• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক্স
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

সামিনা মিনা ওয়াকা ওয়াকা… – আনিসুল হক

লাইব্রেরি » বিবিধ লেখার সংকলন » প্রবন্ধ » সামিনা মিনা ওয়াকা ওয়াকা… – আনিসুল হক

রমণীর সহিত পুরুষের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হইতে পারে না, তাহা বুঝিতে এই কলমচি পার্থপ্রতিম কাঞ্জিলালের বহু সময় লাগিয়া গেল। কারণ নশ্বর জীবনে সে কখনও ফুটবল খেলে নাই। ধাবন্ত বল লাগিয়াছিল বিষমদেশে, পুরুষ সঙ্গীরা সেই বেদনা বুঝিয়াছিল, নারীসঙ্গীরা বোঝে নাই, বুঝিবার কথাও নহে।…অতএব বিধি এই যে, পুরুষের সহিত তোমার নিষেপ্রম বন্ধুত্ব ও নারীর সহিত তোমার শত্রুতাপূর্ণ প্রেম হইবে।

জানি না, ঠিক উদ্ধার করতে পারলাম কি না! স্মৃতি থেকে লিখছি, বহুদিন আগে একটা ফটোকপি দিয়েছিলেন কবি ব্রাত্য রাইসু, এই কবিতাটির। মাত্র গতকালের ঘটে যাওয়া ঘটনাই মনে রাখতে পারি না, আর কোন সুদূরকালে পড়া একটা কবিতা! তবুও কিছু কিছু তো মনে আছে!
স্মৃতিভাণ্ডার জিনিসটাও খুব রহস্যময়, নয় কি? কত কিছু ভুলে যাই। আবার কত কিছু মনে পড়ে! বর্ষা এলেই যেমন মনে পড়ে শৈশবের কথা! এবার বর্ষায় মনে পড়ছে বৃষ্টিস্নাত ফুটবলের দিনগুলো! আমাদের প্রজন্মের কোন বালক আছে, যে বৃষ্টির দিনে ফুটবল খেলেনি! মাঠের মধ্যে হলুদ ব্যাঙের মেলা বসেছে, সেই সন্ধ্যা থেকেই তারা ডেকে চলেছে একটানা ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ, আর তারই মধ্যে সকাল কিংবা দুপুরে, বিকেল হলে তো কথাই নেই, নেমে পড়া গেল ফুটবল খেলতে। পানির ওপরে বল পড়লে কী রকম পিছলে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই মাঠ পরিণত হলো চষা ইরিখেতে। তাই বলে কি হতোদ্যম হবে বালকের দল? খেলা শেষে যখন বাড়ি ফেরার পালা, তখন কে রহিম, কে বিশু, বাবা-মার পক্ষেও আলাদা করা সম্ভব নয়। শুধু নিজ দায়িত্বে যে যার ঘরে ফিরে গেল বলে রক্ষে। ফিরেই কুয়োর পাড়, কিংবা টিউবওয়েলের তলে বসে পড়া। কাদামাটি সরে যাচ্ছে, কর্দমমূর্তির নিচ থেকে স্বরূপে বেরিয়ে পড়ছে মানবশরীরটা!
ফুটবল নাকি সবচেয়ে গণতান্ত্রিক খেলা! লিখেছে টাইম ম্যাগাজিন। সাদা খেলতে পারে, কালো খেলতে পারে, বেঁটে খেলতে পারে, ঢ্যাঙ্গা খেলতে পারে, কৃশকায়রা দারুণ খেলে; আবার রোনালদো লুইস নাজারিও ডি লিমা ওরফে দাদাদোর মতো মোটাসোটারাও কম যান না। ফুটবল খেলতে তেমন খরচাপাতি লাগে না, অন্তত আমাদের কালে আমাদের পাড়ায় লাগত না। ২২ টাকার তিন নম্বর ফুটবল একটা হলেই চলত। সেই টাকাটাও আমরা জোগাড় করতে পারতাম না। আট আনা করে চাঁদা দেওয়ার ক্ষমতাও তো সবার ছিল না। মুচির ছেলে, রিকশাওয়ালার ছেলে আর গৃহপরিচারক ছেলেটাও যে খেলত আমাদের সঙ্গে। তবে পাড়ায় একজন সম্পন্ন ঘরের ছেলেও