• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক্স
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

‘ইয়েস’ আর ‘নো’র মাঝে – নাসরীন জাহান

লাইব্রেরি » বিবিধ লেখার সংকলন » গল্প » ‘ইয়েস’ আর ‘নো’র মাঝে – নাসরীন জাহান

মধ্যরাত
বাড়ি নিকটবর্তীই। বাড়ি কি ঠিক? না কক্ষ। যেখানে জাতাজাতি করে একজনের সঙ্গে একশজন মাথা গোঁজে। হিমহিমে শীতে রাস্তায় মাঝেমধ্যে স্রেফ শীত কুকুরের গুমড়ানো কুঁইকুঁই।
গার্মেন্টস থেকে ফিরছিল দুই মেয়ে। ছোট একটি শাল টানাটানি করে তার মধ্যে নিজেদের সেঁধিয়ে, একজন একটি মারাত্মক ইটে আঘাত খেয়ে প্রচণ্ড আর্তনাদে বসে পড়লে অন্যজন ভয়ার্ত চোখে দেখে প্রায়ান্ধকার রাস্তায় ছিঁড়ছিঁড়ে রক্ত ছড়াচ্ছে।
সে হিতাহিত ভাবনা ছেড়ে শাল উজিয়ে জাস্ট উড়াল দেয়, নগরের বিশাল রাস্তার পাশে যদি কিছু ঘাস পাওয়া যায়? ছেলেবেলায় মার শেখানো কবিরাজি। ছুটে বেশ একটু সামনে গিয়ে একটি বৃক্ষের নিচে উবু হয়ে যেই আলুথালু করে কিছু ঘাস খুঁজছে, ক্ষুধার্ত মানুষমুখো রাত নেকড়েরা হামলে পড়ে তার ওপর। রক্তাক্ত হিম পায়ে মেয়েটির অবচেতন দেহ কখন যে একটি দেয়ালের পেছনে লুকায়, নিজেই বলতে পারে না। কেবল দেখে, যেভাবে জ্যান্ত গরুর চামড়া চুরি করতে চোরকে হাত-পায়ের রগ খুলে বীভৎস আর্তনাদের মধ্যে তার চামড়া খোলে, সেই ভাবেই ওই মেয়েটির পোশাক খুলতে খুলতে একেকজন কামুক পুরুষ নিজেরাই লালামিশ্রিত-নিজেদেরকে মাঝরাতের বিশাল রাস্তায় টেনে নিয়ে ফেলছে। এবং মেয়েটির আর্তনাদ হাত দিয়ে সজোরে থামিয়ে তাকে কামড়ে-হিঁচড়ে গু’য়ের মধ্যে ঠেলে দিতে দিতে কেমন নিস্তেজ হয়ে পড়ছে।
আলো-আঁধারিতে প্রস্তর হয়ে থাকা মেয়েটি পলকহীন চোখে বাক হারিয়ে তাকিয়ে থাকে। তারচেয়ে বাকরহিত তার পাশে শুয়ে থাকা দুটো রাতকুকুর। তাদের চাহনিতেও ভাষাহীন স্তব্ধতা।
২• এরপর
অপর পাশের কাঠগড়ায় কিছু যুবক দাঁড়ানো। আর সাক্ষ্য দিতে এসে আসামিপক্ষের উকিলের একেকটি বিষাক্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে এপাশেরটায় দাঁড়িয়ে টানটান মাথা নিয়ে আসা মেয়েটি কখনো বিব্রত, কখনো দগ্ধ, কখনো ক্ষিপ্ত হয়ে হয়ে প্রায়ই খেই হারাতে থাকে। যুবকগুলো কাঠগড়া থেকে নেমে গেলে কোর্টের মধ্যে প্রচুর মানুষের ভিড়ে অপর পাশের শূন্য কাঠগড়ার দিকে তাকিয়ে মেয়েটির ভেতর ভূমণ্ডলে অপার স্তব্ধ শূন্যতা নেমে আসে।
