• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক্স
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

বৃষ্টি – আদনান মুকিত

লাইব্রেরি » বাংলা কৌতুক » রম্য রচনা » বৃষ্টি – আদনান মুকিত

মানুষের মন বোঝা বিরাট ঝামেলার কাজ। কখন যে কী ভালো লাগে, কিছুই বোঝা যায় না। এই যেমন বৃষ্টি। মানুষ সব সময় বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করে। আকাশ থেকে টপাটপ বিমান নামছে, অথচ একফোঁটা বৃষ্টি নামছে না—মানুষ এটা মেনে নিতে চায় না। অনেকে তো ‘আল্লাহ মেঘ দে, পানি দে…’ গান গেয়ে বৃষ্টি নামানোর চেষ্টা করে। অথচ বৃষ্টি নামলে তারা আবার বিরক্তও হয়। ক্রিকেট খেলা হচ্ছে, একটু বৃষ্টি নামল, ব্যস, পাবলিকের মেজাজ খারাপ হয়ে যাবে। দূর, খেলার ক্রিটিক্যাল সময় বৃষ্টি নামার কী দরকার ছিল? বৃষ্টিকে নামতে কে বলেছিল? (ভাব দেখে মনে হয় বৃষ্টি তাদের চারতলায় থাকা একটা বাচ্চা মেয়ে, বড়দের কথা না শুনে হঠাৎ নিচে নেমে এসেছে) বাথরুমের পানির কল বন্ধ করা গেলেও পাবলিকের মুখ সহজে বন্ধ করা যায় না। কিন্তু খেলায় প্রিয় দল বিপদে পড়েছে, একমাত্র বৃষ্টিই পারে দলকে বাঁচাতে—এমন অবস্থা হলে সবাই আবার বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করে। এই যুগে কেন তানসেনের মতো শিল্পী নেই তা নিয়ে অনেকের আফসোসের শেষ থাকে না। তানসেন ছিলেন ঐতিহাসিক প্রতিভা! তিনি নাকি গান গেয়ে বৃষ্টি নামাতে পারতেন। তবে বর্তমান যুগের শিল্পীরা আরও বড় প্রতিভা। তাঁদের উদ্ভট সব গান শুনে রাগে-দুঃখে মানুষের চোখ দিয়ে যে পানি পড়ে, তাকে বৃষ্টি বললে এখনকার শিল্পীরাও বৃষ্টি নামাতে পারেন। পার্থক্য একটাই—তানসেন আকাশ থেকে বৃষ্টি নামাতেন, এখনকার শিল্পীরা নামান চোখ থেকে।
এ তো গেল খেলার কথা। এমনিতে বৃষ্টি খুব চমৎকার একটা অজুহাত। বৃষ্টিতে ঢাকার রাস্তা যেমন পানিতে ভরে যায়, স্কুলে যাওয়ার ঠিক আগে ঝুমবৃষ্টি হলে ছেলেমেয়েদের মনও সেই রকম খুশিতে ভরে যায়। কী মজা, স্কুলে যেতে হবে না! পরদিন ভয়ে ভয়ে স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টির কারণে গতকাল স্যারই আসেননি। একটু বৃষ্টি হলেই ঢাকার বিভিন্ন রাস্তা জলাশয়ে পরিণত হয়। ‘স্যার, বাসার সামনে গলার টনসিলসমান পানি, আজকে অফিসে আসতে পারছি না’—এই কথা বলে বাড়ির কর্তা নিশ্চিন্তে অফিস ফাঁকি দিয়ে ইলিশ-খিচুড়ি খান। কেউ কেউ আবার বাচ্চাকে কাঁধে তুলে রাস্তার পানি দেখাতে নিয়ে যান। সেই পানি দেখে বাচ্চারা বুঝতে পারে পাঠ্যবইয়ে কেন লেখা ‘নদীমাতৃক বাংলাদেশ’।

‘ভাই, বাইরে কি বৃষ্টি হচ্ছে?’
‘বৃষ্টি তো বাইরেই হয়, আপনাদের ওখানে ঘরের ভেতর বৃষ্টি হয় নাকি?’
বেশ প্রচলিত রসিকতা। তবে সবচেয়ে বড় রসিকতাটা করে আমাদের আবহাওয়া অফিস। এমনিতেই রসিক হিসেবে বাঙালি জাতির সুনাম আছে। সম্ভবত বিশ্বের সবচেয়ে রসিক আবহাওয়া অফিসটাও আমাদের দেশে। তারা যদি বলে আগামীকাল দেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে, তাহলে বুঝতে হবে আগামীকাল কোনো বৃষ্টিই হবে না; ছাতা বা রেইনকোট সঙ্গে না নিয়ে নিশ্চিন্তে বেরিয়ে পড়ুন। যাত্রা শুভ। আর রোদের কথা বললে অবশ্যই ছাতা-রেইনকোট নিতে ভুলবেন না। বৃষ্টি আসবেই।

