• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক্স
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

দস্তানা – সুদীপ্ত সালাম

লাইব্রেরি » বিবিধ লেখার সংকলন » গল্প » দস্তানা – সুদীপ্ত সালাম

‘গাড়ি গ্যারেজে রেখে তুমি চলে যাও।’ ড্রাইভারকে কথাটা বলেই গাড়ি থেকে নেমে পড়ে এমি। মাথাটা বেশ ধরেছে, র খাওয়াটা ঠিক হয়নি, শরীরের ওপর ধকলটাও কম যায়নি। উইলিয়ামটা তো একটা পশু। শরীর নিয়ে এমনিতে এমির কোনো শুচিবাই নেই। কিন্তু উইলিয়ামটা একেবারে ঝাঁপিয়ে পড়ে। সেক্সে ও অ্যাডভেঞ্চার চায়। তার ওপর আজ ছিল ওর জন্মদিন।
এমির বর্তমান বয়ফ্রেন্ড উইলিয়াম। ৪ নম্বর বয়ফ্রেন্ড। উইলিয়ামের বার্থ ডে পার্টি থেকেই এমি এই মাত্র ফিরল। রাত প্রায় দুইটা। বেডরুম পর্যন্ত যেতে পারলেই কেল্লা ফতে। কিন্তু মাথাটা যে শরীরকে সঙ্গ দিচ্ছে না। দরজা পর্যন্তও যাওয়া যাবে কি না সন্দেহ। সবুজ ঘাসে ছাওয়া লনটার মাঝখান দিয়ে দরজার দিকে হেলহে-দুলতে এমি এগিয়ে যায়। চলতে চলতে ঘরের চাবিটা হ্যান্ডব্যাগ থেকে বের করে সে। বাড়িতে কেউ নেই। সে জানে আয়াটা রান্নাবান্না শেষে চলে গেছে নটার দিকে।
এমির মা নেই। এমি বড় হয়ে জেনেছে, সে যখন অনেক ছোট তখন তার মা তাকে আর তার বাবাকে ফেলে এক বড় ব্যবসায়ীর সঙ্গে পালিয়ে গেছেন। আজ পর্যন্ত মার কোনো খবর পায়নি এমি। খোঁজখবর নেওয়ার চেষ্টাও কোনো দিন এমি করেনি। বাবা বিরাট ব্যবসায়ী। বছরের প্রায় পুরো সময়টাই তাকে দেশের বাইরে থাকতে হয়। একমাত্র সন্তানটি যে বড় হয়ে গেছে সেদিকে তার সতর্ক নজর আছে বলে এমির কখনো মনে হয়নি। তিনি এখন ইউরোপ ট্যুরে আছেন।
