• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক্স
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

প্রথম আলো বর্ষসেরা বই ১৪১৩

লাইব্রেরি » বিবিধ লেখার সংকলন » সমালোচনা » প্রথম আলো বর্ষসেরা বই ১৪১৩

প্রথম আলো বর্ষসেরা বই ১৪১৩ : মননশীল শাখা
হা বৃক্ষ
সখা মানবের
আবুল মোমেন

বন কেটে বসত করা সভ্য মানুষের স্বভাব। কেবল বসতি করে তার সন্তুষ্টি হয়নি। জীবনের জৌলুশ বাড়াতে চেয়েছে সে নানাভাবে। তাতে কোপ পড়েছে প্রকৃতির ওপর। প্রকৃতির ওপর প্রভুত্ব বিস্তারে প্রতিযোগিতায় মেতেছে মানুষ বহুকাল আগে থেকে। তাতে আদিম প্রকৃতি কেবল নিঃস্ব হয়েছে, রিক্ত হয়েছে। অনেক গাছ যেমন হারিয়েছে, তেমনি বসতি হারিয়ে আর খাদ্যচক্র ভেঙে পড়ায় বহু প্রাণীও বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
প্রকৃতির প্রতিশোধের পালা শুরু হয়েছে, তা-ও অনেক কাল হবে। মানুষ প্রথম পর্যায়ে ততটা গায়ে মাখেনি এসব প্রাকৃতিক সতর্কবাণী। আসলে গত শতাব্দীতে নগরায়ণ বেড়েছে দ্রুত, শিল্পায়ন ঘটেছে ব্যাপক, আর নানা রকম যান্ত্রিক উপকরণের ওপর নির্ভরতা বেড়েছে সাংঘাতিকভাবে। তাতে প্রকৃতির ওপর মানুষের সংহারের প্রতিক্রিয়া পরিবেশের বিপর্যয়ের মাধ্যমে প্রকাশ পেতে শুরু করেছে আগের চেয়ে তীব্রতায় ও দ্রুততায়। বিশ্বের তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে; তাতে ঝড়-বৃষ্টির ধরন ও মাত্রায় পরিবর্তন ঘটছে, জলবায়ুর রূপান্তর চলছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ নানা অশনি সংকেত দিয়ে ভবিষ্যতের জন্য আগাম সতর্কতা জানাচ্ছে।
এদিকে সভ্যতার যে রথ ছুটিয়েছে মানুষ, তার গন্তব্য আপাতত বাজার অর্থনীতিতে এসে ঠেকেছে, যা কেবল পণ্যসামগ্রীর উৎপাদন আর বৈচিত্র্য বাড়িয়ে প্রতিযোগিতা তৈরি করে চলেছে। এই প্রতিযোগিতার চক্করে মানুষ ভোক্তায় পরিণত হয়েছে। তার সৃজনশীলতা, কল্পনা, ভাবপ্রবণতায় ভাটা চলছে। ফলে প্রকৃতি ও পরিবেশের বিপর্যয় নিয়ে যেসব আগাম সতর্কবার্তা কবি, দার্শনিক ও বিজ্ঞানীরা দিয়েছেন, তা বিবেচনায় নেয়নি মানুষ। এখনো সংবেদনশীল বিবেচক মানুষের চেয়ে ভোগবিলাসী অবিবেচক মানুষই যেন সংখ্যায় বেশি। তাতে যা হওয়ার তা-ই হচ্ছে।
