• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • নতুন সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • পুরানো সব ক্যাটাগরি
  • My Account →
  • নতুন সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • পুরানো সব ক্যাটাগরি
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

সেলিম চিস্তি

লাইব্রেরি » নিমাই ভট্টাচার্য » প্রেমের গল্প - নিমাই ভট্টাচার্য » সেলিম চিস্তি

সেলিম চিস্তি

‘দেওয়ান-ই-আম’-এ এখন আর সম্রাট বিচার করেন না। ‘দেওয়ান-ই-খাস্’-এ বীরবলের সঙ্গে পরামর্শ হয় না সম্রাটের। রাজপুত দুহিতা, জাহাঙ্গীর পত্নী যোধবাঈ তুলসী মঞ্চে প্রণাম করে ‘দেওয়ান-ই-খাস্’এ-র আসরে আসন গ্রহণ করেন না। সে সব দিন শেষ। ফুরিয়ে গেছে! ফতেপুর সিক্রী এখন মূক, বধির, প্রাণহীন। মিঞা তানসেনের গান শুনে যে রাজপ্রাসাদের মানুষ চঞ্চল হয়ে উঠত সকালে, সন্ধ্যায়, চারপাশের গ্রামের মানুষ মুগ্ধ হত যে সঙ্গীত সম্রাটের সুরে, সে অমৃত কণ্ঠস্বর আর শোনা যায় না।

সম্রাট নেই, সম্রাজ্ঞী নেই, নেই রাজপুত্র মন্ত্রী, রাজ জ্যোতিষী, গায়ক, সখী, বাঈজী, নতর্কী। কেউ নেই। সেনাপতি তো দূরের কথা, একজন সাধারণ সৈন্য পর্যন্ত নেই ফতেপুর সিক্রীতে। বুলান্দ দরওয়াজায় আজ আর অশ্বারোহী সৈন্যরা পাহারা দেয় না।

তা না হোক আজও মানুষের কলগুঞ্জনে মুখরিত হয় ফতেপুর সিক্ৰী। প্রাণহীন এই প্রাসাদ, তার পুরনো দিনের স্মৃতি সারা দেশের মানুষকে ঘরছাড়া করে। টেনে আনে! সারা বছর ধরে তারা আসে। দেখে। ভাবে। একটু আনমনা হয়ে ফিরে যায়।

না, বাজপ্রাসাদ দেখেই ফিরে যায় না। সবাই আসে শেখ সেলিম চিস্তির সমাধিতে। প্রণাম করে, প্রার্থনা করে। শ্বেতপাথরের জালিতে লাল সুতো বাঁধে। শ্বেত, শুভ্র, নির্মল, পবিত্র তীর্থে এসে কামনাবাসনার আগুন ছড়িয়ে যায় সবাই।

.

পাপিয়া, তুমি কিছু প্রার্থনা করে লাল সুতো বাঁধবে না?

না।

অবাক হয় রঞ্জন, সেকি? এবার একটু কাছে এসে নিবিড় হয়ে পাশে দাঁড়িয়ে চাপা গলায় বলল, শুনেছি সেলিম চিস্তির কাছে কিছু চাইলে পাওয়া যায়।

আমিও শুনেছি।

তুমি কিছু চাইবে না? তোমার কোন প্রার্থনা নেই?

পাপিয়া মুখ ঘুরিয়ে রঞ্জনের দিকে তাকিয়ে বলল, আমি মুখ ফুটে চাইলেই সেলিম চিস্তি আমার প্রার্থনা মঞ্জুর করবেন?

রঞ্জন ঠিক জবাব দিতে পারেনি। না, তা ঠিক নয়, তবুও…

সেলিম চিস্তি নিশ্চয়ই আমার মনের কথা জানেন।

সারা বছর ধরে মানুষের স্রোত বয়ে যায় এই সেলিম চিস্তির সমাধিতে। শীত গ্রীষ্ম শরৎহেমন্ত। সব সময়। সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত। আজ কোজাগরী লক্ষ্মী পূর্ণিমা। বিকেল হতে না হতেই সবাই তাজের পথে। বিবর্ণ মনকে একটু রঙিন করবার জন্য আজ সেলিম চিস্তির সমাধি ছেড়ে সবাই যমুনা পাড়ের তাজ দেখতে চলেছেন।

.

যখন শেষ দর্শনার্থীর দল ফতেপুর সিক্রীর পাহাড় থেকে নীচে নামতে শুরু করেছেন তখন বিবেক আস্তে আস্তে সেলিম চিস্তির সমাধির সামনে এগিয়ে গেল।

তোমার কাছে আমি আর কিছু চাই না, শুধু বছরে একবার আমাকে সেলিম চিস্তির সমাধিতে নিয়ে যেও।

আমার কাছে আর কিছু চাও না?

না।

বিবেক অবাক হয়। একটু ভাবে। সেলিম চিস্তির সমাধিতে গিয়ে কোন কিছু মানত করবে?

