• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক্স
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

হায় রে টিকিট!

লাইব্রেরি » বাংলা কৌতুক » রম্য রচনা » হায় রে টিকিট!

সারা জীবন বেলাইনে চলে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের টিকিটের দেখা পেতে কয়েক দিনের জন্য একেবারে লাইনে চলে এসেছিল আমাদের তরুণ প্রজন্ম। এদেরই একজন আদনান মুকিত। টিকিটের জন্য তিনি এক রাত ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলেন ব্যাংকের সামনে। কিন্তু দেখা মেলেনি টিকিটের ভাউচারের। তার বয়ানে শুনুন সেই হিমরাত্রির কথা—

বাংলাদেশে এই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ হবে, আর আমি ঘরে বসে মুড়ি খেতে খেতে খেলা দেখব, তা কিছুতেই হতে পারে না। যেভাবেই হোক, আমাকে মাঠে যেতেই হবে। ২ তারিখ থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হবে, তাই ঠিক করলাম ১ তারিখ রাত থেকেই ব্যাংকের সামনে খাম্বার মতো দাঁড়িয়ে থাকব। কিন্তু দুপুর থেকেই লাইন শুরু হয়ে গেল। তা-ও যেনতেন লাইন নয়, একেবারে বিশাল লাইন। আমাদের মাথা খারাপ হওয়ার মতো অবস্থা। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে শেষ পর্যন্ত ধানমন্ডি শাখার লাইনে দাঁড়ানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিলাম। রিকশা থেকে ব্যাংকের সামনে নামতেই বিশাল এক জনগোষ্ঠী চিৎকার করে উঠল, ‘দৌড়া, বাঘ আইল।’ আমি চমকে উঠলাম। বাঘের ভয়ে ঝেড়ে দৌড় দেব, নাকি রিকশার ভাড়া দেব, তা ভাবতে ভাবতেই আসল ঘটনা বোঝা গেল। ‘দৌড়া, বাঘ আইল’ নামের একটি দল বিশ্বকাপের টিকিট কিনতে এসেছে। তাদের স্লোগানই ‘দৌড়া, বাঘ আইল’। দৌড়ের চিন্তা বাদ দিয়ে আমি রিকশার ভাড়া দিলাম।
ছোটবেলা থেকে শুনে এসেছি, বাঙালি আর ডিসিপ্লিন, দুটো বিপরীত শব্দ। এখানে এসে দেখলাম, ঘটনা তা নয়। এ-বি-সি-ডি গ্রুপ করে শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে আছে মানুষ। প্রত্যেকের হাতে নাম আর সিরিয়াল নম্বর লেখা টোকেন। টিকিট কিনতে আসা কিছু তরুণ এই টোকেনের উদ্যোক্তা। আমিও টোকেন নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে পড়লাম। সিরিয়াল ২৩৫। হিসাব করে দেখলাম, একজনকে দুটো করে দিলেও আমি টিকিট পাব। টোকেন পেয়ে নিজেকে বেশ গর্বিত মনে হলো। একজন তো বিশ্বকাপের টিকিটের ভাউচারের টোকেন পেয়েছি—এই বলে ফেসবুকে স্ট্যাটাসও দিয়ে দিল। ভালোই লাগল। আরও ভালো লাগল খবরের কাগজের ব্যবহার দেখে। খবরের কাগজ যে কত উপকারী, তা লাইনে না দাঁড়ালে বুঝতামই না। দাঁড়িয়ে থেকে থেকে যখন সবার হাঁটুর বাটি ব্যথা হয়ে গেল, তখন সবাই খবরের কাগজ বিছিয়ে ফুটপাতে বসে পড়ল। আমি ভাবতাম রস+আলো কোনো কাজেই আসে না। কিন্তু আমার ধারণা ভুল। আরামে বসার জন্য রস+আলোকেই বেছে নিল অনেকে। বাঙালিকে বসতে দিলে শুতে চায়। এখানেও তা-ই হলো। বসার একটু পরই সবাই চিৎ-কাত হয়ে শুয়ে পড়ল। কিছুক্ষণ পর গাড়ির হর্নের সঙ্গে আরও একটি আওয়াজ পেলাম; পাবলিকের নাক ডাকার সুমধুর আওয়াজ।