থাকত, যার বাবা তাকে একটা আস্ত ফুটবল কিনে দিয়েছেন। তো সে তো একা খেলতে পারবে না, আমাদেরও তার সঙ্গে নিতে হবে। সেই ফুটবল পাম্প করতে পাড়ার সাইকেলের মেকানিকের কাছে যাওয়া, ভেসলিন কিনে বলের সেলাইয়ে মাখানো, আবার বল ফুটো হয়ে গেলে লাল ব্লাডারটা বের করে তাতে পট্টি লাগানো, কাজ তো কম ছিল না। সেসবও যদি না জুটত, তবে জাম্বুরা গাছে জাম্বুরা ফলত কেন? বৃক্ষ তোমার নাম কী! ফলে পরিচয়। জাম্বুরাগাছের নাম ফুটবলগাছ হলেও আমাদের কালে আমাদের পাড়ায় নামকরণের যথার্থতা সপ্রমাণ হতো বটে।
আর গ্রামের বাড়ি গেলে? আমন ধান কাটা হয়ে গেছে। জীবনানন্দ দাশের সোনালি খড় পড়ে আছে এদিক-ওদিক। কাটা ধানের গোড়া তখনো খেতে। হলুদ লম্বা ঠ্যাঙের রোগাটে শালিকটাকে উড়িয়ে দিয়ে তার মধ্যে চলছে ফুটবল খেলা। শুকনো কচুরিপানার ফোলা বৃন্তগুলো একসঙ্গে জড়ো করে একটা পিণ্ড বানানো হলে চমৎকার ফুটবল হতো। বাতাস ভরা ফুটবলের মতো সেটা মাটিতে পড়লে লাফাতও খুব।
ফুটবল কেবল গণতান্ত্রিক নয়, ওটা সাম্যবাদীও বটে। গরিবের জন্যও তা খেলনযোগ্য, অতিসহজেই। আর খালি পা না জুতা-পা? ওই ইতিহাস আপনারা জানেন। ভারত প্রথমবার যখন বিশ্বকাপ খেলতে গেল, খালি পায়ে খেলার অনুমতি না পাওয়ায় তারা খেলেনি। আমি যত দিন ফুটবল খেলেছি, খালি পায়েই খেলেছি। আমাদের ছোটবেলা রবীন্দ্রনাথের ছেলেবেলার চেয়ে কম অনাড়ম্বর ছিল না।
তাতে অগৌরবের কিছু নেই। দুঁদে ক্রীড়া-সাংবাদিক উৎপল শুভ্র একটা গল্প শুনিয়েছেন। জার্মানি বিশ্বকাপের সময় জার্মানির দুজন নাগরিকের সঙ্গে তাঁর কথা হচ্ছিল ব্রাজিলের ফুটবল আর জার্মানির ফুটবলের ঘরানা নিয়ে। ওই জার্মানরা তাঁকে বুঝিয়েছেন, জার্মানির ফুটবল কোনো দিনও লাতিন আমেরিকার ফুটবল হতে পারবে না। কারণ একজন লাতিন আমেরিকান ফুটবল খেলে খালি পায়ে, আশৈশব খালি পায়ের সঙ্গে ফুটবলটাকে লেপ্টে জড়িয়ে রেখে সে বড় হয়, ফুটবলের সঙ্গে তার সম্পর্কটা অঙ্গাঙ্গী, অন্যদিকে জার্মানি বছরের অনেকটা সময় ঢেকে থাকে বরফে, জুতা পরা পায়ে ফুটবলের সঙ্গে তার সম্পর্কটা আর যা-ই হোক, আত্মিক হয় না! কাজেই জার্মানি খেলে জার্মানির মতো, আর লাতিন আমেরিকানরা খেলে তাদের মতো! লাতিন আমেরিকার অনেক দেশে ফুটবল জীবনযাপনের অংশ, ফুটবল সেখানে প্রধান ‘খাদ্য’ এবং একমাত্র ধ্যানজ্ঞান।
আর আমরা খেলি আমাদের মতো। আমাদের বালকবেলা মানেই ফুটবল। সেই ফুটবলের কোনো জাগতিক উদ্দেশ্য ছিল না, কেবল ছিল অনাবিল আনন্দ! আর ছিল মোহামেডান-আবাহনী। এখন যেমন আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের পতাকা দিয়ে দেশ ছেয়ে গেছে, তখন এত ব্যাপকভাবে না হলেও, মোহামেডান-আবাহনীর খেলার মৌসুমে বহু বাড়িতে বহু ছাত্রাবাসের ছাদে আবাহনী-মোহামেডানের পতাকার প্রতিযোগিতা শুরু হতো!
