ইছামতী দিয়ে বাংলাদেশ থেকে চোরা কারবারিরা আসে। এই লোকটা তাদেরই কেউ। বখরায় গণ্ডগোল হওয়ায় দলের লোকেরাই নাকি ওকে মেরে এখানে ফেলে রেখে গেছে। আমার কিন্তু মন বলছিল এটা সেসব নয়। ছন্দা যাদের দেখেছিল এটা তাদের কাজ। নাহলে লোকটা মরার আগে অত ভয় পাবে কেন?

বিকেলে আমার বন্ধু লতা আর আমি গৌরদাদার বাড়িতে গেলাম। গৌরদাদার বাড়িতে আর কেউ থাকে না। তাই আমরা মাঝে মাঝে ইস্কুলের ছুটির পরে গৌরদাদার বাড়িতে গল্প করতে যাই। গৌরদাদাকে দেখে মনে হল কোনও কারণে যেন খুব চিন্তায় আছে। আমাদের দেখে বলল, বোসো মামনিরা। মুড়ি মাখি। নারকোল কোরাই। গৌরদাদা মুড়ি মাখল, নারকোল কোরাল। মুড়ি খেতে খেতে আমি জিজ্ঞেস করলাম, গৌরদাদা, তুমি ওই লোকটার ব্যাপারে কিছু জান? যে লোকটার লাশ পাওয়া গেছে? গৌরদাদা বলল, আমি ইস্কুলের সামান্য কেরানি, ওসব লাশ-টাসের ব্যাপারে কী করে জানব? এই কথা বলে গৌরদাদা অনেকক্ষণ চুপ করে বসে রইল। আমাদের মুড়ি খাওয়া শেষ হয়ে গেল, গৌরদাদা তবু কোনও কথা বলল না। কথাবার্তা তেমন জমছে না দেখে আমরা উঠে পড়ার তোড়জোড় করছি এমন সময় গৌরদাদা হঠাৎ বলল, মামনিরা সাবধানে থেক। দিনকাল মোটেই ভাল নয়।

গৌরদাদার গলায় কেমন যেন একটা দুশ্চিন্তার ছাপ ছিল। লতা ঘাবড়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করল, কেন গৌরদাদা? কেন একথা বলছ? গৌরদাদা বলল, অত কথা বলতে পারব না মামনি, শুধু বলছি, কটা দিন সন্ধে নামার আগে বাড়ি ফিরে যেও। কেন একথা বলছ? আমরাও ছাড়ব না। অনেক পেড়াপিড়ির পর গৌরদাদা বলল, এই ইস্কুলের ওপর অপদেবতার নজর পড়েছে। রোজ রাত্তিরে তেনারা আসেন। আমার বাড়ি তো ইস্কুলের পেছন দিকে, আমি সব দেখতে পাই। আমরা বললাম, তাহলে ছন্দা যা দেখেছিল সব ঠিক? গৌরদাদা বলল, একদম ঠিক, একেবারে ঠিক।

আর ওই লোকটা? যার লাশ পাওয়া গেছে? তাকে তুমি চেনো? আমি জিজ্ঞেস করলাম। গৌরদাদা একটু ইতস্তত করে বলল, মুখ চিনি। নাম জানি না। ও মাছ ধরার নৌকোতে কাজ করে। পাশে বেগুনফুলি গ্রামে ওর পিসির বাড়ি। মাঝে মাঝে রাত্তিরে এই দিকের ঘাটে নৌকো ভিড়লে, বেগুনফুলিতে গিয়ে পিসির বাড়িতে রাত্তিরটা থেকে যায়। ইস্কুলের পেছনের রাস্তাটাই ওর যাওয়া আসার পথ। আমার মনে হয় সেদিনও ওই রাস্তা ধরে যাচ্ছিল, ইস্কুলের কাছে এসে তেনাদের নজরে পড়ে যায়।

পুলিশকে এসব বলেছ? লতা জিজ্ঞেস করল। গৌরদাদা আঁতকে উঠল। পাগল? পুলিশকে আগ বাড়িয়ে কিছু বলতে আছে? বললে, থানায় ধরে নিয়ে যাবে। আদালতে সাক্ষী দিতে ডাকবে। সে অনেক ঝামেলা। শেষে বলল, দেখো, লোকটার পরিচয় পুলিশ ঠিকই খুঁচিয়ে বার করবে।

আমরা চলে আসার আগে গৌরদাদা বলল, একটা কথা খুব মন দিয়ে শোনো। আমি যে তোমাদের এতসব কথা বলেছি ইস্কুলের দিদিমনিরা যেন কিছুতেই জানতে না পারে। জানলে আমার চাকরিটা আর থাকবে না। আর চাকরি চলে গেলে এই বুড়ো বয়েসে খাব কী? আমরা বললাম, তুমি কিচ্ছু ভেবো না গৌরদাদা। আমরা কাউকে বলব না। তবে তুমি সাবধানে থেক। তোমার বাড়িটা ইস্কুলের ঠিক পেছনেই কিনা। গৌরদাদা বলল, আমি ব্রাহ্মণের ছেলে, দুবেলা গায়ত্রী মন্ত্র জপ করি। তেনারা আমার কিছুই করতে পারবে না।