চমৎকার পরিবেশ। কেউ কেউ কার্ড খেলছে। মশাদের গানে উদ্বুদ্ধ হয়ে অনেকে গানের প্রতিযোগিতা শুরু করেছে। কয়েকজন রাস্তায় ফুটবল খেলা শুরু করল। হঠাৎ জনগণের বন্ধু পুলিশের গাড়ি আসায় আমরা ভাবলাম, তারাও বুঝি ফুটবল খেলবে। কিন্তু পুলিশ ফুটবল বোঝে না। গাড়ি থেকে নেমেই অফিসার বললেন, ‘এই কাজটা করা যাবে না। আপনারা বসেন, কার্ড খেলেন, চা-পানি খান, কিন্তু রাস্তায় ফুটবল খেলা যাবে না।’ কী আর করা, ফুটবলাররা খেলা বন্ধ করে দিল। পুলিশের গাড়ি চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আবার শুরু হলো খেলা।
রাত যত দীর্ঘ হয়, ঠান্ডা বাতাস তত কাছে আসে। কোনোভাবেই ঠান্ডা বাতাসকে দাবিয়ে রাখা যাচ্ছিল না। মনে হচ্ছিল, বাতাসকে কেউ টাকা-পয়সা দিয়েছে, যাতে আমরা লাইন ছেড়ে চলে যাই। কিন্তু আমরাও কঠিন চিজ। কষ্ট যখন করেছি, কষ্ট আরও করব, কিন্তু টিকিট না নিয়ে বাসায় ফিরব না। আবারও বন্ধু হয়ে এগিয়ে এল খবরের কাগজ। কাগজ জ্বালিয়ে শীত থেকে বাঁচার আপ্রাণ চেষ্টা। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণে অনেক খবরের কাগজ ‘জ্বালাও-পোড়াও’ করা হয়েছে। এই সুযোগে আমরাও বেশ কিছু খবরের কাগজকে ছাইয়ে পরিণত করলাম। দি অ্যাশেজ!
গভীর রাতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি স্বল্পদৈর্ঘ মারামারি অনুষ্ঠিত হলো। সাধারণত কোথাও ভালো কাজ হলে একটি বিশেষ মহল কিছুতেই তা মেনে নিতে পারে না। প্যাঁচ লাগানোর চেষ্টা করে। এখানেও একটি বিশেষ মহল (যারা পরে এসেছে) প্যাঁচ লাগানোর চেষ্টা করল। তাদের এক দাবি, এই লাইন মানি না। তাদের বোঝানোর চেষ্টা করা হলো। কিন্তু তাঁরা কিছুতেই বুঝতে চাইল না। এরকম অবুঝ সবুজদের জন্যইকবিগুরু লিখেছেন, ওরে সবুজ, ওরে আমার কাঁচা…। অবুঝের দল ডিসিপ্লিন ভঙ্গ করে সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ল। পারলে ঠেকা! সেই কখন থেকে এতগুলো লোক লাইন দিয়েছে, আর তারা এসে সামনে দাঁড়াবে! কেউই এটা মেনে নিতে পারল না। শুরু হলো হাতাহাতি। তারপর সিরিয়ালে থাকা সবাই মিলে বিশেষ মহলকে ধাওয়া দিল। জয় হলো ডিসিপ্লিনের! আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য এটা একটা শিক্ষা হতে পারে যে পাবলিক খেপলে খবর আছে।
