আমি ভিক্ষা করে ফিরতেছিলেম গ্রামের পথে পথে , তুমি তখন চলেছিলে তোমার স্বর্ণরথে । অপূর্ব এক স্বপ্ন - সম লাগতেছিল চক্ষে মম— কী বিচিত্র শোভা তোমার , কী বিচিত্র সাজ । আমি মনে ভাবেতেছিলেম , এ কোন্ মহারাজ । আজি শুভক্ষণে রাত পোহালো ভেবেছিলেম তবে , আজ আমারে দ্বারে দ্বারে ফিরতে নাহি হবে । বাহির হতে নাহি হতে কাহার দেখা পেলেম পথে , চলিতে রথ ধনধান্য ছড়াবে দুই ধারে— মুঠা মুঠা কুড়িয়ে নেব , নেব ভারে ভারে । দেখি সহসা রথ থেমে গেল আমার কাছে এসে , আমার মুখপানে চেয়ে নামলে তুমি হেসে । দেখে মুখের প্রসন্নতা জুড়িয়ে গেল সকল ব্যথা , হেনকালে কিসের লাগি তুমি অকস্মাৎ ‘ আমায় কিছু দাও গো ' বলে বাড়িয়ে দিলে হাত । মরি , এ কী কথা রাজাধিরাজ , ‘ আমায় দাও গো কিছু ' ! শুনে ক্ষণকালের তরে রইনু মাথা - নিচু । তোমার কী - বা অভাব আছে ভিখারী ভিক্ষুকের কাছে । এ কেবল কৌতুকের বশে আমায় প্রবঞ্চনা । ঝুলি হতে দিলেম তুলে একটি ছোটো কণা । যবে পাত্রখানি ঘরে এনে উজাড় করি— এ কী ! ভিক্ষামাঝে একটি ছোটো সোনার কণা দেখি । দিলেম যা রাজ - ভিখারীরে স্বর্ণ হয়ে এল ফিরে , তখন কাঁদি চোখের জলে দুটি নয়ন ভরে— তোমায় কেন দিই নি আমার সকল শূন্য করে ।
পূর্ববর্তী:
« কুয়ার ধারে
« কুয়ার ধারে
পরবর্তী:
কোকিল »
কোকিল »
Leave a Reply