• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • লেখক
  • My Account
  • লেখক
  • My Account
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা PDF ডাউনলোড

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

০৯. সন্ধ্যা উত্তীর্ণ হবার পরে

লাইব্রেরি » নীহাররঞ্জন গুপ্ত » কিরীটী অমনিবাস (কিরীটী রায়) » সুভদ্রা হরণ » ০৯. সন্ধ্যা উত্তীর্ণ হবার পরে

পরের দিন।

সন্ধ্যা উত্তীর্ণ হবার পরেই কিরীটী চিৎপুরে রাধারমণ পালের যাত্রা-পার্টির অফিসে গিয়ে হাজির হল। গ্রীষ্মের রাত আটটা—সন্ধ্যাও বলা চলে সবে।

ঐ অঞ্চলটা যেমন ঘিঞ্জি, তেমনি নোংরা, তেমনি মানুষের ভিড়। ট্রাম-বাস-ট্যাক্সি-রিকশা ও ঠেলাগাড়িতে যেন গিজগিজ করছে।

গাড়ি থেকে নেমে কিরীটী হীরা সিংকে বলে, আশেপাশে কোথাও পার্ক করে রাখ।  

এ অঞ্চলটা শহরের বোধ হয় সবচাইতে বেশী পুরনো। সেকেলে ধরনের সব দোতলা তিনতলা বাড়ি, গা-ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়িয়ে আছে। মধ্যে মধ্যে সরু গলি। গলির মোড়ে চা

ও পান-সিগারেটের দোকান। রাস্তাটা যেমন সংকীর্ণ তেমনি নোংরা।  

নবকেতন যাত্রা-পাটির অফিস খুঁজে পেতে বেশ একটু সময়ই লাগল। তিনতলা একটা বাড়ি, তার মধ্যে অনেক ঘর। দোতলায় নবকেতন যাত্রা পার্টির অফিস। নীচের তলাটা অন্ধকার। ভাঙা সরু সিঁড়ি, অন্ধকার। বারোয়ারী সিঁড়িতে আলোর বলতে গেলে কোন ব্যবস্থাই নেই।  

পকেট থেকে সরু পেনসিল-টচটা বের করে তারই সাহায্যে কোনমতে কিরীটী দোতলায় উঠে গেল।

আরও দুটি যাত্রা-পাটির অফিস দোতলায়। হৈ-চৈ করে গান-বাজনা আর অভিনয়ের মহলা চলেছে। সরু রেলিং-ঘেরা বারান্দা বারান্দাটা দক্ষিণ-উত্তর ঘুরে পশ্চিম-উত্তরে চলে গিয়েছে। দক্ষিণের শেষ দুটো ঘরেই নবকেতন যাত্রা-পাটির অফিস। একটা ছোকরা একগাদা মাটির ভাঁড় ও একটি চায়ের কেতলী দিয়ে বারান্দা দিয়ে আসছিল, তাকেই কিরীটী শুধাল, নবকেতন যাত্রা-পাটির অফিস কোষ্টা?

ঐ যে স্যার, এগিয়ে যান না।

ছোকরাটি কিরীটীকে কথাটা বলে নিজের কাজে চলে গেল।

কিরীটী এগিয়ে গেল।

দরজা খোলাই ছিল। ঘরের মধ্যে আলো জ্বলছিল।

দরজার পাশে দেওয়ালে টিনের সাইনবোর্ড লাগানো–নবকেতন যাত্রা-পার্টি।

ভিতরে প্রবেশ করল কিরীটী।

ঘরের মধ্যে দুটি লোক ছিল।

চিনতে তাদের কষ্ট হয় না কিরীটীর, একজন অধিকারী রাধারমণ পাল মশাই, আর একটি স্ত্রীলোক।

চন্দননগরে সে রাত্রে ঐ অভিনেত্রীটিকেও কিরীটী দেখেছিল। নাম কৃষ্ণভামিনী।

বয়স পঁয়ত্রিশ-ছত্রিশ হবে, মোটাসোটা গড়ন।

দুজনে মুখোমুখি দুটি তক্তপোশের উপর বসে নিজেদের মধ্যে ফিসফিস করে যেন কি আলোচনা করছিল, কিরীটীর পদশব্দে মুখ তুলে তাকাল।

কিরীটীর আজ ছদ্মবেশ ছিল না।

তাই বোধ হয় প্রথমটায় কিরীটীকে চিনতে পারেন না পাল মশাই। কুঞ্চিত করে তাকালেন, কি চাই?