সকালবেলা লাইন আরও বিশাল আকার ধারণ করল। অনেকে টাকা-পয়সা খরচ করেও মানববন্ধনের জন্য মানব জোগাড় করতে পারে না, আর এখানে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে কী সুন্দর মানববন্ধন হয়ে গেছে! সবার অপেক্ষা, কখন ব্যাংক খুলবে। ব্যাংকগুলো কেন আরও আগে খোলে না, এ নিয়ে সবার মধ্যেই প্রকাশ পেল তীব্র ক্ষোভ। সারা রাত দাঁড়িয়ে থাকায় এমনিতেই সবাই একটু উত্তেজিত, তার ওপর মানুষের অদ্ভুত প্রশ্ন মেজাজ আরও খারাপ করে দিল। একজন লাইন দেখে প্রশ্ন করল—
ভাই, এটা কিসের লাইন?
এটা মানুষের লাইন (উত্তরদাতা বিরক্ত)।
আপনারা লাইনে দাঁড়িয়েছেন কেন?
সিনেমা দেখতে লাইনে দাঁড়িয়েছি। নাম মনের মানুষ। মারাত্মক অ্যাকশন মুভি। পয়েন্টে পয়েন্টে মারামারি। আপনি দেখবেন (প্রচণ্ড বিরক্ত)?
একটু পরপর বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের লোক আসছে। ফাঁকিবাজ ছাত্ররা যেভাবে দুই-তিনটা প্রশ্নের উত্তর মুখস্থ করে যায়, তারাও দুই-তিনটা প্রশ্ন মুখস্থ করে এসেছে।
—আপনি এখানে কেন এসেছেন?
—কখন থেকে লাইনে দাঁড়িয়েছেন?
—আপনার কেমন লাগছে?
রস+আলোতে দুই প্রশ্নের একটা সাক্ষাৎকার ছাপা হতো। চ্যানেলের লোকগুলো হয়তো ওটা দেখে খুবই অনুপ্রাণিত। তা না হলে ওই তিনটি প্রশ্ন ছাড়া তাদের মাথায় আর কোনো প্রশ্ন এল না কেন? তা-ও সবাই একই প্রশ্ন করে। চ্যানেলের লোগোটাই একমাত্র ভিন্নতা।
১০টা বাজতেই ব্যাংক খুলে গেল। সবাই নড়েচড়ে দাঁড়াল। সাড়ে ১০টার দিকে লাইনের প্রথম তিন-চারজন ব্যাংকে প্রবেশ করল। সময় চলে যায়, রাস্তার জ্যাম ছুটে যায়, কিন্তু তারা আর বের হয় না। আমরা ভাবলাম, বিশ্বকাপের টিকিট বলে কথা, ব্যাংকে নিশ্চয়ই চা-নাশতার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু ঘটনা তা নয়। ব্যাংকের সার্ভার কচ্ছপগতির। তার ওপর ফরম হাতে লিখে পূরণ করতে হয়। সব মিলিয়ে একজনের জন্যই আধঘণ্টা। অবশেষে একজন ভাউচার নিয়ে বেরিয়ে এল। দেখে মনে হলো, এভারেস্ট নয়, সে সেভেন সামিট জয় করেছে। জাফরউল্লাহ শরাফতের ভাষায় বলতে গেলে, এ এক চরম ঐতিহাসিক মুহূর্ত, জাতির জীবনে এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়, প্রথম ব্যক্তি হিসেবে সে ভাউচার ক্রয়ের খ্যাতি অর্জন করল। তাকে আমার অন্তরের অন্তস্তল থেকে জানাই প্রাণঢালা অভিনন্দন…!
কিন্তু ওই একজনই। সকালের নাশতা হজম হয়ে গেল, কিন্তু আর কেউ বের হয় না। অনেকক্ষণ পরপর একজন করে বের হয় আর চ্যানেলের লোকগুলো তাকে ঘিরে ধরে। তারপর সেই এক প্রশ্ন—
টিকিট পেয়ে আপনার কেমন লাগছে?
এটা টিকিট নয়, ভাউচার। ভালো লাগছে। আমি খুবই আনন্দিত…আমার খুবই ভালো লাগছে…