এমি দরজার কাছে চলে এসেছে। লকে চাবি লাগিয়ে এমি যেই দরজাটা খুলতে যাবে, তার চোখ পড়ল বন্ধ দরজার পাশে পড়ে থাকা একটি নোংরা দস্তানার ওপর। তার চমৎকার লনে এটা কীভাবে এল? এমির মাথাটা চট করে গরম হয়ে যায়, আয়াটা যে সারা দিন কী করে! এমি ঝুঁকে পাশেই রাখা ছোট বেলচাটা নেয়। দস্তানাটি ময়লার বাস্কেটে ফেলতে বেলচা দিয়ে ওঠায়। দস্তানাটা ভারী। একটি দস্তানা যতটা ভারী হওয়ার কথা তার চেয়ে অনেক বেশি ভারী এই দস্তানাটি। টালমাটাল অবস্থায়ও এমির কাছে ব্যাপারটা অস্বাভাবিক ঠেকে। ভয়ে ভয়ে সে দস্তানাটা ছুঁয়ে দেখে।
যা সন্দেহ করেছিল তাই। দস্তানাটা খালি নয়! তার ওপর ভেজা! এমন মাতাল সে হয়নি যে বুঝতে পারবে না দস্তানাটি রক্তে ভেজা এবং এটি কারও কাটা কব্জি! কাটা কব্জিসহ বেলচাটি ফেলে দিয়ে আতঙ্কে ছিটকে পড়ে এমি। চিৎকার করে কাউকে ডাকার মতো শক্তিও তার নেই।
দরজা খুলে দ্রুত সে বাড়িতে ঢোকে। ভয়ে তার নেশা যেন কেটে গেছে। কী দেখল সে! সব ভুল নয়তো? সবই হেলোসিনেশন হয়তো? দরজাটা একটু ফাঁক করে এমি বাইরে উঁকি দেয়, হ্যাঁ, দস্তানাটি পড়ে আছে। ঠাস করে দরজা লাগিয়ে দেয়। তার আঙুলের ডগায় কালচে রক্ত লেগে আছে। বেসিনের দিকে ছুটে যায় এমি। হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে ঘষে ঘষে রক্ত ধোয়। সে তার ক্লান্ত শরীরটা সোফায় ছেড়ে দেয়।
তার এখন কী করা উচিত? পুলিশকে জানানো উচিত। সে-ই ফেঁসে যাবে না তো? কব্জিটা এখানে হলে বাকি শরীরটা কোথায়? কব্জিটা যার, সে কি বেঁচে আছে? কব্জিটা কীভাবে কাটা গেল? এমন অসংখ্য প্রশ্নবাণে জর্জরিত হতে লাগল এমি।
একসময় সে সিদ্ধান্ত নেয়, পুলিশকে খবর দিতে হবে। এমন অবস্থায়ও বাবার কথা একবারও মনে হলো না তার। রাত তখন তিনটার কাছাকাছি। রিসিভারটা কানে নিয়ে এমি থানার নম্বরে ডায়াল করে।

