• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক্স
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

প্রশ্নপত্রের ফাঁসের ফাঁস – শামস্ বিশ্বাস

লাইব্রেরি » বাংলা কৌতুক » রম্য রচনা » প্রশ্নপত্রের ফাঁসের ফাঁস – শামস্ বিশ্বাস

আমাদের স্কুলের ১৮২ বছরের ইতিহাসে অন্যতম কুলাঙ্গার ছিলাম আমরা। এমন কোনো ক্লাস ছিল না যে ক্লাসে আমরা ফেল করিনি। আমাদের শিক্ষক আর অভিভাবকদের কাছে বিস্ময়কর ব্যাপার ছিল বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরোনো ও স্বনামধন্য এ স্কুলে আমরা কীভাবে চান্স পেলাম! আমরা নিজেরাও ১৮ বছর ধরে তাই ভাবছি কীভাবে চান্স পেলাম!
ক্লাস এইটে আমাদের সহপাঠী হয় আমাদের বাংলা দ্বিতীয় পত্রের শিক্ষকের ছেলে। আমরা ফেল করে-করে আবিষ্কার করেছিলাম, আমাদের স্কুলের নিয়ম হলো, চার শাখার যেকোনো এক শিক্ষক প্রশ্নপত্র তৈরি করেন। আমাদের হিসাবে সেই সহপাঠীর শিক্ষক-বাবার বাংলা দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্নপত্র তৈরির কথা। আমরা তার কাছে গেলাম তার শিক্ষক-বাবা তাকে বাংলা দ্বিতীয় পত্রে কী কী বেশি পড়াচ্ছেন, তা জানার জন্য। বুকের ভেতর আশা, শিক্ষাজীবনে প্রথমবারের মতো যদি ৮০ নম্বর পাই!
দেখতে দেখতে পরীক্ষা সামনে চলে এল। আমরা চেয়েছিলাম সাজেশন আর আমাদের সেই সহপাঠী তার শিক্ষক-বাবার আলমারি থেকে চুরি করে এনে দিল প্রশ্নপত্র!
কিন্তু আমাদের প্রশ্নপত্র পাওয়ার গোপন কথা গোপন থাকে না। আমাদের স্কুলের মতো নামকরা স্কুলের শিক্ষকের কাছ থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে, কথাটা স্কুলের বাইরে গেলে চারদিকে রি রি ধ্বনি উঠবে বলে গোপনে অনেক তদন্ত হলো। কিন্তু প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা প্রমাণিত না হলেও স্যাররা সিদ্ধান্তে পৌঁছালেন যে, যদি আমরা বাংলা দ্বিতীয় পত্রে বেশি নম্বর পাই, তাহলে তা প্রমাণিত হয়ে যাবে। এ জন্য প্রশ্নপত্র অপরিবর্তিত থাকে।
বাংলা দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা দিতে গিয়ে বুকটা ফেটে গেল—শিক্ষাজীবনে প্রথমবারের মতো প্রশ্নপত্রের সব উত্তর মুখস্থ কিন্তু বন্ধু আর বন্ধুর বাবার জন্য আমরা খারাপ পরীক্ষা দিলাম এবং ফেল করলাম। এর পর থেকে আমাদের নিয়ে একটা কথা চালু হয়ে গেল: প্রশ্নপত্র পেলেও আমরা পাস করতে পারব না।
২০০৪ সালে আমার স্বপ্নের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য ভর্তি-পরীক্ষা দিতে গেলাম। পরিচিত পাতিনেতা আর স্থানীয় বন্ধুরা প্রস্তাব দেয় মাত্র ২০-৩০ হাজার টাকা দিয়ে প্রশ্নপত্র কিনে কাঙ্ক্ষিত বিষয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য। বাড়িতে এ কথা জানাতে গিয়ে ঝাড়ি খাই। পরীক্ষার আগের দিন সন্ধ্যায় প্রস্তাব আসে ১০ হাজার টাকা দিলে প্রশ্নপত্র পাওয়া যাবে। মাঝরাতে খবর এল পাঁচ হাজার টাকায়। শেষরাতে বলল দুই হাজার টাকা দিলে উত্তরসহ প্রশ্নপত্র। সকালে পরীক্ষা দিতে গেছি, এ সময় একজন বলে মাত্র ৫০০ টাকা দিলে প্রশ্নপত্র দেবে!