বেলা দুইটা পর্যন্ত টিকিট পেয়েছে মাত্র চার-পাঁচজন। আমার সিরিয়াল ২৩৫। কোনো আশা নেই। তা-ও ঝিম ধরে রইলাম। আমাদের এক বন্ধু তলপেটের ব্যথায় আহত—অবসর নিয়ে বাসায় কম্বলের নিচে অবস্থান নিয়েছে। কয়েকজনের আবার পরদিন চূড়ান্ত পরীক্ষা। একজনের বিষয় ‘মানসিংহ ভবানন্দ’। আরেকজনের বিষয় ‘এডিটিং’। সবকিছু মিলিয়ে আমরা ইনিংস ঘোষণা করলাম। মানে এই লাইন ছেড়ে বাড়ি যাওয়ার বাসের লাইন ধরলাম। বিশ্বকাপের টিকিট পাইনি তো কী হয়েছে, সিটিং বাসের টিকিট তো পেয়েছি। শুধু তা-ই নয়, পেছনের দিকে ভাঙাচুরা একটা সিটও পেলাম। বেশ ভালো লাগল। সারা রাত ঘুমাইনি। সিটে বসে ঝিমাচ্ছিলাম। হঠাৎ নিজেকে আবিষ্কার করলাম সিটি ব্যাংকের ভেতরে। সোফায় আরামে বসে আছি। ব্যাংকের কর্মীরা ব্যস্ত ভঙ্গিতে এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়াচ্ছেন। হঠাৎ একজন বললেন, ‘মামা, টিকিট!’ আমি লাফ দিয়ে উঠলাম। টিকিট পাওয়া গেছে! খুশি হতে গিয়ে তাকিয়ে দেখি বাসের চেকার দাঁড়িয়ে আছে। ‘মামা, টিকিটটা দেখান।’ আমি টিকিট দেখালাম। দূর! মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেল। রাস্তায় ভয়ানক জ্যাম। আবার ঝিমুনি আসতেই বন্ধুর ফোন। কোনোমতে বললাম, হ্যালো।
দোস্ত, টিকিট পেয়েছি।
আমি বাসের ভেতরেই চিৎকার করে উঠলাম।
ইয়েস! কয়টা পেয়েছিস?
২২টা।
কোন কোন খেলার?
আরে, খেলার টিকিট না তো, কনসার্টের টিকিট। বিকেলে কনসার্টে যাবি না?
মনটাই খারাপ হয়ে গেল। কোথায় বিশ্বকাপ আর কোথায় কনসার্ট! একটা মিরপুর স্টেডিয়াম, আরেকটা আর্মি স্টেডিয়াম।
দুঃখভারাক্রান্ত মন নিয়ে বাসায় এলাম। টিকিট পাইনি—কোথায় সবাই সান্ত্বনা দেবে, তা না, উল্টো বকাঝকা শুরু করল।
আগেই বলেছিলাম পাবি না, পরীক্ষার পড়া ফেলে শুধু শুধু গেলি কেন? রেজাল্ট খারাপ হলে হাড্ডি গুঁড়া করে দেব।
এত লোক টিকিট পেল, তুই পেলি না কেন? তুই ভাত খাস না?
তা-ও না হয় সহ্য করা যায়। কিন্তু কেউ যখন ফোন করে বলে, কিরে, তুই টিকিট পাসনি? হেঃ হেঃ হেঃ, আরে আমি তো পেয়েছি। আট ম্যাচের ১৬টা—এটা কি সহ্য করা যায়? আরে ব্যাটা, পেয়েছিস ভালো, আমাকে বলার দরকার কী? ভেবেছিলাম, দুঃখ ভুলতে সাগরপাড়ে ঝিম মেরে বসে থাকব। কিন্তু আমি নিশ্চিত, সেখানে যাওয়ার টিকিটও পাব না। দূর। লেখা এখানেই শেষ। তবে শেষ করার আগে বলছি, একজন মুমূর্ষু ক্রিকেটপ্রেমীকে বাঁচাতে বিশ্বকাপের টিকিট প্রয়োজন। আগ্রহীরা অতিদ্রুত যোগাযোগ করুন। আর্তমানবতার সেবায় এগিয়ে আসুন।

সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারী ১০, ২০১০

Category: বাংলা কৌতুক, রম্য রচনা
Previous Post:লাইনবাজি
Next Post:নিঃশ্বাস নিতে ভুলে গেছিলেন

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

বিবিধ রচনা

হেলথ

Download PDF


My Account

Facebook

top↑