• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক্স
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

আমরা রং-তুলিতে সৌন্দর্যের গান গাই – মনজুরুল হক

লাইব্রেরি » বিবিধ লেখার সংকলন » সাক্ষাৎকার » আমরা রং-তুলিতে সৌন্দর্যের গান গাই – মনজুরুল হক

১৯৫৯ জাপান-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৩০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিশেষ সম্মানে ভূষিত করে বাংলাদেশের বিশিষ্ট শিল্পী মোহাম্মদ কিবরিয়াকে। ২০০২ সালে জাপান ফাউন্ডেশনের আমন্ত্রণে তাঁর দুই সপ্তাহের টোকিও ভ্রমণের সময় এই সাক্ষাৎকারটি নিয়েছিলেন মনজুরুল হক

মনজুরুল হক: আমাদের শিল্পীদের মধ্যে আপনাকে এ কারণে ব্যতিক্রমী বলা যায় যে ছবি আঁকার বাইরে অন্যান্য সামাজিক প্রসঙ্গে আপনি প্রায় নীরব থেকে গেছেন। এই নীরবতা বজায় রেখে চলার পেছনে বিশেষ কোনো কারণ আছে কি?
মোহাম্মদ কিবরিয়া: ঠিক নীরব যে থেকেছি, তা কিন্তু আমি বলব না। যেহেতু আমি শিল্পী, রং-তুলির ছোঁয়াতেই সামাজিক ভাবনাচিন্তাকে স্পর্শ করতে চেয়েছি। বলতে পারেন, আমার ছবি আমার হয়ে কথা বলেছে। শিল্পী যেহেতু সমাজবিচ্ছিন্ন কোনো অস্তিত্ব নন, তাই খুব বাস্তবসম্মতভাবেই শিল্পের মধ্য দিয়ে শিল্পীর কথা বলা হচ্ছে। আগবাড়িয়ে কথা বলার প্রয়োজন এ ক্ষেত্রে তাই আছে বলে আমার মনে হয় না।
মনজুরুল: আপনি আমাদের ছাপচিত্রকে নতুন এক শীর্ষে নিয়ে গেছেন। ছাপচিত্রের প্রতি শুরুতে আপনার আকৃষ্ট হওয়ার বিশেষ কোনো কারণ ছিল কি?
কিবরিয়া: শিল্পকলার পথে আমার যাত্রা শুরু কিন্তু ছাপচিত্র দিয়ে নয়। এই যে এমনকি টোকিওর চারুকলা ও সংগীত বিশ্ববিদ্যালয়, জাপানে যেটাকে সংক্ষিপ্তভাবে গেদাই বলা হয়, সেখানে আমার লেখাপড়ার শুরু পেইন্টিং দিয়েই। মনে পড়ে, জাপানে আসার আগে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন একসময় আমাকে বলেছিলেন, সম্ভব হলে কোনো স্কলারশিপ নিয়ে জাপানে গিয়ে ছাপচিত্রের ওপর কিছু যেন আমি শিখে আসি। আপনার হয়তো জানা আছে, পঞ্চাশের দশকে রকফেলার ফেলোশিপ নিয়ে শিল্পাচার্য কিছু দিনের জন্য জাপানে এসেছিলেন। ধারণা করা যায়, জাপানের ছাপচিত্রের উৎকর্ষ তাঁকে মুগ্ধ করে থাকবে। তবে তার পরও ঠিক ছাপচিত্র শেখার ব্রত নিয়ে যে আমার জাপানে আসা, তা কিন্তু নয়। চার দশকেরও বেশি আগের সেই ছাত্রজীবনে আমার পেইন্টিংয়ের শিক্ষক ছিলেন অধ্যাপক তাকেশি হায়াশি। আমার জন্য এটা অত্যন্ত আনন্দের যে তিনি এখনো জীবিত আছেন এবং এবারের জাপান ভ্রমণে সেই শিক্ষকের সঙ্গে আমার দেখা করার সুযোগ হয়েছে। বয়স ৯০ অতিক্রম করে গেলেও এখনো তিনি ছবি আঁকার চেষ্টা করে চলেছেন।