মানুষ সব সময় দুই রকম কথা বলে। ব্যাটসম্যান ছক্কা না মারলে বলে, ‘গাধাটা মারে না কেন! আরে ব্যাটা, সামনে এগিয়ে পাগলা বাড়ি দে।’ কথা শুনে ব্যাটসম্যান পাগলা বাড়ি দিতে গিয়ে আউট হলে বলে, ‘গাধা, ছক্কা মারতে কে বলেছে? এই বলটা ঠেকাতে পারলি না!’ বৃষ্টির ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হয় না। প্রচণ্ড গরমে বাসের ভেতর ভিড়ের মধ্যে মানুষ বলে, ‘ইশ, একটু বৃষ্টি হলে গরমটা কমত!’ আসলে দেশ থেকে সব ভালো জিনিস ধমাধম উঠে যাচ্ছে। এসব কথা শুনে যদি ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামে, তাহলেই হয়েছে। বাসের যাত্রীরা সবাই একযোগে জানালা বন্ধ করার প্রতিযোগিতা শুরু করবে। কেউ জানালা খুললেই রাগী ভঙ্গিতে বলবে, ‘জানালাটা বন্ধ করেন তো ভাই! আপনি ভিজতে চাইলে বাস থেকে নেমে গিয়ে ভেজেন, যান! মরার বৃষ্টি একেবারে ভিজিয়ে দিল।’ কোনো জানালা একটু ভাঙা হলে, কিংবা জানালা না থাকলে বাসের হেলপারকে গালি দেওয়া হবে:
‘ব্যাটা গর্দভ, জানালা যে ভাঙা সেটা আগে দেখবি না? ১৮ হাজার টাকা দিয়ে মোবাইল ফোন কিনেছি, বসে বসে বৃষ্টিতে ভিজব নাকি?’
‘আপনি কাকে কী বলছেন? ওই ব্যাটা হেলপারই তো জানালা খুলে বিক্রি করে দিয়েছে। ডান পাশ থেকে ব্যাটার চেহারাটা দেখেন, পুরা চোর চোর ভাব।’
‘নাহ, আগে দেশটা ধান-পাটে ভরা ছিল, এখন চোর-বাটপারে ভরে গেছে। পয়েন্টে পয়েন্টে চোর-বাটপার।’

বাংলা সিনেমার একটা অপরিহার্য উপাদান হলো বৃষ্টি। বাংলা সিনেমা হবে, আর বৃষ্টিতে ভিজে নায়ক-নায়িকা নাচ-গান করবে না, তা হয় না। খাঁ খাঁ রোদে নায়ক-নায়িকা নাচ-গান করছে, হঠাৎ ব্যাকগ্রাউন্ডে বজ্রপাতের শব্দ, সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টি। যেনতেন বৃষ্টি নয়, একেবারে কুকুর-বিড়াল বৃষ্টি। ইংরেজিতে যাকে বলে ক্যাটস অ্যান্ড ডগস। বৃষ্টির দৃশ্য আরও আছে। গভীর রাতে ‘বেরিয়ে যাও’ বলে নায়কের গরিব মা-বাবাকে (সাধারণত সিনেমার সবচেয়ে ভালো চরিত্রটিকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়) বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। বৃদ্ধ মা-বাবা রাস্তায় নামার সঙ্গে সঙ্গে বৈজ্ঞানিক সূত্র প্রয়োগের মতো বৃষ্টি নামবেই। নায়িকা ভুল বুঝেছে (মতান্তরে ছ্যাঁকা দিয়েছে) নায়ককে। বুকের জ্বালা দূর করতে নায়ক মদের বোতল হাতে যদি কোনোভাবে রাস্তায় বের হয়, তাহলে অবশ্যই বৃষ্টি নামবে। নামতেই হবে। এগুলো হচ্ছে সূত্র। এই সূত্র ছাড়া পিথাগোরাসের উপপাদ্য হতে পারে, কিন্তু বাংলা সিনেমা হয় না। চৈত্র মাসের খরায় যখন বৃষ্টির অভাবে মাটি ফেটে যায়, তখন এই সূত্রগুলো কাজে লাগিয়ে দেখা যেতে পারে। অনেক দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে না, তখন এলাকার সবচেয়ে ভালো মানুষকে গভীর রাতে ‘বেরিয়ে যাও’ বলে ঘর থেকে বের করে দিলে যদি বৃষ্টি নামে, তাহলে সমস্যাটা কোথায়? বৃষ্টির প্রয়োজন শেষ হয়ে গেলেই তাকে আবার ফিরিয়ে আনা হবে। আসলে, আমরা শুধু সিনেমা দেখি, আর সমালোচনা করি; বাংলা সিনেমা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে কত কিছু শেখানোর চেষ্টা করছে, আমরা কোনো পাত্তাই দিচ্ছি না। এ রকমই হয়। ভালো জিনিসের মর্ম কেউ বুঝতে চায় না। উন্নত দেশগুলোতে এই জিনিস একবার দেখালে তারা সব ভালো লোককে বৃষ্টি নামানোর কাজে নিয়োগ দিয়ে দিত। সম্ভবত আমাদের দেশে ভালো লোক নেই। থাকলে তো কখনো বৃষ্টির জন্য প্রার্থনাই করতে হতো না।

সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুলাই ১৯, ২০১০

Category: বাংলা কৌতুক, রম্য রচনা
Previous Post:পথ চেয়ে থাকা – এজি বিলেভিচ
Next Post:আষাঢ়ে স্বপ্ন – তুষার কণা খোন্দকার

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

বিবিধ রচনা

হেলথ

Download PDF


My Account

Facebook

top↑