• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক্স
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

এক জীবনের বন্ধুরা – সাজ্জাদ শরিফ

লাইব্রেরি » বিবিধ লেখার সংকলন » বিশেষ রচনা » এক জীবনের বন্ধুরা – সাজ্জাদ শরিফ

১৩ আগস্ট মর্মান্তিক এক সড়ক দুর্ঘটনা কেড়ে নিল সুস্থধারার বাংলা চলচ্চিত্রের পথিকৃৎদের একজন তারেক মাসুদকে, গুরুতর আহত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন শিল্পী ঢালী আল মামুন। অল্পের জন্য বেঁচে যাওয়া ক্যাথরিন মাসুদ স্বামীর শোকে এখন প্রায় পাথর। দিলারা বেগম জলি স্বামী মামুনের সুস্থ হওয়ার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন। বন্ধুবর কবি সাজ্জাদ শরিফ স্মৃতিচারণা করেছেন তাঁদের পেছনের বর্ণময় দিনগুলো।

এই গল্প বন্ধুবিয়োগের নয়। এই গল্প বন্ধুপ্রাপ্তির। মানুষের সঙ্গে মানুষের স্পর্শে আগুনের ফুলকি জ্বলে ওঠার। এই গল্প জীবন পাল্টে যাওয়ার; যে জীবন বিপুল স্পর্ধায় সময়কে পাল্টে দিতে চায়। কিন্তু কোত্থেকে শুরু করা যায় এই গল্প? মুশকিল হচ্ছে, বন্ধুত্বের এক পা যদি থাকে ঘটনাবর্তের ভেতরে, আরেক পা থাকে এর বাইরে—ঘটনাবর্তের ভেতরের অংশটুকুর তবু আন্দাজ মেলে। বন্ধুত্বের আদি যে কোথায় তলিয়ে থাকে, তার খোঁজ সহজে মেলে না। অন্তের তো নয়ই। তাই এই গল্প শুরু হতে পারে যেকোনো জায়গা থেকে—তিন দশক আগে, ছয় মাস আগে বা এক সপ্তাহ আগে।
শুরু করা যাক গত শুক্রবারের কথা দিয়েই। ঢালী আল মামুন আর দিলারা বেগম জলি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় এসেছে দিন কয়েক হয়। আমাদের শিল্পী-বন্ধু—জার্মানি থেকে সম্প্রতি দেশে প্রত্যাগত—ওয়াকিলুর রহমানকে নিয়ে দুপুরের কিছু আগে আগে আমাদের বাড়িতে এসেছে ওরা। বন্ধুবান্ধব একত্র হলে যা হয়, নানা গল্পগুজবে সময় কাটছিল। কিন্তু মামুন তো শুধু শুধু সময় নষ্ট করার লোক নয়। সব সময়ই কোনো না কোনো শিল্পভাবনা বা কাজের পরিকল্পনা ওর মাথায় ঘুরছে। আগেও দেখিয়েছিল, কিন্তু আবারও ওর স্কেচের খাতা খুলে ধরল। বেঙ্গল গ্যালারি প্রস্তাব দিয়েছে; ২০১২ সালের মার্চে ওদের জন্য একটা স্থাপনাশিল্পের পরিকল্পনা করছে সে। খাতায় আঁঁকিবুঁকি করে ফুটিয়ে তুলেছে তারই কিছু দৃশ্যবস্তুর প্রাথমিক রূপ। এবার যুক্ত হয়েছে আরও নতুন কিছু স্কেচ। সেসব দৃশ্যপ্রতিমা দেখিয়ে, সেগুলোর নিহিত অভিপ্রায় মেলে ধরে, পুরো পরিকল্পনার সঙ্গে সেগুলোর যোগ ব্যাখ্যা করে মামুন বুঝে নিতে চাইছিল, আমাদের মতো সাধারণ দর্শকের মনে তার আগামী শিল্পকর্মের তাৎপর্য কোথায় গিয়ে পৌঁছাতে পারে।
