• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • নতুন সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • পুরানো সব ক্যাটাগরি
  • My Account →
  • নতুন সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • পুরানো সব ক্যাটাগরি
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

০৭. বাইরে বের হওয়া নিয়ে

লাইব্রেরি » তসলিমা নাসরিন » তসলিমা নাসরিনের উপন্যাস সমগ্র » ভ্রমর কইও গিয়া » ০৭. বাইরে বের হওয়া নিয়ে

আমার বাইরে বের হওয়া নিয়ে আলতাফ কখনও আপত্তি করেনি। কিন্তু আজ যখন বলি–আমি গুলশান মার্কেটে যাব। আলতাফ বলে–আমি বিকেলে এসে নিয়ে যাব।

–কেন, আমি কি একা যেতে পারি না?

–তা পারবে না কেন? তুমি অনেক কিছুই পার।

–তবে একা যেতে না করছ কেন?

–আমার ইচ্ছে।

–তোমার ইচ্ছে হলেই হবে? আমার কি একটুও ইচ্ছে থাকতে নেই?

–তোমার ইচ্ছের কমতি হচ্ছে কোথায় শুনি! শাড়ি গয়না সব দিয়ে ভ তোমাকে?

–শাড়ি গয়না দাও কেন? আমি তো বলছি না আমার জন্য এইসব নিয়ে এস। এগুলো না হলে আমি মরে যাব।

–মুখে না বললেও মনে মনে ইচ্ছে আছে জানি।

–ভুল জানো। ও তোমার ভুল একটা ধারণা। ভাবো মেয়ে মাত্রই শাড়ি গয়নার পাগল। দাও বলেই মেতে থাকি এসব নিয়ে। তি;

–মেতে থাকার জন্য আর কী আছে মেয়েদের? বাড়ি ঘর সামলাবে। বাচ্চা বাচ্চা মানুষ করবে আর সাজগোজ তো করতেই হবে।

–কেন করতে হবে? না সাজলে আমি যে হীরা সেই হীরা কি আর থাকব না?

–তা হয়ত থাকবে। তবে রূপেরও তো দাম আছে। রূপের জন্যই তো…..

–রূপ মানে?

–রূপ ঠিক রাখতে হবে না। মেয়ে হয়েছ, বোঝ না?

–রূপ ঠিক না রাখলে কী হবে?

–বিয়ে হবে না। লোকে পছন্দ করবে না।

–লোকের পছন্দের জন্যই বুঝি মেয়েরা?

–আমি পছন্দ না করলে কী গতি হত তোমার?

–কিছু একটা হত নিশ্চয়ই।

–হত। ওরকমই হত। এত আরাম আয়েশ হত না। সারাদিন চুলোর পাড়ে থাকতে হত। স্বামী শাশুড়ির মার খেতে হত।

আমি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলি–হ্যাঁ, এখন তো স্বামী শাশুড়ির আদর পেয়ে একেবারে মরে যাচ্ছি। তোমরা খুব সুখ দিচ্ছো আমাকে। এত সুখী আমি, তারপরও আমার দুঃখ করা মানায় না। আমি খুব বাজে মেয়ে। খুব লোভী মেয়ে। তাই না?

এ কথায় আলতাফ চুপ হয়ে যায়।

আমি আবার কথা পাড়ি–তুমি কি চাও না আমি একা কোথাও যাই!

–না।

–ঠিক আছে আমাকে বাবার বাড়ি রেখে এস।

–কেন, ও বাড়িতে যাবে কেন শুনি!

–ওখানে আমি থাকব কদিন।

–সারাজীবন তো থাকলেই ওখানে। আবার ওখানে থাকার কী আছে!

–সেটা আমি জানি কী আছে। তুমি তো আর নিজের বাড়ির বাইরে থাকছ না, তুমি কী বুঝবে।

–কদিন থাকতে চাও?

–আমার যতদিন ইচ্ছে। আমি একটু রাগ দেখিয়েই বলি।

–তোমার যা ইচ্ছে, তাই করতে চাও?

–যা ইচ্ছে তাই করা কি খুব খারাপ জিনিস? আমার ইচ্ছে গুলো তো এত খারাপ নয়।

–ভাল আর দেখি কোথায়?

