• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক্স
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

স্বপ্নের মধ্যে কারাগারে – মারিও বেনেদেত্তি

লাইব্রেরি » বিবিধ লেখার সংকলন » অনুবাদ » স্বপ্নের মধ্যে কারাগারে – মারিও বেনেদেত্তি

অনুবাদ: দিলওয়ার হাসান

লাতিন আমেরিকার খ্যাতনামা লেখক মারিও বেনেদেত্তির জন্ম ১৯২০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর উরুগুয়েতে। তিনি একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, প্রবন্ধকার, সমালোচক, সাংবাদিক, নাট্যকার, গীতিকার ও চলচ্চিত্রের কাহিনিকার ছিলেন। ৯০টিরও বেশি গ্রন্থের প্রণেতা বেনেদেত্তির লেখা ৬০টির বেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ২০০৯ সালের ১৭ মে তিনি মন্টেভিডিওতে মারা যান।

কয়েদিটি স্বপ্নে দেখল সে কারাগারে আছে।
স্বভাবতই স্বপ্নের নানা পুঙ্খানুপুঙ্খ ব্যাপার আর রকম-সকম থাকে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, স্বপ্নে দেয়ালে টাঙানো আছে পারি থেকে আনা পোস্টার; কিন্তু বাস্তবে দেয়ালে রয়েছে পানির কালো দাগ। স্বপ্নে মেঝের ওপর দিয়ে একটা টিকটিকি দৌড়াদৌড়ি করছে আর বাস্তবে মেঝের ওপর বসে আছে একটা ধাড়ি ইঁদুর আর তাকিয়ে আছে ওর দিকে।
কয়েদি স্বপ্নে দেখল সে কারাগারে আছে। কেউ একজন তার পিঠ মালিশ করে দিচ্ছে আর তাতে সে বেশ আরাম বোধ করছে। মালিশকারীকে দেখতে পেল না সে; কিন্তু সে নিশ্চিত ছিল, ওটা তার মা ছাড়া আর কেউ নয়। ওই কাজটাতে তার মা খুব পাকা। প্রশস্ত জানালা গলিয়ে ভোরের চকচকে আলো ঘরে ঢুকেছে আর স্বাধীনতার সংকেত হিসেবে সে তাকে স্বাগত জানাচ্ছে। শিক দিয়ে ঘেরা ছোট্ট জানালা (ষোলো বাই চব্বিশ ইঞ্চি) দিয়ে আসা আলোর রশ্মি ছায়ার একটা দেয়ালের দিকে প্রসারিত হয়েছে।
কয়েদি স্বপ্নে দেখল সে কারাগারে আছে। তার খুব পানির পিপাসা পেয়েছে আর সে প্রচুর পরিমাণে বরফের পানি পান করছে। সেই পানি আবার অশ্রুজলে পরিণত হয়ে টপটপ করে তার চোখ থেকে ঝরে পড়ছে। সে জানত, কেন সে কাঁদছে; কিন্তু নিজের কাছে দোষ স্বীকার করতে পারল না। নিজের অলস হাত দুটোর দিকে তাকাল। ওগুলো তার কল্পনায় এনে দিয়েছিল হাত-পা আর মাথামুণ্ডহীন মূর্তি, পা, বাঁধা শরীর, মর্মর পাথরের নারী। যখন জেগে উঠল, তার চোখে কোনো পানি ছিল না; হাত দুটো নোংরা, দরজার কব্জাগুলো জংধরা, হূদয়ের কম্পন ছুটে বেড়াচ্ছে, ফুসফুস বাতাসশূন্য আর ছাদ গেছে ফুটো হয়ে।
ঠিক সেই সময় কয়েদি ভাবল, কারাগারে আছি—এই স্বপ্ন দেখাই বরং ভালো। চোখ বন্ধ করে ফেলল সে আর দেখল মিলাগ্রোসের ছবি হাতে বসে আছে। ওই ছবি দেখে সে খুশি হতে পারল না। মিলাগ্রোসকে কাছে পাওয়ার সাধ জাগল মনে। মস্ত একটা হাসি চেহারায় ফুটিয়ে তুলে হাজির হলো মিলাগ্রোস, পরনে আকাশি রঙের নাইট গাউন। এগিয়ে এল সে, যাতে ওটি গা থেকে খসিয়ে ফেলতে পারে কয়েদি। সে করলও তা-ই। স্বভাবতই মিলাগ্রোসের নগ্নতা ছিল অলৌকিক, ফলে সে পরিপূর্ণ স্মৃতিশক্তি আর আনন্দের সঙ্গে তা দেখতে লাগল। জেগে ওঠার কোনো ইচ্ছেই তার ছিল না, তার পরও জেগে উঠল সে, স্বপ্নের মতো সঙ্গমকালীন যৌন উত্তেজনার চরম ক্ষণের মাত্র কয়েক সেকেন্ড আগে। আর তখন সেখানে কেউ ছিল না; ছিল না কোনো ছবি, কিংবা মিলাগ্রোস নামের কোনো মেয়ে, যার পরনে…ছিল না আসমানি রঙের নাইট গাউন। তাকে মানতেই হলো নির্জনতা অসহনীয় হতে পারে।
