• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক্স
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

বিশ্বকাপ হুজুগ – সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

লাইব্রেরি » বাংলা কৌতুক » রম্য রচনা » বিশ্বকাপ হুজুগ – সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

১৯৯৪ সালে বিশ্বকাপ ফাইনালে ব্রাজিলের কাছে হারল ইতালি। যে রাতে ওই খেলাটা হলো, তার পরদিন সকালে লন্ডন যাওয়ার পথে রোমে থামল আকাশে শ্যান্টি-নীড় আমাদের বিমান। নামার সময় ভেবেছিলাম, রোমের নিসর্গ ছেয়ে থাকবে ইতালির পতাকায়, হয়তো তার কিছু অর্ধনমিত। কিন্তু কোথায় কী! এ তো আর বাংলাদেশ নয় যে লোকজন গাঁটের পয়সায় পতাকা কিনে ছাদে ওড়াবে আর পতাকা ওড়াতে গিয়ে বিদ্যুতের ছোবল খেয়ে প্রাণটাও দেবে। বিমান থেকে নামার অনুমতি নেই। তাই জানালা থেকেই দেখলাম, পুরো বিমানবন্দর যেন এক বিরানবন্দর। জ্যান্ত কবর। যেসব পরিচ্ছন্নতাকর্মী বিমানে উঠল, তাদের মুখ বেদনায় আচ্ছন্ন। তাদের একজনকে বাংলাদেশি এক যাত্রী ডেকে সমবেদনা জানালেন। কিন্তু সে সান্ত্বনা পাওয়ার বদলে অশান্ত হয়ে গেল। ‘তুমি সমবেদনা জানাবার কে?’ এ রকম কিছু একটা সে বলল। তার হাত-পা চালানো দেখে মনে হলো, যেন কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা পড়েছে, হয়তো দুইটা লাগিয়েই বসবে।
ইতালির মর্মবেদনাটা বোঝা যায়। ১৯৮২ সালে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল দেশটি। কিন্তু এরপর দুবার আর ফাইনালেই উঠতে পারেনি। ১৯৯০ সালের বিশ্বকাপটি হয়েছিল তাদের মাটিতেই, কিন্তু সে বছর তাদের মাটিতেই শুইয়ে দিয়েছিল অন্য দলগুলো। তা ছাড়া ১৯৯৪ সালের ওই ফাইনালে ইতালিকে হারিয়েছিল ব্রাজিল। ঘা-টা একটু বেশিই হয়েছিল এ কারণে। তবে রোম বিমানবন্দরের কর্মীদের দেখে মনে হয়েছিল, তারা প্রকৃতই ফুটবলপ্রেমী। কেন হবে না, বলুন? সারা দেশটিতে আছে কত শত ক্লাব, অসংখ্য খেলোয়াড়, অতি-অসংখ্য দর্শক। যেকোনো খেলায় দর্শক উপচে পড়ে মাঠে, তা সে সিরিয়াস খেলা হোক, অথবা ছোট্ট ক্লাবের ফ্রি ম্যাচই হোক। ইউরোপের সব দেশেই এ অবস্থা। একবার ইংল্যান্ডের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামের পাশের রাস্তায় এক খেলা শেষে বের হওয়া দর্শক-স্রোতের নিচে চাপা পড়ে প্রাণটাই যেতে বসেছিল। একই দৃশ্য নিশ্চয় দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোতেও। আমার