কালীপ্রসন্ন ঘোষ, রায়বাহাদুর, সি.আই.ই. (২৩.৭.১৮৪৩ – ২৯-১০-১৯১০) ভরাকর-ঢাকা। শিবনাথ। শৈশবে ফারসী, সংস্কৃত ও বাংলা শিক্ষা শেষ করে দশ বছর বয়সে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলে ইংরেজী শেখেন। এন্ট্রান্স ক্লাসে মুগ্ধবোধ, রঘুবংশ, মেঘদূত, ভট্টি প্রভৃতি পড়েন। এর পর কলিকাতায় ইংরেজী-সাহিত্য, ইতিহাস, মনোবিজ্ঞান, নীতিবিজ্ঞান, থিওলজি প্রভৃতি এবং শেষে পাণিনি পড়তে শুরু করেন। কুড়ি বছর বয়সে ভবানীপুরে খ্ৰীষ্টধর্ম বিষয়ে বক্তৃতা প্ৰদান করে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ, রেভারেণ্ড ড্যাল প্রমুখদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। বাইশ বছর বয়সে ঢাকা ছোট আদালতের পেশকার-পদে বৃত হন। এখানে এগারো বছর কাজ করার পর ২৮ মার্চ ১৮৭৭ খ্রী. ভাওয়াল রাজ্যের প্রধান কর্মচারী নিযুক্ত হন। ১৮৭০ খ্ৰী পূর্ববঙ্গের ব্ৰাহ্ম যুবকদের মুখপত্র ‘শুভসাধিনী’ পত্রিকা এবং ১৮৭৪ খ্রী. ‘বান্ধব’ পত্রিকা সম্পাদনা ও প্ৰকাশ করেন। ভাওয়ালে অবস্থানকালে ‘সাহিত্য সমালোচনা সভা’ প্ৰতিষ্ঠা করেন। বাগ্মিতার জন্য বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাঁকে ইংরেজী ও বাংলায় বক্তৃতা দিতে হত। বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ-এর বিশিষ্ট সদস্য (১৩০১ ব.), সহসভাপতি (১৩০৪–০৭ ব.), সাহিত্য সম্মিলনের সভাপতি, অবৈতনিক ম্যাজিস্ট্রেট, ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের সভ্য ও সদর লোকাল বোর্ডের সভাপতি ছিলেন। রচিত গ্ৰন্থ ১৯টি। উল্লেখযোগ্য : ‘নারীজাতিবিষয়ক প্ৰস্তাব’ (১৮৬৯), ‘প্রভাত-চিন্তা’ (১৮৭৭), ‘নিভৃতচিন্তা’ (১৮৮৩), ‘নিশীথ-চিন্তা’ (১৮৯৬) প্রভৃতি। বঙ্গের পণ্ডিতমণ্ডলীর কাছ থেকে তিনি ‘বিদ্যাসাগর’ উপাধি পান।
Leave a Reply