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যর্থ হয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অন্তর্ভুক্ত রাজশাহী কলেজে ভর্তি হলাম। এখানে ভর্তি হয়ে জানলাম, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৮ মাসে এক বছর হয়।
২০০৬ সালের দ্বিতীয় বর্ষ পরীক্ষা ২০০৮ সালে দিতে বসলাম। প্রথম পরীক্ষা ইংরেজি (আবশ্যিক)। আমাদের সিলেবাসে ১১.(ক)-তে আন্ডার লাইন দিয়ে লেখা আছে ‘ইংরেজি বিষয়ে পরীক্ষার পাস নম্বর হবে ৩৩%, ইংরেজি বিষয়ে পাস না করলে পরীক্ষার্থী অনার্স বা পাস ডিগ্রির জন্য বিবেচিত হবে না।’ আবার ৭.(খ)-তে লেখা আছে ‘ইংরেজিতে ৩৩ নম্বরের অতিরিক্ত প্রাপ্ত নম্বর থেকে সর্বাধিক ১০ নম্বর পরীক্ষার্থীর অনার্স বিষয়ে প্রাপ্ত নম্বরের সঙ্গে যোগ হবে। অনার্স বিষয়ে পাস নম্বর (গড় ৩৬%) না পেলে ইংরেজি বিষয়ে অতিরিক্ত নম্বরের সুবিধা প্রদান করা হবে না।’ মানেটা যেটা বুঝলাম, ইংরেজিতে ৩৩ না পেলে অনার্স হবে না। আর ৫০-৬০ নম্বর পেলেও যা, ৩৩ পেলেও তা।
পরীক্ষার হলে বসেছি, পাশের সিটের মেয়েটা যে কলেজ হোস্টেলে থাকে, সে জিজ্ঞেস করে আমি ইংরেজি প্রশ্নপত্র পেয়েছি কি না? আমি আকাশ থেকে পড়ি—‘কেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে নাকি?’
এবার সহপাঠীর হা হওয়ার পালা—‘কি গো, আমি হোস্টেলে থেকে পেয়ে গেলাম, আর তুমি শহরের ছেলে হয়ে কশ্চেন পাওনি!’
আমি ফাটা বেলুনের মতো চুপসে গেলাম। ৩৩ পেলেই তো হবে! রাতে টিভিতে ব্রেকিং নিউজে দেখলাম প্রশ্নপত্র ফাঁসের জন্য ইংরেজি পরীক্ষাটা বাতিল! আবার ইংরেজি (আবশ্যিক) পরীক্ষার তারিখ দিল। এবার পরীক্ষার আগের দিন রাতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের খবর পেয়ে ৫০০ টাকা নিয়ে এক ফটোকপির দোকান থেকে প্রশ্নপত্র কিনে বাসায় ঢুকে শুনলাম টিভিতে ব্রেকিং নিউজ দিয়েছে—প্রশ্নপত্র ফাঁসের জন্য আগামীকালের অনুষ্ঠেয় ইংরেজি পরীক্ষা বাতিল! এরপর আবার পরীক্ষার তারিখ হলো, আবার পরীক্ষা দিলাম। সাত মাস পর রেজাল্ট, ২৫ পেয়ে ফেল করেছি।
পরের বছর ২০০৯ সালে আবার ইংরেজি (আবশ্যিক) পরীক্ষা দিতে হলো। এবার আর প্রশ্নপত্র পেলাম না, তবে পরীক্ষার আগের রাতে জানতে পারলাম অপ্রচলিত একটা গাইড বই থেকে কম্প্রিহ্যানশন আসবে। সেই শীতের রাত ১২টায় সে গাইড বই খুঁজে সারা রাত পড়লাম। সকালে ঢুলুঢুলু চোখে পরীক্ষার হলে দেখি ওই কম্প্রিহ্যানশনটা আসেনি। প্রচণ্ড ক্লান্তিতে কী লিখলাম জানি না, আট মাস পর রেজাল্ট দিল, ২৮ পেয়ে আবার ফেল।