‘সভ্যতার প্রতি’ শিরোনামে রবীন্দ্রনাথ বহুল উদ্ধৃত কবিতাটি লিখেছেন একশত বছর হয়ে গেছে। তাতে তিনি যাচ্ঞা করেছেন নবসভ্যতার যত লোহা, কাঠ আর পাথর ফিরিয়ে নিয়ে অরণ্য ফিরিয়ে দিতে। এ সভ্যতাকে বলেছেন, ‘নিষ্ঠুর সর্বগ্রাসী’। তাঁরও শত বছর আগে ফরাসি দার্শনিক জাঁ জাক রুশো এ সভ্যতাকে বলেছিলেন ফাঁপা-ভ্যন্‌টেড সিভিলাইজেশন। বিজ্ঞানী জঁ গিওনো বলেছেন বৃক্ষই জীবন। হায়, ক্রেতা ও ভোক্তা মানবকুল কারও কথাই কানে তোলেনি।
তবু হাল ছাড়েন না মানবযাত্রী। দায় তো অস্বীকার করতে পারেন না তিনি। এ দায় মানুষের প্রতিই, তার ভবিষ্যতের প্রতি, আর সেই সূত্রে প্রকৃতি ও পরিবেশের প্রতি।
দ্বিজেন শর্মা মূলত বৃক্ষপ্রেমী, সেই সূত্রে প্রকৃতিপ্রেমী, পরিবেশ-সুহৃদ এবং এ বিশ্ব ও মানবের ভবিষ্যৎ নিয়ে উৎকণ্ঠিত অভিভাবক। দ্বিজেন শর্মা মূলত লেখেন ভালোবাসা থেকে, ভালোবাসার দায় কাঁধে নিয়ে। রূপমুগ্ধতা যেমন ফুটে ওঠে তাঁর লেখায়, তেমনি সংকটে-সমস্যায় উৎকণ্ঠা ও ব্যাকুলতার প্রকাশ ঘটে। রূপমুগ্ধতার সামান্য স্বাদ নেওয়া যাক-‘ফুটবে আরও নানা ফুল, সে আরেক শোভা, অন্য সৌন্দর্য। শুধু ফুল কেন, পাতাও কিছু কম নয়। কপার বিচের গাঢ় তামাটে পাতা সবুজের মাঝখানে চমৎকার কনট্রাস্ট সৃষ্টি করে। সবুজের নানা আঁচও বড়ই মুগ্ধকর। একদিন দূর থেকে একটি গাছ দেখে মনে হলো গোলাপি রঙের ফুলে ভরে গেছে, কাছে গিয়ে দেখি এ শোভা ফুলের নয়, কচি পাতার। বসন্তে কচি পাতার রঙের ঝরনা আবারও ঝরে হেমন্তে বুড়ো পাতা ঝরার সময়।’ (পৃ· ৪৯)
‘কচি পাতার রঙের ঝরনা’ কেবল চর্মচক্ষুতে দেখে কার সাধ্যি, মনশ্চক্ষুর ছোঁয়া ছাড়া এ অসম্ভব। কেবল উদ্ভিদবিদ্যার ছাত্রের এ কাজ নয়, কবির কল্পনা না মিশলে এমন দৃশ্যের দেখা মেলে না।
প্রেমিকের সঙ্গে ভাবুক কবির সংযোগ ঘটলে তবেই না বৃক্ষের প্রতি ভালোবাসার মানবিক রূপ ও রস ফোটে। ঘরের বারান্দায় টবে যত্নে বীজ থেকে চারা করেছিলেন কনকচাঁপার। ও তো বৃক্ষ, কত দিন আর টবে, বারান্দায় আবদ্ধ থাকবে। বিদায় দিতে হয়। কিন্তু সিদ্ধান্তটা নিয়েই তারপর থেকে মন খারাপ-‘কন্যা বিদায়ের দুঃখবোধ। বারবার ওর কাছে যাই, আগাছা উপড়াই, জল দিই।’ কেবল ভাববিলাসে ডুবে থাকার মানুষ নন দ্বিজেন শর্মা। অনেক গাছের খবর দেন-দেশি, বিদেশি। নানা বিশ্বখ্যাত বাগানের বর্ণনা শোনান অধিকারীর যোগ্যতায়। নিজের পছন্দের উদ্যানবিদ আর বৃক্ষপ্রেমীদের কথা শোনান শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায়। বাগান, পার্ক আর নগর নিয়ে নিজের কিছু কিছু পরিকল্পনার কথাও শোনান।
