• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক্স
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

গল্প শেষ – সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

লাইব্রেরি » বিবিধ লেখার সংকলন » গল্প » গল্প শেষ – সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

বিকেল তিনটা পঁচিশে হাওড়া স্টেশনে ১২ নম্বর প্লাটফর্ম থেকে ৩০১১ আপ ছাড়বে। এসি চেয়ার কোচের অগ্রিম টিকিট কিনে, ফুড প্লাজায় খেয়ে নিয়ে, একটু হাত-পা ছেড়ে, আয়েশ করে, ট্রেনে উঠে, চাই-কি একটা ঘুম দিয়ে সন্ধ্যা ছয়টা চব্বিশে বোলপুর পৌঁছানো যাবে-এ রকম আমাকে বলেছে শান্তিনিকেতনি এক বন্ধু। যদিও শান্তিনিকেতনে গিয়ে এক গুরুগম্ভীর বিষয়ের ওপর বক্তৃতা করতে হবে বিশ্ব নৃবিজ্ঞান সমিতির সভায়-এ কথা শুনে সে বলেছে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বেঁচে থাকলে মজাই পেতেন বিষয়টিতে।
হয়তো।
কিন্তু ঠাকুর মহাশয়কে নিয়ে ভাবার সময় আমার নেই। বিশিষ্ট নৃবিজ্ঞানী হিসেবে আমাকে দাওয়াত দেওয়া হয়েছে, ভিসাও মিলেছে, তিন দিন ঢাকার জটিল-কঠিন জীবন থেকে ছুটি নিয়ে শান্তিনিকেতনে কাটাব-এসব ভেবে আমি শান্তি পাচ্ছি। কিন্তু টিকিট কাউন্টারের কেরানি মহাশয় তর্ক করছেন কারও সঙ্গে-আমার সামনে দাঁড়ানো মেয়েটি বিরক্ত হয়ে ঘড়ি দেখছে। তার নিশ্চয়ই অনেক তাড়া।
মেয়েটি বিরক্ত ও অস্থির। চুলে হাত বুলিয়ে সে তার অস্থিরতাকে কিছুটা শাসন করছে। তার চোখ কেরানি মহাশয় থেকে একবার ছাদে যাচ্ছে, আরেকবার যাচ্ছে দেয়ালে টাঙানো ইস্টার্ন রেলের অস্পষ্ট নির্দেশনার দিকে। একবার পেছন ফিরে সে অস্থির চোখ মেলল আমার দিকে। তার চোখ দেখে আমি চমকে উঠলাম। এ চোখ আমি চিনি যে! শুধু চোখ কেন-তার নাক, ঠোঁট, ভ্রূ, তার চুল, আর চুল সমান করার দায়িত্ব পাওয়া হাত দুটোকে আমি কত চিনি! কিন্তু মেয়েটি আমাকে চিনল বলে মনে হলো না। তার চোখ আবার কেরানি মহাশয়ের দিকে গেল। মহাশয়ের ঝগড়া শেষ হয়েছে, প্যাসেঞ্জারটি চলে গেছে। এখন তিনি মেয়েটির দিকে নজর দিয়েছেন। মেয়েটি টিকিট কিনল, চলে গেল, কিন্তু আমার মধ্যে তার অস্থিরতাটা ছড়িয়ে দিয়ে গেল।
মেয়েটিকে আমি চিনি, সেও আমাকে চেনে, কিন্তু একবারও আমার দিকে তাকাল না।
কেন?
ইখানটায় একটা ছই দিন, ঠিকানাটা লিখুন
২• ফুড প্লাজার কফির দোকানে পাথরের টেবিলের পাশে দাঁড়িয়ে কফি খাচ্ছি। মেয়েটি পাশে এসে দাঁড়াল। তার হাতে একটা সন্দেশ আর কফি।
কফি খেতে খেতে ভাবলাম, মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করি, কেন সে আমাকে না-চেনার ভান করছে। কেন?
মেয়েটি আমার দিকে তাকিয়ে হালকা একটু হাসল। সে হয়তো মজা পেয়েছে, তার অস্থিরতা সব এখন যে আমার ভেতরে, তা দেখতে পেয়ে। সে এখন কত শান্ত! তার অসম্ভব সুন্দর মুখে ফুড প্লাজার সাদা আলো পড়েছে, তাকে মনে হচ্ছে, যেন কোনো স্বপ্ন থেকে উঠে এসেছে এইমাত্র। আমি নিশ্চিত, সে এখন আমাকে বলবে•••
মুখে স্বপ্নময় একটা হাসি নিয়ে সে বেরিয়ে গেল।
৩• আমার বন্ধু বলেছিল, হাওড়া-বোলপুর ট্রেনে বাউলেরা গান করেন। এসব গায়ককে আমি যেন কিছু পয়সা দিই।
