সাতকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায় (১৭-১০-১৮৮৯ — ৬-২-১৯৩৭) বেহালা–চব্বিশ পরগনা। মন্মথনাথ। পৈতৃক নিবাস মাহীনগর। বাল্যকালে গুপ্ত বিপ্লবী দলে যোগ দেন। হরিনাভি স্কুলের ছাত্রাবস্থায় ১৯০৫ খ্রী. স্যার সুরেন্দ্রনাথের সংবর্ধনায় শোভাযাত্রা করার ফলে নরেন ভট্টাচাৰ্য (মানবেন্দ্রনাথ রায়) প্রমুখ যে ৬ জন ছাত্র স্কুল থেকে বিতাড়িত হন, তিনি তাঁদের অন্যতম। তিনি ক্রমে যুগান্তর দলের সংগঠকরাপে দেশের নেতৃস্থানীয় বিপ্লবীদের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসেন। ১৯১৪ খ্রী. আমেরিকা থেকে বজবজে আগত ‘কোমাগাতামারু’ জাহাজের গদর বিপ্লবী দলকে সাহায্য করেন। মহাযুদ্ধের সময় গেরিলা যুদ্ধের প্রয়োজনে তিনি নানাপ্রকার ম্যাপ এবং নকশাও সংগ্রহ করেছিলেন। ১৯১৫ খ্রী. জার্মান অস্ত্রবাহী জাহাজের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য বাঘা যতীন কর্তৃক হ্যালিডে দ্বীপে প্রেরিত হন। তাঁর ওপর অস্ত্ৰ খালাসের দায়িত্ব ছিল। নানা কারণে জাহাজটি এসে পৌঁছতে পারেনি। এই বছরই আগস্ট মাসে বাঘা যতীনের ব্যক্তিগত দূতরূপে নিরালম্ব স্বামীর কাছে পরামর্শের জন্য প্রেরিত হন এবং সেপ্টেম্বর মাসে তিনি যুগান্তর দলের বৈদেশিক বিভাগের ভারগ্রহণ করেন। এই ষড়যন্ত্র শেষ পর্যন্ত ফলপ্রসূ হয়নি। ৪-৩-১৯১৬ খ্রী. তিনি ধরা পড়েন। প্ৰথমে আলীপুর জেলে ছিলেন, পরে উত্তরপ্রদেশের নৈনী জেলে প্রেরিত হন। এখানে রাজবন্দীদের ওপর দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদে ৬৭ দিন অনশন করেন। ১৩-১-১৯২০ খ্রী. মুক্তি পেয়ে সংগঠনের কাজে মন দেন। পুনরায় ১৯২৪–২৭ খ্রী. কারারুদ্ধ ছিলেন। ১৯৩০ খ্রী. টেগাট হত্যা ব্যাপারে তিনি দলীয় কর্মীদের পরিকল্পনা দেন। এই বছরই তৃতীয়বার গ্রেপ্তার হয়ে স্বগৃহে অন্তরীণ থাকেন। ১৯৩২ খ্ৰী. তাকে দেউলী বন্দীশিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়। অৰ্শরোগাক্রান্ত হয়ে সেখানেই মারা যান। গার্লিকনিধনকারী প্ৰখ্যাত কানাই ভট্টাচাৰ্য তাঁর সুযোগ্য অনুগত শিষ্য ছিলেন।
Leave a Reply