কয়েদি স্বপ্নে দেখল সে কারাগারে আছে। তার মা আর তার পিঠ মালিশ করে দেয় না, কেননা কয়েক বছর আগে মারা গেছে সে। মায়ের জন্য নস্টালজিক হয়। তার চাহনি, তার গান, তার কোল, তার স্নেহাদর, তার তিরস্কার, তার ক্ষমা মনে পড়ে যায়। নিজেকে নিজেই আলিঙ্গন করে, কিন্তু আগের মতো নয় তা। মিলাগ্রোস অনেক দূর থেকে হাত তুলে বিদায় জানাচ্ছে, তার কাছে মনে হচ্ছে কোনো গোরস্থান থেকে। কিন্তু তা কী করে সম্ভব? কোনো পার্ক বোধ করি ওটা। কিন্তু কারাগারে কোনো পার্ক ছিল না, কেননা সে তখন স্বপ্নের মধ্যে ছিল; ওটা কী ছিল, সে ব্যাপারে সচেতন ছিল সে—একটা স্বপ্ন। বিদায় জানানোর জন্য সে-ও হাত উঠাল। কিন্তু তার হাত মুঠি ছাড়া আর কিছুই ছিল না, আর এটা তো সবারই জানা, মুঠি তুলে কাউকে বিদায় জানানো যায় না।
চোখ মেলতেই অতি পরিচিত খাটটার ভেতর থেকে প্রচণ্ড ঠান্ডা ঠিকরে বেরিয়ে এল। শীতে কাঁপতে কাঁপতে নিঃশ্বাস বের করে হাত দুটো গরম করতে চাইল সে; কিন্তু নিঃশ্বাস নিতে পারল না। আর ঘরের কোনায় বসে বারবার ওর দিকে তাকাচ্ছিল ইঁদুরটি। তার মতো ওটিও ঠান্ডায় আক্রান্ত হয়েছিল। সে তার একটা হাত নাড়াল আর ইঁদুরটি এক পা এগোল। তারা একে অপরকে অনেক দিন ধরে চেনে। মাঝেমধ্যে সে অতি নিকৃষ্ট আর জঘন্য খাবারের দু-একটা টুকরো তার দিকে ছুড়ে দেয়।
এত কিছুর পরও কয়েদি স্বপ্নে অতি ক্ষিপ্র আর সবুজ টিকটিকিটাকে মিস করে, আর তাকে আবার দেখার আশায় ঘুমিয়ে পড়ে। সে আবিষ্কার করে, টিকটিকি তার লেজটা হারিয়েছে। ওই রকম একটা স্বপ্নকে আর ভালো স্বপ্ন বলে বিবেচনা করা যায় না। সে যা-ই হোক, অতঃপর সে গুনতে বসে আর কত বছর তাকে কারাগারে থাকতে হবে: এক, দুই, তিন, চার এবং সে জেগে ওঠে। ছয় বছরের সাজা হয়েছে তার, সে খেটেছে তিন বছর। আবার গুনতে বসে, এখন তার আঙুলগুলো জেগে আছে।
তার রেডিও, ঘড়ি, বই, পেনসিল কিংবা নোটবই নেই। নিঃসঙ্গতা আর শূন্যতা পূরণের আশায় মাঝেমধ্যে সে ধীরে ধীরে গান গায়। তবে খুব কম গানই এখন সে মনে করতে পারে। ছোটবেলায় দাদিমার কাছ থেকে সে কতগুলো প্রার্থনা শিখেছিল; কিন্তু এখন সে কার কাছে প্রার্থনা করবে? তার মনে হয়, ঈশ্বরের দ্বারা প্রতারিত হয়েছে সে, তবে সে ঈশ্বরকে ঠকাতে চায় না।
কয়েদি স্বপ্নে দেখে সে কারাগারে আছে। আর ঈশ্বর তার কাছে এসে হাজির হবেন আর তার কাছে স্বীকার করবেন যে তিনি প্রচণ্ড অনিদ্রায় ভুগছেন, যা তাকে ভীষণ ক্লান্ত করে তুলেছে। আর যখন সে শেষ পর্যন্ত নিদ্রার কোলে ঢলে পড়তে সক্ষম হবে, দুঃস্বপ্ন দেখবে সে; যেখানে যিশু ক্রুশ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য ঈশ্বরের সাহায্য প্রার্থনা করবে; কিন্তু ঈশ্বর খুব ব্যস্ত থাকবেন বলে তাকে কোনো সাহায্যই করতে পারবেন না।
