• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • লেখক
  • My Account
  • লেখক
  • My Account
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা PDF ডাউনলোড

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

বেচারাম কেনারাম (নাটক)

লাইব্রেরি » উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী » গল্পমালা » বেচারাম কেনারাম (নাটক)

প্রথম দৃশ্য

(জামা রিপু করিতে করিতে কেনারাম চাকরের প্রবেশ)

কেনা। ঐ যা! আবার খানিকটা ছিঁড়ে গেল। ছুঁতেই ছিঁড়ে যায়, তা রিপু করব কি? ভাল মনিব জুটেছে, যাই হোক, এই জামাটা দিয়েই ক’বছর কাটালে। তিন বছর ত আমিই এইরকম দেখছি, আরো বা ক’বছর দেখতে হয়। তবু যদি চারটে পেট ভরে খেতে দিত! তাও কেমন? সকালে মনিব চারটি ভাত খান, আমি ফ্যানটুকু খাই, রাত্রিরে তিনি হাঁড়ি চাটেন, আমি শুঁকি। তার উপর শ্রবণশক্তিটি কি প্রখর! বাড়িওয়ালা সেদিন টাকার জন্যে কি-ই না বললে! বাড়িওয়ালা বলে, ‘টাকা দেও, ঢের টাকা বাকি।’ মনিব বলেন, তা ভাল ভাল, তোমার বাড়ি আজ নেমন্তন্ন?’ বাড়িওয়ালা বলে, ‘এমন করে ভাড়া ফেলে রাখলে চলে কই?’ মনিব বলেন, ‘তা আচ্ছা চাকরটিও সঙ্গে যাবে।’ বাড়িওয়ালা বেচারী রেগেমেগে চলে গেল। বড়লোক হতে হলে বোধহয় আমার মনিবের মতই কত্তে হয়, কিন্তু এঁর কাছে থেকে বড়লোক হওয়ার কায়দাটাই শেখা হবে। বড়লোক হওয়ার ভরসা বড় নেই। রাখবার সময় কত আশাই দিয়েছিলেন, আর আজ এই তিন বছরে একটি পয়সাও মাইনে দিলেন না! দেখি আজ যদি মাইনে না দেয়, তবে আর এর কাজ করা হচ্ছে না।

[প্রস্থান]

(বেচারাম মনিবের প্রবেশ)

মনিব। চাকরটা জামাটা নিয়ে কত কথাই বলছিল! বেটা ভেবেছে, আমি সত্যিই কালা। আরে আমার মত যদি কান থাকত, তা হলে আর চাকরি কত্তে হত না। আমি যা করে খাই, তাই করে খেতে পাত্ত। ঘরের ভিতরে ক’জন লোক, ক’জন জেগে আছে, ক’জন ঘুমুচ্ছে, দাওয়ায় কান পেতে সব বুঝে নি’। কোথায় সিন্দুকের ভেতরে আরশুলা কড়কড় কচ্চে, বাইরে থেকে বুঝে নি’। বাপু হে! কানে শুনি, কানে শুনি, কানে শোনাটা ত বেশ ভালই, কিন্তু না শোনার যে সুবিধা আছে, তা ত বুঝবে না? এই সেদিন বাড়িওয়ালা বেটা ফাঁকি দিয়ে টাকা আদায় কত্ত! কানে না শোনার কত সুবিধা দেখো, পাওনাদারদের টাকা দিতে হয় না, বাড়ি ভাড়া দিতে হয় না, চাকরের মাহিনা দিতে হয় না-

(কেনারামের প্রবেশ)

কেনা। (উচ্চৈঃস্বরে)। মশাই, হয় তিন বছরের মাইনে দিন, নাহয় আপনার এই-সব রইল, আমি চললেম।

মনিব। ডাকওয়ালা? চিঠি? দেখি?

