মহম্মদ মহসীন, হাজী (১৭৩২ — ২৯-১১-১৮১২) হুগলী। পিতা পারস্যদেশীয় বণিক হাজী ফৈজুল্লা। মহসীনের মাতা নদীয়া ও যশোহরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের জায়গীরের অধিকারী মোতাহেরের পত্নী ছিলেন। মোতাহেরের মৃত্যুর পর তিনি হাজী ফৈজুল্লাকে নিকা করেন। মোতাহেরের কন্যা ময়ুজান খাতুন পিতৃসম্পত্তির অধিকারিণী ছিলেন। মহসীন ১০ বছর বয়সে সিরাজী নামে এক আরবী ভাষাবিদের কাছে আরবী ও ফারসী ভাষা শেখেন। পরে আগা মীর্জার কাছে বিদ্যাশিক্ষা করেন। কোরানে তাঁর অসাধারণ বুৎপত্তি ছিল। তাঁর হস্তলিখিত কোরান হুগলী কলেজের লাইব্রেরীতে রক্ষিত আছে। ১৭৬২ খ্রী.দেশভ্রমণে বেরিয়ে নানা জায়গায় ঘুরে মক্কা ও মদিনায় যান এবং ‘হাজী’ উপাধি লাভ করেন। ১৭৮৯ খ্রী. ভারতবর্ষে ফেরেন। ১৮০৩ খ্রী. মন্নুজনের সম্পত্তির অধিকারী হন। মহসীন দানশীলতার জন্য প্ৰসিদ্ধ ছিলেন। ৯ জুন ১৮০৬ খ্রী. একটি দানপত্র করে তিনি মুসলমানদের শিক্ষার উন্নতিকল্পে ১ লক্ষ ৫৬ হাজার টাকা আয়ের সম্পত্তি এবং মৃত্যুর পর সমুদয় সম্পত্তি ধর্মার্থে দান করেন। হুগলীর ইমামবাড়া, হুগলী কলেজ, মাদ্রাসা, মহসীন বৃত্তি প্রভৃতি তাঁরই অর্থসাহায্যে প্রতিষ্ঠিত হয়। এছাড়াও ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও হুগলীতে তাঁর অর্থে আরবী শিক্ষার জন্য বিদ্যামন্দির স্থাপিত হয়েছে।
Leave a Reply