পরের বার আবার ইংরেজি (আবশ্যিক) পরীক্ষা দিলাম, তবে এবার আর প্রশ্নপত্র খুঁজতে গেলাম না, যতটুকু সামর্থ্যে কুলালো পড়াশোনা করে দিলাম। আট মাস পর রেজাল্ট, ৩৪ পেয়ে পাস!
অভিজ্ঞদের পরামর্শ, এ সাধারণ মানের ডিগ্রি দিয়ে চাকরি হবে না। প্রয়োজন কম্পিউটারের সনদ। সরকারি এক কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে, কিন্তু মেয়র কিংবা সাংসদের সুপারিশ না হলে ভর্তির সিরিয়াল পাওয়া যাবে না। শেষে এক সহপাঠী বন্ধু বলে, সে যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কম্পিউটার শিখছে, সেটায় স্কলারশিপ দিয়েছে। স্কলারশিপ পরীক্ষায় ভালো করতে পারলে ৫০ হাজার টাকার কোর্স বিনা পয়সায় করা যাবে। তার কাছ থেকে ২০ টাকা দিয়ে হলটিকিট নিলাম। স্কলারশিপ পরীক্ষার আগের রাতে ওই সহপাঠীর ফোন। গিয়ে দেখা করলাম। সে প্রস্তাব দেয়, আগামীকালের স্কলারশিপ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র আমাকে দেবে, যদি আমি ৫০০ টাকা দিই। নাচতে নাচতে রাজি হয়ে যাই। ৫০০ টাকায় ৫০ হাজার টাকা বেঁচে যাবে! সারা রাত জি-মেট আর স্যাটের বই ঘেঁটে প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করলাম। খুব ভালো লিখিত আর মৌখিক পরীক্ষা দিয়ে ৩২ হাজার টাকার কোর্সে ৪৫% ছাড় পেলাম। প্রবল উৎসাহে ভর্তি হয়ে গেলাম, শুরু করলাম কম্পিউটার শেখা। দেখতে দেখতে বছর ঘুরে এল, আবার স্কলারশিপ দিল ওই কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। আমাদের বলা হলো, আমরা যদি একজন নতুন ছাত্র ভর্তি করতে পারি, এক হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। এক হাজার টাকার উৎসাহে হলটিকিট বিক্রি শুরু করলাম। স্কলারশিপ পরীক্ষার আগের দিন বিকেলে আমাদের হাতে কর্তৃপক্ষ স্কলারশিপ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ধরিয়ে দিল আমাদের ভর্তি-ইচ্ছুক ছাত্রদের জন্য!
কিছুদিন হলো আমাদের বন্ধু মামুনের সঙ্গে ঢাকার বৃষ্টি নামের এক মেয়ের প্রেম শুরু হয়েছে। আমরা মামুনকে চোখের মণি করে নিয়েছি। আড্ডায় মামুনকে চা-সিগারেটের বিল দিতে হয় না—কোনো কিছুতে মামুনকে ছাড়া আমরা কিছু বুঝি না। কারণ, বৃষ্টির এক নিকটাত্মীয় বিজি প্রেসে চাকরি করেন! একমাত্র তারাই তো পারে আমাদের মতো মেধাশূন্যদের একটা সম্মানজনক সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে।

সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, আগস্ট ০৭, ২০১০

Category: বাংলা কৌতুক, রম্য রচনা
Previous Post:চুল দেখে কার কী প্রতিক্রিয়া
Next Post:বাংলার বাজ-এ বংশধরেরা

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

বিবিধ রচনা

হেলথ

Download PDF


My Account

Facebook

top↑