কেনারাম। (স্বগত)। এই মুশকিল কল্লে! তা এবারে বাপু এক ফন্দি এঁটেছি-সব লিখে এনেছি। (প্রকাশ্যে) চিঠিই বটে, এই নিন্‌।

মনিব (পাঠ)। ‘মনিব মহাশয়, কানে শুনেন না, কিন্তু পড়িতে অবশ্যই পারেন। তিনটি বৎসরের বেতন চুকাইয়া বিদায় দিতে আজ্ঞা হয়। শ্রীকেনারাম চাকর।’ – তাই ত, তোমার বেতনটা দিতে হল। তা রাখবার সময় ত কোন বন্দোবস্ত হয়নি, কাজকর্মও তেমন ভাল করে করনি। তিন বছরে তিন পয়সার বেশি তোমার প্রাপ্য হয় না। তা এই নেও। (তিন পয়সা প্রদান ও ধাক্কা দিয়া বহিস্করণ)

দ্বিতীয় দৃশ্য

(কেনারামের প্রবেশ)

কেনা। এই বড়লোক হলাম আর কি! তিন-তিন বছরের মাইনে, ঢের টাকা-ঢের টাকা। এক দুই তিন, চার পাঁচ ছয়, সাত আট নয়, দশ এগার বার (পয়সা তিনটি পকেটে স্থাপন)

(ছদ্মবেশী স্বর্গীয় দূতের প্রবেশ)

স্বর্গীয় দূত। আরে ভাই, তোর যে ভারি ফূর্তি?

কেনা। কে ও ? ছোট মানুষ? দাড়াঁও, চশমাটা বার করে নি’।

দূত। কেন! চোখে কম দেখ বুঝি?

কেনা। তা কেন? বড়লোক হয়েছি যে, ছোটমানুষ আর তেমন চট করে চোখে মালুম পড়ে না।

দূত। বটে। এত বড়লোক কি করে হলি ভাই?

কেনা। (পকেট চাপড়াইয়া)।-তি-ন-টি-ব-ছ-রে-মা-ই-নে। (এক একটি পয়সা বহিস্করণ ও গম্ভীরভাবে গণন) এ-এ-এ-ক-দু-উ-উ-ই, তি-ই-ই-ন (পকেট উল্টাইয়া গম্ভীরভাবে অবস্থান)।

দূত। তাই ত ভাই, এত টাকা নিয়ে তুই কি করবি? আমি গরিব, আমাকে কিছু দে-না।

কেনা। নিবি? এই নে। ভগবান আমাকে খেটে খাবার শক্তি দিয়েছেন, খেটে খাব। (পয়সা তিনটি প্রদান)

দূত। তুই ভাই বেশ লোক, তোর মনটা খবই খোলা। আমি ঈশ্বরের দূত, ভাল লোক দেখলে পুরস্কার দি’। তোর ব্যবহারে খুব খুশী হয়েছি, তুই কি চাস্‌ বল্‌, যা চাস তাই পাবি।

কেনা। অ্যাঁ, আপনি ঈশ্বরের দূত? তবে ত আপনার সম্মুখে আমি বড় বেয়াদপি করেছি?

দূত। তোর কিছু ভয় নেই। তুই আমাকে ‘তুই’ ‘তুমি’ যা খুশি বল্‌, কিছুতেই বেয়াদপি হবে না। এখন তুই কি নিবি বল্‌।

কেনা। তা দাদা, যদি দেবে এমন একখানা বেয়ালা দাও যে, যে তার আওয়াজ শুনবে তাকেই তিড়িং তিড়িং করে নাচতে হবে।

দূত। (ঝুলি হইতে বেয়ালা বাহির করিয়া) এই নে।

কেনা। বাঃ, বেশ হল, আমাকে ত সঙ্গে সঙ্গে নাচতে হবে না?

দূত। না, সে ভয় তোর নেই। যা এখন ফূর্তি কর্‌গে। (দূতের প্রস্থানোদ্যম ও কেনারামের বাদ্যোদ্যম) আরে দূর্‌ হতভাগা, আমারই উপর পরীক্ষা করে বসলি।

কেনা। তুমিই যে ফূর্তি করতে বললে দাদা!