পাল মশাই, নমস্কার।

নমস্কার। কোথা থেকে আসছেন?

কিরীটী মৃদু হেসে বললে, চিনতে পারছেন না বোধ হয়?

না।

আমি ধূর্জটি রায়।

আপনি—বিস্ময়ে পাল মশাইয়ের গলাটা যেন বাকরোধ হয়ে যায়।

হ্যাঁ, সেটা ছিল আমার ছদ্মবেশ!

ছদ্মবেশ!

হ্যাঁ, সামন্ত মশাইয়ের আমন্ত্রণেই ঐ ছদ্মবেশে সেদিন চন্দননগরে আমায় যেতে হয়েছিল।

বুঝলাম না ঠিক। আমার আসল নামটা হয়তো শুনে থাকবেন—কিরীটী রায়।

রহস্যানুসন্ধানী কিরীটী রায়!

হ্যাঁ।

তা আপনি–

বললাম তো, সামন্ত মশাইয়ের কেমন ধারণা হয়েছিল তাঁর জীবন বিপন্ন, তাই তিনি আমার শরণাপন্ন হয়েছিলেন।

তথাপি রাধারমণ পালের নিজেকে সামলে নিতে একটু সময় লাগল। কৃষ্ণভামিনীও চেয়ে ছিল কিরীটীর মুখের দিকে।

কিরীটা আবার বললে, সেদিন বলেছিলাম আসব এখানে—

ও হ্যাঁ হ্যাঁ, মনে পড়েছে। বসুন, বসুন।

ঘরটি মাঝারি সাইজের, একধারে একটি তক্তপোশ পাতা সতরঞ্চি বিছানো, গোটাকয়েক তাকিয়া, মাঝখানে একটি টানাওয়ালা নীচু ডেস্ক।

অন্য পাশে একটি কাঠের আলমারি। খানকয়েক চেয়ার ও টুল।

দেওয়ালে দু-তিনটে ক্যালেণ্ডার, একটি গ্রুপ ফটো।

ঘরের মধ্যে বেশ একটি উজ্জ্বল শক্তির বাতি জ্বলছিল।

রাধারমণ পাল তক্তপোশ থেকে নেমে দাঁড়িয়েছিলেন ইতিমধ্যে। বললেন, বসুন রায় মশাই।

আপনার দলের আর সবাইকে দেখছি না?

সবাই আছে পাশের ঘরে। রাধারমণ পাল বললেন, ভামিনী, শঙ্করকে ডেকে চায়ের কথা বল।

ব্যস্ত হবেন না পাল মশাই। চায়ের এখন প্রয়োজন নেই। কিরীটী বললে।

দল বোধ হয় উঠেই যাবে রায় মশাই। রাধারমণ বললেন এরপর।

কেন?

আর কেন—শ্যামল চলে যাচ্ছে, নোটিস দিয়েছে, সামন্ত মশাই নেই, বুঝতেই পারছেন শ্যামলও চলে গেলে–

সুভদ্রাও কি নোটিস দিয়েছে নাকি? কিরীটী শুধাল।

না, দেয়নি এখনও, তবে শ্যামল না থাকলে সুভদ্রাও যে থাকবে না সে তো জানা কথাই। তা বটে! আর সুজিতবাবু?

না, ও বোধ হয় যাবে না। হরিদাস চলে গেল, শ্যামল আর সুভদ্রা চলে গেলে কাকে নিয়ে আর পালা গাওয়াব?

ভাল কথা, দোলগোবিন্দবাবুর কোন সংবাদ পেলেন?

সে ফিরে এসেছে। এসেছে!

তা সেদিন রাত্রে হঠাৎ গা-ঢাকা দিয়েছিলেন কেন?

ভয়ে।

কিরীটী মৃদু হাসল।  

সেই আলোচনাই করছিলাম ভামিনীর সঙ্গে বসে। একদিন আমি, হরিদাস আর কৃষ্ণভামিনী তিনজনে মিলে দল গড়েছিলাম। আমার আর হরিদাসের আধাআধি বখরা। শেষ পর্যন্ত হরিদাস বখরা বেচে দিল আমাকে।

হরিদাসবাবুর মুখে সে-কথা শুনেছি।

শুনেছেন!

হ্যাঁ।

কি যে হল, হঠাৎ বখরা বেচে দিল।

সবাইকে আজ এখানে উপস্থিত থাকতে বলেছিলাম—  

সবাই এসেছে—সবাই পাশের ঘরে আছে, কার কার সঙ্গে আপনি কথা বলতে চান বলুন, আমি ডাকছিনা, সবাইকে ডাকব?