না, না, সেসব কিছু না।

তবে?

কিছুই না, শুধু ভালো লাগে। একটা চাপা দীর্ঘনিশ্বাস ছাড়ে বিবেকের স্ত্রী। দৃষ্টিটা একটু যেন দূরের দিকে ছড়িয়ে দেয়। খুব ভালো লাগে ওখানে গেলে। মনে ভীষণ শান্তি পাই।

বিবেক প্রত্যেক বছর স্ত্রীকে এনেছে। ফতেপুর সিক্রীতে এসে আকবরের প্রাসাদ দেখেনি। সারাদিন কাটিয়েছে এই সমাধি মন্দিরে। বিবেক বাধা দেয় না, কিছু বলে না। শুধু দেখে, বিভোর হয়ে দেখে আনমনা স্ত্রীকে।

হাসতে হাসতে বিবেক বলে, তুমি বোধহয় গতজন্মে সেলিম চিস্তির কেউ ছিলে।

বিবেকের স্ত্রী হাসে।

হাসছ?

হাসব না?

সত্যি বলছি তুমি ওখানে গেলে এমন বিভোর হয়ে যাও, আত্মভোলা হয়ে যাও যে আমার সত্যি মাঝে মাঝে মনে হয়…

সমাধির মুখোমুখি হতেই থমকে দাঁড়াল।

হ্যাগো, তোমাকে আমি বড্ড কষ্ট দিই, তাই না?

না, না, কষ্টের কি আছে?

কষ্ট বৈকি। আমার খামখেয়ালিপনার জন্য তোমাকেও দুর্ভোগ সহ্য করতে হয়।

বিবেক একটু কাছে টেনে নেয় স্ত্রীকে। আমার একটুও কষ্ট হয় না, বরং…

তুমি আমার উপর রাগ করো না?

পাহাড় দিয়ে নামতে নামতে বিবেক বুকের কাছে টেনে নেয় স্ত্রীকে। রাগ করব কেন?

বিশ্বাস কর, এখানে এলে আমার খুব ভালো লাগে। এখানে না এসে আমি থাকতে পারি না। মুখ থেকে নয়, অন্তর থেকে কথাগুলো বেরিয়ে এলো।

.

বিবেক যেন সব কথা শুনতে পাচ্ছে।

যখন আমি থাকব না, তখন তুমি এসো! সেলিম চিস্তির সমাধির আশেপাশেই আমার আত্মা ঘোরাফেরা করবে। আমি এখান থেকে কোথাও যাব না।

ভাবতে গিয়েই বিবেকের চোখে জল আসে। তবু আস্তে আস্তে এগিয়ে গেল। একবার সেলিম চিস্তির সমাধির দিকে তাকিয়েই দৃষ্টিটা ঘুরিয়ে নিল।

এপাশ থেকে ওপাশ।

মাঝপথে আটকে গেল। মনে হল এই ভদ্রলোককে যেন আগেও দেখেছে বিবেক। এই শেখ সেলিম চিস্তির সমাধিতে। গত বছর! পর পর কয়েক বছর। একবার এক হোটেলেই বোধহয় ছিল দুজনে।

টাঙাওয়ালা এসে ভদ্রলোককে ডাক দিল, সাব! চলিয়ে। রাস্তা অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে।

ভদ্রলোক ঘুরে দাঁড়াতেই বিবেক যেন চিনতে পারল। কিছু বলল না। মনে মনে ভাবল, শেখ সেলিম চিস্তির কাছে ইনিও কিছু গচ্ছিত রেখেছেন নাকি?

.

তুফান এক্সপ্রেমের কামরায় দুজনের দেখা। টুন্ডুলা পার হবার পরই আলাপ হল। বিবেক জিজ্ঞাসা করল, আপনি কি প্রায়ই দিল্লি আসেন?

কেন বলুন তো?

মনে হয় পর পর কয়েক বছর আপনাকে ফতেপুর সিক্রীতে দেখেছি।

ফতেপুর সিক্ৰী, মানে শুধু সেলিম চিস্তির সমাধিতে যাই।

হাঁ, হাঁ, সেলিম চিস্তির সমাধিতেই দেখেছি।

এবার রঞ্জন জানতে চাইল, আপনিও বুঝি প্রত্যেক বছর এদিকে আসেন?

একটু শুকনো হাসি হাসল বিবেক। একটা দীর্ঘনিশ্বাসও ছাড়ল। আসি মানে আসতে হয়, না এসে পারি না।

কিছু মানত করেছেন বুঝি?

কিছু মানত করিনি। সেলিম চিন্তির কাছে আমার কিছু চাইবার নেই।

তবে আসেন কেন?

.

তুফান এক্সপ্রেস চলছে। কানপুর, ফতেপুর পার হয়ে এলাহাবাদ আসে রাতের অন্ধকারে। প্রায় সবাই ঘুমিয়ে পড়েছেন। এদের দুজনের চোখে ঘুম নেই।

আচ্ছা রঞ্জনবাবু, মারা যাবার পর আত্মার দেখা পাওয়া যায়?

