• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক্স
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

এভাবেই ভুল হয় – আলীম আজিজ

লাইব্রেরি » বিবিধ লেখার সংকলন » গল্প » এভাবেই ভুল হয় – আলীম আজিজ

‘আমি শুধু তোমাকে চাই। এই পৃথিবীতে শুধু আমি আর তুমি!’ বলে নাসেরের চোখ থেকে ধীরে ধীরে দৃষ্টি নামিয়ে নিল সিমিন। নাসের বুঝল, খুব ভালোভাবেই বুঝল সিমিনের ইঙ্গিত।

এরপর থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিল সে। পাড়ার দোকানদারের সঙ্গে অফিসে যাওয়া-আসার পথে অকারণেই খাতির করেছে হাউজিংয়ের সিকিউরিটি গার্ড কাম কেয়ারটেকার মোস্তফার সঙ্গে। মোস্তফার বই পড়ার নেশা আছে। প্রচন্ড নেশা। সস্তা সেবা প্রকাশনীর থ্রিলার ধরনের বই পড়ে ও। নাসের জিজ্ঞেস করা মাত্রই প্রবল উৎসাহ নিয়ে একেকটা থ্রিলারের রুদ্রশ্বাস বর্ণনা দিয়ে যায়।
পরিকল্পনাটা চূড়ান্ত করার কদিন পরই নীলক্ষেতের ফুটপাত থেকে দুটো পুরনো থ্রিলার কিনে এনে দিয়েছে সে মোস্তফাকে। দিন তিনেক আগে মোস্তফা জানিয়েছে, ওই বই দুটোও তার পড়া শেষ, তার মানে আরও বই চাই—ঘরে আরেকটা বই জোগাড় করে রাখা আছে, আজ যদি সব কিছু ভালোয় ভালোয় শেষ করতে পারে তাহলে, মোস্তফাকে ডেকে এনে বইটা দেবে সে, এটা পরিকল্পনার সব শেষ অংশ, এবং খুব গুরূত্বপূর্ণ অংশ।
সাড়ে আট কি নয়টার মধ্যে গত এক মাস ধরে নিয়ম করে বাড়ি ফিরছে নাসের। প্রেসক্লাবে বাস থেকে নেমে রিকশা নিয়ে ১০ টাকা দিয়ে সোজা সেগুন বাগিচায়, এ সময় মোস্তফা গেটে পাহারায় থাকে, তবে সে নিশ্চিত হয়েছে, সাড়ে সাতটায় মোস্তফা নামাজ পড়ার জন্য তার ছোট্ট ঘরটায় ঢোকে। নামাজ পড়ে আটটার মধ্যে সে ফিরে আসে তার পাহারায়। এই আধাঘণ্টা সময়ই সে পাবে, এবং ওই সময়ের মধ্যেই সব কাজ শেষ করতে হবে তাকে।
বড় বড় পা ফেলে গেটের কাছে পৌঁছাল নাসের। শেষবারের মতো আরেকবার ভাবল। পকেটে হাত দিয়ে ক্ষুরের অস্তিত্বটা ছুঁয়ে দেখল একবার। এটা সে ফুটপাথ থেকে সংগ্রহ করেছে কদিন আগে, শত শত পুরোনো ব্যবহার্য জিনিসের মধ্যে খাপে পোরা ক্ষুরটা দেখে বুকের ভেতরটা তার সেদিন ধক করে উঠেছিল, এটাই তো তার কাজের জন্য মোক্ষম অস্ত্র, যেন তার অপেক্ষাতেই পড়ে আছে তুরে নেবার অপেক্ষায়।
মোস্তফার ঘুমটি ঘরের পাশ দিয়ে আসার সময় নামাজে দাঁড়ানো মোস্তফার দীর্ঘ ছায়টা এক ঝলক দেখল কেবল। বুকটা ধড়ফড় করছে ভীষণ। মেপে মেপে ৩০ মিনিট, এর মধ্যে কাজ সেরে বেরিয়ে আসতে হবে তাকে।
ধড়ফড়ানিটা প্রাণপণে নিয়ন্ত্রণ করল নাসের। এখন ভয় পেলে চলবে না। ব্লেজারের পকেট থেকে নাইকি লেখা উলের টুপিটা বের করে মাথায় দিল। গলার মাফলারটা তুলে মুখের খানিকটা পেঁচিয়ে গলায় জড়াল। এখন কোনোভাবেই কারও চোখে পড়া চলবে না তার। আর পড়লেও যাতে তাকে কেউ চিনতে না পারে।