মানুষের মুক্তির লড়াইয়ের প্রত্যক্ষ এক বাস্তবতা হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ সব সময়ই ছিল মামুনের শিল্পচিন্তার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। তার এবারের বিষয় ছিল গণহত্যা। কিন্তু খোদ বিষয়টিই হয়ে দাঁড়িয়েছিল ওর দুশ্চিন্তার কারণ। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূলধারার বয়ান গণহত্যার যে প্রথাগত মর্মটি তুলে ধরে, মামুন চাইছিল সেটিকে পেরিয়ে যেতে। মুক্তির জন্য এই জনগোষ্ঠীর আত্মত্যাগের মহিমা কীভাবে এ দেশের সমাজ ও সংস্কৃতির ইতিহাসের নানা স্তর থেকে বিচ্ছুরিত হচ্ছে, সে চাইছিল তার একটি নতুন ভাষ্য তুলে ধরতে।
আমাদের কথা ধীরে ধীরে আলগা হয়ে আসে। কারণ আমরা আরও একটি কারণে এই দিনটির অপেক্ষা করছিলাম। আমাদের যুক্তরাষ্ট্র-প্রবাসী লেখক-বন্ধু শাহাদুজ্জামান সপরিবারে আজই ওখান থেকে রওনা দিয়ে কাল ঢাকায় পৌঁছাবে। পরের সপ্তাহে সবাই মিলে কোথা থেকে বেড়িয়ে আসা যায়, আমরা দ্রুত সেই আলোচনায় ঢুকে পড়ি। মাঝখানে শাহাদুজ্জামানের সঙ্গে একঝলক কথাও হয়ে যায় আমাদের। বেড়াতে যাওয়া নিয়ে কিছুটা দ্বিধার ছায়াও আমাদের ওপরে এসে পড়ে। কারণ পরের সপ্তাহেই গৌহাটিতে একটি কর্মশালার জন্য বেঙ্গল গ্যালারি মামুন আর ওয়াকিলকে নিমন্ত্রণ জানিয়েছে।
বিকেলের দিকে ওরা সবাই বিদায় নেয়। না, মামুন আর জলি রাতে তারেক মাসুদের বাসায় যাবে। মাত্র কয়েক দিন আগে তারেকের বাবাও মারা গেছেন। সেই বিদায় যে ঠিক পরের দিনই এত মর্মান্তিক বাঁক নেবে, সে কথা কে ভেবেছিল!
কিন্তু এসব তো বাহ্য কথা। ঘটনার নিষ্প্রাণ খোলস মাত্র। নিছক দিনপঞ্জি। ১৯৮০-র দশকের শুরুর দিকে—আমাদের অনতি-তরুণ বয়সে—অনেকগুলো মন যেভাবে কাছে এসেছিল, যে সৃষ্টিশীল উন্মাদনা আমাদের অনেককে ঠেলে দিয়েছিল ঘোর-লাগা স্বপ্নের একেবারে প্রান্তদেশে, এসব বিবরণে সেই উত্তাপের কতটুকু আঁঁচই বা পাওয়া সম্ভব?
আমরা কিছু তরুণ কবি তখন সমবেত হওয়ার চেষ্টা করছি একটি ছাতার তলায়। শামসুর রাহমানের নেতৃত্বে যে কাব্যভাষাটি বাংলা কবিতায় কয়েক দশক ধরে রাজত্ব করছিল, সেটিকে ভেঙে তছনছ করে দেওয়ার প্রবল ইচ্ছা পেয়ে বসেছিল সবাইকে। আমাদের মনে হয়েছিল, কবিতার পুরোনো সেই ভাষায় বদলে যাওয়া এই সময়ের সংবেদনশীলতা প্রকাশ করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তারেক মাসুদের প্রবেশ ঠিক এই দৃশ্যপটের