যখন তাঁর লেখায় জানতে পাই ভার্সাইনগরীর বাগান যিনি তৈরি করেছিলেন, সেই উদ্যানবিদ লে নতরকে শেষ বয়সে চলৎশক্তিহীন হয়ে পড়লে স্বয়ং সম্রাট চতুর্দশ লুই গাড়িতে বসিয়ে সেই গাড়ি ঠেলতেন, তখন এ অকল্পনীয় দৃশ্য মনের চোখে ভেসে ওঠে সুন্দরতম দৃশ্যের অভিজ্ঞতা হয়ে।
প্রাউডলক, রমনা-ঢাকার বৃক্ষরাজির পরিকল্পকের কথা তাঁর লেখায় বারবার আসে। আসে হুকারের কথা। এ বইতে জানলাম পক্ষীবিশারদ প্রাতঃ্নরণীয় সালিম আলীর ভ্রাতুষ্পুত্রী উদ্যানবিদ ও উদ্যানরসিক লাইক ফতেহ আলীর কথা। তাঁর লেখা বারবার বর্ণনায় নিয়ে আসে লন্ডনের বিভিন্ন পার্কের কথা-বোটানিক্যাল কিউ গার্ডেন ছাড়াও রিজেন্ট পার্ক, সেন্ট জেমস পার্ক ফিরে ফিরে আসে।
তার পাশাপাশি রমনা পার্কে ক্রমেই অপরিকল্পনা ও অযন্তের ছাপ বাড়তে থাকায় খেদ প্রকাশ পায়। তাঁর শৈশবের মাধবকুণ্ড আর পাথারিয়া গ্রামের বনাঞ্চল হারিয়ে যাওয়ার বেদনা পাঠককে না জানিয়ে পারেন না দ্বিজেন শর্মা।
বেদনাই তো ভালোবাসার উৎস, বাঙালি কি একটু গাছমনস্ক হবে? আমাদের বনভূমি তো কমতে কমতে দশ শতাংশের নিচে নেমে গেছে। সেই মোক্ষম বৈদিক উদ্ধৃতিটি দ্বিজেনদা আবারও ব্যবহার করেছেন-হা বৃক্ষ, তুমি সখা মানবের।
বৃক্ষ নিধনে মেতে থাকা বাঙালি কি তাহলে মানব থাকছে না আর? বৃক্ষের কাছে সেকি দানব হয়ে উঠছে? দরিদ্র ও ধনী নির্বিশেষে এই নিধনযজ্ঞে শরিক হচ্ছে। এভাবে ভবিষ্যৎ ঝরঝরে হয়ে যাচ্ছে আমাদের। শুধু বর্তমান নিয়ে মেতে থাকে কোন মানুষ? চণ্ডীগড় শহরের পরিকল্পক লে কবুêসিয়েই কি বলেছিলেন-‘রৌদ্র, ব্যাপ্তি ও শ্যামলিমার মতো আদিকালের প্রভাবকগুলোই আমাদের দেহ ও মনের স্রষ্টা। আপন স্বাভাবিক পরিবেশচ্যুত সব জীবের নিয়তি একই-ধ্বংস, কোথাও দ্রুত, কোথাও শ্লথ। আর এই সাধারণ নিয়ম থেকে মানুষেরও অব্যাহতি নেই।’ তাহলে কি আমরা ধ্বংসের দোরগোড়ায় এসে দাঁড়িয়েছি? তবে ভালোবাসা ক্ষোভ-দুঃখ-রাগের জ্ন দেয় ঠিকই, তবে মনের গভীরে স্বপ্ন ও আশাবাদকেও জিইয়ে রাখে। লিখছেন-‘একটিই শুধু আশা, সেটাও একটা ধারণামাত্র, আর তা হলো-সমাজ সজীব সত্তা বিধায় তার অন্তর্নিহিত পুনর্গঠনশক্তি আছে, যে আত্মরক্ষা করতে জানে, এভাবে হয়তো নিজে বাঁচবে, আমাদেরও বাঁচাবে।’