সেই রাতের পর মেয়েটি সারা দিন সারা রাত সেই বীভৎস ্নৃতি দেখার পাহাড়-ভারে বলা যায় আধ বেহুঁশ সময় কাটিয়েছে। পুলিশ এসেছে। সাক্ষ্য দিতে বলেছে। কিন্তু মেয়েটির গ্রাম থেকে আসা দরিদ্র বাবা-মা আর কাছের মানুষেরা তাকে বার বার সাবধান করেছে। এই সব অবস্থার মধ্যে নিজেকে ফেলা মানে প্রতিপক্ষ আর মামলার হাজারো চক্করে নিজেকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া। ধর্ষিতা নারীদের পক্ষে বয়ান দিতে দিতে এই সমাজে নিজেই এক সময় ‘ধর্ষিতা’ হওয়া। এই দেশে একজন নারীর বেঁচে থাকতে হলে শুয়োর কুত্তা থেকে যথাসম্ভব গা বাঁচিয়ে চলাই ভালো।
‘শুয়োর-কুত্তা?’ মেয়েটির নিস্তেজ হয়ে পড়া অস্তিত্ব তীব্র প্রতিবাদে গুমড়ে উঠেছে।
বলে কী এরা? এই পৃথিবীতে কেউ কোনোদিন শুনেছে কি আফ্রিকায়, কি সুন্দরবনে, কি•••? পশুদের মধ্যে সন্ত্রাস হত্যাযজ্ঞ পশুরেপ হয়েছে? কুকুর কুকুরের মাংস খায়? কাক? শুয়োর? বাঘ-সিংহ ওদের নখর বিষাক্ত আঘাত দিয়ে ন্যূনতম এমনো রক্তপাত ঘটাতে পারে, আজ পৃথিবীতে হিংস্রতার তীব্রতায় নিখুঁত বুদ্ধি-কৌশল বলে হাজারো লাখ নির্দোষ মানুষকে এক নিমেষে রক্তাক্ত ধ্বংস আগুনের মৃত্যুর আতঙ্কে ঠেলে দিচ্ছে আরেক মানুষ? সেই মহান পশুদের সঙ্গে ওই রাতের মানুষগুলোর তুলনা?
শেষে তার কানে একসময় এক্কেবারে বিষাক্ত বল্লমের মতো একটি বাক্য ভেসে এল, আক্রান্ত মেয়েটি হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়তে লড়তে মারা গেছে। ওরা যাওয়ার আগে পৈশাচিক আনন্দের শেষ ‘আশ’ মেটাতে ওর যোনিতে ছুরি চালিয়ে গিয়েছিল।
নিজের গায়ে থুথু-ধিক্কারে নিজেকেই কাটতে থাকে মেয়েটি। কী করে ন্যূনতম ওকে সাহায্যে এগিয়ে না গিয়ে সে ভীত হয়ে নির্বাক, দেয়ালের পেছনে দাঁড়িয়ে এই দৃশ্য দেখতে পেরেছিল? ধিক! এই জীবনকে।
আজ কদিন যাবত ক্রমাগত কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে হাড়ে হাড়ে সে অনুভব করতে পারে, আত্মীয়স্বজনদের সতর্ক বাণীর অর্থ। আসামি পক্ষ উকিলের প্রশ্ন-সেইদিন রাতে কটায় এই ঘটনা ঘটেছে?
ওই অবস্থায় ঘড়ি দেখার সময় কারও থাকে? মেয়েটি বলে, এই ধরুন রাত-
‘ধরুন’ না। রাত কটা ঠিকঠাক বলুন।
তারা কজন ছিল? প্রায়ান্ধকারে হতভম্ব চোখে দাঁড়িয়ে থাকা ‘মেয়েটি’কে ্নরণ করার চেষ্টা করে সাক্ষ্য দিতে আসা মেয়েটি তোতলায়, এই ধরুন পাঁচ কি•••ছয়?-নো নো আদালতে ‘এই ধরুন’, ‘হয়তো’, ‘সম্ভবত’এই সব কথার কোনো জায়গা নেই। তো আপনি তখন চিৎকার না করে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তামাশা দেখছিলেন?