আমি সিটে বসে অনেক অস্থিরতা নিয়ে চারদিকে তাকালাম। নেই। মেয়েটি কোথাও নেই।
ভাবলাম, একটা ঘুম দিই। কিন্তু দুই চোখ যে বন্ধ করব, কীভাবে? মেয়েটির মুখ আমার দুই চোখজুড়ে জেগে আছে এবং তার মুখ যত স্পষ্ট হচ্ছে, তত আমি তার কথা শুনছি, হাসি শুনছি, মাঝেমধ্যে দু-এক কলি গানও। ট্রেনটা চলতে থাকলে আমার অস্থিরতা আমাকে বেশ কাতর করে দিল। সেই কাতরতা থেকে হয়তো একটু ঘুমও এল।
চাই কফি, কফি চাই, চা, লেবু-চা
বান্ডেল মাত্র পার হয়েছে ট্রেনটা, ফেরিওয়ালাদের আনাগোনা শুরু হয়ে গেল। ঘুমটা যখন ভাঙলই, ঠিক আছে, চা খাই। চায়ের কাপ হাতে নিতেই চোখটা আটকে গেল পাশের সিটে। সিট আলো করে বসে আছে মেয়েটি। ট্রেনের জানালা গলে বিকেলের আলো পড়েছে তার মুখে। তার চুলে যেন শান্ত একটা আগুন লেগেছে। চুলের ডগায় সোনালি আভা।
আমার আবার অস্থির লগতে থাকল। মেয়েটি তো আমাকে চেনে। শুধু চেনেই না•••
লেশ ফিতা, সেফ্‌টি পিন, চিরুনি, রিবন
মেয়েটির চোখ গেল ফেরিওয়ালার দিকে। তারপর আমার দিকে। একটু হাসল সে। ফেরিওয়ালা ‘লেস’কে ‘লেশ’ বলেছে, হয়তো সে জন্য। আমিও একটু হাসলাম। ঠিক তার মাপে। ঠিক আছে, সে যখন আমাকে চেনেনি, আমিও নাহয় না চিনলাম। এখন নাহয় চোখ বন্ধ করে আমার রাগটা আমি জানিয়ে দেব।
কেন চিনল না আমাকে? এই কিছুদিন আগেও তো রমনা রেসকোর্সের মাঠটার মাঝখানে ছোট নালাটা পার হতে গিয়ে তার সাহস হচ্ছিল না, তার হাত ধরে আমি পার করে দিয়েছিলাম। এই কিছুদিন আগেও তো ফুলছড়ি-বাহাদুরাবাদ ফেরিতে করে যেতে যেতে আমার সঙ্গে এত কথা বলল সে; এমনকি শেষ যেদিন তেজগাঁও এয়ারপোর্টে সে হারিয়ে গেল, এই কিছুদিন আগেই তো, একবার পেছন ফিরে আমার দিকে ভেজা চোখে তাকিয়ে কি সে হাত নাড়েনি?
আমি কী আছায় ভাছিয়া চলেছি জীবননৌকা বেয়ে
বাউল এসেছেন, বাউল গাইছেন। তাঁর গান আমার ভেতরটা ভিজিয়ে দিচ্ছে। আমি তাঁকে পাঁচটা টাকা দিলাম। বাউলকে টাকা দিতে দেখে মেয়েটা আমার দিকে তাকিয়ে আবার একটু হাসল।
৪• সন্ধ্যা নেমেছে। চোখে ঘুম এসেছে। মেয়েটিও ঘুমোচ্ছে। তাকে এত শান্ত আর সুন্দর লাগছে যে, তার দিকে তাকাতেই পারছি না আমি।
৫• বোলপুরে ট্রেন থামল। মেয়েটি নামল। আমিও নামলাম। স্টেশনের গেটে বিশিষ্ট নৃবিজ্ঞানী রঞ্জিত ভট্টাচার্য দাঁড়িয়ে আছেন, গাড়ি নিয়ে। মুখে শান্ত হাসি, ঠোঁটের ফাঁকে নিভে যাওয়া চুরুট।
মেয়েটি সামনে। একবার তাকাচ্ছেও না। শুধু যখন একটা দামি গাড়ি এসে দাঁড়াল, মেয়েটি গাড়িতে উঠল, এক সুদর্শন তরুণের পাশে গিয়ে বসল-হয়তো স্বামী, হয়তো ভাই-তখন আমার দিকে ফিরে একটু হাসল। আমিও হাসলাম-ঠিক ততখানিই, যেন পাল্লা দিয়ে মেপে।
মেয়েটির গাড়িটা ছেড়ে দিল।
এন্ড অফ স্টোরি।

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম
সূত্রঃ প্রথম আলো, ডিসেম্বর ০৬, ২০০৮

Category: গল্প
Previous Post:পোখরায় এসেছি কোরবানি দিতে – মুস্তাফা জামান আব্বাসী
Next Post:কাঁঠাল কন্যা – সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

বিবিধ রচনা

হেলথ

Download PDF


My Account

Facebook

top↑