২.
১৫ মিনিটের মধ্যে পুলিশ চলে আসে। সাব-ইন্স্পেক্টর মনিরের কাছে বিস্তারিত বলে এমি। মনির সাহেব যে এমিকে খুব গুরুত্ব দিচ্ছেন তা নয়। তিনি জানেন, মেয়েটি পুরোদমে ড্রাঙ্ক।
‘দস্তানাটি, মানে কাটা কব্জিটা এখন কোথায়?’ মনির সাহেব হঠাৎই প্রশ্নটা করেন। এমি একটু ঘাবড়ে যায়। নিজেকে সামলে নিয়ে বলে, ‘আসুন আমার সাথে।’ বলেই এমি লনের দিকে এগিয়ে যায়। টালমাটাল ভাবটা এখন অনেকটাই কম। পুলিশ এমিকে অনুসরণ করে বাড়ি থেকে লনে নেমে আসে। দস্তানাটি যথাস্থানেই পড়ে আছে। দস্তানাটি দেখিয়ে ‘এই যে এটা’ বলেই এমি ঘরে ফিরে আসে।
পুলিশ দস্তানাটি ভালোভাবে দেখছে, এমি কিছু দেখছে না। সে দেখতে চায় না। দরজা খোলা, পুলিশদের মধ্যে আলোচনা চলছে, বোঝা যাচ্ছে। কিছুক্ষণ পর মনির সাহেব ঘরে ঢুকে এমিকে বলেন, ‘ম্যাডাম, আপনার রেস্টের দরকার আছে, আপনি স্বাভাবিক অবস্থায় নেই।’ এমি এসব কথার কোনো মানে ধরতে পারে না। মনির সাহেবই ক্লিয়ার করেন। ‘ম্যাডাম, এটা দস্তানা ঠিকই, কিন্তু এটাতে কোনো কাটা কব্জি তো নে-ই এবং এটা রক্তভেজাও না।’
এমি মনির সাহেবের কথা শুনে আকাশ থেকে পড়ে। লোকটা এসব কী বলছে? বলে, ‘আমি নিজের চোখে দেখেছি।’ ধরে দেখে…কথাগুলো শেষ হওয়ার আগেই মনির সাহেব দস্তানাটা এমির দিকে বাড়িয়ে দেন, ‘দেখুন, নিজেই পরীক্ষা করে দেখুন। এটি তো একটি পরিষ্কার দস্তানা।’
এমি তখন এই দস্তানাটাই কি দেখেছিল? মনে হয় না। কিন্তু এমি দস্তানাটা ধরে দেখার সাহস পায় না। সে বিড়বিড় করে কি যেন বলতে চায়, গুছিয়ে বলতে পারে না। দস্তানাটা টেবিলে রেখে মনির সাহেবই বলেন, ‘আমরা পুরো লনটা তন্ন তন্ন করে দেখেছি, এই দস্তানাটা ছাড়া আর কিছুই পাইনি। আমার লোক আশেপাশে খবর নিয়েছে, কোনো অপ্রীতিকর ঘটনারও সন্ধান পাওয়া যায়নি। ম্যাডাম, কিছু মনে করবেন না, আপনি অসুস্থ, রেস্ট নিন…।’
এবার এমির মাথাটা গরম হয়ে যায়, মনির সাহেবের কথা শেষ হওয়ার আগেই এমি চিৎকার করে ওঠে, ‘আমি অসুস্থ মানে! হাও ডেয়ার ইউ টু সে দ্যাট! ডু ইউ নো…!’ এমি নিজেও জানে না এভাবে সে আরও কিসব একনাগাড়ে বলে চলল এবং কখন মনির সাহেবরা চলে গেলেন। তার ঘোর ভাঙল তখন যখন দরজাটা সজোরে বন্ধ হলো। মনির সাহেব বুঝেছিলেন ওর সঙ্গে কথা বাড়িয়ে লাভ নেই।
এমি দরজাটা লক করে এসে ড্রইংরুমের সোফায় বসে, আত্মস্থ হয়ে ভাবে, ভুলটা হয়তো তারই। নিজের বোকামিতে তার হাসিও পায়। ঠিক তখনই চোখ পড়ে টেবিলের ওপর রাখা দস্তানাটির ওপর। এমি এবার ভীষণ ভয় পায়, কেননা দস্তানাটি রক্তভেজা! মানে কী! এমি আঁতকে ওঠে। সোফার গায়ে পাথর হয়ে সেঁটে থাকে সে। কণ্ঠ দিয়ে আওয়াজ বের হয় না। চিৎকার দিতে চায়, পারে না।
এবার এমিকে চূড়ান্তভাবে বিস্মিত করে দিয়ে দস্তানাটি আঙুলে ভর দিয়ে দাঁড়ায়! সঙ্গে সঙ্গে একটি আর্তচিৎকার বেরিয়ে আসে এমির কণ্ঠ থেকে। তার চিৎকার ঘরের মধ্যে পাক খেতে খেতে মিলিয়ে যায়। দস্তানাসহ কাটা কব্জিটি দুই আঙুলে হেঁটে এমির দিকে আসা শুরু করে!
এমি আরেকটা চিৎকার দিয়ে সোফাসহ উল্টে পড়ে যায়।

