• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক্স
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

লাঠি – তাওহিদ মিলটন

লাইব্রেরি » বাংলা কৌতুক » রম্য রচনা » লাঠি – তাওহিদ মিলটন

মানুষ সব সময়ই শক্তের ভক্ত, নরমের যম। তাই তো বাঁশ দেখে যেখানে আমাদের জিব শুকিয়ে যায়, সেখানে বাঁশের মতোই দেখতে আখ দেখে জিবে জল চলে আসে।
জীবনের শুরুতেই যেমন লাঠির ওপর ভর করতে হয়, তেমনি জীবনের দ্বারপ্রান্তে এসে নির্ভর করতে হয় আবার সেই লাঠির ওপর। তাই হয়তো বলা যেতে পারে, লাঠি ছাড়া আমাদের জীবন তো বলতে গেলে অচল। লাঠির সাহায্যে জীবন যেমন সচল হয়, আবার তেমনি এই লাঠির কারণেই জীবন অচল হয়ে যেতে পারে।
লাঠি শব্দটা শুনলেই শারীরিক কতগুলো প্রতিক্রিয়া লক্ষ করবেন। প্রথমত, আপনার শিড়দাঁড়া বেয়ে একটা শীতল স্রোত বয়ে যাবে। এরপর ধরুন, কারও কারও হাতের তালু চুলকাবে, কেউ মুষ্টিবদ্ধ করে ফেলবে। কারও শরীরের রক্ত ছলাৎ করে উঠবে। কারও মাথায় চিনচিন করতে পারে। কারও চোখ উজ্জ্বল হয়ে চকচক করবে। কেউ কেউ নড়েচড়ে বসবে। কারও বুকে সাহস সঞ্চার হবে। ইত্যাদি।
লাঠির সঙ্গে আমাদের বাঙালিদের সম্পর্কটাই এমন—বলা চলে—লাঠির সঙ্গে আমাদের রক্তের সম্পর্ক।
লাঠির উৎস যেমন বিচিত্র, তেমনি এর ব্যবহারও বৈচিত্র্যময়।
একটা গান আছে বাংলার লাঠিয়াল নামে। লাঠিয়াল বাহিনী বাংলার প্রাচীন প্রতিরক্ষাব্যবস্থার একটা বড় অংশ। যখন বর্তমান সময়ের মতো এত অত্যাধুনিক অস্ত্রের ঝনঝনানি ছিল না, তখন আমরা পুরোপুরি নির্ভর ছিলাম এই লাঠির ওপর। তাই হয়তো এই গান।
চোর-বদমাশদের লাঠিপেঠা করা একধরনের সংস্কৃতিরই অংশ। আবার সেটাকে আমরা অনেক সময় গর্ব করে বলি, ওর পিঠে আমি লাঠি যদি না ভাঙছি। একটা সময় ছিল, যখন স্কুলের শিক্ষকদের ছাত্ররা যমের মতো ভয় পেত। বলা হতো, অমুক টিচারের ভয়ে ছাত্ররা কাপড়ে ইয়ে করে দিত। এই ভয় আর কিছু না, শিক্ষক মশায়ের চেয়ে আতঙ্কের বিষয় ছিল তাঁর হাতের দণ্ড মশায়। তাঁরা তখন নাকি গরু-ছাগল পিটিয়ে মানুষ বানাতেন। বোধ করি, তাঁদের সেই প্রক্রিয়াটা দেশের জন্য অমঙ্গলই বয়ে এনেছে। এমনিতেই এ দেশে মানুষে গাদাগাদি, সেখানে গরু-ছাগল পিটিয়ে আরও মানুষ বাড়ানোর দরকারটা কী ছিল? গরু-ছাগল কিছু বেশি থাকলে কি এমন ক্ষতি হতো? যা-ই হোক, তাঁরা হয়তো এত দূর ভাবেননি। সবচেয়ে ভালো হতো, যদি কিছু অমানুষ পিটিয়ে গরু-ছাগল বানাতেন। দেশে এখন এদের সংখ্যাটা কম নয়।
লাঠির এসব ছোটখাটো ব্যক্তিগত পর্যায়ের ব্যবহার থেকে ধীরে ধীরে লাঠি চলে এল আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গনে। এর মধ্যে লগি-বৈঠা মিছিল তো বিশ্বস্বীকৃত, যেখানে লগি ও বৈঠা দুটি বস্তুকেই আমরা লাঠিগোত্রীয় ধরে নিতে পারি। রাজনৈতিক মিছিলগুলো যদিও এখন অনেক বেশি প্রযুক্তিগত পিস্তল-রিভলবার-শটগাননির্ভর, কিন্তু পত্রিকায় ছবি ছাপা হলে সবার আগে চোখে পড়ে মিছিলের লাঠি-বাঁশের ছবি। আর লাঠি হচ্ছে এমনই এক অস্ত্র, যা ব্যবহারে কোনো লাইসেন্সের প্রয়োজন পড়ে না। বিরোধী দলের মিছিলকে ধাওয়া করা কিংবা দাবড়ানি দেওয়ার জন্য সবচেয়ে ভালো অস্ত্র হচ্ছে মুলিবাঁশ। সঙ্গে যদি একটু তেল মেখে নেওয়া যায় তাহলে আরও ভালো।
