• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • লেখক
  • My Account
  • লেখক
  • My Account
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা PDF ডাউনলোড

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

১১. রাত তখন বোধ করি নটা হবে

লাইব্রেরি » নীহাররঞ্জন গুপ্ত » কিরীটী অমনিবাস (কিরীটী রায়) » সুভদ্রা হরণ » ১১. রাত তখন বোধ করি নটা হবে

রাত তখন বোধ করি নটা হবে।  

সারাটা দিন প্রচণ্ড গরম গিয়েছে, যেমন রৌদ্রের তাপ তেমনি গরম হাওয়া, গা যেন ঝলসে দিচ্ছিল।

কিছুক্ষণ হল সবে একটু ঠাণ্ডা হাওয়া বইতে শুরু করেছে।  

খুঁজে খুঁজে কিরীটী শ্যামবাজারে পাল স্ট্রীটে রাধারমণ পালের দেওয়া ঠিকানামত একটা সরু গলির মুখে এসে দাঁড়াল।

পাল স্ট্রীট থেকেই সরু গলিটা একটা গলির মত যেন বের হয়ে গিয়েছে। দুপাশে গলিটার দোতলা-তিনতলা বাড়ির ভিতরকারের অংশ।

গলি-পথে আলোর তেমন ভাল ব্যবস্থা নেই। পকেট থেকে টচটা বের করে আলো ফেলে নম্বরটা দেখে চতুর্থ বাড়ির দরজার কলিং বেলটা কিরীটী টিপল, বার দুই টেপবার পর ভিতর থেকে সাড়া পাওয়া গেল।

একটু পরেই দরজা খোলার শব্দ, অন্ধকার।

নারী-কণ্ঠে প্রশ্ন ভেসে এল অন্ধকারেই, এত তাড়াতাড়ি এলে, তোমার তো আসবার কথা—

সুভদ্রার কথা শেষ হল না।

কিরীটী সাড়া নিয়ে বললে, সুভদ্রা দেবী, আমি কিরীটী রায়।

মুহূর্তের যেন একটা স্তব্ধতা, তারপরই চাপা সতর্ক কিছুটা শঙ্কিত কণ্ঠে উচ্চারিত হল, কিরীটীবাবু।

হ্যাঁ, ভিতরে চলুন, আপনার সঙ্গে কিছু দরকারী কথা আছে।

দরকারী কথা! কিন্তু আমি যে এখুনি একবার বেরুব কিরীটীবাবু!

বেশী সময় নেব না, দু-চার মিনিট। চলুন না।

আসুন।

সরু একটা অন্ধাকার প্যাসেজ, কিরীটী টর্চ হাতে সুভদ্রার পিছনে পিছনে এগুতে এগুতে বললে, প্যাসেজে বুঝি আলো নেই?

ছিল। ফিউজ হয়ে গিয়েছে।

প্যাসেজের পরে একটা ছোট বারান্দা মত, তার একটার মধ্যে টিনের একটা শেড।

একটা ঘরের দরজা খোলা, আলো আসছিল খোলা দরজাপথে। পাশাপাশি দুটো ঘর। যে ঘরে আলো জ্বলছিল কিরীটীকে নিয়ে সুভদ্রা সেই ঘরেই এসে ঢুকল। ঘরটা বড় নয়, ছোটই আকারে। কিন্তু ছিমছাম করে সাজানো।

একপাশে একটি খাটে পরিপাটি করে শয্যা বিছানো, পাশাপাশি দুজোড়া মাথার বালিশ, বালিশের ওয়াড়ে ঝালর বসানন লেসের। মধ্যখানে একটা পাশবালিশ।

মাথার কাছে একটা নীচু টেবিলের ওপরে একটা টেবিল ফ্যান। ফ্যানটা ঘূর্ণায়মান, তার পাশে একটা কাচের প্লেটে কিছু বেলফুল, একটি ধূপদানীতে ধূপকাঠি প্রজ্বলিত। চন্দনধূপের মিষ্টি গন্ধ বেলফুলের সুগন্ধের সঙ্গে মেশামেশি হয়ে ঘরের বাতাস যেন স্নিগ্ধ রেখেছে।

অন্যদিকে আয়না বসানো একটি কাঠের আলমারি। একটি মিটসেফ, সেফের উপরে গোটা দুই ইন্ডিয়ান রামের বোতল, একটা কাচের জাগ জলভর্তি, গোটা দুই গ্লাস। খান-দুই চেয়ারও ছিল ঘরে।

বসুন কিরীটীবাবু!

