• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক্স
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

রসের রসায়নে রসাতল

লাইব্রেরি » বাংলা কৌতুক » রম্য রচনা » রসের রসায়নে রসাতল

বারান্দায় রোদে পিঠ দিয়ে বসে খুরো লাগানো কাঁসার গ্লাসে চুমুক দিচ্ছিলেন ইয়াকুব আলী। গ্লাসটির বয়স অন্তত তাঁর বয়সের দ্বিগুণ। পিতৃপুরুষের স্মৃতিস্পর্শ অনুভব করেন তিনি গ্লাসটি হাতে নিলে। পুরো আধা লিটার পানি ধরে। তবে এখন তাতে পানি নেই। যে তরলটির ওপরে তিনি খানিক পর পর মুঠি মুঠি মুড়ি ছেড়ে দিচ্ছেন, তা খেজুরের রস। পিঠের ওপর রোদ। ভেতরে যে সুখদ অনুভূতি হচ্ছে তা খুলে বলার মতো কোনো ভাষা এই মুহূর্তে তাঁর মনে ও মাথায় আসছে না।
সকালে এই দক্ষিণদুয়ারি ঘরের বারান্দায় বসে রস খাওয়ার জন্য তিনি বাড়িতে এসেছেন সুদূর রাজধানী থেকে। প্রতিবছরই আসেন শীত পড়লে সুবিধামতো সময়ে। ‘পান’ শব্দটি তাঁর পছন্দ নয়। দুটো কারণে। প্রথমত, পান বললে ইদানীং লোকে ‘সুরা পান’ বুঝে থাকে। কারণ, বারিতে তাঁর ঘোরতর অরুচি এর জঘন্য স্বাদের জন্য। প্রতিক্রিয়া তো পরের বিষয়, স্বাদই তাঁর পছন্দ নয়। দ্বিতীয়ত, তিনি কেবল রস নেন না গ্লাসে, তার ওপরে মুড়ি ছড়িয়ে দেওয়া চাই চা-ই। তারপর চুমুক দিয়ে মুড়িসমেত গলাধঃকরণ ও চর্বণ একত্রে যুগলকর্ম সম্পাদন। অতএব শুধু একতরফা ‘পান’ নামের ক্রিয়াটিকে কৃতিত্ব দিতে যাওয়া কেন? উপরন্তু রসের প্রতি তাঁর এই দুর্বলতা থেকে আবার ওই ‘পানাসক্তি’ বা ‘পানাসক্ত’ কথাটিও উঠতে পারে। অন্যের ফুটো খোঁজার লোকের তো অভাব নেই দুনিয়ায়। অতএব, সব দিক থেকে রস খাওয়াই দস্তুর মনে হয় তাঁর কাছে। ব্যাকরণের তোয়াক্কা না করে শৈশব থেকে এভাবেই অতি আনন্দের সঙ্গে খেজুরের রস খেয়ে আসছেন তিনি ।
গ্লাসে চুমুক দিতে দিতে তিনি ভাবছিলেন, শব্দটি আসলে সঠিক কী হবে, ‘রসগ্রাহী’, ‘রসানুরাগী’, ‘রসপ্রেমী’ নাকি ‘রসিক’। কিন্তু তাঁর মনে হচ্ছে, খেজুরের রসের ক্ষেত্রে এর কোনোটিই ঠিক লাগসই হচ্ছে না। খেজুরের রসের ভক্তদের—এটুকু ভাবতেই তাঁর মনে হলো ‘রসভক্ত’ শব্দটি কি চলবে? না এটিও ‘গুরুভক্তি’ বা ‘পতিভক্তি’র ক্ষেত্রে যেমন খাপে খাপে লেগে যায়, খেজুরের রসের ক্ষেত্রে ঠিক তেমন লাগে না। আবার আগের ভাবনায় ফিরলেন তিনি। নাহ্, যাকে ছাড়া বাংলার শীতকালই বৃথা, সেই খেজুরের রসের জন্য কোনো শব্দ থাকবে না—কোনো মানে হয়! দেশে নাকি এত এত খ্যাতিমান কবি, কথাশিল্পী, ব্যাকরণবিদ তবে এতকাল ধরে তাঁরা করলেনটা কী? অথচ এ খেজুরগাছটি। কী বদখতই না চেহারা। কোনো লালিত্য নেই, কোমলতা নেই, খটখটে চেহারা অথচ তার বুকেই কিনা বহমান এমন সুমিষ্ট সুধাসম রসধারা। আরে, এটি যদি ফল্গুধারা না হয়, অমৃতধারা না হয়, তবে কে এসব খেতাব পাওয়ার যোগ্য?
