• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক্স
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

জিঞ্জির ফেরা – দিলওয়ার হাসান

লাইব্রেরি » বিবিধ লেখার সংকলন » গল্প » জিঞ্জির ফেরা – দিলওয়ার হাসান

আজিজ দারোগা
ক্যারা ওই পুলা খাড়াইয়া রইচে পতের কিনারে? ম্যালা অস্থির নাগবার লাগতাছে উয়ারে—পতের ধিরে চাইয়া আটাআটি করতাছে? কার লিগা খাড়াইয়া আচে এই বেহান বেলা? পিন্দনে রসুলের সুন্নত কল্লিদার কুর্তা, মাতায় কিস্তিটুপি, মুহে রাজা-বাদশা গো লাহান চাপদাড়ি। এই ডিস্টারবেঞ্চের টাইমে ঘর থিকা বাইর অইতে হিয়াল-কুত্তায় ডয়ার—না কুনসুম আবার মেলেটারিতে দইরা নইয়া যায়। আর এই জুয়াইন মর্দ পুলা এই বেহান বেলা সদর রাস্তার উপরে মেলেটারি গো যাওন-আসনের পতে খাড়াইয়া রইচে। কত্তো সাহস দেহ ছাওয়ালের! মনে তো অয় মুসুল্লি মানুষ, গাড়ি দইরা কুটুমবাড়ি যাইব। মুক্তি নাতো আবার? কেরা জানে, কার মনে কী। তা বা অয় ক্যামনে? মুক্তি হালাগো কইলজায় এত জোর আচে নাহি, এই দিন দুফারে পতে বাইর অয়। তাইলে এই ছ্যামড়া কেরা? ব্যাবাক মানুষ পলাইবার নইছে মেলেটারির ডরে। এই হালারপুতের ডরভয় নাই? ভিনগাঁয়ের মরজিদের ইমাম সাব না তো, না হি মজ্জেন সাব? যাই দেখি এট্টু খুঁজখবর নইয় আহি।
এসব ভেবে সাটুরিয়া থানার বড় দারোগা আবদুল আজিজ পকেট থেকে সিগারেট বের করে তাতে অগ্নিসংযোগ করল। ফুঁক-ফুঁক করে কয়েকটা টান মেরে সে ধীরে ধীরে সেই দিকে এগুলো, যেখানে স্বর্ণকমলপুর থানার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রফিকুল ইসলাম দাঁড়িয়েছিল।

রফিকুল ইসলাম
কী সর্বনাশ, এই সাতসকালে আজিজ দারোগা এখানে কেন? মতলব কী ব্যাটার? আমি আর আব্বাস ছাড়া এ তো আমাদের প্ল্যান কাকপক্ষীও জানে না। লেছড়াগঞ্জ থেকে খবর পেয়ে আমরা যাচ্ছি একটা জরুরি সভায় যোগ দিতে। বাইশ থানার কমান্ডার ক্যাপ্টেন আবদুল হালিম চৌধুরী আসবেন। এহসানপুর ব্রিজের পাশে ঠিক এই জায়গা থেকে আব্বাস আমার সঙ্গে মিলিত হবে, এ রকমই কথা হয়েছে। জায়গাটা সদর রাস্তার ধারে হলেও মোটামুটি নিরাপদ। এ গ্রামের সবাই আমাদের চেনে, সাহায্য-সহযোগিতা করে। এসব ভেবেই এই জায়গা নির্বাচন করেছিলাম। এখন দারোগা ব্যাটা এই সদর রাস্তায়! আব্বাস আসছে সাটুরিয়ার এক অজগ্রাম থেকে। এখানে একসঙ্গে হয়ে আমরা পথ ধরব লেছড়াগঞ্জের দিকে। পরিকল্পনা মতো আমাদের সঙ্গে কোনো ভারী অস্ত্র থাকবে না। শুধু পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক দূরত্বে আত্মরক্ষার জন্য একটা করে রিভলবার আর ছোরা ছাড়া।
কিন্তু আব্বাস এখনো আসছে না কেন? কোনো বিপদ হয়নি তো? রাস্তাঘাটের অবস্থা ভালো না। চারদিকে মিলিটারি, পুলিশ আর রাজাকারের দল ঘুর ঘুর করছে। কখন কাকে ধরে বলা মুশকিল।
দারোগাকে এগিয়ে আসতে দেখে রফিক ব্রিজের নিচে স্তূপ করে রাখা ইটের দিকে এগিয়ে গেল। ইটের স্তূপের আড়ালে যেতে পারলে সহজেই সরে পড়া যাবে।