গৌরদাদার কথাগুলো সত্যি সত্যিই আর কাউকে বলিনি। শুধু স্বপ্নাকে বলেছি। স্বপ্না আমার এত বন্ধু, ওকে না বললে চলে? আমি জানি ও কাউকে বলবে না। লতা কি কাউকে বলেছে? জানি না।

একটু আগে লুচি, আলুর ছক্কা আর বোঁদে দিয়ে জলখাবার খাওয়া হয়েছে। জলখাবার দেবে কেউ জানতামই না। সবাই অবাক। এটা শুনলাম মেমদিদি নিজের পয়সায় খাওয়ালো। আলুর ছক্কাটা খুব ভাল হয়েছিল। বোঁদেটাও দারুণ। লুচি তরকারি যত ইচ্ছে খেতে পার। আমি দশটা লুচি খেয়েছি। ছটা তরকারি দিয়ে আর চারটে বোঁদে দিয়ে। দুপুরের খিচুড়ি এখনও উনুনে চাপেনি। লাবড়ার তরকারি কাটা হচ্ছে। ক্লাশ থ্রির মেয়েরা ছোটাছুটি করে চোর চোর খেলছে। আমাদের ক্লাশের মেয়েরা দুটো দল করে গোল হয়ে বসে অন্তাক্ষরী খেলছে। আমার অন্তাক্ষরী খেলতে ভাল লাগে না। গানের কথাগুলো কিছুতেই ঠিক সময় মনে পড়ে না। অথচ গানগুলো আমি যে জানি না তা নয়। অন্তাক্ষরী না খেলে আমি একা একা নদীর ধারে হাঁটছি।

এবছর খুব ভারী বৃষ্টি হয়েছিল। ইছামতী নদী এখনও ফুলে-ফেঁপে রয়েছে। কোনও কোনও জায়গায় নদীর জল বেশ খানিকটা ঢুকে এসেছে ডাঙার ভেতরে। ঘাস-হোগলা-কাশফুলের বন জলে ঢাকা পড়েছে। একটা মাছরাঙা মাছ ধরবে বলে চুপ করে বসে আছে। মাথার ওপরে কয়েকটা গাংচিল উড়ছে। ওদেরও নজর মাছের দিকে। জেলেদের নৌকোগুলো সার বেঁধে মাঝ নদীতে ভাসছে। ওদের মধ্যে হয়ত বাবা আর দাদাও আছে। এখন ইলিশের সময়। আজকাল ছোট ইলিশ ধরা যায় না। সরকারের বারণ আছে। সরকারের হুকুম, জালে ছোট ইলিশ ধরা পড়লে ছেড়ে দিতে হবে। আমাদের তাহলে চলে কী করে? সব সময় কি বড় ইলিশের ঝাঁক জালে ওঠে?

উত্তর দিকে নদীটা সরু। ওদিকে কচুরিপানা জমে জমে নদীটা প্রায় মজে যেতে বসেছে। এখন বর্ষার জল পেয়ে নদী সেইসব কচুরিপানা আর অন্য সব আবর্জনাগুলো ঠেলে ঠেলে দক্ষিণে সাগরের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। যেতে যেতে অবশ্য ডাঙার ভিতরে ঢুকে কিছু কিছু জঞ্জাল জমা দিয়ে যাচ্ছে ঘাস-হোগলার জঙ্গলে। কিন্তু জঞ্জালের মধ্যে কী যেন একটা পড়ে রয়েছে না? ঠিক যেন একটা মানুষ। হাঁটুজলের মধ্যে উপুড় হয়ে শুয়ে রয়েছে। হ্যাঁ, মানুষই তো। নীল জামা সাদা হাফপ্যান্ট পরা একজন মানুষ। একটুও নড়ছে না। জলের নিচে মাথা। মাথার পেছনে ঘাড়ের কাছে রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে। ওর স্থির শরীরের ওপর দিয়ে ইছামতীর জল বয়ে যাচ্ছে।

Book Content

চন্দ্রলেখা অন্তর্ধান রহস্য – ১
চন্দ্রলেখা অন্তর্ধান রহস্য – ২
চন্দ্রলেখা অন্তর্ধান রহস্য – ৩
চন্দ্রলেখা অন্তর্ধান রহস্য – ৪
চন্দ্রলেখা অন্তর্ধান রহস্য – ৫
চন্দ্রলেখা অন্তর্ধান রহস্য – ৬
চন্দ্রলেখা অন্তর্ধান রহস্য – ৭
চন্দ্রলেখা অন্তর্ধান রহস্য – ৮
চন্দ্রলেখা অন্তর্ধান রহস্য – ৯
চন্দ্রলেখা অন্তর্ধান রহস্য – ১০
লেখক: অভিরূপ সরকারবইয়ের ধরন: গোয়েন্দা (ডিটেকটিভ)
চৌধুরি বাড়ির রহস্য অভিরূপ সরকার

চৌধুরি বাড়ির রহস্য – অভিরূপ সরকার

মৃত্তিকার মৃত্যু

মৃত্তিকার মৃত্যু – অভিরূপ সরকার

সৈকত রহস্য অভিরূপ সরকার

সৈকত রহস্য – অভিরূপ সরকার

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

বিবিধ রচনা

হেলথ

Download PDF


My Account

Facebook

top↑

Login
Accessing this book requires a login. Please enter your credentials below!

Continue with Google
Lost Your Password?
egb-logo
Register
Don't have an account? Register one!
Register an Account

Continue with Google

Registration confirmation will be emailed to you.