আদালতে অট্টহাসি।
না, মানে আমার নিজের তখন এমন অবস্থা হয়েছিল, আমি নিজেই এমন-
নো নো ‘ইয়েস’ অর ‘নো’ বলুন। আপনি বলেছেন, পুরো দৃশ্যটি আপনি দেখেছেন। প্রতিবাদ বা চিৎকার করে কারও কাছ থেকে সাহায্য চাওয়ার বদলে চুপ করে ছিলেন? ‘ইয়েস’ অর ‘নো’?
উকিলের এই সশব্দ ধমকে মেয়েটি কেঁপে উঠে অস্কুটে বলে ‘ইয়েস’।
সঙ্গে সঙ্গে আক্রান্ত মেয়েটির পক্ষের উকিলের হাল ছেড়ে দেওয়া বিপন্ন চেহারা দেখে প্রতিদিনই ভেতরে ভেতরে এই মেয়েটির রক্তাক্ত হতে থাকা।
রাতে বিছানায় ফুঁপিয়ে কাঁদে মেয়েটি। উকিলটির বড় গোঁফ, দাঁত কেলিয়ে হাসি, পিটপিটে চোখের নানারকম ক্রূর চাহনি, চামড়া কুঁচকে যাওয়া মুখ মেয়েটির শরীর ঘুলিয়ে দেয়। সেই উকিলের প্রতিদিনের হাজারো প্রশ্ন, মেয়েটিকে কতটুকু ন্যাংটো করা হয়েছিল? প্রথম কে তার ওপর উপগত হয়েছিল? শেষজন দাঁড়িয়ে কি অপেক্ষা করছিল? নাকি একই সঙ্গে সবাই•••?
না, না••• মেয়েটি কান চেপে উঠে বসে। উকিলের প্রশ্ন ছিল, কেন তারা এত রাতে কোনো পুরুষের সাহায্য ছাড়া একাকী বাড়ি যাওয়ার সাহস করে।
গার্মেন্টসে শিফটের কাজ, এ ছাড়া বাড়িও নিকটবর্তী•••কী লাভ এই উত্তরের? আদালত প্রমাণ চায়, আছে কোনো প্রমাণ? আপনি ছাড়া আর কেউ দেখেছে এই দৃশ্য?
রাতকুকুরেরা-গলা থেকে বেরোতে গিয়েও আটকে গেছে। আদালতে অট্টহাসি হবে। রেপ কেইস-এ ধর্ষিতাদের পক্ষে থাকা সব উকিলই কী এই উকিলের মতো হয়? আর এমন একটি মর্মান্তিকবিষয়ক এক বিতর্কে যারা অট্টহাসে, ওরা কারা?
শেষ দিন যখন মেয়েটি আদালতে দাঁড়ায়, বিজয়ী হতে থাকা হাস্যরত উকিল পরাস্ত মেয়েটিকে যেন একটি হালকা প্রশ্ন করতে চায়-আচ্ছা, যারা ওই দিন ওই কাণ্ড করেছে, এতজনের মধ্যে একজনের চেহারা তো অন্তত মনে থাকা উচিত। বলুন দেখতে কেমন ছিল?
এবার টানটান মেয়েটি বীভৎস তাচ্ছিল্যে যেন ‘কনফার্ম’ একটি উত্তর দিতে পারছে, উকিলের মুখে উত্তর ছুড়ে দেয়-আপনার মতো।

নাসরীন জাহান
সূত্রঃ প্রথম আলো, ডিসেম্বর ০৬, ২০০৮

Category: গল্প
Previous Post:কাঁঠাল কন্যা – সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম
Next Post:লীলাবসান

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

বিবিধ রচনা

হেলথ

Download PDF


My Account

Facebook

top↑