ভাবনার গভীরতর স্তরে উপনীত হয়ে তিনি উপলব্ধি করলেন, আমাদের এখানে এই এক সমস্যা। সব অযোগ্যরা খেতাব পদক বাগিয়ে নিচ্ছে একের পর এক, আর যোগ্যরা পড়ে আছে অবহেলা-উপেক্ষায়। খেজুরগাছের কোনো খেতাব নেই। রসের কোনো উপাধি নেই। এমনকি এই রসের যাঁরা প্রকৃতই গুণগ্রাহী, তাঁদের পরিচয় দেওয়ার মতো পর্যন্ত একটি শব্দ নেই বাংলার শব্দভান্ডারে! ভাবা যায়! ভাবনা যতই গভীর স্তরে যাচ্ছিল, ততই উত্তাপ বোধ করছিলেন তিনি ভেতরে ভেতরে। এটি ভাবনার প্রতিক্রিয়া না রোদের প্রভাব ঠিক অনুমান করতে না পেরে গা থেকে চাদর নামিয়ে গ্লাসে লম্বা চুমুক দিলেন এবং মিষ্টি স্রোতের সঙ্গে সুড়সুড় করে কতিপয় মুড়ি প্রবেশ করল তাঁর মুখবিবরে ।
এ কথা ঠিক যে, রসে আর সেই আগের মতো স্বাদ তিনি পাচ্ছিলেন না। চুন্নু মিয়া বলে গেল বটে যে, ‘পহেলা কাট রস’। তবে তাঁর সন্দেহ আছে। পয়লা কাট কি না কে তা পরীক্ষা করতে যাবে? আগের দিনের লোকের ঈমান ছিল, জবান ছিল। এখন ওসব সেকেলে বিষয় বিবেচনায় পরিত্যাজ্য হয়ে গেছে। রসের মধ্যে কী না কী মিশিয়ে দিচ্ছে, কে জানে! দেশের সবাই যে হারে রসায়নবিদ হয়ে উঠছে, তাতে হয়তো খাদ্যে ফরমালিন মেশানোর মতো যুগান্তকারী পদ্ধতি আবিষ্কারের জন্য চুন্নু মিয়ার মতো কেউ একজন নোবেলও পেয়ে যাবে কোনো একদিন। বিরক্তিতে মন তেতো হয়ে এল তাঁর—সব রসাতলে যাবে!
‘রসাতল’ শব্দটি তাঁর মস্তিষ্কে বিদ্যুৎ চমকের মতো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। তিনি শিহরিত বোধ করেন। না, একেবারে যে কিছুই নেই, তা নয়। রসাতলের মতো এমন একটি লাগসই শব্দ কে উদ্ভাবন করেছিলেন? এক্কেবারে আধুনিক শুধু নয়, যাকে বলে ‘লেটেস্ট’। খাপে খাপে মিলে যাচ্ছে জামানার সঙ্গে। রসাতলে যাচ্ছে সব। তাঁর ভেতরে প্রবল অস্থিরতা কাজ করতে থাকে। মনে হচ্ছিল যিনি এই কালজয়ী শব্দের স্রষ্টা সেই মহামানবকে এখন কাছে পেলে নির্ঘাত চুমো খেতেন তার গালে। উত্তেজনা প্রশমন করতে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন তিনি। মনে নেই রসের পাত্র অর্ধপূর্ণ রয়ে গেছে। কতিপয় মুড়ি রসসিক্ত হয়ে ডুবে গেছে তলায়।

আশীষ-উর-রহমান
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ডিসেম্বর ০৬, ২০১০

Category: বাংলা কৌতুক, রম্য রচনা
Previous Post:ফাঁদ – আ. তেদেস্কি
Next Post:সিনেমার ভুলভাল: হাতির পাল যেথায় আকাশেতে ওড়ে!

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

বিবিধ রচনা

হেলথ

Download PDF


My Account

Facebook

top↑