একদা আর্যাবর্তে – অভিজ্ঞান গাঙ্গুলী
একদা আর্যাবর্তে – অভিজ্ঞান গাঙ্গুলী
ফ্ল্যাপের লেখা –
প্রায় ২৩০০ বছর আগের ভারতবর্ষ। এক ব্রাহ্মণ শিক্ষক প্রতিজ্ঞা করলেন, তিনি ধ্বংস করবেন ‘আর্যাবর্ত’র সবচেয়ে শক্তিশালী নন্দ সাম্রাজ্যকে। সেই আচার্য চাণক্যর কাহিনি ইতিহাসের পাতায় লেখা রয়েছে। কিন্তু কেন নিজের মনে নন্দর প্রতি তীব্র দ্বেষ পোষণ করেছিলেন চাণক্য? কী পরিণতি হয়েছিল সেই নারীর যিনি চাণক্যর প্রেমে পড়েছিলেন? কেন আলেকজান্ডার মহান, আর্যাবর্ত জয়ের স্বপ্ন অসম্পূর্ণ রেখেই ফিরে গিয়েছিলেন? ষড়যন্ত্র, নাকি, হৃদয় পরিবর্তন? কীভাবে চাণক্য নির্বাচন করেছিলেন চন্দ্রগুপ্তকে ভবিষ্যতের সম্রাট হিসেবে? কীভাবে পরিচালিত হত সেই যুগের গুপ্তচর চক্র? অমাত্য রাক্ষস ও চাণক্যর বুদ্ধির দ্বৈরথে জয়ী হয়েছিলেন কে? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর আছে এই বইয়ের পাতায়। ‘চাণক্য সিরিজ’-এর স্পিনঅফ হিসেবে সব কিছু শুরুর কাহিনি বলবে এই সংকলন। ইতিহাসের কিছু চরিত্রকে নিয়ে কল্পনার মিশেলে সৃষ্ট চারটি উপন্যাসিকা, যা আসলে একই যোগসূত্রে বাঁধা স্বয়ংসম্পূর্ণ ঐতিহাসিক থ্রিলার উপন্যাস। এই কাহিনি প্রাচীন ভারতের। যেখানে আছে ষড়যন্ত্র, যুদ্ধ, গুপ্তচর, প্রেম, প্রত্যাখ্যান, রাজনীতি, বিশ্বাসঘাতকতা। এ সমস্ত ঘটনার রঙ্গমঞ্চ ছিল… একদা আর্যাবর্তে।
প্রথম প্রকাশ : ডিসেম্বর ২০২৪
প্রচ্ছদ : সপ্তদীপ দে সরকার
অলংকরণ : গৌতম কর্মকার
উৎসর্গ
তাদের জন্যে,
যারা হয়তো জীবনে ‘সফল’ হতে পারেননি…
কিন্তু “মানুষ” হতে পেরেছেন।
.
ভূমিকা
প্রিয় পাঠক,
সময়কাল ধরলে, ‘চাণক্য সিরিজ’-এর কাহিনি শুরু হয়েছে মৌর্য সাম্রাজ্যের স্থাপনার কয়েক বছর পর। পাঠকদের বহুদিনের দাবি ছিল যে তার আগের কাহিনিও তাঁদের কাছে আনা হোক। চাণক্য ছাড়াও অন্যান্য ঐতিহাসিক/কাল্পনিক চরিত্র যেমন চন্দ্রগুপ্ত, আচার্য শকুনি, ধনানন্দ, অমাত্য রাক্ষস, প্রভৃতিদের নিয়েও পাঠকদের মনে আগ্রহ সীমাহীন। তাই এইবার পাঠকদের আবেদনে সাড়া দিয়ে একটু ভিন্ন প্রচেষ্টা। এই বইটি চাণক্য সিরিজের Prequel না বলে spin-off বলবো। কারণ চাণক্য সিরিজ আপাদমস্তক গোয়েন্দা কাহিনি, কিন্তু এই বইয়ের গল্পগুলো গোয়েন্দা কাহিনি নয়। তাহলে কীসের গল্প বলতে চলেছে এই বই?
