রসিককৃষ্ণ মল্লিক (১৮১০ –- ৮-১-১৮৫৮) সিন্দুরিয়াপট্টি-কলিকাতা। নবকিশোর। হিন্দু কলেজের কৃতী ছাত্র এবং ইয়ং ক্যালকাটা ও ‘ফাইভ ফ্লাওয়ার্স অফ হিন্দু কলেজ’-এর অন্যতম রসিককৃষ্ণ ডিরোজিওর দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন। ১৮৩০ খ্রী. পাঠ-সমাপ্তির পর পটলডাঙ্গায় ডেভিড হেয়ারের স্কুলে শিক্ষকতা এবং রাজা দক্ষিণারঞ্জনের ‘জ্ঞানান্বেষণ’ পত্রিকার সম্পাদনা করেন। ১৮৩৭ খ্রী. ডেপুটি কালেক্টর হন। রাজা রামমোহন রায়ের ভক্ত ছিলেন। ডিরোজিওর শিষ্যরূপে ইয়ং বেঙ্গলের অন্যতম নেতা হয়ে হিন্দু ধর্মের গোড়ামি ও কুসংস্কারের বিরোধিতা করে স্কুলের চাকরি হারান এবং পিতৃগৃহ থেকে নির্বাসিত হন। কিশোরীচাঁদ মিত্র প্রবর্তিত ‘সুহৃদ সমিতি’র মাধ্যমে সমাজ-সংস্কারের কাজ করেন। ১৮৩১ খ্রী. ফ্ৰী হিন্দু স্কুল প্রতিষ্ঠা করে শিক্ষাপ্রচারে সক্রিয় হন। সরকারী অর্থ ভারতীয় জনসাধারণের শিক্ষাপ্রসারে ব্যয় না করে ঐ অর্থে পাদরী নিয়োগের সরকারী নীতির তিনি তীব্র সমালোচনা করেন। রসময় দত্তের সহযোগে ক্যালকাটা পাবলিক লাইব্রেরীর মাধ্যমে তিনি শিক্ষা প্রসারে সাহায্য করেছিলেন। আদালতে ফারসীর বদলে বাংলা ভাষা প্রবর্তনের আন্দোলনে সাফল্য লাভ করেন। সংবাদপত্র দলন আইন, ১৮৩৩ খ্রী চার্টার আইন ইত্যাদির সমালোচক ছিলেন। শাসন-ব্যবস্থায় দুনীতি ও চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সমালোচনা করেন। তিনি ভারতীয়দের দ্বারা পরিচালিত ও সম্পাদিত প্রথম ইংরেজী সাপ্তাহিক ‘পার্থেনন’ (১৮৩০) পত্রিকার অন্যতম উদ্যোক্তা, ‘জ্ঞানসিন্ধুতরঙ্গ’ পত্রিকার সম্পাদক এবং ইংরেজী ও মাতৃভাষা শিক্ষার গুরুত্বদানকারীদের অন্যতম ছিলেন।
Leave a Reply