‘সবচেয়ে খারাপ ব্যাপার হচ্ছে’, ঈশ্বর বলবেন তাকে, ‘‘ব্যাপার হচ্ছে নিজের ওপর বিশ্বাস স্থাপনের জন্য কোনো ঈশ্বর নেই। ইংরেজি অরফান শব্দের বড় হাতের ‘ও’ অক্ষরটির মতই আমি একজন অরফ্যান অর্থাৎ এতিম।’ ওই নিঃসঙ্গ ও পরিত্যক্ত ঈশ্বরের জন্য কয়েদির আফসোস হলো। যেভাবেই হোক সে বুঝল যে ঈশ্বরের অসুস্থতা হচ্ছে নিঃসঙ্গতা, কারণ চূড়ান্ত ক্ষমতার অধিকারী হিসেবে তার চিরস্থায়ী খ্যাতি সন্ত-সাধুদের ভীত করে তোলে। যখন সে জেগে ওঠে আর মনে করতে পারে সে একজন নাস্তিক, ঈশ্বরের প্রতি করুণা করা বন্ধ হয়ে যায় আর নিজের প্রতি করুণা অনুভবের বদলে দেখে সে বন্দী, একাকী আর ডুবে আছে নোংরা আর অশেষ ক্লান্তির মধ্যে।
অগণিত স্বপ্ন আর সতর্কতা শেষে কোনো রকম নিয়মমাফিক আকস্মিকতা ছাড়াই এক বিকেলে সে জেগে উঠলে প্রহরী তাকে জানাল, মুক্তির আদেশ হয়েছে তার। কয়েদি যে স্বপ্ন দেখছে না, এ ব্যাপারে তখনই সে নিশ্চিত হতে পারল, যখন খাটের ঠান্ডা সে অনুভব করতে পারল আর শনাক্ত করতে সক্ষম হলো ইঁদুরের উপস্থিতি। বিষয়টিকে সে বেদনার সঙ্গে স্বাগত জানাল আর প্রহরীর সঙ্গে রওনা হলো আটক হওয়ার সময় বাজেয়াপ্ত করা তার কাপড়চোপড়, কিছু টাকা, হাতঘড়ি, কলম, চামড়ার ওয়ালেট ইত্যাদি বুঝে নেওয়ার জন্য।
জেল থেকে ছাড়া পাওয়া উপলক্ষে কেউ তার জন্য অপেক্ষা করছিল না। অতএব জেলখানা থেকে বেরিয়ে সে হাঁটতে শুরু করল। দিন দুয়েক ক্রমাগত হাঁটল সে। রাতে ঘুমের জন্য বেছে নিল কোনো রাস্তার ধার কিংবা গাছের তলা। শহরের বাইরে অবস্থিত একটা শুঁড়িখানায় বসে সে দুটো স্যান্ডউইচ খেল, পান করল এক বোতল বিয়ার। বিয়ারে সে পুরোনো আর চেনা স্বাদ অনুভব করল।
শেষ পর্যন্ত সে তার বোনের বাড়িতে গিয়ে হাজির হলো। বিস্ময় আর আনন্দে মূর্ছা যাওয়ার উপক্রম হলো তার বোনের। একে অপরকে জড়িয়ে ধরে রাখল অনেকক্ষণ। বোন খুব কাঁদল। তারপর সে ভাইকে জিজ্ঞেস করল, এখন সে কী করতে চায়। সে বলল, ‘খুবই ক্লান্ত আমি, গোসল করব একটু।’ গোসল শেষ হলে বোন তাকে তার শোবার ঘরে নিয়ে গেল। জেলখানার মতো জঘন্য খাট নেই সেখানে। ওখানে চমৎকার খাটের ওপর পাতা নরম আর আরামদায়ক সুন্দর বিছানা।
একনাগাড়ে ১২ ঘণ্টারও বেশি ঘুমাল সে। ওই দীর্ঘ বিশ্রামের সময় প্রাক্তন কয়েদি স্বপ্নে দেখল সে কারাগারেই আছে, আর ওখানে টিকটিকি, ইঁদুর ইত্যাদিসহ সবকিছু আগের মতোই বিরাজমান।

সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ফেব্রুয়ারী ১১, ২০১০

Category: অনুবাদ, গল্প
Previous Post:সৃজনে নবযাত্রার প্রয়াস – মোবাশ্বির আলম মজুমদার
Next Post:এখন প্রাধান্য পাচ্ছে রম্যলেখা – শওকত আলীর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জাফর আহমদ

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

বিবিধ রচনা

হেলথ

Download PDF


My Account

Facebook

top↑