এই বইয়ে আছে চারটে বড়ো গল্প। ‘ইতি সুভাষিণী’ চাণক্যের উত্থানের মধ্যে দিয়ে এক নারীর করুণ কাহিনি, যে চাণক্যকে ভালোবেসেছিল। ‘দৈবাস্ত্ৰ’— গল্পে এক অভিযানের মধ্যে দিয়ে তুলে ধরা হয়েছে চাণক্য কেন চন্দ্রগুপ্তকেই বেছে নিয়েছিলেন নিজের প্রতিজ্ঞা পূরণের জন্য সেই উপাখ্যান। ‘ইন্দ্ৰজিৎ’ তুলে ধরেছে আলেকজান্ডারের ভারত অভিযানের সময়কালকে। আর শেষ কাহিনি, ‘অচ্যুতম্ রাক্ষসম্’-এর মধ্যমণি, চাণক্যের প্রতিদ্বন্দ্বী স্বয়ং অমাত্য রাক্ষস। ইতিহাসের কিছু চরিত্রদের নিয়ে কল্পনার মিশেলে সৃষ্টি এই ঐতিহাসিক কাহিনি সমূহ। চারটি নামে বইয়ের কাহিনিকে ভাঙা হয়েছে বটে, কিন্তু আসলে গোটা বই জুড়ে চলেছে, একই যোগসূত্রে বাঁধা একটি সমান্তরাল উপন্যাস। ঐতিহাসিক উপন্যাস, রাজনৈতিক থ্রিলার, কিশোর অভিযান, প্রেমের কাহিনি— কোন গল্পকে কোন ধারায় ভাগ করবেন, তা সম্পূর্ণ পাঠকের উপর ছাড়লাম৷ ইতিহাসের চেনা-অচেনা চরিত্রদের খুঁজে পাবেন বইয়ের পাতায় পাতায়। চাণক্য সিরিজ-এর পাঠকরা হয়তো-বা একটু খুঁজলেই পেয়ে যেতে পারেন অদৃষ্ট ভবিষ্যতের অনেক প্রশ্নের উত্তর।
তাহলে এই বই কি শুধুমাত্র ‘চাণক্য সিরিজ’-এর পাঠকদের জন্যে? একদম নয়। যদি কেউ আগে চাণক্য সিরিজের কোনো বই নাও পড়ে থাকেন, তাহলেও নির্দ্বিধায় এই বইয়ের আনন্দ নিতে পারেন। বা এই বইয়ের শেষে ‘চাণক্য সিরিজ’ পাঠ করতেই হবে সেটাও একেবারেই নয়। কারণ এই বইটি কাহিনির দিক থেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং একেবারে স্বতন্ত্র।
বইয়ের নামকরণের দ্বারা শ্রদ্ধা জানালাম আমার অন্যতম প্রিয় শিল্পী শ্ৰী ময়ূখ চৌধুরীকে। যে দুটি সূত্রের নাম উল্লেখ না করলেই নয় তার মধ্যে প্রথমটি হল ২০১১-১২ সাল নাগাদ ndtv imagine -এ সম্প্রচারিত টিভি সিরিজ ‘চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য’। প্রতি রবিবার গোগ্রাসে গিলতাম টিভি-এর সামনে বসে টানা দুই ঘন্টা। আজও গল্প লেখার সময়ে ওই সিরিয়ালের অভিনেতাদের মুখই কল্পনায় ফুটে ওঠে। দ্বিতীয়টি হল আমার অন্যতম প্রিয় বই, অস্বিন সংহীর ‘Chanakya’s Chant’.
এই বইটি একদিক থেকে আমার ড্রিম প্রজেক্ট। একে সাজিয়ে তোলার জন্যে ধন্যবাদ জানাই ঐতিহাসিক কাহিনির অলংকরণে সিদ্ধহস্ত বরিষ্ঠ শিল্পী শ্রী গৌতম কর্মকার, শ্রী অনমিত্র রায়, সোনাল দাস, শান্তনু ঘোষ সহ গোটা ‘বুক ফার্ম’ টিম-কে। বাকি কিছু ভুল ত্রুটি থাকলে পাঠক নিজ গুনে ক্ষমা করবেন।
আর কথা নয়। চলুন তবে ঘুরে আসি ইতিহাসের পাতায়। দেখে আসি কী ঘটেছিল… একদা আর্যাবর্তে…
বিনীত,
অভিজ্ঞান গাঙ্গুলী
Leave a Reply