সবাইকে ডাকার একসঙ্গে প্রয়োজন নেই, সকলকে আমার প্রয়োজনও নেই। আচ্ছা সেরাত্রে হরিদাসবাবুর সাজঘরের পাশের দুটি সাজঘরে কারা কারা ছিল বলতে পারেন?

হরিদাসের সাজঘরের ডান দিকের সাজঘরে ছিল সুজিত আর কৃষ্ণধন।

কৃষ্ণধন?

হ্যাঁ, কৃষ্ণধন চাটুজ্যে। ঐ যে লম্বা ঢ্যাঙা মত, নায়কের বন্ধুর রোল করেছিল নাটকে!

হ্যাঁ, মনে পড়েছে। আর বাঁদিককার ঘরে?

সুভদ্রা আর এই কৃষ্ণভামিনীর সাজঘর ছিল। আর বাকি সব একটা বড় সাজঘরে ছিল। মধ্যবর্তী দরজা ছিল একটা দুঘরের মধ্যে।

কিরীটী কি যেন চিন্তা করে।

ময়না তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী হরিদাস সামন্তর মৃত্যু হয়েছিল রাত সাড়ে দশটা থেকে সাড়ে এগারোটার মধ্যে, অর্থাৎ তৃতীয় অঙ্কের মাঝামাঝি কোন এক সময়ে। পালা শুরু হয়েছিল ঠিক রাত সাড়ে সাতটায়।

পাল মশাই!

আজ্ঞে?

রাত সাড়ে দশটা থেকে সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত—আপনি কোথায় ছিলেন ঐ এক ঘণ্টা সময়?

ঠিক মনে পড়ছে না।

তৃতীয় অঙ্ক শুরু থেকে মাঝামাঝি পর্যন্ত সময়টা কোথায় ছিলেন মনে করে দেখুন!

আমি প্রথম দিকে আসরেই ছিলাম, তারপর হঠাৎ মনে পড়ল হরিদাস একশো টাকা চেয়েছিল, সেই টাকাটা দেবার জন্য নিজের ঘরে চলে আসি।

সেই সময় সে ঘরে আর কে ছিল?

আমি আর দোলগোবিন্দবাবু।

দোলগোবিন্দবাবু তাঁর সাজঘরে না থেকে আপনার ঘরে ছিলেন কেন?

তার পার্ট হয়ে গিয়েছিল, তাই তার সাজঘরে না থেকে আমার ঘরে এসে বিশ্রাম নিচ্ছিল বোধ হয়।

ভাল কথা, পাল মশাই—

বলুন?

দোলগোবিন্দবাবুর রেস খেলা অভ্যাস আছে, তাই না?

হ্যাঁ, ঐ ঘোড়া রোগেই তো ওর সব খেয়েছে। হরিদাসের ছিল মদ আর মেয়েমানুষ, আর দোলগোবিন্দর মদ আর ঘোড়া। নচেৎ দুজনেরই অসাধারণ অভিনয়-প্রতিভা ছিল।

দুজনের মধ্যে খুব সদ্ভাব–মানে সম্প্রীতি ছিল বুঝি?

তা তো ছিল বলেই মনে হয়।

দোলগোবিন্দবাবুকে হরিদাসবাবু প্রায়ই টাকা ধার দিতেন, তাই না?

দিত, কিন্তু শুনলেন কোথায়?

শুনেছি। এবং সে টাকা তিনি শোধ করতেন না।

রেস খেলে সব ওড়াত, টাকা শোধ করবে কোথা থেকে?

টাকা কখনও দোলগোবিন্দবাবু শোধ করতেন না, অথচ হরিদাসবাবু তাঁকে টাকা দিয়েই যেতেন!

কি জানি মশাই, তাই তো দিত।

আচ্ছা পাল মশাই, সুজিতবাবুর সঙ্গে দোলগোবিন্দবাবুর সম্প্রীতি কেমন ছিল?

দুজনের বলতে পারেন সাপে-নেউলের সম্পর্ক, ঝগড়াঝাঁটি লেগেই থাকত।

আর একটা কথা–বলতে বলতে কিরীটী পকেট থেকে কাগজের একটা ভাঁজ-করা টুকরো বের করল, আপনি তো হরিদাস সামন্তর অনেক দিনের পরিচিত, দেখুন তো এই লেখাটা—তাঁরই হাতের লেখা কিনা?