অধ্যাপক হায়াশির কাছ থেকে পেইন্টিংয়ের নানা কৌশল শিখে নেওয়ার প্রক্রিয়ায় ছাপচিত্রের প্রতি একসময় আমি আকৃষ্ট হই। গেদাইয়ের শিক্ষকদের মধ্যে সেই সময় ছাপচিত্রের গুরু ছিলেন অধ্যাপক হিদেও হাগিওয়ারা। তাঁর সরাসরি আনুকূল্য লাভ করেই গেদাইয়ের শিক্ষাজীবনের অনেকটা শেষ পর্যায়ে এসে ছাপচিত্রের দিকে আমি ক্রমশ ঝুঁকে পড়ি। লিথোগ্রাফের ওপর কাজ শুরু করি তখন থেকেই। অধ্যাপক হাগিওয়ারা এখন জীবিত নেই, নয় তো এবারের জাপান ভ্রমণে তাঁর সান্নিধ্য লাভ করার সুযোগ আবারও আমার হতো।
জাপানে পাঠ শেষ করে দেশে ফিরে আমি যখন চারুকলা ইনস্টিটিউটে যোগ দিই, অধ্যাপক সফিউদ্দিন আহমদ তাঁর আগে থেকেই সেখানকার গ্রাফিকস বিভাগে ছাপচিত্র শিখিয়ে আসছিলেন। ফলে চারুকলার সেদিনের শিক্ষকতা যে বাংলাদেশে আমাকে দিয়েই শুরু, তা নয়।
মনজুরুল: পেইন্টিং থেকে সরে এসে আপনি ছাপচিত্রে অনেক নতুন উৎকর্ষ দেখিয়েছেন। আপনার কি মাঝেমধ্যে পেইন্টিংয়ে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রবল হয় না?
কিবরিয়া: দেখুন, প্রিন্ট আর পেইন্টিংয়ের ব্যবধান খুবই সূক্ষ্ম। আপনি যদি বিশ্বের নামী শিল্পীদের শিল্পকর্মের দিকে চোখ বুলিয়ে নেন, তাহলে দেখবেন পেইন্টিংয়ের প্রথম সারির প্রায় সব শিল্পীই ছাপচিত্রেও সমান দক্ষতার ছাপ রেখে গেছেন। রেমব্র্যান্ট থেকে শুরু করে পিকাসো—সবাই। এঁরা কিন্তু ওই দুই মাধ্যমেই নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করেছেন। পেইন্টিংয়ের পাশাপাশি ছাপচিত্রেও কারিগরি দক্ষতার বাড়তি একটা ব্যাপার রয়েছে। ছাপচিত্রের শিল্পী শুধু রং-তুলির শিল্পীই নন, একই সঙ্গে ধাতব বস্তু নিয়ে কাজ করার দক্ষতাও তাঁর থাকা চাই। ছাপচিত্রের এই দিকটা আমার কাছে বেশ আকর্ষণীয় মনে হয়। তবে পেইন্টিং যে আমি একেবারে ছেড়ে দিয়েছি, তা নয়। টোকিওর এ প্রদর্শনীতেই আমার যে কটি ছবি দেখানো হচ্ছে, তার প্রায় সব কটি ক্যানভাসের ওপর তেলরঙে আঁকা। অবশ্য এর আগে গত জুন মাসে এখানে হয়ে যাওয়া আরেকটি প্রদর্শনীর ১২টি ছবির সবগুলোই ছিল প্রিন্ট। ফলে বলতে পারেন প্রিন্ট এবং পেইন্টিং দুই মাধ্যমেই এখন আমার প্রায় সমপর্যায়ের বিচরণ।
মনজুরুল: আপনি ব্যক্তিগতভাবে পছন্দ করেন কোন মাধ্যমটি?
কিবরিয়া: ব্যক্তিগত পছন্দের বেলায় অবশ্য ছাপচিত্রের প্রসঙ্গ চলে আসে। আপনি হয়তো জানেন, ছাপচিত্রের আবার বিভিন্ন শাখা-উপশাখা রয়েছে। আমার নিজের পছন্দ লিথোগ্রাফ আর এচিং।
মনজুরুল: বাংলাদেশে ছাপচিত্রের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কি আপনি আশাবাদী?
