• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Book । বাংলা লাইব্রেরি

Read Bengali Books Online @ FREE

  • লেখক
  • অনুবাদ
  • সেবা
  • PDF
  • Bookmarks

লেখক

অনুবাদ

সেবা

কৌতুক

লিরিক

ডিকশনারি

PDF

Bookmarks

কান্তার মরু – ০১

লাইব্রেরি » সেবা প্রকাশনী » মাসুদ রানা সিরিজ » কান্তার মরু » কান্তার মরু – ০১

বিসিআই হেডকোয়ার্টার, মতিঝিল, ঢাকা।
‘এটা একটা খাপছাড়া ব্লাইণ্ড মিশন, রানা, পুরোপুরি অফিশিয়ালও বলা যায় না।’ চুরুটে অগিড়বসংযোগ করে বললেন রাহাত খান। সুপরিসর কামরায় বিশাল ডেস্কটার পেছনে বসে তিনি। দপদপ করে লাফাচ্ছে কপালের শিরা। ‘খবর পেয়েছি, মোট তেইশটা মিসাইল আর নিউক্লিয়ার ওঅরহেড চুরি গেছে। ইথিওপিয়ায় রয়েছে এখন সেগুলো।’
‘মিসাইলগুলো কাদের, স্যার?’
‘এক কথায় বলতে গেলে সবার। আমেরিকা, রাশিয়া, মিশর, ইসরাইল, সিরিয়া এমনকি ইরাকেরও। সবচেয়ে মারাত্মক কথা, এ দেশগুলো একে অন্যকে সন্দেহ করছে। আমেরিকা মনে করছে রাশিয়া কিংবা লিবিয়া তার মিসাইল চুরি করেছে, রাশিয়া মনে করছে আমেরিকা। ইসরাইল মনে করছে মিশর আর মিশর ভাবছে ইসরাইল। ইরাক সন্দেহ করছে আমেরিকাকে।
‘মিশর ছোট থেকে মাঝারি পাল্লার পাঁচটা মিসাইল খুইয়েছে। ইসরাইল থেকে চুরি গেছে এমনি আরও ছ’টা। আমরা জানি, এরা কেউই কারও জিনিস চুরি করেনি, অথচ পরস্পরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে এদের দেরি হবে না। এবং খুব শিগ্‌গিরিই ঘটবে সেটা।’
‘স্যার, চুরিটা কারা করল?’ রানা বিস্মিত কণ্ঠে প্রশ্ন করল।
‘মালদিনি। রবার্তো মালদিনি। দুর্দান্ত প্রকৃতির এক অর্ধোন্মাদ। বহুদিন ধরে ওর ওপর নজর রাখছি আমরা। মিসাইলগুলো এখন ওর হাতে আছে। তার সঙ্গে যোগ দিয়েছে আরেক নিও-ফ্যাসিস্ট – ব্রুনো কন্টি। ম্যাকলিন নামে নিজেকে পরিচয় দেয় সে ইদানীং। দুজনই ড্রাগের সঙ্গেও জড়িত। সরাসরি কিনা জানি না, তবে উৎপাদন করছে ওরা কোথাও, এটা প্রায় নিশ্চিত। অনেক দেশে যোগাযোগ করেছি, কিন্তু সাবধান করার পরও কেউ তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না। অথচ আমি ব্যাপারটাকে মোটেই হালকাভাবে নিতে পারছি না, রানা। মালদিনি সারা দুনিয়ায় যুদ্ধ বাধিয়ে দিতে পারে। তোমাকে ডেকেছি লোচনার
জন্যে। কী মনে হয় তোমার? বাজে চিন্তায় সময় নষ্ট করছি?’
‘জ্বী, স্যার,’ দৃঢ় কণ্ঠে বলল রানা। লক্ষ করল গম্ভীর হয়ে উঠেছে রাহাত খানের মুখের চেহারা। চট্‌ করে বলল, ‘আপনার যখন সন্দেহ হয়েছে ব্যাপারটা তলিয়ে দেখা দরকার। তাছাড়া, মালদিনির কিছু কিছু খোঁজ-খবর রানা এজেন্সির মাধ্যমেও জানা গেছে। আমরা জানি ওর পক্ষে কিছুই অসম্ভব নয়।’
‘এবার তাহলে বলা যায়,’ নড়েচড়ে বসলেন রাহাত খান। আশ্বস্ত দেখাল বুড়োকে। রানা ভাবল বয়সের সঙ্গে সঙ্গে নরম হয়ে যাচ্ছে নাকি বুড়ো! ‘আগে বুঝতে হবে ওর উদ্দেশ্যটা কি। বুঝতে হলে কাউকে না কাউকে যেতে হবে ব্লাইণ্ড মিশনে। তোমার কথাটাই সবার আগে মনে পড়ল আমার। বেশ কিছুদিন আফ্রিকায় ছুটি কাটিয়েছ তুমি। কাজেই ওখানকার পরিবেশ তোমার ভাল জানা থাকার কথা। যাই হোক,’ চেয়ারে সোজা হয়ে বসলেন বৃদ্ধ।