তাদের ব্লকের কাছে পৌঁছে বিল্ডিংয়ের কোনায় থমকে দাঁড়িয়ে পেছন ফিরে একবার দেখল, মদটা কি একটু বেশি খাওয়া হয়ে গেছে, মাথাটা বেশিই ঝিম ঝিম করছে। পা কি টলছে তার? কিন্তু হালকা নেশায় তো তার নার্ভটা শক্ত থাকার কথা। একদম শান্ত থাকো, নাসের, নার্ভ শক্ত রাখো, নিজেকে শোনাল সে। লিফটের সামনে পৌছাতেই দপ করে চারদিক অন্ধকার করে হয়ে গেল। সাবাশ, নিজের মনেই বলে উঠল নাসের। তাদের ব্লকের জেনারেটর নষ্ট দিনপনের ধরে, মেরামতের টাকা দেওয়া নিয়ে ফ্ল্যাট মালিকদের মধ্যে ঠেলাঠেলি চলছে। তারমানে সহসা বিদ্যুৎ ফিরছে না। লিফটের পরিবর্তে সিড়ি দিয়ে দ্রুত পাঁচ তলায় উঠে যাবে সে এখন।
আরও দুমিনিট সিঁড়ির গোড়ায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করল। না, কারও কোনো সাড়াশব্দ নেই। দু-একটা ফ্ল্যাটে চার্জলাইট জ্বলে উঠেছে, কিন্তু চারপাশের বিপুল অন্ধকার দূর করার জন্য তা যথেষ্ট নয়।
পাঁচ তলার জমাট অন্ধকারে সোজা দরজার কাছে গিয়ে, চাবি দিয়ে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকল নাসের। ঘরের ভেতরকার অন্ধকার মহা আনন্দে স্বাগত জানাল নাসেরকে। সে জানে, কঙ্কনার দীর্ঘদিনের অভ্যাস সন্ধ্যায় ঘুমানো, অদ্ভুত অভ্যাস, কিন্তু কঙ্কনার যুক্তি বাসায় কেউ নেই, তার সময় কাটে না। বরং এসময়ে ঘুম থেকে ওঠে ফ্রেশ হয়ে নাসেরের সঙ্গে আড্ডা দিতে কিংবা রাত জেগে বই পড়া কিংবা টিভি দেখতে তার বেশ লাগে।
এগুতে গিয়ে একটা সোফার কোনায় বাড়ি খেল নাসের, এখানে সোফা? তাদের ঘরে এখানে কি সোফা থাকার কথা। কঙ্কনা আসবাবপত্র নাড়াচাড় করেছে বোধহয়।
আলো থাকলে কঙ্কনার মুখটা দেখে হয়তো দ্বিধায় পড়ে যেত সে, কি জানি, হয়ত পিছিয়েও যেত সে। এটা তো সত্যি, সে তো আর পেশাদার নয়, আর দীর্ঘ আট বছরের সংসার! অন্ধকারে নার্ভাস ভাবটা কাটাতে অকারণে হাত ঝাড়ল বারকয়েক। মাথাটা কেমন ভারি হয়ে আছে। ঘুম আসছে ঝেঁপে। দাঁতে দাঁত চাপল নাসের, চোখের ভারি পাতা টেনে মেলে রাখল জোর করে। ব্যর্থ হওয়া চলবে না কিছুতেই।
শোবার ঘরে ঢুকল নাসের, সামনেই কঙ্কনার বিছানা।
চোখ বন্ধ করে উপর্যুপরি ক্ষুর চালাল সে। সে জানে, এ সময়টাই সবচেয়ে ভয়ের, মাঝপথে ভড়কে গিয়ে এধরনের কাজে অনেকেই পালিয়ে যায়! তবে বেশি সময় নিল না সে, একবার শুধু কঙ্কনার দম আটকে যাওয়ার মতো একটা শব্দ কানে এল তার, তারপর সব নীরব। কঙ্কনার ঘুমটাও বোধ করি ভালোমতো ভাঙার সুযোগ পেল না, তার আগেই চিরকালের মতো ঘুমিয়ে পড়ল। এরপর আরেকটা কাজ করল নাসের। গ্লাভস পরা হাতে মাফলার জড়িয়ে নিয়ে জানালার কাছে গিয়ে পর পর কয়েকটা ঘুষি চালাল কাচে। প্রথমে চির ধরার একটা শব্দ হলো, তার পরই ঝন ঝন শব্দে ভেঙে পড়ল জানালার কাচ। এটাই শেষ।
রাস্তায় এসে ল্যাম্পপোস্টের আলোয় ঘড়িতে দেখল সাতটা আটচল্লিশ, তার মানে সাকল্যে তার সময় লেগেছে মাত্র আট মিনিট। প্রেসক্লাবের দিকে হন হন করে হাঁটা ধরল সে। ওখানে পৌঁছে প্রতিদিনের মতো রিকশা নিয়ে সেগুন বাগিচার নিজের বাসায় ফিরবে।
পুলপাড়ের কাছে এসে হঠাৎ খেয়াল হলো ক্ষুরটা যেমন ফেলে দিয়েছি, সিমিনের ফ্ল্যাটের চাবিটাও ফেলে দেওয়া উচিত। ওই ফ্ল্যাটে তার গোপন যাতায়াতের কথা কেউ জানে না। প্রমাণ বলতে এই চাবি। প্যান্টের পকেট থেকে চাবির রিং বের করে সিমিনের ফ্ল্যাটের চাবিটা খুলে নিয়ে ছুড়ে মারল পুলপাড়ের নর্দমার খালে। এরপর নিশ্চিন্ত হয়ে চাবির রিংটা ঢুকিয়ে রাখল পকেটে। মাথাটা এখনও ঝিম ঝিম করছে, চোখেও কেমন ঝাপসা দেখছে যেন, কিন্তু খুব বেমি মদ তো সে গিলেনি।