কিবরিয়া: খুবই আশাবাদী। অন্তত দুজন শিল্পীর নাম আমি উল্লেখ করতে পারি, দেশীয় পরিমণ্ডলের বাইরেও যাঁদের নাম এখন যথেষ্ট পরিচিত। মনিরুল ইসলাম আর শহীদ কবির—দুজনই বর্তমানে স্পেন-প্রবাসী। ছাপচিত্রে নতুন অনেক কিছু এঁরা নিয়ে এসেছেন।
মনজুরুল: আর দেশে যে তরুণেরা আছেন, তাঁদের মধ্যে কোনো সম্ভাবনা আপনি দেখেছেন?
কিবরিয়া: হ্যাঁ, তরুণদের মধ্যেও যথেষ্ট প্রতিভাবান ছাপচিত্রী রয়েছেন। রফি হক আর আহমেদ নজীর হলেন সে রকম দুজন প্রতিশ্রুতিশীল শিল্পী। আমার আশা আছে, আমাদের প্রিন্ট মাধ্যমকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে এঁরা সহায়ক হবেন।
মনজুরুল: আপনার তো এবার প্রায় কুড়ি বছর পর জাপানে আগমন। সময়ের এই ব্যবধানে জাপানের বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন আপনার চোখে পড়ছে?
কিবরিয়া: পরিবর্তন তো দুই রকমের হয়। এর একদিকে রয়েছে বাহ্যিক পরিবর্তন, যেটা সহজেই আমাদের চোখে ধরা পড়ে। সেদিক থেকে জাপানের বিবর্তন বলা যায় কখনোই থেমে নেই। টোকিওর চারদিক জুড়েই গড়ে উঠছে বিলাসবহুল বিশাল আকারের দালানকোঠা। পাশাপাশি পরিবহনব্যবস্থাও নানা রকম রদবদলের সূচনা করে চলেছে। তবে বাহ্যিক এই রদবদল লক্ষ করে পরিবর্তনের অন্য দিকটাকে উপেক্ষা করা ঠিক হবে না, যে দিকটায় রয়েছে মানুষের নৈতিক মূল্যবোধ, প্রজ্ঞা আর সমাজজীবনের নানারকম যোগ-বিয়োগের হিসাব-নিকাশ।
জাপান সবসময়ই ছন্দোবদ্ধ জীবনের এক দেশ। ৪০ বছর আগে জীবনের ছন্দময় যে গতি এখানে আমি লক্ষ করেছি, চার দশকের ব্যবধানে এবারের স্বল্পকালীন এই ভ্রমণে এসে সেই দিকটায় কোনো পরিবর্তন আমার চোখে পড়েনি। এটা নিঃসন্দেহে আনন্দের কথা। জাপানের লোকজন আজও সেই আগের মতোই সময় সম্পর্কে ভীষণ সচেতন। অন্যের জন্য কোনো রকম বিড়ম্বনা যেন দেখা না দিতে পারে, সেই বোধ এদের মধ্যে সার্বক্ষণিকভাবে উপস্থিত। কাজে কোনো রকম গাফিলতি কিংবা অবহেলা এদের মধ্যে একেবারেই নেই। এবং পারফেকশনিস্ট বলতে যা বোঝায়, এরা এখনো ঠিক তাই রয়ে গেছে। ফলে বাহ্যিক পরিবর্তন সত্ত্বেও ভেতরের যাবতীয় ভালো দিকগুলোকে জাপান কোনো অবস্থাতেই বর্জন করেনি। আমার মনে হয় জাপানের চমকপ্রদ অর্থনৈতিক সাফল্য আর বাণিজ্যিক প্রসারের বাইরে দৃষ্টি দিয়ে এ দেশের লোকজনের জাতীয় চরিত্রের অনুকরণযোগ্য গুণাবলি আমাদের আরও ভালোভাবে বুঝে ওঠা দরকার। আমাদের সংঘাতময় সমাজে এ রকম কিছুর অনুকরণ হয়তো বা একসময় সঠিক পথের নির্দেশনা দিতে পারবে।