হুকুম
আরে আরে, কই যায় ব্যাটা? কল্লিদার পাঞ্জাবিঅলা? পলায় ক্যান? মত্তলব কী ব্যাটার? অস্ত্রপাতি নাই তো নগে। এই হালারা সাংঘাতিক ডেঞ্জারাস। কুনসুম কী কইরা বহে ঠিক নাই। আরে তুরা সব কইরে? ধর ওই হালারপুতেরে। ওই যে টুপি মাতায় মৌলভী সাব। করচ কী, বুদাইরা সব? ও কনস্টেবল, ও রাজাকার ধরো ওরে, পলাইয়া গেল তো শুয়ারের বাচ্চারা…

গ্রেপ্তার
দারোগার হুকুম পেয়ে সাতজোড়া বুট ত্রস্তে রফিকের পিছু ধাওয়া করল। ব্রিজের নিচে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ডাকবাংলো। তার পেছনে মানুষসমান উঁচু পাটখেত। রফিক ভাবল একবার খেতের ভেতর ঢুকে পড়তে পারলেই হয়, তখন কার বাপের সাধ্য তার টিকি স্পর্শ করে? সে প্রাণপণে পাটখেতের দিকে ছুটতে লাগল। কিন্তু এ কী? এখানে যে কাঁটাতারের বেড়া? কদিন আগেও ওখানে এসব আপৎ-বালাই ছিল না। থামার আগেই রফিক হুড়হুড় করে বেড়ার গায়ে আছড়ে পড়ল। কল্লিদার ফালা ফালা হলো। চোখের পলক পড়ার আগেই আজিজ দারোগার স্যাঙাৎরা রফিককে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলল।
আজিজ দারোগা হায়েনার চোখ দিয়ে অনেকক্ষণ নানাভাবে রফিককে পর্যবেক্ষণ করল। তারপর রফিককে চেনামাত্র অল্প লাফ দিয়ে ওঠে হুঙ্কার ছাড়ল: তুই রফিক না? আইজ পাইচি তরে। তগো জ্বালায় দুই চোখে ঘুম নাই, হালার মুক্তির পো…
ভয়ংকর অমঙ্গলের আশঙ্কায় বুক কাঁপতে লাগল রফিকের। তার মৌলভির ছদ্মবেশ কোনো কাজেই এল না। অসহায়ভাবে চারপাশে তাকাল, ধারেকাছে আর কেউ নেই। আব্বাস এসে ফিরে যাবে। তার ধরা পড়ার সংবাদ জানতেও পারবে না।