তারপর এল টেলিভিশন। তারপর এল সরাসরি বিশ্বকাপ দেখানো। জিকো, সক্রেটিস, ব্যাজ্জিও, পাওলো রসি, আর এলেন মারাদোনা। কোথায় গেল আমাদের সেই নিষ্পাপতার কাল? টেলিভিশনে বিশ্বকাপ আর ইদানীং ইংলিশ লিগ আর স্প্যানিশ লিগ দেখার পর যখন আবাহনী-মোহামেডান খেলা দেখি, বুকটা ভেঙে যেতে চায়! দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলি, দেখিস, একদিন আমরাও…।
আমাদের দেখা হয় না কিছুই। আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ তাঁর সংগঠন ও বাঙালি বইয়ে লিখেছেন, আমাদের সমুদয় ব্যর্থতার পেছনে আমার ঊনস্বাস্থ্য, আমাদের অপুষ্টি! টাকা থাকলে যে বহু কিছু হয়, তার প্রমাণ জাপান, তার প্রমাণ কোরিয়া। কিন্তু টাকা থাকলেই তো পেলে হয় না, মারাদোনা হয় না, ইতো হয় না, মেসিও হয় না। গরিব ঘরের এই ছেলেগুলো, যাঁদের বাড়িতে ঠিকমতো খাবার জুটত না, স্কুলে যাওয়া হতো কি হতো না, তাঁরা একেকজন হয়ে উঠলেন এই গ্রহের সবচেয়ে নামী মানুষ, সবচেয়ে দামি মানুষও। আমাদের কেন হয় না?
জানি, আমরা খেলুড়ে জাতি নই, লড়াকুও নই। আমরা হাঁটি না, ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলতেও আমাদের রিকশা লাগে! কিন্তু সেটা তো সবার বেলায় সত্য নয়। আমাদের রিকশাওয়ালা, আমাদের কৃষক, আমাদের মুটে মজুররা কী গাধার শ্রমটাই না স্বীকার করেন! তাহলে? তবে আমরা জাতি হিসেবে বিশ্বনাগরিক বটে। সিএনএনে দেখলাম, বাংলাদেশের একটা মফস্বল শহরের আকাশরেখা দেখাচ্ছে, তাতে কত দেশের যে পতাকা! একটা বালকের সাক্ষাৎকার নেওয়া হলো, তার গায়ে আর্জেন্টিনার পোশাক। পরকে আপন করে তোলার মতো এই উদারতা আর কোন জাতির মধ্যে আছে, কে জানে? এরই মধ্যে দুজনের মৃত্যুসংবাদ এসেছে, একজন আর্জেন্টিনার পতাকা লাগাতে গিয়ে বাড়ির ছাদ থেকে ভূমিস্থ হয়ে মারা গেছেন, আরেকজন আত্মঘাতী হয়েছেন পতাকা কিনে না দেওয়াতে! মারাদোনাকে যেবার বিশ্বকাপের খেলা থেকে বাদ দেওয়া হলো, এরশাদ-আমলে, সেবার আমাদের জাতীয় সংসদে নিন্দাপ্রস্তাব পাস করা হয়েছিল।
ফুটবল নিয়ে রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে যে বহুত বাগিবতণ্ডা অতীতে হয়েছে, সে খবর বিজ্ঞ পাঠক আমার চেয়ে ঢের বেশি জানেন। এবারও বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে ফরাসি দলের অঁরি হাত দিয়ে বল এগিয়ে দিলে গ্যালাস সেটাকে গোল বানিয়ে ছাড়েন, আর তাতেই আয়ারল্যান্ডের বিশ্বকাপ-স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে যায়, এই নিয়ে আয়ারল্যান্ডে কম কূটনৈতিক উত্তেজনা হয়নি! ফুটবল মাঠে আর মাঠের বাইরে মজার কাণ্ডও কম ঘটেনি। ১৯৩০ সালের কথা। উরুগুয়েতে বিশ্বকাপ হচ্ছে। সেমিফাইনালে খেলছে পরাক্রমশালী আমেরিকা আর আর্জেন্টিনা। আর্জেন্টিনা একটা বিতর্কিত গোল দিল। আমেরিকার কোচ সেটা মেনে নিতে পারছেন না। রেফারিকে