দেখি। রাধারমণ পাল ভাঁজ-করা কাগজটা হাতে নিলেন, চোখে চশমা দিয়ে বেশ ভাল করে দেখলেন কিছুক্ষণ, তারপর বললেন, এটা কোথায় পেলেন?

মনে নেই। সে-রাত্রে শ্যামলবাবু দিয়েছিলেন—এই সেই চিরকুট যেটা রাধা দেবী শ্যামলের হাতে দেবার জন্য চাকর ভোলাকে দিয়েছিল।

হ্যাঁ, মনে পড়েছে। চিরকুটে লেখা-শ্যামল, একবার দেখা করবে সময় পেলেই, জরুরী দরকার।

কি মনে হয় পাল মশাই, লেখাটা সামন্ত মশাইয়েরই তো?

সেই রকমই তো হাতের লেখা দেখে মনে হচ্ছে।

ঠিক বলতে পারছেন না? আচ্ছা, হরিদাসবাবুর কোন হাতের লেখা আপনার কাছে আছে?

সে রকম কিছু নেই।

কোন চিঠি বা—

দাঁড়ান, মনে পড়েছে, সুভদ্রা হরণ নাটকের পাণ্ডুলিপির মধ্যে মধ্যে হরিদাসের হাতে correction ও suggestion লেখা আছে, যা সে রিহার্সেলের সময় লিখেছিল!

দেখতে পারি একবার নাটকের পাণ্ডুলিপিটা?

নিশ্চয়ই। ভামিনী, আলমারি থেকে পাণ্ডুলিপিটা বার করে দাও তো। এই নাও চাবি।

পাল মশাই পকেট থেকে একটা চাবির গোছা বের করে দিলেন।

কৃষ্ণভামিনী নিঃশব্দে উঠে গিয়ে চাবি দিয়ে আলমারি খুলে নাটকের পাণ্ডুলিপিটা বের করে

র করে এনে দিল।

কিরীটী উল্টে-পাল্টে কিছুক্ষণ কয়েকটা পাতা দেখল, তারপর বললে, পাল মশাই!

বলুন।

পাণ্ডুলিপিটা আমি নিয়ে যাব।

নিয়ে যান ও অভিশপ্ত পাণ্ডুলিপি, ও এঘরে থাকলে হয়ত আরও অমঙ্গল হবে।

কৃষ্ণভামিনী দেবী!

কিরীটীর ডাকে মহিলাটি ওর মুখের দিকে তাকাল।

এক কাপ চা খাওয়ান।

কৃষ্ণভামিনী ঘর থেকে বের হয়ে গেল।

পাল মশাই!

আজ্ঞে?

আমার দুটো ঠিকানা চাই।

ঠিকানা!

হ্যাঁ, সুভদ্রা ও হরিদাসবাবু কোথায় থাকতেন সেই বাড়ির ঠিকানা, আর সুজিতবাবুর বাসার ঠিকানা।

সুভদ্রা আর হরিদাস পাল স্ট্রীটে থাকত—তিন/দুই, আর সুজিত কালীঘাটে থাকে, মহিম হালদার স্ট্রীটে।

খাতা দেখে অতঃপর সঠিক ঠিকানা দুটো বলে দিলেন রাধারমণ, কিরীটী টুকে নিল নোটবুকে।

আর একটা কথা—

বলুন?

সুজিতবাবুই তো একদিন সুভদ্রাকে আপনার দলে এনেছিলেন?

হ্যাঁ।

এবারে দোলগোবিন্দবাবুকে একবার ডাকুন।

আর কাউকে?

না।

রাধারমণ পাল ঘর থেকে বের হয়ে গেলেন এবং একটু পরে দোলগোবিন্দকে নিয়ে এসে ঢুকলেন।

Share on FacebookShare on TwitterShare on WhatsAppShare on TelegramShare on SMS
Category: সুভদ্রা হরণ
পূর্ববর্তী:
« ০৮. গৃহে পৌঁছাতে কৃষ্ণা বললে
পরবর্তী:
১০. রোগা প্যাঁকাটির মত চেহারা »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বাংলা লাইব্রেরি : উল্লেখযোগ্য বিভাগসমূহ

লেখক ও রচনা

অনুবাদ সাহিত্য

সেবা প্রকাশনী

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

কোরআন

হাদিস

ত্রিপিটক

মহাভারত

রামায়ণ

পুরাণ

গীতা

বাইবেল

বিবিধ রচনা

বাংলা ওসিআর

Download Bangla PDF

হেলথ

লাইব্রেরি – ফেসবুক – PDF

top↑