আলতাফ বলে আর এদিক ওদিক ঘটে। শাশুড়ির ঘরে যায়। ওখানে তাদের গোপন শলাপরামর্শ হয়। একসময় কখন অফিসে চলে যায়। আমাকে বলেও যায় না। বিকেলে ফিরলে বলি–আজ রুবিনা ভাবীর বাসায় যাব।

-কেন?

–ইচ্ছে হচ্ছে।

–বাজে ইচ্ছে যেন আর না হয়। ওই ম হলা তোমাকে খারাপ বানাচ্ছে।

–ওর কোনও দোষ নেই।

–দুই শয়তান মিলে নোংরা কথার আড্ডা বসিয়েছিলে। আবার বলছ দোষ নেই।

আমার আর কথা বলতে ইচ্ছে করে না। কী কথা বলব? আলতাফকে দূরের, খুব দূরের কেউ মনে হয়। সে যে আমার কাছের মানুষ, আপন মানুষ, মনেই হয় না। আলতাফের আচার আচরণ ভাষা সব বদলে গেছে। ও যে রেগে গেলে কী কুৎসিৎ হতে পারে, কী অশ্লীল ভাষায় কথা বলতে পারে তা ওকে না রাগালে আমার জানা হত না। একা একটি বাড়িতে আমার দম বন্ধ লাগে। শ্বশুর শাশুড়িও আমাকে তেমন কাছে ডাকেন না। তারা ধরেই নিয়েছেন বউ সংসারি না, দেমাগি, উদাসিন, নাচ উঁচু। শাশুড়ির ঘরে গেলে আমাকে বলেন–নামাজ টামাজ তো মনে হয় পড়ই না। জানো পড়তে নাকি মা বাপ কিছু শেখায়নি। আমি বলি–শিখিয়েছে, কিন্তু পড়ি না। ইচ্ছে হয় না। তিনি মেজাজ খারাপ করে বলেন–এত উচ্ছংখল হলে কী করে চলবে! আমি চুপচাপ চলে আসি। নামাজ রোজা না করা মানে যে উচ্ছংখল হওয়া তা আমি মানতে পারি না। শাশুড়ির ভাবনা চিন্তার সঙ্গে আমার ভাবনা মেলে না, মেলাতে পারি না। দুরত্ব অনুভব করি অনেক।

বাড়িতে ফোনই একমাত্র সঙ্গী আমার। বাবা মা, ভাই ভাবী, পুরানো বান্ধবীদের সঙ্গে কথা বলি। বাবা মা বলেন–মানিয়ে নিতে চেষ্টা কর। ঠিক হয়ে যাবে। ভাই বলে–প্রথম প্রথম এডজাস্ট হতে চায় না, পরে দেখবি সব ঠিক। সম্পর্কটা আসলে অভ্যেসের ব্যাপার। বান্ধবীরা বলে–তুই তো খুব সুখে আছিস শুনেছি, চমৎকার স্বামী পেয়েছিস। কী হ্যাঁণ্ডসাম ছেলেরে বাবা। রুমা নামে এক বান্ধবী বলে খুব আদর করে তোকে, তাই না? সুন্দরী বউ করবে না! আমাদের মত অসুন্দর মেয়েদের যে কী অবস্থা হবে!

বিবাহিত বান্ধবীরা কিন্তু ঘুরে ফিরে সেই প্রশ্নেই যায়–সারাদিনে ক’বার হয় রে তোদের?

প্রশ্ন শুনে আমার আবার জেগে ওঠে সেই বোধ, শরীর থেকে কষ্ট দলা পাকিয়ে পাকিয়ে কণ্ঠে ওঠে। বলি–ক’বার আর! জানি না।

বীদের মধ্যে শারমিনের সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব, গাঢ়। সে বলে, হেসেই বলে–লুকোচ্ছিস?

–লুকোনোর কী আছে। এসব আলোচনা আমার ভাল লাগে না।

–বলিস কী এখনও বাচ্চা টাচ্চা নেই, এসব কথা ভাল না লাগার কী আছে! বিয়ের পর অন্তত পাঁচ ছ বছর তো এই সুখেই যাবে।

— কিসের সুখ? আমি সুখ বুঝি না।

–মানে?