‘ও যদি জানান না দিয়ে বিভিনড়ব দেশে মিসাইল ছুঁড়তে থাকে কি ঘটবে বুঝতেই পারছ। এক দেশ ঝাঁপিয়ে পড়বে আরেক দেশের ওপর। কাজেই যেভাবে হোক ঠেকাতে হবে ওকে।’
ডেস্ক থেকে ‘টপ সিক্রেট’ লেখা একটা ফোল্ডার তুলে নিলেন বৃদ্ধ। পেপারগুলোয় চোখ বুলিয়ে বলতে ‘শুরু করলেন, ‘সত্তর দশকের শেষভাগে নিও-ফ্যাসিস্ট হিসেবে ইতালিতে কর্মকাণ্ড চালাচ্ছিল রবার্তো মালদিনি। রাজনীতি ও সংগঠন নিয়ে যতদিন ব্যস্ত ছিল তার ব্যাপারে কারও মাথাব্যথা ছিল না। কিন্তু পরে সে সহিংসতার পথ বেছে নেয়। ইতালিয়ান পুলিস তাকে গ্রেপ্তার করার আগেই লিভর্নো থেকে দেশান্তরী হয় সে।
‘আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে হঠাৎ করে একেবারে নিখোঁজ হয়ে যায় লোকটা।’
‘স্যার, চাইনিজরা বা অন্য কোন দেশ, যেমন উত্তর কোরিয়া, ওর সাথে জড়িত নয় তো? ওদের তো মিসাইল খোয়া যায়নি।’
‘এক কথায় না বলা যাচ্ছে না, কিন্তু আমার অন্তত ধারণা-মালদিনি একাই করছে এসব।’ চুরুটের ধোঁয়ায় বুকটা ভরে নিলেন বৃদ্ধ।
‘ইথিওপিয়ার কোথায় রয়েছে ও?’
‘ডানাকিলে, জিওনিস্ট ইন্টেলিজেন্স খোঁজ বের করতে পেরেছিল ওর। কিন্তু ওই পর্যন্তই। দু’মাস আগে ওদের এজেন্ট স্রেফ উধাও হয়ে যায়।’
‘ডানাকিল, সে তো মরুভূমি, স্যার।’
‘ঠিক। সাইনাইয়ের মত ওটাও একটা ওয়েইস্টল্যান্ড, রানা। ইথিওপিয়ানদের ওটার ওপর কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। আর মালদিনি যে ওখানে ঘাঁটি গেড়েছে একথা ওরা বিশ্বাসই করতে চাইছে না। সে যাকগে, ডানাকিলের বাসিন্দারা অচেনা লোক দেখলে খুন করতে দ্বিধা করে না। ইথিওপিয়ার মানচিত্রে রয়েছে জায়গাটা, কিন্তু আমহারিক উপজাতি, যারা এখন ক্ষমতায়, ওটাকে সভ্য করে তোলার কোন উদ্যোগ আপাতত নিচ্ছে না। বড় বিশ্রী জায়গা, রানা।
‘এখন তুমি কি বল, রানা? ইথিওপিয়ায় যাবে একবার? দেখবে পরিস্থিতি আদতে কতখানি ঘোলাটে?’
‘যাব, স্যার।’
‘এক বাঙালী বিজ্ঞানী আছে মালদিনির সাথে; আমার সঙ্গে অনেক দিনের পরিচয়,’ বললেন রাহাত খান। ‘কুদরত চৌধুরী। বর্তমানে ড্রাগ অ্যাডিক্ট। ডানাকিলে যাবার পর তাকে অ্যাডিক্ট হতে বাধ্য করেছে মালদিনি। আমাকে অনেক ইনফর্মেশন যুগিয়েছে সে। তুমি গেলে তার সাহায্য পাবে।’ ফাইলটা সামনের দিকে ঠেলে দিলেন বৃদ্ধ। অর্থাৎ যেতে পারো তুমি এবার। যতটা নরম ভাবছিল ততটা বুড়ো এখনও হয়নি বুড়ো, পরিষ্কার বুঝতে পারল রানা।
পরবর্তী সপ্তাহে ডানাকিল সম্পর্কে পড়াশোনা করে যা জানল তাতে মোটেও আশ্বস্ত হতে পারল না রানা। এমনকি ওর যে পরিচয় খাড়া করা হলো, সেটাও ওর মনে ধরল না। আমেরিকা অভিবাসী এক বাঙালী মুসলমান সে। নাম আলী আকবর। এই পাবলিক ওঅর্কস এঞ্জিনিয়ারটিকে মার্কিন মুল্লুকের প্রতিটি সাবডিভিশন কালো তালিকাভুক্ত করেছে। দোষ কি তার? না, সে বেচারা ওখানে গিয়েও বাঙালীয়ানা ছাড়তে পারেনি। কন্ট্রাকটরদের কাছ থেকে দেদার ঘুষ খাওয়ার বদনাম রয়েছে লোকটার।
নরওয়েজিয়ান এক ফ্রেইটারে এখন সীট বুক করেছে সে। গন্তব্য মাসাওয়া। রাস্তা নির্মাণ করতে পারে এমন লোকের দরকার পড়েছে ইথিওপিয়ায়। কাজেই ঠিক হলো ওয়াশিংটন হয়ে মাসাওয়া যাচ্ছে মাসুদ রানা।