মধ্যে। তারেক দীর্ঘাঙ্গ ও সুদর্শন। কণ্ঠস্বর শ্রুতিমধুর। কথা বলেন গুছিয়ে। তাঁর ব্যক্তিত্বের একটি আকর্ষণ ছিল। বয়সে আমাদের কিছুটা বড় হলেও বন্ধু হিসেবে কাছে টানতে দ্বিধা করেননি। কিন্তু তারেক একা আসেননি। মা-শোল মাছের পোনার মতো বন্ধুর একটি ঝাঁক সারাক্ষণ তাঁকে ঘিরে থাকত। তাঁর মধ্যে প্রধান অংশ ছিলেন আজিজ শরাফী, ঢালী আল মামুন, ওয়াকিলুর রহমান, দিলারা বেগম জলি, হাবিবুর রহমান, শিশির ভট্টাচার্য্যের মতো ‘সময়’ গোষ্ঠীর আঁঁকিয়েরা, যাঁরা বিমূর্ত চিত্ররীতির জেঁকে বসা আধিপত্যের বিরুদ্ধে বীতস্পৃহ হয়ে পড়েছিলেন। তাঁদের প্রতিবাদ কেবল চিত্ররীতির বিরুদ্ধেই ছিল না। তাঁদের মনে হয়েছিল, সেই চিত্ররীতি দেশের সমকালীন ইতিহাসের অভিজ্ঞতাকে নাকচ করে দিচ্ছে, শিল্পকর্মকে পর্যবসিত করেছে ক্যানভাসের নিছক উপরিতলের বর্ণভঙ্গিমায়। মনে রাখতে হবে, দেশে তখন সামরিক স্বৈরতন্ত্রের তুঙ্গ মুহূর্ত। অকালপ্রয়াত তারেক শাহরিয়ার আর জাহেদুর রহিম অঞ্জন ছিল একাধারে তারেক মাসুদ ও আমাদের বন্ধু। তারেকের সঙ্গে ওদের যোগ ছিল চলচ্চিত্রের প্রতি প্রগাঢ় ভালোবাসায়। ওদের পক্ষে সিনেমা বানানোর কোনো উপায় তখনো ছিল না। সেই বেদনা বুকে চেপে তারা এসে ভিড়েছিল সাহিত্য-করিয়েদের দলে। চমৎকার সব গল্প লিখে আমাদের চমকে দিচ্ছে তারা।
আঁঁকিয়ে-বন্ধুরা সৃষ্টি করছিলেন নতুন নতুন প্রতিমা ও রূপবন্ধ। আমরা কবিরা যাত্রা করেছিলাম ‘সময়’ গোষ্ঠীর উল্টো পথে। সে সময়কার অতিপ্রত্যক্ষ ও অর্থভারে ন্যুব্জ কবিতা থেকে অর্থভারমুক্তির দিকে; বস্তুভার থেকে নির্বস্তুকতায়। কিন্তু সিনেমা বানাচ্ছিলেন শুধু তারেক। চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানকে নিয়ে তিনি তখন তৈরি করছেন তাঁর প্রথম ছবি আদম সুরত—পরে যেটি তাঁর দ্বিতীয় ছবি হিসেবে মুক্তি পায়। ক্যামেরা কাঁধে নিয়ে তখন তাঁর সঙ্গী হয়েছেন মিশুক মুনীর। তারেকের তখন কী যে অর্থকষ্ট! এখানে-ওখানে ধারকর্জ করে কিছু টাকা জুটলেই ক্যামেরা নিয়ে ছুটে যাচ্ছেন সুলতানের কাছে। বছরের পর বছর গড়িয়ে যাচ্ছিল, কিন্তু ছবি শেষ হচ্ছিল না। আমরা টিটকারি দিয়ে বলতাম, এ ছবি কখনো আর শেষ হবে না। তারেকের মুখের হাসিটি কিন্তু অমলিন।