মনে হয়েছে, ওই সব দেশের মানুষ ফুটবল ভালোবাসে, আর আমরা ভালোবাসি ফুটবল-ফুটবল হুজুগ। একসময় আমাদেরও ভালোবাসাটা ছিল, যখন আমার মতো ফুটবল-নিরপেক্ষ মানুষও স্টেডিয়ামে গিয়ে ওয়ারী-ফরাশগঞ্জের খেলা দেখত। দৈনিক আজাদ পত্রিকায় ওয়ারী সম্পর্কে প্রায়ই লেখা হতো, ‘ওয়ারী ভালো খেলিয়াও হারিয়া গেল।’ ষাটের দশকে আবাহনী ছিল না, ছিল মোহামেডান। যেদিন মোহামেডানের খেলা থাকত, ইপিআইডিসি অথবা এ রকম বড় কোনো দলের সঙ্গে, তিন ঘণ্টা আগে না গেলে জায়গা মিলত না স্টেডিয়ামে। তখনো বিশ্বকাপ হতো, কিন্তু তা নিয়ে আমাদের কোনো কাঁপাকাঁপি ছিল না। যা ছিল, তা মোহামেডানকে নিয়ে, এমনকি ওয়ারীকে নিয়েও, ভালো খেলে বারবার হেরে যাওয়ার পরও।
এখন আবাহনী-মোহামেডানের খেলাতেই কত দর্শক হয়? পাঁচ হাজার? নাকি আরও কম? আর ছোট দলগুলোর খেলায়? কত দর্শক টানে ফকিরেরপুল ইয়াংমেনস ক্লাব? মাঠের এই ফকিরি অবস্থা কী প্রমাণ করে না, ফুটবলের প্রতি আমাদের প্রকৃত কোনো আগ্রহ নেই? আগ্রহ আছে শুধু হুজুগের প্রতি। যেমন এই বিশ্বকাপ হুজুগ। এই হুজুগের যুগ শুরু ১৯৮৬ সালে, আর্জেন্টিনা যেবার চ্যাম্পিয়ন হলো, সেবার থেকেই। সে বছর অনেকেই রঙিন টিভিতে বিশ্বকাপের খেলা দেখেছেন বিটিভির ভদ্রতায়। কিন্তু খেলা দেখা, তালি দেওয়া, চিৎকার করা এক জিনিস, আর দলগুলোর পতাকা দিয়ে নিজেদের আকাশ ঢেকে ফেলা আরেক জিনিস। এই পতাকা হুজুগ চলছে গত দু-তিন বিশ্বকাপ থেকে। কিছুদিন আগে রংপুর ও সিলেট গিয়েছিলাম বাসে চড়ে। অবাক হয়ে দেখলাম, হাটিকুমরুলের আকাশে ব্রাজিলের প্রাধান্য, তো ভুলতার মাথাজুড়ে আছে আর্জেন্টিনা। পাঁচদোনা বাজারের আবুল মিয়া কোনো একসময় তাঁর প্রিয় নেত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন তাঁর ছবি টানিয়ে। এখন নেত্রীকে আড়াল করে কেউ তুলে দিয়েছে ব্রাজিলের সবুজ পাঁচিল। পতাকার আগ্রাসন থেকে মুক্তি পায়নি থানা অথবা ইবাদতখানাও। আর কী যে ঢাউস এক একটা পতাকা! সঙ্গে ব্যানার। এবার দেখলাম, বিরাট বিরাট পতাকা-ব্যানারের এ-মাথা ও-মাথাজুড়ে সমর্থকেরা নিজেদের নামও লিখে দিয়েছেন, সঙ্গে দু-এক লাইন মন্তব্য। সিলেটে আর্জেন্টিনা-সমর্থকেরা ব্যানারে নিজেদের নাম খোদাই করে পাশে লিখেছেন, ‘পারলে ঠেকাও।’ একটু দূরের ব্রাজিলভক্তরা তার জবাব দিয়েছেন, ‘কাকা, ম্যাজিক দেখাও’, বাহুবলে এক ব্রাজিল সমর্থক (কিন্তু পর্তুগাল-বিদ্বেষী) লিখেছেন, ‘কাকা আছে, নানি নাই।’ বিশ্বকাপে তাহলে আত্মীয়রাও খেলছেন। কাকা, নানি ছাড়াও মামা, জ্যাঠারাও নিশ্চয় আছেন। ম্যারাডোনাকে এখন অবশ্য মামুই ডাকা যায়। বয়স বেড়েছে, মুটিয়েও গেছেন, এমনকি সেই ঈশ্বরের হাতটিও ফুলে কয়েক সাইজ বড় হয়ে গেছে। মামু বলা যায় ইতালির গোটা দলটাকেই। কাগজে লিখেছে, আজ্জুরিদের দলটা এবার ‘বুড়োদের দল’।
প্রিয় দলের পতাকা কেন ওড়াতে হবে, এর কোনো ব্যাখ্যা নেই। তাও যদি ফুটবল-পতাকা হতো! কিন্তু উড়ছে জাতীয় পতাকা। এটি শুধু বাংলাদেশেই সম্ভব। বড় দুই দলের সঙ্গে অন্য দলও আছে। টাঙ্গাইলে যেমন পর্তুগাল, স্পেন এবং ইতালি আছে, মৌলভীবাজারে আছে ইংল্যান্ড-জার্মানিও। বাংলাদেশে সারা বছরই তিন কোনা ইসলামি পতাকার ছদ্মবেশে পাকিস্তানি পতাকা ওড়ে, কিন্তু এবার দেখলাম, পাকিস্তানপ্রেমীরা চোরাগুপ্তা আস্ত চান-তারাই উড়িয়ে দিয়েছে। তাও কোনো খানকা-দরগায় নয়, চানখাঁরপুলে এক ক্লিনিকের মাথায়। তবে পকিস্তানপ্রেমীদের জ্ঞাতার্থে বলি, বিশ্বকাপে পাকিস্তানের আগে বাংলাদেশই যাবে, যদি যায় ২১১২ সালে হলেও। বাংলাদেশ সব সম্ভবের দেশ।
সারা বিশ্বে বিশ্বকাপ নিয়ে মাতামাতি চলছে। ইংরেজিতে একে বলে ‘হাইপ’, বাংলায় ‘হুজুগ’। কিন্তু সারা বিশ্বে ফুটবল নিয়ে আছে প্রকৃত ভালোবাসাও। সে জন্য বিশ্বকাপ এলে পড়াশোনা বাদ দিয়ে ২৪ ঘণ্টা ফুটবলের আরাধনা আর কাকা-মেসি-রোনালদোর নাম জপতে বসে না কেউই। ফুটবল দেখাটা আনন্দের, কিন্তু এই আনন্দকে সবকিছুর ওপরে তুলে সব কাজকর্ম ভুলে যাওয়াটা কোনো কাজের কথা নয়। সেই অকাজটা আমরাই করি। পড়াশোনা ফাঁকি দিয়ে গোল্লায় গেলে গোল-মালিক কাকা-মেসিরা চাকরি জোগাড় করে দেবে না। হুজুগটা
থাকুক, সেটি খারাপ না, তবে সেটাকে চাই হুজুগ-ট্যাকলিংয়ের ক্ষমতাও। আর এই হুজুগটা প্রকৃত ভালোবাসায় রূপান্তরিত করে সারা বছর ফুটবলের সমর্থন দিয়ে যাওয়া। দলে দলে
ওয়ারীর পতাকা হাতে স্টেডিয়ামে
যাওয়া, তারা ভালো খেলে হেরে যাওয়ার পরও।
হুজুগের সঙ্গে হ্যাঁ যোগ করুন—প্রকৃত ফুটবলপ্রেমকে ‘হ্যাঁ’ বলুন। তাহলে
২১১২ সালের আগেই বাংলাদেশ বিশ্বকাপে খেলতে যাবে।

সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুন ২১, ২০১০

Category: বাংলা কৌতুক, রম্য রচনা
Previous Post:এতক্ষণ ধরে কী করলাম
Next Post:কোচগণ কহেন

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

বিবিধ রচনা

হেলথ

Download PDF


My Account

Facebook

top↑