মৃত্যুর দুয়ারে
পুলিশের একটা জিপে নিয়ে তোলা হলো আমাকে। জিপটি দ্রুত চলতে শুরু করল। গাড়ির মেঝেতে আমাকে পিছমোড়া করে বেঁধে ওরা সিটে বসে আছে।
একা একা ভাবছি, আমার নিজের দেশের লোক আমাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে ভিনদেশি শক্রর হাতে তুলে দিতে, যারা পেলে আমাকে বাঁচিয়ে রাখবে না। রাস্তার দুই পাশে নিথর দাঁড়িয়ে আছে গাছপালা। প্রজাপতি বা ফড়িংও চোখে পড়ে না। থমথম করছে চারদিক। মাটির সোঁদা গন্ধের সঙ্গে পচা লাশের গন্ধও আসছে বাতাসের সঙ্গে। রাস্তা পাশে দুই-একটা ছেঁড়াখোঁড়া লাশও চোখে পড়ল। কিন্তু একটা শকুনও দেখা যাচ্ছে না। রাস্তার ডানে শিমুলতলি গ্রামের বিশাল বটগাছটা চোখে পড়ল। এই গাছের নিচে বড় একটা কালীমন্দির আছে। আর্মি এ অঞ্চলে প্রথমে ঢুকেই মন্দিরের বিগ্রহগুলো ভেঙে গুঁড়ো করে ফেলে। বট গাছতলায় একজন জটাধারী সন্ন্যাসী বসত। তাকেও দেখা যাচ্ছে না। মারা পড়েছে, না পালিয়ে, কে জানে?
জিপটা আমাদের শহরের পাশে আসার পর মনে হল এই শহরেই তো আমার জন্ম। এখানেই বড় হয়েছি । আরেটু সামনে গেলেই আমাদের বাড়িটা। মা-বাবা বাড়িতেই আছে। মিলিটারির ভয় সত্ত্বেও বাড়ি ছেড়ে পালায়নি। আমি এ শহর ছেড়েছি মাস দুয়েক আগে, এখন মনে হচ্ছে কতদিন পর যেন ফিরছি। ঝলমলে সকাল, কিন্তু তারপরও চিরকালের প্রাণময় শহরটা নিশ্চুপ। সাইকেল-রিকশার টুং টাং শব্দ নেই। লোকজনের ভিড় নেই, স্কুলগামী ছেলেমেয়েদের কোলাহল নেই। শুনেছি, রাজাকার আর মিলিটারিরা মিলিয়ে শহীদ মিনারটা বোমা মেরে উড়িয়ে দিয়েছে। আমাদের সকাল-বিকেলের আড্ডা নিরালা ক্যানটিনে শান্তি কমিটির অফিস বসেছে। নিরালার মালিক শীতলদাকে ওরা মেরে ফেলেছে। লাশটা তিন দিন তার রেস্তোরাঁর সামনে পড়েছিল। সৎকার হয়নি। শেষে ডোমেরা মাটিচাপা দিয়েছে।
বড় রাস্তার ধারে প্রাইমারি এডুকেশন প্রশিক্ষণ সেন্টার। শহরের সবচেয়ে বড় দালান। এখন আর্মি ক্যাম্প। শহরের পুরোটা এখন ওদেরই দখলে।
হঠাৎ মনে আজ রাতটাই কি আমার শেষ রাত এই সুন্দর পৃথিবীতে। ইস মাকে যদি একবার দেখতে পেতাম।

বন্দিশিবির
রফিকুল ইসলামকে নিয়ে জিপ এসে থামল শিবালয় থানা, এটা এখন বন্দিশিবির। সামনের চত্বরে বেশ কয়েকটা তাঁবু ফেলা হয়েছে। একদিকের তাঁবুর পাশেই বড় বড় কয়েকটি সামরিক যান দাঁড়িয়ে আছে। গেটের দুই পাশে বালুর বস্তার প্রতিবন্ধক তুলে ঘরের মতো তৈরি করা হয়েছে। তার ভেতরে বসে সেনারা পাহারা করছে। ভালো করে তাকালে বোঝা যায়, ওই ঘরগুলো থেকে মেশিনগানের নল উঁকি মারছে।
রফিককে এনে রাখা হলো থানার ফাটকে, সেখানে বসা আরও কজন বন্দী। রফিকের উপস্থিতি তাদের মধ্যে কোনো ভাবান্তর ঘটাল না। বসে রইল ভাবলেশহীন। গায়ের কাপড় শতছিন্ন, নোংরা। শরীরের নানা জায়গায় আঘাতের দাগ।
দুপুরের খাওয়ার সময় পেরিয়ে গেল। ইেউ কোনো খাবার দিয়ে গেল না। পানি পিপাসা পেয়েছে বেজায়।
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামল। তারপর ঘোর অন্ধকার রাত। এখানে বিজলি বাতি নেই। থানার অন্য ঘরে হ্যাজাক আর হারিকেন জ্বলেছে। কিন্তু হাজতকক্ষ অন্ধকার।
গভীর রাতে বোধকরি খানিকটা ঢুলুনির মতো এসেছিল, এসময় আচমকা তাকে টেনেহিচড়ে বন্দিখানার পেছনের একটা আমগাছের কাছে নিয়ে আসা হলো। দুই হাত বেঁধে একটা ডালের সঙ্গে ঝোলানো হলো তাকে। এরপর শুরু হলো জেরা—বাইশ থানার কমান্ডার কোথায়? তার আর সঙ্গীরা কোথায়? কোথা থেকে অস্ত্র পায় তারা, ট্রেনিংইবা হয় কোথায়—এসব একের পর এক প্রশ্ন। প্রথমে খুব নিরীহ ভঙ্গিতে, তারপর প্রশ্নকারীর গলা চড়তে শুরু করল। ধমক, কিল-ঘুষি তারপর পিঠে বেত মারা শুরু করল। দু-চার আঘাতের পর পরই পিঠ ফেটে রক্ত গড়াতে লাগল। রফিকের মুখ থেকে কোনো কথা বের করতে পারল না। তার চিৎকারে আসমান-জমিন প্রকম্পিত হতে লাগল। অত্যাচারের মাত্রা বাড়তে লাগল ক্রমেই। বেত রেখে নাকে-মুখে গরম পানি ঢালা শুরু হলো। তারপর নখের ভেতর দিয়ে ঢোকানো হলো সুচ। এত অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে একসময় সে জ্ঞান হারাল।
অনেক পরে জ্ঞান ফেরার পর রফিক নিজেকে আবিস্কার করল হাজতের শীতল মেঝেয়। তার ধারণা ছিল তার মৃত্যু হয়েছে। পানি খেতে ইচ্ছে হলো খুব। জিহ্বা শুকিয়ে কাঠ হয়ে আছে। ছাতি ফেটে যাচ্ছে যেন। ঘাড় ফিরিয়ে পাম ফেরার চেষ্টা করল, সারা শরীর ব্যথায় টনটন করছে। নড়তে গেরে নিজের অজান্তেই ককিয়ে উঠছে সে।আবছা অন্ধকারের মোটামোটা লোহার শিক ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়ল না।
কখন যেন ভোর হলো। রফিক খেয়াল করল দুপুরে যাদের এই ঘরে যাদের দেখেছিল, তাদের অনেকেই নেই। কোথায় গেছে তারা?