–মানে বুঝি না। শুধু কষ্ট হয়।

–কষ্ট হয়? তাহলে ডাক্তার দেখা। কষ্ট হওয়ার তো কথা নয়।

–ডাক্তার দেখাবে না আলতাফ। জেদ ধরেছে। আমি দেখিয়েছিলাম। তাতেই ক্ষেপেছে।

–বলিস কী! আমরা ভাই সুখে আছি। এধরণের কোনও প্রব্লেম নেই। যদিও অন্য প্রব্লেম আছে।

–কী প্রব্লেম?

–পড়াশুনা করতে চাচ্ছি, হাসবেণ্ড দিচ্ছে না। চাকরি করতে চাচ্ছি, তাও না করছে। সারাদিন বাড়িতে বসে থাকতে ভাল লাগে না।

–আমারও ভাল লাগে না। চল দুজন মিলে কিছু একটা করি। পড়ালেখা নয়ত অন্য কোনও কাজ টাজ।

–চমৎকার। তোর হাসবেণ্ডকে বল, আমিও বলি। ঘরে বসে মনে হয় জং ধরে যাচ্ছে।

সারাদিন ওই কথাই মনে ঘোরে ফেরে। কিছু একটা কাজ যদি করা যেত। অথবা পড়াশুনাই। আলতাফ অফিস থেকে ফিরলে কথা পাড়ি। বলি–শোন, সারাদিন ঘরে বসে থাকতে ভাল লাগে না। কিছু একটা করা উচিত আমার।

বিছানায় গা এলিয়ে আলতাফ বেনসন এণ্ড হেজেস ধরায়। ঠোঁটে শলা চেপে বলে–কি করা উচিত?

–বি এ তে ভর্তি হয়ে যাই।

–এটা আবার কার বুদ্ধিতে হল? রুবিনা এসেছিল নাকি?

–না। আমার বান্ধবীরা, যাদের অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে গেছে, ওরা আবার পড়ালেখা করছে। কলেজে ইউনিভার্সিটিতে যাচ্ছে।

–বাহ শখ কত। পিঁপড়ের পাখা গজিয়েছে।

আমি চুল আঁচড়াচ্ছিলাম। চিরুনি ধরা হাত কেঁপে ওঠে সামান্য। বুকের মধ্যে যেন উপুড় হয়ে পড়ে এক বাটি ঠাণ্ডা জল। ম্লান কণ্ঠে বলি–তুমি খুব বদলে যাচ্ছ।

–বদলাব না। যেমন কুকুর তেমন মুগুর। শব্দগুলো চিবিয়ে চিবিয়ে বলে আলতাফ। আলতাফ ইচ্ছে করে হুল ফোঁটানো কথা বলে। আমার মনে হয় ও চায় আমি ওর কথায় কষ্ট পাই। ওর খাই পরি তাই ইচ্ছে না হলেও শরীর পেতে দিতে হয় বিছানায়, ও তার মন মত যেন খেলা করতে পারে। দিন দিন একটা জড় বস্তুতে পরিণত হই আমি। আমার বোধ আমার আবেগ উচ্ছাস সব লোপ পায়। আলতাফের প্রতি ভালবাসা বলতে কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। থাকে একধরণের অভ্যেসের বসবাস। বসবাস তো যে কারও সঙ্গেই হতে পারে। যে কোনও উদ্ভিদ অথবা মানুষের সঙ্গেই। আলতাফকে পৃথক কিছু মনে হয় না আমার। যে কোনও ক্লীব বা যে কোনও প্রাণীই হতে পারে সে। আমার জন্য সে কোনও অপরিহার্য কিছু নয়। আমার মনে হয় ও না হলেও আমার চলবে। আমার বেঁচে থাকায় অথবা যেমন আছি তেমন থাকায় সামান্য ছেদ পড়বে না।

Category: ভ্রমর কইও গিয়া
পূর্ববর্তী:
« ০৬. ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত
পরবর্তী:
০৮. বাড়িতে আমার এক মামাতো ভাই »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বাংলা লাইব্রেরি : উল্লেখযোগ্য বিভাগসমূহ

লেখক ও রচনা

অনুবাদ সাহিত্য

সেবা প্রকাশনী

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

কোরআন

হাদিস

ত্রিপিটক

মহাভারত

রামায়ণ

পুরাণ

গীতা

বাইবেল

বিবিধ রচনা

বাংলা ওসিআর

Download Bangla PDF

হেলথ

লাইব্রেরি – ফেসবুক – PDF

top↑