গালি দিতে দিতে তিনি ছুটলেন মাঠের মধ্যে। তাঁর দলের একটা খেলোয়াড়কে শুশ্রূষা করতে হবে। তিনি তাঁর ডাক্তারি ব্যাগ ছুড়ে মেরে বের করলেন ক্লোরোফরমের বোতল। ছিপিটা খুলে লাগাবেন আহত খেলোয়াড়ের জখমে। ছিপি খোলার সঙ্গে সঙ্গে তিনি নিজেই অজ্ঞান হয়ে গেলেন চেতনানাশকের গুণে। সব খেলোয়াড় তাঁকে স্ট্রেচারে তুলে মাঠের বাইরে নিয়ে গেল। হাততালি দিতে লাগল ৮০ হাজার দর্শক।
দক্ষিণ আফ্রিকায় বিশ্বকাপ চলছে। আপনারা খেলা উপভোগ করছেন। এই সময় লেখা উপভোগের সময় নয়। বিশ্বের ৩০০ কোটি লোক এই একটা চর্মনির্মিত বায়ুভর্তি গোলকের পেছনে দিবানিশি ছুটে চলেছে। এটা এখন বিরাট ব্যবসা। ফিফার প্রেসিডেন্ট এখন পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ব্যক্তি! এই সময় এই লেখা কে পড়বে?
কেউই পড়বে না, তাই নির্ভয়ে বলি, এখন পর্যন্ত, বিশ্বকাপে আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে কেনানের গানটা, শুনতে ও পড়তে, আমাকে দাও মুক্তি, আমাকে দাও অগ্নি, আমাকে দাও যুক্তি, আমাকে নাও ঊর্ধ্বে, দেখো চ্যাম্পিয়ন, এখনই যাও মাঠে, আমাকে দাও রূপ, আমাদেরকে দাও না গৌরব! আর দেখতে ও শুনতে ভালো লেগেছে কী! শাকিরার জোড়হাতের নৃত্যভঙ্গিমা, তাঁর কদমফুলোপম হলুদ-সবুজে ঢাকা দেহবল্লরীর আফ্রিকীয় ভারতীয় নৃত্যলহরী:
সামিনা মিনা এহ এহ
ওয়াকা ওয়াকা এহ এহ
সামিনা মিনা ঝাংগালেওয়া
দিস টাইম ফর আফ্রিকা।
সামিনা মিনা ওয়াকা ওয়াকার অর্থ আমি জানি না, কিন্তু এর ছন্দ আর লয় আমাকে অবিরাম দোলা দিয়ে যাচ্ছে। এই লেখা শুরু করেছিলাম একটা কবিতা দিয়ে। ফুটবলকে গণতান্ত্রিক, সাম্যবাদী এমনকি পণ্যবাদী বলতে পারেন, এখনো এটাকে লিঙ্গনিরপেক্ষ বলা যাবে না। প্রথম গোলটা ‘সবার জন্যে শিক্ষা’র মহান উদ্দেশে উৎসর্গ করে পৃথিবীবাসীকে তার এক নম্বর লক্ষ্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ফিফা এবং তার সঙ্গে জাতিসংঘ ও শাকিরা নিশ্চয়ই মহৎ কাজ করেছেন, তবু আমরা সেই দিনের অপেক্ষায় থাকব, যেদিন ১১ জন খেলোয়াড়ের ৫ জন নারী নেওয়া বাধ্যতামূলক হবে। আচ্ছা, তা না হোক, অন্তত মেয়েদের বিশ্বকাপটা তো জমজমাট হতে পারে। হবে নিশ্চয়ই।
কিন্তু তার পরও এই কবিতাটির সঙ্গে প্রত্যেক বালকের একটা ছেলেবেলার স্মৃতি হানা দেবেই, ফুটবলটা বালকদের মাঝেমধ্যে ভীষণ ব্যথাও দিয়েছিল বটে। বালিকারা সেই দুঃখ বুঝবে না!
আমাদের আরও কত বেদনাই তো বালিকারা বোঝেনি!

সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুন ১৮, ২০১০

Category: প্রবন্ধ
Previous Post:ফাইনাল – রোদ্রিগো ফ্রেসান
Next Post:আফ্রিকা জানে কীভাবে ফুটবল খেলতে হয় – হেনিং মানকেল

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

বিবিধ রচনা

হেলথ

Download PDF


My Account

Facebook

top↑