অবিশ্বাস্য
বন্দিখানায় কতক্ষণ আছি মনে নেই, সময়ের হিসাব হারিয়ে ফেলেছি। কাছের মসজিদ থেকে আজান ভেসে এল। মাগরিবের না এশার কে জানে। আলো জ্বলছে বাইরে। হাজতের বাইরে পহারাদারের বুটের আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে না। দেয়ালে পিঠ বসে আছি। এই রাতটা পার হবে তো? নাকি এটাই শেষ?
খুট করে একটা শব্দ হলো। তালা খোলার শব্দ। তারমানে ওরা আবার নিতে এসেছে। কিন্তু না, একটা ছায়মূর্তি, এগিয়ে এসে ফিস ফিস করে বলল, ‘কেউ কথা বলবেন না—সোজা পালান সবাই। পেছনেই নদী, ঝাঁপ দিলেই পগার পার। যান, শিগগির করুন।’ কণ্ঠস্বরে বুঝলাম কোনো মেয়ে, কিন্তু আবছায়ায় বোঝা গেল না চেহারা।
ধারেকাছে কোনো পাহারাদার নেই, নেই কোনো পাক সেনা,… অন্য হাজত থেকেও বর্রাি বেরিয়ে এসেছে। বাইরে বেরিয়ে এলাম। কাঁটাতারের বেড়া ডিঙাতে গিয়ে হাত-পা ছড়ে গেল। আধো আলো, আধো অন্ধকারে গ্রামের অচেনা রাস্তা দিয়ে প্রাণপণে দৌড়াতে লাগলাম, জান বাঁচানোর জন্য মানুষ যেভাবে দৌড়ায়, মৃত্যূর হাত থেকে বেঁচে ফিরছি।
কিছুদূর আসতেই পৌঁছে গেলাম যমুনা তীরে, সময় নষ্ট না করে, জলে ঝাঁপ দিলাম। এক সাঁতারে এগিয়ে এলাম অনেকখানি। তারপর ভাটার স্রোতে গা এলিয়ে দিলাম । এসময় কানে এল গুলির শব্দ। মেশিনগানের গুলি পলাতকদের পিছু ধাওয়া করছে…তারপরই কয়েকটা আর্তচিৎকার, তারমধ্যে একটা নারীকণ্ঠের আর্তচিৎকারও কি শুনলাম!
কে ছিল ওই মেয়েটা? এ প্রশ্নের উত্তর আর কোনো দিনই জানা হলো না।

সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, এপ্রিল ০১, ২০১১

Category: গল্প
Previous Post:রবীন্দ্র-চিত্রকলা—ভূমিকা: আবুল হাসনাত
Next Post:সোনার কমলার খোঁজে – আশরাফুল আলম

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

বিবিধ রচনা

হেলথ

Download PDF


My Account

Facebook

top↑