প্রেসক্লাবের সামনে পৌঁছে মিনিটখানেক দাঁড়িয়ে থাকল। হাঁ করে ধীরে ধীরে বুক ভরে শ্বাস টানল। তারপর পুরো ঘটনাটা আরেকবার গোড়া থেকে নেড়েচেড়ে দেখল—কিছুই বাদ দিল না।
না, ভুল হয়নি কোথাও। কাজটা সে যথেষ্ট নিখুঁতভাবে সেরেছে। সিমিনকেও সে পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে, ও মুখ খুলবে না কোনোদিন। তাছাড়া শিগগিরই নতুন জীবন শুরু করতে যাচ্ছে তারা, সেজন্যই তো এত কিছু। আজকের ঘটনার কোনো সাক্ষী নেই। কঙ্কনার সঙ্গেও তার কোনো ঝগড়াঝাটির রেকর্ড নেই। হাউজিংয়ের লোকজন তাদের শান্ত, সুখী পরিবার হিসেবেই জানে।
রিকশা থেকে নেমে গেটের কাছে মোস্তফাকে পেল নাসের। এক গাল হেসে সালাম দিল। তারপর খানিকটা কাচুমাচু মুখে জিজ্ঞেস করল, ‘স্যার, বইটা দেবেন আজ?’
নাসের হেসে বলল, ‘তোমার তো দেহি মিয়া আর কোনো কাম নাই। চলো, বই দিয়া উদ্ধার পাই।’
লিফটে উঠে পাঁচ তলায় এসে নিজের দরজার সামনে এসে থেমে দাঁড়াল নাসের, পেছনে জড়সড় ভঙ্গিতে দাঁড়ানো মোস্তফা। পকেটে হাত ঢুকিয়ে চাবির গোছা বের করে আনল নাসের—এফ থ্রি নম্বর ফ্ল্যাট।
দরজার লকে চাবি ঢুকিয়ে ঘোরাল নাসের। আটকে আছে লক। চাবি বের করে এনে পরখ করে দেখল।
‘স্যার, খোলে না?’ পেছন থেকে ডান পাশে সরে এসেছে মোস্তফা, খুশির গলায় পাশ থেকে প্রশ্নটা করল সে। ‘ভুল চাবি ঢুকাইছেন?’
আতঙ্কিত চোখে মোস্তফাকে দেখল এক পলক নাসের, পরক্ষণেই তড়িঘড়ি চাবিটা ঢোকাল লকে। ভুল চাবি?
চাবি ঘোরানোর আগেই এসময় দরজাটা খুলে গেল। বুকের স্খলিত ওড়না ঠিক করতে করতে দরজায় এসে দাঁড়িয়েছে কঙ্কনা। ‘ওফ্! যাক তুমি ফিরেছ, বাঁচলাম।’
মেরুদণ্ড সোজা হয়ে গেল নাসেরের, ঝিম ধরা যে নেশা নেশা ভাবটা ছিল এতক্ষণ, মুহূতের্ই কপূর্েরর মতো সব উবে গেল যেন। অবিশ্বাসের চোখে স্ত্রীর দিকে দেখল সে। কঙ্কনা! দ্রুত, তলপেট থেকে একটা শিরশিরে অনুভুতি তীব্র গতিতে পাক খেয়ে উঠে এল গলার কাছে, টাল সামলাতে দ্রুত চৌকাঠ আঁকড়ে ধরল সে। ঘাড় ফিরিয়ে দেখল, পেছনে সিমিনের ফ্ল্যাটের চৌকাঠ, দরজাও একই রকম, ভিন্ন শুধু ফ্ল্যাট নম্বর: এফ ফোর।
নাসেরের মনে হলো, কঙ্কনার গলার স্বর যেন বহুদূর থেকে ভেসে আসছে: ‘আমি পাশের ফ্ল্যাটে কাচ ভাঙার শব্দ শুনেছি। ঘুমিয়ে ছিলাম, কাচ ভাঙার শব্দে ঘুম ভেঙে গেছে আমার’, বলল কঙ্কনা। ‘মহিলার কোনো বিপদ হলো কি না কে জানে। আমি একা একা যা ভয় পেয়েছি। …নাসের তোমার মুখে কিসের গন্ধ?’
কি জবাব দেবে নাসের।

সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মার্চ ০৪, ২০১১

Category: গল্প
Previous Post:তোমারি গেহে পালিছ স্নেহে, তুমি ধন্য ধন্য হে
Next Post:স্মৃতির ছায়া – অ্যালিস ফয়েজ

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

বিবিধ রচনা

হেলথ

Download PDF


My Account

Facebook

top↑