দূত। আমি আগে যাই, তারপর করিস।

কেনা। আচ্ছা।

তৃতীয় দৃশ্য

(বেচারামের প্রবেশ)

বেচা। ঐ ঝোপটাতে ফেলে গিয়েছিলুম। পুলিশ বেটা এমনি তাড়া কল্লে, ধরেই ফেলেছিল আর কি। চট করে টাকার থলেটি ঐ ঝোপটাতে ফেলে পালালুম, এখন পেলে বাঁচি। (থলি খুঁজিতে ঝোপে প্রবেশ) বাপ রে, কি ভয়ানক কাঁটা-এই পেয়েছি।!

(কেনারামের প্রবেশ)

কেনা। (স্বগত)। ঐ যে বেচুবাবু কাঁটাবনে ঢুকছেন। এইবারে এক গৎ বাজিয়ে নি, পুরোনো মনিব বটে! (বেহালাবাদন)

বেচা। (নৃত্য করিতে করিতে)। আরে! আরে! ও কী? উঃ আঃ! আরে তুমি কি-উঃ চক্ষু হু-আরে আর না-জামাটা-উঃ-গায়ের চামড়াও যে ছিঁড়ে গেল-উঃ!

কেনা। আজ্ঞে, আমি আপনার বকেয়া চাকর কেনারাম, মাইনে চুকিয়ে দিয়েছেন বলে কি এমন মনিবকে ভুলতে পারি? আপনাকে বাজনা শুনিয়ে আমার বেয়ালা সার্থক হল। (পুনরায় দ্বিগুণ উৎসাহে বাদন)

বেচা। (নৃত্য)। কি মুশকিল। বাবা কেনারাম রক্ষে কর বাবা। এ কি বাজনা যে, শুনলেই নাচতে হয়? বাবা আর কাজ নেই, আমি খুব খুশি হয়েছি, এই টাকার থলি তোমায় দিচ্ছি, তোমার মাইনে এ থেকে পুষিয়ে নাও। দোহাই বাবা, আমায় নাচিও না। (টাকার থলি কেনারামের হাতে প্রদান)

কেনা। (বিনীত অভিবাদন করিয়া)। আজ্ঞে, না হবে কেন? আপনার মত মনিব না হলে গুণ কে বোঝে! দেখছি বেয়ালার আওয়াজে আপনার ‘কানে খাটর’ ব্যারামটাও সেরে গেল। ভাল ভাল, আর এ ব্যারামের সুত্রপাত দেখলে আমায় খবর দেবেন, আমি বেয়ালা নিয়ে এসে চিকিৎসা করব। (দীর্ঘ অভিবাদন করিয়া প্রস্থান)

বেচা। হতভাগা বেটা, লক্ষীছাড়া বেটা, জোচ্চোর, বাটপাড়, ডাকাত-বেটাকে দেখাচ্ছি। পুলিস। পুলিস। চোর-চোর!

চতুর্থ দৃশ্য

(বিচারালয়। ব্যস্তভাবে বেচারামের প্রবেশ)

বেচা। দোহাই হুজুর, আমাকে ধনে-প্রাণে মেরেছে, ও হো হো (ক্রন্দন)

বিচারক। আরে ব্যাপার কি? তোমার কি হয়েছে?

বেচা। (কাঁটার আঁচড় ও তবিত শরীর দেখইয়া)-আর কি হবে, আমি ধনে-প্রানে গিয়েছি। বড় রাস্তার ধারে ঐ কেনা বেটা আমাকে মেরে ধরে টাকাকড়ি কেড়ে নিয়েছে-এঁ হেঁ হেঁ (‌ক্রন্দন)। বেটাকে তিন বছর আমি খাইয়ে মানুষ কলুম, আর তার এই প্রতিশোধ দিলে। বেটা দিনরাত বেহালা নিয়ে ফেরে, এখনি ধরতে পাঠান, তাকে দেখলেই চিনতে পারবেন!

বিচারক। চারজন লোক এখনি গিয়ে কেনারামকে ধরে নিয়ে এসো।

(কেনারামকে লইয়া চারজন লোকের প্রবেশ)

বেচা। ঐ! ঐ! ঐ বেটা। হুজুর! ঐ কেনারাম বেটা আমার সর্বনাশ করেছে, বেটাকে আচ্ছা করে-

বিচারক। চুপ। (কেনার প্রতি) তুমি একে মেরে এর টাকা কেড়ে নিয়েছ?