যদি প্রশ্ন করা হয়, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের হাতে কোন জিনিসটা এখন সবচেয়ে বেশি শোভা পায়? উত্তর একটাই— লাঠি। কারণ, ছাত্রদের দাবি-অধিকার আদায়ের সবচেয়ে ভালো হাতিয়ার এটি। ছাত্ররাজনীতির একটা অংশ যদিও এখন ঐতিহ্য ভুলে কিছুটা ঝুঁকে পড়েছে অটোমেটিক মেশিনের ওপর, কিন্তু এখনো বিশাল একটা অংশ ধরে রেখেছে দেশীয় ঐতিহ্য যথা লাঠি যথা বাঁশ। জয়তু-ছাত্রনং বাঁশনং তপঃ।
বলুন তো, পুলিশের পরে কোন শব্দটি সবচেয়ে বেশি মানায়?
ঘুষ? নাহ্! হয়রানি? তাও না।
পুলিশের পরে লাঠিচার্জ কিংবা লাঠিপেটা শব্দটা সমার্থক। এর কারণও আছে, আমাদের দেশের পুলিশকে দেওয়া আগ্নেয়াস্ত্রগুলোর সবচেয়ে ভালো ব্যবহারই বোধ হয় হয়ে থাকে লাঠি হিসেবে।
পোশাককর্মীরাও ইদানীং লাঠির শরণাপন্ন হয়েছেন। আর শ্রমিক রাস্তায় নামবে কিন্তু পুলিশ সেখানে থাকবে না এটা কি মানায়? রাস্তায় লাঠির সবচেয়ে নান্দনিক দৃশ্য হচ্ছে গাড়ি ভাঙা। যত দামি গাড়ি, ভাঙার আনন্দ ততই বেশি।
ভাবুন তো, লাঠিছাড়া একটা পৃথিবী যেখানে মানুষের হাতে থাকবে না কোনো লাঠি। শিশু বয়সে উঠে দাঁড়ানোর মতো কোনো লাঠি থাকবে না, ছাত্ররা হাতে বই নিয়ে মিছিল করবে, কলম নিয়ে বিরোধী দলের ছাত্রদের ধাওয়া করবে, পোশাকশ্রমিকেরাও খালি হাতে, সরকারি ও বিরোধী দল রাজপথে নামবে লাঠি ছাড়া, পুলিশ তাড়া করবে লাঠি ছাড়া! এমনকি বৃদ্ধার হাতেও থাকবেনা কোনো লাঠি। ওহ্! নো!
লাঠিকে আমাদের জাতীয় অবলম্বন ঘোষণার দাবিতে সংসদে একটা বিল উত্থাপন করা উচিত। সংসদে তো সব সময় নিন্দা প্রস্তাব, শোক প্রস্তাব ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ কাজে সময় চলে যায়, একদিন যদি এই অগুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবটি কেউ করতেন!
ধরুন, প্রস্তাবটি সংসদে বিরোধী দলের অনুপস্থিতিতে সর্বসম্মতিক্রমে পাস হলো, যে লাঠিই আমাদের জাতীয় অবলম্বন। এরপর বিভিন্ন চৌরাস্তার মোড়ে শোভা পাবে লাঠির নয়নাভিরাম স্ট্যাচু। কোনো কোনোটাতে ছাত্রলীগ ছাত্রদলকে লাঠি হাতে তাড়াচ্ছে, কিংবা উল্টো; কোনোটাতে পুলিশ শ্রমিকের ওপর লাঠিচার্জ করছে, কিংবা উল্টো; কোনোটাতে শিক্ষক ছাত্রকে বেত্রাঘাত করছেন, ব্যাস এবার থামুন; এখানে আর উল্টো কিছু ভাবতে যাবেন না। উল্টা-পাল্টা বিষয়টা সবসময় সবকিছুর সঙ্গে যায় না।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আমাদের সবকিছুতেই লাঠি কেন? কিছু হলেই পুলিশের হাতে উঠে আসে লাঠি। ছাত্রদের দমন করতে লাঠি, শ্রমিক দমনে লাঠি, বিরোধী দলের বিরুদ্ধেও লাঠি। সকল সমস্যারই অন্য একটা সমাধান আছে। সরকার সেই সমাধানে না গিয়েশর্টকার্ট হিসেবে পুলিশের লাঠিকেই বেছে নিয়েছে। তাঁরা অভিযুক্ত হচ্ছে ‘বাংলার লাঠিয়াল’ হিসেবে। পুলিশের কপালে আর কত বিশেষণ জুটবে!

সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, আগস্ট ০৭, ২০১০

Category: বাংলা কৌতুক, রম্য রচনা
Previous Post:স্কুপ – আলেক্সান্ডার ফ্র্যাটার
Next Post:চুল দেখে কার কী প্রতিক্রিয়া

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

বিবিধ রচনা

হেলথ

Download PDF


My Account

Facebook

top↑