রামপ্রসন্ন বন্দ্যোপাধ্যায় (২৯-৩-১২৭৮ — ১৭-১-১৩৩৬ ব.) বিষ্ণুপুর। সঙ্গীতজ্ঞ অনন্তলাল। খ্যাতনামা ধ্রুপদী ও যন্ত্রশিল্পী। তাঁর প্রথম সঙ্গীতশিক্ষা পিতারকাছে এবং পরে গোপালচন্দ্ৰ চক্রাবতীর কাছে টপ্পা, নীলমাধব চক্রবর্তীর কাছে সেতার ও সুরবাহারে যন্ত্রসঙ্গীত শেখেন। এছাড়া তৎকালীন বহু বিশিষ্ট সঙ্গীতজ্ঞদের কাছ থেকে তিনি তাদের সাঙ্গীতিক জ্ঞান আত্মস্থ করতে সচেষ্ট ছিলেন। কর্মজীবনে তিনি প্ৰথমে বিষ্ণুপর রাজবংশের এক শাখা কুচিয়াকোলের সভাগায়ক ছিলেন; পরে নাড়াজোল রাজসভায় সঙ্গীতাচাৰ্যরূপে যোগ দেন। নাড়াজোলের মহারাজার মৃত্যুর পর তিনি বিষ্ণুপরের পিতৃ-প্রতিষ্ঠিত সঙ্গীত বিদ্যালয়টিকে ‘অনন্ত সঙ্গীত বিদ্যালয়’ নামাঙ্কিত করে সম্পূর্ণ নুতনভাবে তার পরিচালনার দায়িত্ব গ্ৰহণ করেন। তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠ কীর্তি বাংলা ভাষায় রাগ-সঙ্গীতের সুর-সংগ্রহের বিখ্যাত গ্ৰন্থ ‘সঙ্গীতমঞ্জরী’ প্রণয়ন। রচিত। অন্যান্য গ্ৰন্থ: ‘মৃদঙ্গ দৰ্পণ’, ‘তবলা তরঙ্গ’ ও ‘এসরাজ তরঙ্গ’। ‘সঙ্গীত প্ৰবেশিকা’ পত্রিকায় তাঁর লিখিত বিভিন্ন গানের স্বরলিপি প্ৰকাশিত হয়। তিনি প্ৰাচীন হিন্দী গীতগুলি সংগ্রহ করে তার যথাসাধ্য নির্ভুল স্বরলিপি রচনা করেন। হিন্দী (ব্ৰজভাষা) ও বাংলায় কয়েকটি গানও তিনি লেখেন। প্রখ্যাত সঙ্গীতবিদ গোপেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, গোকুলচন্দ্ৰ নাগ, গৌরহরি কবিরাজ প্রভৃতি অনেকেই তাঁর কাছে সঙ্গীত শিক্ষা করেন। তাঁর পুত্রদের (পরেশচন্দ্র, ভূপেশচন্দ্র, যোগেশচন্দ্র ও অশেষচন্দ্ৰ) সঙ্গীতশিক্ষার গুরুও তিনি ছিলেন।
Leave a Reply