মনজুরুল: চারুকলার ওপর উচ্চশিক্ষা লাভ করতে আমাদের শিল্পীদের জাপানে আসার সূচনা বলা যায় আপনাকে দিয়েই। স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের আবির্ভাবের পর সে ধারায় আরও অনেক বেশি প্রাণের সঞ্চার হয়েছে। অনেকেই এখন চারুকলায় দক্ষতা রপ্ত করতে জাপানে আসছেন। তার পরও বলতে হয়, আপনার এবং পরবর্তী প্রজন্মের শিল্পী কাজী গিয়াসউদ্দিনের বাইরে তেমন উল্লেখযোগ্য কাউকে আমরা এখনো পাইনি, সৃজনশীলতার মূল্যায়নের মাপকাঠিতে সত্যিকার উচ্চতায় যাঁদের স্থান দেওয়া যেতে পারে। এর কি বিশেষ কোনো কারণ আছে?
কিবরিয়া: আমার তো মনে হয়, এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে দেখার জন্য আমার চেয়ে আপনি অনেক বেশি উপযুক্ত অবস্থানে আছেন। আমরা শিল্পীরা সবাই গভীর নিষ্ঠা নিয়েই ছবি এঁকে চলেছি। কিন্তু আমাদের ছবি কতটুকু আবেদন রাখতে পারছে, তা বাছবিচার করে দেখার দায়দায়িত্ব শিল্পসমালোচকদের ওপরই বর্তায়।
তার পরও বলতে হয়, জ্ঞানার্জনের প্রক্রিয়া সম্ভবত আজকাল অনেক বেশি সহজ হয়ে গেছে। ফলে যে নিষ্ঠা নিয়ে জ্ঞানচর্চায় লিপ্ত হওয়ার কথা, সেখানে কিছুটা ঘাটতি দেখা দিয়েছে। মনে পড়ে, ১৯৫৯ সালে জাপানে আসার পর লেখাপড়ার পাট শেষ করার আগে একবারের জন্যও আমি দেশে যাওয়ার কথা ভাবতে পারিনি। সেই সময়ের জাপান আজকের মতো এতটা উন্মুক্ত দেশ ছিল না। তাই ভিন্ন ব্রত সামনে থাকায় দেশের খাদ্যাভ্যাসের কষ্ট ভুলে যেতে হয়েছিল। তাই ১৯৬২ সালে দেশে ফেরার পথে কলকাতায় যাত্রাবিরতি করতে গিয়ে প্রথমেই যে সাধ আমার মনে জেগেছিল, তা হলো প্রাণভরে ডালভাত খাওয়া।
আজকাল যাঁরা লেখাপড়া শিখতে জাপানে আসছেন, তাঁদের অনেককেই বছর না ঘুরতেই একাধিকবার দেশে ঘুরে আসতে দেখা যায়। এতে জ্ঞানচর্চার ব্রতে কোথাও হয়তো ছেদ পড়তে পারে। তবে আমি আবারও বলব, আপনার এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মতো অবস্থানে আমি দাঁড়িয়ে নেই।
মনজুরুল: সবশেষে জাপান সরকারের পুরস্কার পাওয়ায় আপনার অনুভূতির কথা জানতে চাইছি। আমাদের শিল্প-সাহিত্যের জগতে আপনি প্রথম ব্যক্তিত্ব, এমন দুর্লভ সম্মানে যাঁকে ভূষিত করা হলো। এ প্রাপ্তি আপনার মনে বিশেষ কোনো অনুভূতি জাগিয়ে তুলেছে কি?
কিবরিয়া: জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আমাকে এ সম্মান দেওয়ায় আমি নিশ্চিতভাবেই আনন্দিত। আমার জন্য আনন্দের মাত্রা এখানে এ কারণে কিছুটা বেশি যে, এমন এক দেশের কাছ থেকে আমি সম্মানটা পেলাম, সৌন্দর্যবোধের ধারণা যে দেশে সার্বিকভাবে বিস্তৃত। আমরা শিল্পীরা তো রং-তুলিতে সৌন্দর্যের গানই গাই। আর জাপান হচ্ছে এমন এক দেশ, যার লোকজনের সৌন্দর্যবোধ খুব সহজেই চোখে পড়ে। সারা দেশই শুধু ছিমছামভাবে সাজানো নয়, এ দেশের এমনকি কোনো অজপাড়াগাঁয়ে গেলেও আপনার চোখে পড়বে আকারে ছোট হলেও কোনো পাঠাগারের উপস্থিতি। আর আপাতদৃষ্টিতে একেবারে তাৎপর্যহীন সে রকম কোনো জায়গা যদি হয় বিশিষ্ট কোনো ব্যক্তিত্বের জন্মস্থান কিংবা জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাহলে সেখানে স্মারক কোনো জাদুঘরের নির্ঘাত উপস্থিতি আপনার দৃষ্টি মোটেই এড়িয়ে যাবে না।
