অসিতকুমার হালদার (১০৭৯-১৮৯০–১৩-২-১৯৬৪) জন্ম। পারিবারিক সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথের নাতি ছিলেন। অবনীন্দ্রনাথের যে ছাত্ৰগোষ্ঠী ‘নব্য বঙ্গীয় চিত্ৰকলা’র প্রসার ঘটিয়েছিলেন তিনি ছিলেন তার অন্যতম। ১৯০৯–১৯১১ খ্রী. অজন্তা গুহাচিত্রের অনুলিপির কাজে নন্দলাল প্রমুখ কয়েকজনের সঙ্গে তিনিও ছিলেন। ১৯১১ খ্রী. শান্তিনিকেতনের অধ্যক্ষ হিসাবে কলাভবনের গোড়াপত্তন করেন। ১৯২৪ খ্রী. জয়পুর শিল্পবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ এবং ১৯২৫–৪৫ খ্রী. পর্যন্ত লক্ষ্মৌ সরকারী শিল্প মহাবিদ্যালয়ের স্থায়ী অধ্যক্ষ ছিলেন। অঙ্কিত চিত্রাবলীর মধ্যে রাসলীলা’, ‘যশোদা ও শ্ৰীকৃষ্ণ’, ‘অগ্নিময়ী সরস্বতী’, ‘কুণালের চক্ষুলাভ’, ‘ওমর খৈয়াম প্রভৃতি বিখ্যাত। বাগ-গুহাচিত্র ও যোগীমারা গুহাচিত্রের অনুলেখ্য প্রণয়নে ব্ৰতী শিল্পীদের মধ্যে তিনি অন্যতম। গ্ৰন্থ-রচনায়ও বিশেষ দক্ষতা ছিল। বাংলা সাহিত্য-রচনায় কথ্য ভাষা সুপ্রতিষ্ঠিত হবার আগেই তিনি চলিত ভাষায় লিখলেন ‘অজন্তা’ (১৩২০ ব), ‘বাগগুহা ও রামগড়’, ‘হো-দের গল্প’ (যুক্তাক্ষর-বর্জিত শিশু-গ্ৰন্থ), পাথুরে বাঁদর রামদাস ও কয়েকটি গল্প ইত্যাদি। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রদত্ত অধরচন্দ্ৰ বক্তৃতা ভারতের কারুশিল্পী’ তার উল্লেখযোগ্য গ্ৰন্থ। সংস্কৃত ‘ঋতুসংহার’ ও ‘মেঘদূত’ গ্রন্থের কাব্যানুবাদ তাঁর অন্যতম কীর্তি। তার ‘রাজগাথা’ টডের রাজস্থান অবলম্বনে রচিত, পদ্যানুবাদ গ্ৰন্থ। অল্পবয়স্কদের উপযোগী ও বয়স্কদের বাংলা এবং ইংরেজীতে তাঁর রচিত গ্ৰন্থ আছে। মূর্তিকলাতেও তাঁর অধিকার ছিল। তাঁর ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে মুকুল দে, রমেন চক্রবর্তী, প্রতিমা ঠাকুর প্রভৃতির নাম উল্লেখযোগ্য।
Leave a Reply