৩.
সূর্যের আলো এসে চোখে পড়ায় এমি বিরক্ত নিয়ে চোখ মেলে দেখে সকাল হয়ে গেছে। সে পড়ে আছে ঘরের মেঝেতে। মাথার পেছনটায় ব্যথা, হাত দিয়ে দেখে জমাটবাঁধা রক্ত। তার বুঝতে বাকি থাকে না, গত রাতে ভয়ে সে সোফাসহ উল্টে পড়ে গিয়েছিল, আর তখনই তার জ্ঞান হারায়। ভয় আবার দানা বাঁধে। দস্তানা, মানে কাটা কব্জিটা কোথায়? টেবিলের ওপর ছিল। নিজের বিধ্বস্ত শরীরটা কোনোমতে মেঝে থেকে টেনে তোলে সে। টেবিলটার দিকে এগিয়ে যায়, দস্তানাটা টেবিলে নেই!
এর মানে কী? এমি ভাবে। দুঃস্বপ্ন নয় তো? সবই ভুল? সবই মস্তিষ্কের বানানো গাঁজাখুরি গল্প? এমির মাথা পরিষ্কার হয় না। দ্বন্দ্ব নিয়েই সে তার বেডরুমের দিকে এগোয়। একটা লম্বা গোসলের প্রয়োজন।
বেডরুমে ঢুকতেই পড়ার টেবিলে তার চোখ আটকে যায়। টেবিলে দস্তানাটি পড়ে আছে! কিন্তু স্বস্তির বিষয় হলো, দস্তানাটি রক্তমাখা নয়। নতুনের মতো পরিষ্কার। নিজেকে সামলে নিতে এমির একটু সময় লাগে। মনে খানিকটা ভয়, তার পরও দুরু দুরু মনে এমি দস্তানাটার দিকে হাত বাড়ায়।
হাঁপ ছেড়ে বাঁচে সে, দস্তানাটা খালি, নরমাল।
একটি সাধারণ দস্তানা নিয়ে শুধু শুধু তিলকে তাল করা আরকি। আর র-এর পাল্লায় পড়বে না এমি। এমি কথাগুলো ভাবতে ভাবতে কপালের ঘাম মোছে। হঠাৎই তার চোখ পড়ে টেবিলে খোলা পড়ে থাকা তার ডায়েরিতে। কিসব লেখা। কী লেখা? কে লিখল? এমির বিস্ময় ও ভয় ফের ধীরে ধীরে ফিরে আসতে থাকে। সে ভয়ে ভয়ে ডায়েরিটা হাতে নেয়। লেখাটা চেনা চেনা, কিন্তু এটা তার নিজের লেখা নয়। যা-ই হোক, এমি বিড়বিড় করে লেখাটা পড়া শুরু করে—
মা-মণি,
আমি তোমার মা বলছি। আমি জানি তুমি আমাকে ভীষণ ঘৃণা কর। তোমার ঘৃণা আমাকে তীব্র যন্ত্রণা দেয়, মা। আমি কেন বিনা দোষে আমার মা-মণির ঘৃণার আগুনে পুড়ব, বলো? হ্যাঁ, মা, আমি নির্দোষ। তুমি শুনেছ, আমি তোমাকে রেখে চলে গেছি। চলে গেছি সত্যি, কিন্তু কারও সাথে পালিয়ে যাইনি, মা। আমাকে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল।
আমাকে তোমার বাবা খুন করেছিল! তারপর আমাকে মাটিচাপা দেওয়া হয় বাড়ির পেছনের অংশে। তোমার অ্যালামেন্ডার চারাটি যেখানটায় ঠিক সেখানে।
কেন? একটি মেয়ের সাথে তোমার বাবার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তারা রেগুলার মেলামেশা করত। তোমার জন্মের পরই আমি তা জানতে পারি। তোমার বাবার প্রতারণা আমাকে চূর্ণবিচূর্ণ করে দেয়। তখন আমার একমাত্র আশ্রয় ছিলে তুমি। তোমার বাবার সকল প্রপার্টি ছিল আমার নামে। প্রপার্টি তার নামে লিখে দিতে তোমার বাবা আমাকে চাপ দিতে শুরু করে। আমি রাজি হই না। আমি বুঝতে পারলাম, তোমার বাবার সাথে আর এক ছাদের নিচে থাকা যায় না।
আমি ডিভোর্স চাই। এই ছিল আমার অপরাধ। সে ও তার প্রেমিকা মিলে এক রাতে আমার ওপর চড়াও হয়। আমি তখন তোমাকে নিয়ে বাসায় একা। মেয়েটি প্রথমে তোমাকে আমার বুক থেকে ছিনিয়ে নেয়। তারপর তোমার বাবা আমার হাত-মুখ-পা বেঁধে আমার গলায়…।
মা-মণি, আমি তোমার কথা ভেবেই সেদিন তোমার বাবার অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছিলাম।
মা-মণি, আমি মরে শান্তি পাচ্ছি না, কেননা তুমি আমাকে ঘৃণা কর।
তোমার অভাগী মা-টাকে তুমি ঘৃণা কোরো না, মা।
ইতি
তোমার মা।
এমির হাত থেকে ডায়েরিটা মেঝেতে পড়ে যায়।

সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মে ০৭, ২০১০

Category: গল্প
Previous Post:কাজী আবুল কাসেমের মুখ – মুস্তাফা জামান আব্বাসী
Next Post:রবীন্দ্রনাথের একটি চিঠি – সুধা সেন

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

বিবিধ রচনা

হেলথ

Download PDF


My Account

Facebook

top↑