কিরীটীর দৃষ্টি তখন সুভদ্রার উপর ন্যস্ত।  

চমৎকার করে খোঁপা বেঁধেছে সুভদ্রা, খোঁপায় একটি বেলফুলের মালা জড়ানো। পরনে নীল রংয়ের লাল চাওড়াপাড় দামী তাঁতের শাড়ি। হাতে দুগাছি সোনার বালা। কপালে কুমকুমের টিপ।

এই বাড়িতেই আপনি হরিদাস সামন্তর সঙ্গে থাকতেন? কিরীটী শুধাল।

হ্যাঁ। এবারে ছেড়ে দিতে হবে।

ছেড়ে দেবেন কেন? শ্যামলবাবু বুঝি অন্য বাসা ঠিক করেছেন?

এখনও পায়নি, খুঁজছে বাসা।

হুঁ। তা আপনার মাসীর কোন সংবাদ পেলেন?

মাসী!

বলেছিলেন না সেদিন মাসী খুব অসুস্থ, তাকে দেখতে যাবেন?

যাওয়া আর হল কই! হঠাৎ যে ঝঞ্ঝাটে পড়া গেল!

তা ঠিক। তা যাবেন না?

দেখি, চিঠি দিয়েছি।

সুভদ্রা দেবী—

বলুন!

মাসীর কাছ থেকে আপনি কতদিন হল চলে এসেছেন?

তা বছর সাত-আট হবে।

মধ্যে মধ্যে যেতেন মাসীর কাছে, তাই না?

হ্যাঁ, আমি ছাড়া তো আর ওর কেউ নেই।

শেষ কবে গেছেন?

মাস দুই আগেও তো গিয়েছি।

কেমন ছিলেন তখন তিনি।

বিশেষ ভাল যাচ্ছে না মাসীর শরীরটা।

আপনার বিবাহ হয়েছিল বলেছিলেন সেদিন, আপনার স্বামীর নামটা কি কোথায় যেন দেশ-বাড়ি?

হুগলী জেলায়। নাম ছিল শ্যামাকান্ত।

শ্যামাকান্ত কি?

শ্যামাকান্ত ঘোষ।

বিয়ে বোধ হয় আপনার মাসীই দিয়েছিল?

হ্যাঁ, তাছাড়া আর কে দেবে!

বিয়ে কোথায় হয়েছিল, মেমারীতে?

হঠাৎ যেন চমকে তাকাল সুভদ্রা কিরীটীর মুখের দিকে। তারপর একটা ঢোঁক গিলে বলল, হ্যাঁ।

বিয়ে হয়েছিল আপনাদের কি মতে? হিন্দু-মতে না রেজেস্ট্রি করে?

হিন্দু-মতে।

আপনি কিন্তু সত্যি বললেন না, কারণ আমি যতদূর দেখছি আপনি পালিয়ে এসেছিলেন মাসীর কাছ থেকে, তারপর হয়ত বিয়ে করেছিলেন কাউকে।

কে বললে আপনাকে আমি পালিয়ে এসেছিলাম?

যদি বলি আপনার মাসী, এবং—

কিন্তু কিরীটীর কথা শেষ হল না, কলিং বেল ক্রিং ক্রিং করে বেজে উঠল।

কে এল! আপনি একটু বসুন, দেখে আসি।

যান।

সুভদ্রা তড়িৎপদে ঘর থেকে বের হয়ে গেল। এবং কিরীটী শিকারী বিড়ালের মত সুভদ্রাকে অনুসরণ করে।

অন্ধকার প্যাসেজ।

দরজা খোলার শব্দ শোনা গেল, ফিসফিস্ করে দুটো কথা, যাও, শীগগিরী যাও এখান থেকে।

সঙ্গে সঙ্গে দরজা বন্ধ করার শব্দ।

কিরীটী চকিতে ঘরে এসে প্রবেশ করে।

একটু পরে সুভদ্রা এসে ঘরে ঢুকল।

কে এসেছিল?

কেউ না। ভুল নম্বর, অন্ধকারে অন্য বাড়িতে বেল টিপেছিলেন ভদ্রলোক।

আচ্ছা, সুভদ্রা দেবী, আজ তাহলে আমি চলি।

কিরীটী আর দাঁড়াল না, ঘর থেকে বের হয়ে গেল।

নিজেই সদর দরজা খুলে গলির মধ্যে পড়ে, বড় রাস্তায় এসে দাঁড়াল। তীক্ষ্ণদৃষ্টিতে এদিক-ওদিক তাকাতে তাকাতে পাশেই অল্প দূরে একটা ঝুল-বারান্দা দেখে তার নীচে গিয়ে দাঁড়াল। তীক্ষ্ণ সজাগ দৃষ্টিতে রাস্তার এদিক-ওদিক নজর রাখতে লাগল।