তারেক ছবি শেষ করতে পারছেন না, কিন্তু নিত্যনতুন ছবির ভাবনা তাঁর মাথা থেকে মুহূর্তের জন্যও সরে যায়নি। এখনো মনে পড়ে, কোনো এক মন্থর সন্ধ্যায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ক্যাফেটেরিয়ায় বসে তিনি বলছিলেন একটি চলচ্চিত্র-মুহূর্তের কথা। দাড়ি কামানোর জন্য কোনো ক্ষৌরকার যখন ক্ষুর চালাচ্ছেন একজন লোকের গলায়—কোন ক্যামেরা-কোণ এর থেকে বের করে আনতে পারে গা-ছমছমে এক রোমাঞ্চকর অনুভূতি, তার হিচককীয় বিবরণ দিচ্ছিলেন তারেক। বহু পরে—মাত্র দু-তিন বছর আগে—নরসুন্দর ছবিতে ঢুকে গিয়েছিল এই দৃশ্য, মুক্তিযুদ্ধের পটে তৈরি তাঁর এক চলচ্চিত্রে। তাঁর কৈশোরের মাদ্রাসা-জীবন নিয়ে সিনেমা বানালে সেটি কেমন হতে পারে, সে নিয়েও তারেক কত কথা যে বলতেন! সেই স্বপ্ন আর মাটির ময়না ছবিটি তৈরির মাঝখানে পার হয়েছে আড়াইটি দশক। তারেক জানতেন, কীভাবে প্রতীক্ষা করতে হয়।
অত অর্থকষ্টের মধ্যেও তারেক ধরে রেখেছিলেন তাঁর হাসি, নির্বিকার রসিকতা আর বন্ধুবাৎসল্য। আমরা তত দিনে জেনে গেছি, মামুন আর জলির সম্পর্ক স্রেফ আর বন্ধুত্বের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। প্রগাঢ় প্রেমপর্বের পরে অবশেষে তারা বিয়ে করতে মনস্থির করেছে। কিন্তু বিয়ে যে করবে, কিছু টাকা তো অন্তত দরকার। সেই সময়টাতেই মামুনের প্রথম একক প্রদর্শনীর আয়োজন হলো গ্যেটে ইনস্টিটিউটে। গ্যেটে ইনস্টিটিউটের দোতলার ছোট্ট ঘরটি শিল্পীর অদম্য সাহসে কী রকম বিস্ফোরক হয়ে উঠেছিল সামরিক শাসনের তীব্র সমালোচনায়, মনে পড়ছে আজ। উর্দি, ঘোড়া, দাবার ছক ও গুটি আর বস্তুপুঞ্জের চেয়ে সেগুলোর বিস্তৃততর ছায়ার প্রতিমায় এক ষড়যন্ত্রময় শাসনকালের অন্তরাত্মা নগ্ন করে দিয়েছিল মামুন। সমতলীয়ভাবে তার মৌলিক বর্ণলেপন আর দৃষ্টিসুখকে বিপর্যস্ত করে দেওয়া রেখা দর্শকদের চূড়ান্ত অস্বস্তির মধ্যে ফেলে দিয়েছিল। মনে পড়ছে, আমাদের বন্ধুদের মধ্যেও অনেকেই চিত্রশিল্পী হিসেবে মামুনের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয়ে পড়ে গিয়েছিল।
সেই প্রদর্শনীতে ল্যান্ড অব ফ্যান্টাসি নামে বড়সড় একটি তেলরঙ চিত্র ছিল মামুনের। মামুন-জলির বিয়ের টাকা জোগাড় করার জন্য সেই ছবিটি বিক্রির দায়িত্ব নিয়েছিলেন তারেক। জার্মান দূতাবাসের এক কূটনীতিকের কাছে ছবিটি বিক্রিও করে দিয়েছিলেন বহু দরদাম করে ৫০ হাজার টাকায়। কূটনীতিক ভদ্রলোকের কাছ থেকে মামুন অবশ্য পুরো টাকাটা আর পায়নি। পেয়েছিল ৩০ হাজার টাকা। সেই টাকায় অবশেষে তাদের বিয়ে হয়।