তবে দুঃখ ও হতাশার কথা এই যে আপাতত পরিপার্শ্বে, এমনকি সারা বিশ্বে, এই চেতনায় অধিকাংশ মানুষের জেগে ওঠার কোনো আলামত দেখা যাচ্ছে না। পশ্চিমের বিধ্বংসী সভ্যতা তার ধরন তো পাল্টাচ্ছেই না, এমনকি উন্নয়নশীল দেশগুলোকেও তাদেরই অনুসরণ করে দ্রুত ‘উন্নতির’ মিছিলে শামিল করার কাজ করে যাচ্ছে। তাতে প্রকৃতির ওপর কোপ চলছেই, বাড়ছেই। মেরামতি বা সংরক্ষণের কাজ যতটুকু হচ্ছে, তা সামান্যই। পরিবেশবাদী আন্দোলন নগরগুলোতে গড়ে উঠছে বটে, কিন্তু উন্নয়নের প্রকৃতিবিধ্বংসী জোয়ারে তো ভাটা পড়ছে না। পরিবেশবাদী আন্দোলনের পাশাপাশি দ্বিজেনদার মতো প্রকৃতিপ্রেমীর কথাগুলো মানুষকে শোনানো দরকার। তার মধ্যে গাছপালা নিসর্গ-পরিবেশের সৌন্দর্য উপভোগের চোখ ফোটা আর মন খোলা দরকার। কেবল বাঁচার গরজ তো বর্তমান ছাপিয়ে ভবিষ্যৎ দেখতে পাবে না। তাই প্রকৃতির সৌন্দর্য, বৈচিত্র্যের খোরাক যেন তার চাই-ই। তবে না সে গরজ করবে তার আদত বসতিটি রক্ষা করতে। ভবনই জীবন নয়, ভুবনেই জীবন। ইট-কাঠ-লোহা-সিমেন্টে নয়, বৃক্ষেই জীবন।
দ্বিজেন শর্মা বাঙালির মধ্যে গাছের জন্য ভালোবাসা জাগাতে চেয়েছেন; বন ও উদ্যান, বৃক্ষশোভিত নগরী ও পার্কের কথা ফুরায় না তাঁর। সামান্য টবের গাছকে ভোলেন না, হারিয়ে যাওয়া গাছের জন্য আক্ষেপ করেন। প্রকৃতিপরিবেশে সমৃদ্ধ শৈশব আর কৈশোরের কথা ভুলতে পারেন না। বাবা দাদা মায়ের কথা ফিরে ফিরে আসে। সব কথাকে একসূত্রে গেঁথে দেয় যা-সে হলো বৃক্ষ, সখা মানবের।
উপেক্ষিতা কুরচিকে ঘিরেও চলতে পারে বৃক্ষবন্দনা আর প্রকৃতিপরিবেশ নিয়ে নানা কথার মালা রচনা।
চৈতন্যোদয় হলে হয় আমাদের।

কুরচি তোমার লাগি-দ্বিজেন শর্মা; ফেব্রুয়ারি ২০০৭; উৎস প্রকাশন, ঢাকা

সূত্রঃ প্রথম আলো, জানুয়ারী ২৫, ২০০৮।

Category: সমালোচনাTag: দ্বিজেন শর্মা
Previous Post:কমরেড – মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান
Next Post:আদিবাসী বা দরিদ্ররা বন ধ্বংস করে না – দ্বিজেন শর্মা

Reader Interactions

Comments

  1. ফজলে রাব্বি

    July 7, 2016 at 10:22 am

    চমৎকার।

    Reply

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

বিবিধ রচনা

হেলথ

Download PDF


My Account

Facebook

top↑