এয়ারপোর্টে ডাফ্‌ল্‌ ব্যাগ ও গোপন কম্পার্টমেন্টসমৃদ্ধ তোবড়ানো সুটকেসটা খুঁজে নিল রানা। গোপন কুঠুরীতে স্থান পেয়েছে প্রচুর গোলা-গুলি ও চমৎকার এক ট্র্যান্সিভার। এবার ট্যাক্সি ডাকল। রানার সস্তাদরের গুডউইল সুটটা এক নজর দেখে নিল ড্রাইভার।
‘বারো ডলার হবে তোমার কাছে?’
‘হ্যাঁ,’ বলল রানা। ‘কিন্তু মিটারটা ইউজ করো। নইলে প্রথমে আধমরা করব তারপর অভিযোগ দায়ের করব, বোঝা গেছে?’
রানার দিকে দ্বিতীয়বার দৃষ্টিক্ষেপ করল লোকটা। আলী আকবরের ছদ্মবেশ ছেড়ে বোধহয় বেরিয়ে আসতে চাইছে মাসুদ রানা, তবে তর্কাতর্কি করতে গেল না ড্রাইভার, নৌ-কাস্টমসে নামিয়ে দিল। বিনা বাধায় কাস্টমস্‌ পার হতে পারল ও। একজন ট্রাক ড্রাইভার ওকে পৌঁছে দিল ‘শেপ মাইয়ার’ জাহাজে।
কোঁকড়া, কালোচুলো স্টুয়ার্ড, ববি মুর, রানাকে দেখে খুব একটা খুশি হয়েছে মনে হলো না। হয়তো একটা কারণ, রাত দুটো বাজে এখন, আর নয়তো ওর বেশভূষা। কেবিনটা দেখিয়ে দেয়ায় লোকটাকে বখশিস দিল ও।
‘ওয়ার্ডরূমে সাতটা থেকে নটার মধ্যে ব্রেকফাস্ট পাবেন,’বলল লোকটা। ‘মই দিয়ে নেমে এক নম্বর ডেকে।’
‘হেড কোথায়?’
‘প্যাসেঞ্জার কেবিনগুলোর সামনেই। শাওয়ারও পাবেন। দেখবেন, ভদ্রমহিলাদের ভয় পাইয়ে দেবেন না যেন।’
লোকটা চলে গেলে কোট খুলে সুটকেসে অস্ত্রগুলো চালান করল রানা, তারপর দরজা বন্ধ করে খুদে কেবিনটা পরখ করে নিল। মেইনডেকমুখী এক পোর্টহোলের পাশে সিঙ্গল বাঙ্ক। মেইন ডেকটার অবস্থান পোর্ট সাইডে। ডকটাও ওদিকে। দেখা গেল পাতলা পর্দা উজ্জ্বল আলোর প্রবেশ ঠেকাতে পারছে না। ফরোয়ার্ড বাল্কহেডে রয়েছে সিঙ্ক। সঙ্গে লাগোয়া কম্বিনেশন ক্লজিট ও চেস্ট অভ ড্রয়ার্স। সকালে মালপত্র খুলে সাজাবে সিদ্ধান্ত নিল রানা। বিসিআই জানিয়েছে প্যাসেঞ্জার লিস্ট আপাতদৃষ্টিতে নিরাপদ। তবে সময়াভাবে সেভাবে নাকি খতিয়ে দেখা সম্ভব হয়নি। সাবধান থাকতে বলা হয়েছে ওকে।
সাবধান থাকতে বলা হয়েছে ভাল কথা, ভাবল রানা, কিন্তু কি থেকে কিংবা কার কাছ থেকে? বাতি নিভিয়ে বুকে হেঁটে বাঙ্কে উঠে পড়ল রানা। ঘুমটা মোটেও ভাল হলো না ওর।

« পূর্ববর্তী:
পরবর্তী: »
কান্তার মরু – ০২ »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিকশনারি – জোক্স – লিরিক – রেসিপি – কামসূত্র – হেলথ – PDF

Return to top