কেনা। সে কি, হুজুর! উনি আমার বেয়ালা বাজানো শুনে আমায় এক থলি টাকা পুরস্কার দিয়েছেন-আমি যথার্থ বলছি।

বিচারক। ওর যে চেহারা দেখছি, তাতে ও যে বেহালা শুনে তোমায় এতগুলো টাকা দিয়েছে, তা আমি কিছুতেই বিশ্বাস কত্তে পারিনে। আর ওর গায়েও এই-সব দাগ দেখছি। সুতরাং প্রমান হচ্ছে, তুমিই ওকে মেরে টাকার থলি কেড়ে নিয়েছ। এ ডাকাতি। ডাকাতির শাস্তি ফাঁসি-তোমার ফাঁসি হবে। এখন তোমার যদি কোন আকাঙ্খা থাকে ত বলো।

কেনা। হুজুর, আমার আর কোন সাধ নেই। খালি জন্মের মত বেয়ালা খানা একবার বাজাতে চাই।

বেচা। সর্বনাশ! হুজুর এমন হুকুম দেবেন না।

চাপরাশী। (বেচারামকে রুলের গুঁতো মারিয়া) চুপ্‌ রও।

বিচারক। আর কোন সাধ তোমার নাই? আচ্ছা বাজাও।

(কেনারামের উৎসাহের সঙ্গে বেহালাবাদন ও বিচারক হইতে চাপরাশী পর্যন্ত সকলে নৃত্য।)

বিচারক। হাঁপাইতে হাঁপাইতে।) আরে বাপু! থাম্‌ থাম্‌। শিগ্‌গির থাম্‌; তোকে বেকসুর খালাস দিচ্ছি, প্রাণ যায়-থাম্‌। বাপ রে, এ কি রকম বেহালা বাজনা!

কেনা। (সেলাম করিয়া)। হুজুর! বেচুবাবুকে এখন সমস্ত ঘটনা বলতে হুকুম হয়। নইলে আমি পুনরায় বেয়ালায় ছড়ি দিলাম।

বিচারক। (বেচারামের প্রতি সরোষে)। বল্‌ বেটা কি হয়েছিল, সত্যি করে এখনি বল্‌।

বেচা। ওগো, না গো, আর বেহালা ধরো না। ও টাকা আমিই দিয়েছি-দিয়েছি।

বিচারক। তুই এত টাকা কোথা পেলি, বল।

বেচা। আমি-আমি-

কেনা। এই বেয়ালা ধরেছি।

বেচা। না না-আমি, হুজুর আমি-কাল রাত্তিরে হুজুর, চুরি করেছিলাম। দোহাই হুজুর।

কেনা। ধর্মের ঢাক আপনি বাজে। দেখলেন ত বেচুবাবু?

বিচারক। একে পঁচিশ ঘা বেত মারো।

Category: গল্পমালা
পূর্ববর্তী:
« বুদ্ধিমান চাকর
পরবর্তী:
বড়লোক কিসে হয়? »

Reader Interactions

Comments

  1. Anirban Bhattacharyya

    December 6, 2008 at 2:29 am

    apnader ei prayash sotti khub bhalo. eto bhalo lagche ei golpo gulo porte je ki bolbo…

    Reply
  2. সাহেব

    December 17, 2013 at 9:29 am

    দারুন কাজ করছেন আপনারা। চালিয়ে যান আমরা সাথে আছি।

    Reply

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বাংলা লাইব্রেরি : উল্লেখযোগ্য বিভাগসমূহ

লেখক ও রচনা

অনুবাদ সাহিত্য

সেবা প্রকাশনী

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

কোরআন

হাদিস

ত্রিপিটক

মহাভারত

রামায়ণ

পুরাণ

গীতা

বাইবেল

বিবিধ রচনা

বাংলা ওসিআর

Download Bangla PDF

হেলথ

লাইব্রেরি – ফেসবুক – PDF

top↑