তারেকের বিয়ে হয়েছিল আরও পরে। তাঁদের বিয়ের পেছনে আমাদের কারও কারও ওস্তাদ আহমদ ছফার একটি পরোক্ষ ভূমিকা ছিল। বাংলাদেশে চিত্রশিল্পী হিসেবে এস এম সুলতানের মহিমা প্রতিষ্ঠা করার জন্য ছফা ভাই পণ করেছিলেন। তারেক যে সুলতানকে নিয়ে আদম সুরত বানাতে শুরু করেছিলেন, তার পেছনেও ছফা ভাইয়ের প্রেরণা কাজ করেছিল। তাঁর ওখানেই ক্যাথরিন শেপিরে নামে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা তরুণীটির সঙ্গে তারেকের পরিচয় হয়। তাঁদের বুঝতে বিশেষ দেরি হয়নি যে, বাকি জীবনটা তাঁরা একসঙ্গে কাটাতে চান। কিছুদিন পরেই ক্যাথরিন শেপিরের নাম বদলে ক্যাথরিন মাসুদ হয়ে যায়।
আমরা বিভিন্ন শিল্পমাধ্যমের বন্ধুরা যে পরস্পরের সঙ্গে বেড়ে উঠছিলাম এবং একে অন্যের জীবনকে নিজেদের মধ্যে শুষে নিচ্ছিলাম, তার চিহ্ন কত জায়গাতেই না ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। একটি ছোটকাগজ বের করেছিলাম আমরা হঠকারী কবিরা মিলে। কাগজটির নাম দিয়েছিল জাহেদুর রহিম অঞ্জন: গাণ্ডীব। গাণ্ডীব ছিল অর্জুনের সেই ধনুক, যেটি দিয়ে তিনি তাঁর লক্ষ্যভেদী তির ছুড়ে দিতেন প্রতিপক্ষের দিকে। পত্রিকাটির প্রথম সংখ্যার প্রচ্ছদ করে দিয়েছিল ওয়াকিলুর রহমান। পরের দুটো পরপর ঢালী আল মামুন। মামুনের এই প্রচ্ছদচিত্র দুটিতেও ছিল সামরিক একনায়কের প্রতিকৃতি। দ্বিতীয় সংখ্যার জন্য জীবনানন্দ দাশের ‘শিকার’ কবিতাটি নিয়ে তারেক ‘নিরপরাধ ঘুম’ নামে একটি চিত্রনাট্য লিখে দিয়েছিলেন। তৃতীয় সংখ্যার জন্য লিখেছিলেন ‘সুব্রত সেনগুপ্ত ও সমকালীন বঙ্গসমাজ’ নামে অনবদ্য আরেকটি চিত্রনাট্য। মূল গল্পটি ছিল আমাদের বন্ধু-লেখক সেলিম মোরশেদের। যে অভিনব কল্পনাশক্তি প্রয়োগ করে গল্পটিকে তিনি তিনটি স্তরে চিত্রনাট্যে রূপ দিয়েছিলেন, তার কোনো তুলনা মেলে না। এই লেখাটা তৈরি করতে কী যে ভুগিয়েছিলেন তারেক! দিনের পর দিন তাঁর বাসায় গিয়ে ধরনা দিতে হয়। একপর্যায়ে তিনি পালিয়ে যান।
আমাদের বন্ধুরা শিল্পের বিচিত্র মাধ্যমে নিঃশ্বাস নিতে নিতে আমাদের বেড়ে ওঠার একটা পরিমণ্ডল তৈরি করেছিলেন। প্রত্যেকের মধ্য দিয়ে আমরা প্রত্যেকে প্রসারিত জীবনের মধ্যে জেগে উঠেছি। এই বন্ধুদের মধ্যে কেউ যদি চলে যান, যদি আহত হয়ে মৃতপ্রায় অবস্থায় পড়ে থাকেন কেউ, তাতে কি নিজেরই মৃত্যু হয় না একটু একটু করে?

সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, আগস্ট ১৯, ২০১১

Category: বিশেষ রচনা
Previous Post:তারেক মাসুদ : অপ্রকাশিত সাক্ষাৎকার – ‘ভায়োলেন্স আমি নিতে পারি না’
Next Post:ঢাকা নগর জীবনে নারী : সোনিয়া নিশাত আমিন

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

বিবিধ রচনা

হেলথ

Download PDF


My Account

Facebook

top↑