ঠিক জানি না, তবে অনেকে বলেন, পাওয়া যায়।

বিবেকবাবু তলিয়ে যান নিজের মধ্যে

বোধহয় মির্জাপুর এল।

রঞ্জন প্রশ্ন করল, আপনি কি অলৌকিক কিছু দেখার আশায় সেলিম চিস্তির সমাধিতে যান?

না তা ঠিক নয়, তবে আমার স্ত্রী বলেছিল, মরার পর সেলিম চিস্তির সমাধি আশেপাশেই থাকবে ..

উনি বুঝি সেলিম চিস্তির ভক্ত ছিলেন?

নিশ্চয়ই ছিল, তা নয়তো প্রত্যেক বছর কেন আসত।

প্রত্যেক বছর আসতেন?

হ্যাঁ।

বোধহয় সেলিম চিস্তির কাছে মানত করে কিছু পেয়েছিলেন। অথবা…

বিবেকবাবু তাড়াতাড়ি ওকে বাধা দিয়ে বললেন, না রঞ্জনবাবু, ও কিছু মানত করত না। চুপ করে বসে বসে কি যেন ভাবত। তন্ময় হয়ে ভাবত।

রাত আরো গম্ভীর হয়।

জানেন রঞ্জনবাবু, হঠাৎ আমাদের বিয়ে হয়। আমার স্ত্রী আগ্রাতে ওর ছোটোমামার কাছে ছিলেন। আমার শ্বশুরমশাই ওকে টেলিগ্রাম করে কলকাতায় আনান। ও আসার দুদিন পরেই আমাদের বিয়ে হয়।

তারপর?

বিয়ের পর আমার স্ত্রী আমাকে শুধু একটি অনুরোধ করেছিলেন…

কি?

প্রত্যেক বছর এই সেলিম চিস্তির সমাধিতে আনার অনুরোধ করেছিলেন।

রঞ্জনের যেন কেমন লাগে শুনতে। একটু ভাবে। উনি কি আর্কিওলজিতে ইন্টারেস্টেড ছিলেন?

ওর মামা আর্কিওলজি ডিপার্টমেন্টে কাজ করেন। আগে বহুদিন আগ্রা ফতেপুর সিক্রীতে ছিলেন।

হঠাৎ রঞ্জন জিজ্ঞাসা করে, কি নাম বলুন তো?

সুধীর সরকার।

মুখ ফসকে বেরিয়ে গেল, সুধীরদা!

সুধীর সরকারের নাম শুনতেই রঞ্জনের হৃৎপিণ্ডটা হঠাৎ থমকে দাঁড়াল, মুখখানা কালো হয়ে গেল, কিন্তু অন্ধকার কম্পার্টমেন্টে বিবেকবাবু বুঝতে পারলেন না। জিজ্ঞাসা করলেন, ওঁকে চেনেন নাকি?

হ্যা চিনি।

আপনিও কি আর্কিওলজি ডিপার্টমেন্টে কাজ করেন?

আর সত্যি কথা বলতে পারল না রঞ্জন। বলল, না।

বিবেকবাবু পার্সের ভেতর থেকে একটা ফটো বের করে প্যাসেজের আবছা আলোয় এগিয়ে ধরলেন, রঞ্জনবাবু, আমার স্ত্রীর ছবি।

রঞ্জন ও ছবি দেখতে চায়নি। ও ছবি ওর মনের মধ্যে অসংখ্য স্মৃতির মালা দিয়ে বাঁধানো আছে। তবু না দেখে পারল না। পাপিয়া!

ট্রেন মোগলসরাই স্টেশনে ঢুকছে। রঞ্জন তাড়াতাড়ি সুটকেসটা নিয়ে উঠে দাঁড়াল নমস্কার।

এখানেই নামবেন?

হ্যাঁ, আমি একটু বেনারস ঘুরে যাব।

আপনার ঠিকানাটা…।

রঞ্জন হাসল, কোনো দরকার নেই। ঐ শেখ সেলিম চিস্তির সমাধিতেই দেখা হবে।

Category: প্রেমের গল্প - নিমাই ভট্টাচার্য
পূর্ববর্তী:
« সুবর্ণরেখা
পরবর্তী:
স্টপওভার : করাচি »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বাংলা লাইব্রেরি : উল্লেখযোগ্য বিভাগসমূহ

লেখক ও রচনা

অনুবাদ সাহিত্য

সেবা প্রকাশনী

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

কোরআন

হাদিস

ত্রিপিটক

মহাভারত

রামায়ণ

পুরাণ

গীতা

বাইবেল

বিবিধ রচনা

বাংলা ওসিআর

Download Bangla PDF

হেলথ

লাইব্রেরি – ফেসবুক – PDF

top↑