প্রায় মিনিট কুড়ি-পঁচিশ বাদে দেখা গেল সুভদ্রা গলি থেকে বের হয়ে এল।

কিরীটী সঙ্গে সঙ্গে দূর থেকে সুভদ্রাকে অনুসরণ করে।  

সুভদ্রা এদিক-ওদিক সতর্ক দৃষ্টিতে তাকাতে তাকাতে ট্রাম রাস্তার সামনে যে নিউ স্টার রেস্টুরেন্ট তার সামনে এসে দাঁড়াল। এদিক-ওদিক তাকাল, তারপর চট্‌ করে একসময় রেস্টুরেন্টের মধ্যে ঢুকে গেল সুভদ্রা।

কিরীটী চেয়ে থাকে।

রাস্তার অপর দিককার ফুটপাতে একটা খোলা জায়গায় মোটর রিপেয়ারিংয়ের কারখানা। লোকজন কারখানায় কাজ করছে, গোটা দুই গাড়ি রাস্তায় দাঁড়িয়ে, তারই একটার আড়ালে কিরীটী নিজেকে গোপন করে উল্টো দিকের ফুটপাতে রেস্টুরেন্টের দিকে চেয়ে থাকে।

রেস্টুরেন্টের খোলা দরজাপথে এবং ভিতরের উজ্জ্বল আলোয় সব কিছুই স্পষ্ট চোখে পড়ে কিরীটীর।

ভিতরে খরিদ্দারের বিশেষ একটা ভিড় দেখা যায় না। জনা তিন-চার খদ্দের বসে আছে। কিরীটী দেখতে পায় সুভদ্রা গিয়ে একটা কোণের টেবিলে চেয়ার টেনে বসল। রেস্টুরেন্টের ছোকরাটা সামনে এসে দাঁড়াল, কি যেন তাকে বলল সুভদ্রা। সুভদ্রা মাথায় ঘোমটা তুলে দিয়েছে। সুভদ্রার দৃষ্টি কিন্তু রাস্তায়, ঘন ঘন তাকাচ্ছে সে রাস্তার দিকে।

পনের মিনিট কুড়ি মিনিট প্রায় কাটতে চলেছে, সুভদ্রা কখন থেকে এক কাপ চা নিয়ে বসে আছে সেই কোণের টেবিলের চেয়ারটায়। হঠাৎ কিরীটীর দৃষ্টি সজাগ হয়ে উঠল।

একজন এদিক-ওদিক তাকাতে তাকাতে রেস্টুরেন্টের মধ্যে গিয়ে ঢুকল। এবং অল্পক্ষণ পরেই সুভদ্রাকে সঙ্গে নিয়ে বের হয়ে এল।

সুভদ্রার সঙ্গের লোকটিকে চিনতে, অন্য ফুটপাতে দাঁড়িয়েও, রেস্টুরেন্টের উজ্জ্বল আলোয় কিরীটীর এতটুকু অসুবিধা হয় না।

চোখের তারা দুটো তার উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। একটা আরামের নিঃশ্বাস নেয় কিরীটী এতক্ষণে যেন, তাহলে অনুমান তার মিথ্যা নয়।

কিরীটীর প্রয়োজন শেষ হয়ে গিয়েছিল।

হীরা সিংকে বাগবাজারের মোড়ে পেট্রোল পাম্পটার সামনে গাড়ি পার্ক করে রাখতে বলে এসেছিল, এগিয়ে গেল কিরীটী সেইদিকে।

গাড়িতে উঠে বসে কিরীটী বললে, চল হীরা সিং, কোঠি।

রাত প্রায় পৌনে এগারটায় কিরীটী তার গৃহে এসে পৌঁছল।

কোথায় গিয়েছিলে? কৃষ্ণা শুধায়, এত রাত হল যে?

সোফার উপরে আরাম করে বসতে বসতে কিরীটী বললে, দাঁড়াও, অনেকক্ষণ ধূমপান করিনি। বলতে বলতে পকেট থেকে একটা সিগার বের করে সেটায় অগ্নিসংযোগ করল।

কফি খাবে?

মন্দ কি!

বসো, কফি আনি। ঘরের মধ্যে ঠাণ্ডা মেসিন চলার দরুন ঘরটা ঠাণ্ডা ও আরামদায়ক।

Share on FacebookShare on TwitterShare on WhatsAppShare on TelegramShare on SMS
Category: সুভদ্রা হরণ
পূর্ববর্তী:
« ১০. রোগা প্যাঁকাটির মত চেহারা
পরবর্তী:
১২. কফির শূন্য কাপটা নামিয়ে »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বাংলা লাইব্রেরি : উল্লেখযোগ্য বিভাগসমূহ

লেখক ও রচনা

অনুবাদ সাহিত্য

সেবা প্রকাশনী

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

কোরআন

হাদিস

ত্রিপিটক

মহাভারত

রামায়ণ

পুরাণ

গীতা

বাইবেল

বিবিধ রচনা

বাংলা ওসিআর

Download Bangla PDF

হেলথ

লাইব্রেরি – ফেসবুক – PDF

top↑