এই তো কয়েক দিন আগে আমার চমৎকার এক অভিজ্ঞতা হলো ইবারাকি জেলার ছোট এক মফস্বল শহরে গিয়ে। রবীন্দ্রনাথের সুহূদ শিল্পী ও শিল্প-সমালোচক তেনশিন ওকাকুরার জন্মের ওই শহরে তাঁর স্মরণে যে শুধু জাদুঘরই রয়েছে, তা-ই নয়, একই সঙ্গে জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে ওকাকুরার জীবনের স্মৃতিময় নানা রকম সামগ্রী। সেই জাদুঘর দেখতে গিয়ে আমি মুগ্ধ হয়েছি ওকাকুরা সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথের নিজের হাতে লিখে যাওয়া মন্তব্য দেখে। রবীন্দ্রনাথ ১৯১৬ সালে যখন প্রথম জাপান ভ্রমণে আসেন, তার মাত্র কয়েক বছর আগে ওকাকুরা প্রাণত্যাগ করায় তাঁদের সাক্ষাৎ লাভের সুযোগ সেবার হয়নি। তবে রবীন্দ্রনাথ ঠিকই সময় করে ওকাকুরার নিবাসে উপস্থিত হয়েছিলেন। প্রয়াত জাপানি বন্ধুর স্মরণে অতিথি খাতায় যে মন্তব্য তিনি লিখেছিলেন, সেটা এখন সযত্নে সংরক্ষিত আছে ওকাকুরার স্মৃতি-জাদুঘরে। একে কেবল আমি সৌন্দর্যের মূল্যায়নই বলব না, এ চর্চা হচ্ছে একই সঙ্গে গুণীর প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শনও। আমার পুরস্কার সে রকম এক দেশ থেকে আসায় আমাকে তা বাড়তি আনন্দ দিচ্ছে।
জাপানের জাতীয় জীবনের বিশেষ এ দিকটির তুলনামূলক বিচারে আমাদের নিজেদের দৈন্যদশা আরও প্রকটভাবে ফুটে ওঠে। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের শিল্পকর্মের সুনির্দিষ্ট কোনো জাদুঘর আমরা আজও তৈরি করে নিতে পারিনি। শুধু তা-ই নয়, সোনারগাঁয়ে মহতী যে উদ্যোগ শিল্পাচার্য শেষ জীবনে হাতে নিয়েছিলেন, সেটাও এখন অবহেলা আর অনাদরে চরম দুর্দশার মুখোমুখি।
মনজুরুল: টোকিওর ব্যস্ততার মধ্যেও সাক্ষাৎকারের জন্য সময় করে দেওয়ায় আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আমরা আশা করব, আপনার পুরস্কার আমাদের শিল্পজগতের সবাইকে নতুনভাবে অনুপ্রাণিত করবে।
কিবরিয়া: ধন্যবাদ আপনাকেও।
[পুনর্মুদ্রণ]

সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুন ১০, ২০১১

Category: সাক্ষাৎকার
Previous Post:নাজিম হিকমতের পৃথিবী
Next Post:শ্রদ্ধাঞ্জলি কিবরিয়া স্যারকে!! – রফিকুন নবী

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

বিবিধ রচনা

হেলথ

Download PDF


My Account

Facebook

top↑